অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার সাতকাহন

অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার সাতকাহন

দেওয়ালের গায়ে অজস্র দাগ। কখনো হয়তো রং করা হয়েছিল। জীবনের কষাঘাতে সেই রং দেওয়ালের সঙ্গ ছেড়েছে। রংচটা দেওয়ালটার পাশে দাঁড়িয়ে আছে রানী। তেল চিটচিটে চুল। শুকনো মুখ। হাতে একগাদা বিড়ি। সদ্য বেঁধে এনেছে। বাবার হাতে দিতে যাচ্ছিল। ঠিক সেই সময়েই ঢুকেছি আমরা। হঠাৎ করে পরিচিত মুখ দেখে রানী থমকে গেছে। আশা করেনি হয়তো। ঘড়িতে ঠিক সাড়ে দশটা বাজে। অতিমারির আগে এই সময়টায় কলকাকলি শোনা যেত। কচিকাঁচাদের মিষ্টি চিৎকারে ভরে থাকত জায়গাটা। জায়গা বলতে রানীদের বাড়ির পাশেই স্কুলের মাঠটা।

রানী এমনিতে শান্ত। মাঝে মাঝে বুলি ফুটত বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে। স্কুলের বন্ধু ওরা। বাড়ির কাছের স্কুল। অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী রানী খাতুন। আমার সঙ্গে স্কুলের দিদিমণি ছিল। দিদিমণিকে দেখেই বাবার হাতে বিড়িগুলো দিয়ে রানী একছুট্টে ভেতরে চলে গেল।  

রোয়াকে ওর ভাই বসে। সর্দি ঝরা নাক। নিজের জামা দিয়ে মুছিয়ে দিচ্ছে রানী। ওদের মা তখন রান্নাঘরে কাঠ আর আগুনের মাঝে যুঝছে।

” কী রে, স্কুলে দেখা করিসনি কেন?” আমি আর সেই দিদিমণি একসঙ্গেই প্রশ্নটা করলাম। 

আমাদের প্রশ্নেও উত্তরহীন রানীর বাবা, মা। হয়তো ইচ্ছে করেই উত্তরটা এড়িয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে রানীর মা মুখ খুলল একই প্রশ্নের পুনরাবৃত্তিতে।

“যাবে গো। ওর বাপের কাজ নেই। পড়ার মাইনে তো দিতে পারবেনি। পাঠাবো’খন পরে।” 

খানিকক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম আমরা। বদলে গেল ছবিটা। এতক্ষণ আমরা তাকাচ্ছিলাম রানীর মায়ের দিকে। রানীর স্কুল না যাওয়ার উত্তর খোঁজার জন্য। এবার রানীর মা একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। চোখ নামিয়ে নিতে বাধ্য হলাম। অসহায়তার ঝাপসা হয়ে দৃষ্টিপথ। উত্তর নেই। রানীকে স্কুলে পাঠানোর অনুরোধ করে এগিয়ে গেলাম পরের বাড়িতে। যদিও মনে মনে জানি এ অনুরোধের কোনো মানে হয় না। এগিয়ে যাওয়ার সময় দেখি রানী জানালায় দাঁড়িয়ে। অমলের মতো। হয়তো কোনো দইওয়ালার প্রতীক্ষায়। অভাব, দারিদ্র্য, অসহায়তা ঘুচিয়ে মুক্তির স্বাদ নিয়ে আসবে, এমন দইওয়ালারা কোথায়? কে জানে!

অফিসের বিশেষ কাজে এসেছি এই গ্রামে। খাতায়-কলমে এর পোশাকি নাম আউট-ব্রডকাস্ট।  বহির্জগতের অভিজ্ঞতা সরাসরি স্টুডিওতে নিয়ে আসাই আমাদের উদ্দেশ্য। গ্রামের নাম উল্লেখ নিষ্প্রয়োজন। সবুজ গাছপালায় ঘেরা, মাটির গন্ধ মাখানো গ্রাম। দূরে দূরে সারি সারি ঘর। মাটির নিকোনো উঠোন। ঝকঝকে। ছোট ছোট জানলা দিয়ে রোদ আছড়ে পড়ছে ঘরগুলোতে। কিন্তু শিক্ষার আলো?  সে আলো যেটুকু পৌঁছেছিল, তাও যেন আজ নিভে যাচ্ছে! অতিমারি, লকডাউন, কোভিডের অন্ধকার এসে গিলে নিচ্ছে তাকে। ভেঙে যাওয়া জীবনের কিছু ছন্দ জোড়া লাগেনি আজও।

পাশের বাড়িতে গেলাম। আজমিরা রেজাল্ট নিতে আসেনি। খোঁজ করে জানা গেল বিয়ে হয়ে গেছে এই অতিমারির সময়ে। মেয়েটা পড়াশোনায় মন্দ ছিল না। হয়তো ওর অন্তরমহলে কোথাও ইচ্ছে ছিল আরো পড়াশোনার। অগোচরে রয়ে গেছে সবটা। এসব জেনেও গেলাম ওদের বাড়ি। 

”মেয়ে কোথায়? স্কুলে যায় না কেন? রেজাল্ট নিতে যায়নি কেন?”

একসঙ্গে প্রশ্ন উগরে দিলাম দুজনেই।

”ও যাবে না, বিয়ে হয়ে গেছে।”

”তুমি বিয়ে দিলে কেন ওর?”

”কাজ কম্মো নেই, ঘরে বসে কী করবে গা?”

বলেই ঘরে ঢুকে গেল ছাপা শাড়ি পরা মহিলা। সম্ভবত আজমিরার মা। শাড়ির পাড় থেকে সুতো ঝুলছে। সেই সুতোয় লেগে যাচ্ছে মেঝের ধুলো। শাড়ির ধুলো হয়ত ঝেড়ে নেবে, কিন্তু জীবনের ধুলো? পরতে পরতে ধুলোর আস্তরণ জমছে। কে সরাবে?

একেকটা জীবন যেন ক্যালাইডোস্কোপের মত। এরপর রফিকুল। ছাগল চরাচ্ছিল মাঠে। একটু অন্য ছবি দেখলাম এতক্ষণ পর। আমরা প্রশ্ন করার আগেই রফিকুল প্রশ্ন করল আমাদের দিকে তাকিয়ে। 

“আপনারা এখানে এসেছেন, স্কুল খুলেছে?”

“না রে! এখনো না! তবে খুলে যাবে খুব তাড়াতাড়ি।”

“এই সময়টা আমাদের টিফিন টাইম ছিল।” রফিকুল একটু কি উদাস? “বাড়ি যাচ্ছি এখন। স্কুল খোলেনি, তাও আপনি এসেছেন?”

ওর মাথায় হাত রাখলাম দুজনেই। আমি আর আমার সঙ্গী স্কুলের দিদিমণি। 

“আমাদের তো আসতেই হবে।”

আর কোনো উত্তর দেয়নি আজাহার। এগিয়ে গেল ছাগলটা নিয়ে। ওর চোখের ভাষায় অসহায়তা। উন্মুক্ত আকাশ, প্রশস্ত রাস্তা জুড়ে শুধুই নৈঃশব্দ্য। এই নৈঃশব্দ্যকে সঙ্গ দিচ্ছিল একটা নিশ্ছিদ্র অনিশ্চয়তা। 

অফিসের বিশেষ কাজে গিয়েছিলাম ওই গ্রামে। দিনটা যেন বায়োস্কোপের মত ছিল। রানী, আজমিরা, রফিকুল। কেউ বিড়ি বাঁধছে, কারোর বিয়ে হয়ে গেছে, কেউ অপেক্ষা করছে স্কুল খোলার। 

৩রা ফেব্রুয়ারি অবশেষে মুক্ত বাতাস গায়ে লাগার মত করে নির্দেশ এসেছে স্কুল খোলার। কিন্তু রফিকুল, রানী, আজমিরার মত যাদের জীবন পাল্টে গেছে কয়েক বছরে, তাদের কী হবে? স্কুলছুটের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে এই দুই বছরে। স্কুল খুললেও ছাত্রছাত্রীদের এই সংসার সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। দীর্ঘ অতিমারির সময়ে বারবার অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে ওদের স্কুলজীবন। বেঁচে থাকাই যেখানে সমস্যা, সেখানে স্কুলের কথা ভাবাও তো বিলাসিতা! ফলে মানসিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করেছে তারা।

শৈশব ও কৈশোর একটা আস্ত রূপকথার মতো। জীবনবোধ, মূল্যবোধ তৈরি হওয়ার আঁতুড়ঘর। মনোবিদরা মনে করেন এই বয়স থেকেই সাধারণতঃ শিশু মনস্তত্ত্বের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো প্রস্ফুটিত হতে শুরু করে। যেমন একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীলতা, সহমর্মিতা, নিয়ম-শৃঙ্খলা। কিন্তু খোলসের মধ্যে বন্দী জীবন ওদের আছড়ে ফেলছে বাস্তবের রুক্ষ মাটিতে। সমীক্ষায় দেখা গেছে অনেকেরই পড়াশোনার পাট চুকেছে। যে বয়সটা শুধুই গড়ার, তাতে লেগেছে ভাঙ্গনের গন্ধ। রানী, আজমিরারা পিষে যাচ্ছে জীবনের সেই কঠিন ঘানিতে। 

এই হল দীর্ঘ অতিমারির সময়ে গ্রামের অবস্থা। আজাহার, আজমিরাদের জীবনে স্মার্টফোনের বিলাস নেই। অনলাইন ক্লাসের সুযোগও ছিল না ওদের। শিক্ষক শিক্ষিকারা দিনের শেষে কখনো পড়াশোনার জিনিসপত্র দিয়ে সাহায্য করেছেন। দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলার খবরে নিঃসন্দেহে আনন্দ হচ্ছিল। কিন্তু আমরা যে গভীরে অন্দরের ছবিটা জানি, তাই দুশ্চিন্তা এড়াতে পারছিলাম না। যে পথ রানী, আজমিরা আর রফিকুলকে বিচ্ছিন্ন করেছে তা আবার কেমন করে যোগ হবে ওদের চলার পথে? জীবনের ঝলমলে মূলস্রোতে ওরা আবার ঝাঁপিয়ে পড়তে পারবে তো?

এ তো গেল তাদের কথা যাদের কাছে অনলাইন ক্লাস, স্মার্টফোন – সবটাই ছিল এক কল্পবিলাসের মত। কিন্তু যাদের জীবনে এইসব সুব্যবস্থা সাজানো ছিল, তাদের অনুভূতিও খুব একটা সুখকর ছিল না। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে শ্রেণীকক্ষ, ব্ল্যাকবোর্ডবিহীন ছদ্ম-স্কুলজীবন অনেকের জীবনে অবসাদের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঙ্গবিহীন, ভার্চুয়াল জগত ওদের জীবনকে একটা অদ্ভুত আকার দিয়েছে। ঠিক যেন নির্জন দ্বীপের মত একেকটা বিন্দু। ক্লাস করতে করতেই জাঁকিয়ে বসা হতাশা মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে অনেক ছাত্রছাত্রীকে। অনলাইন ক্লাস ‘অফ’ করে দিয়েছিল ওদের সুস্থ, স্বাভাবিক মনোজগৎ।

শিক্ষাবিদরা অসম, বিহার, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গের মতো ১৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ১৩৬২টি পরিবারের ওপর একটি বিশেষ সমীক্ষা করেছিলেন। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সমীক্ষাটি পরিচালনা করেছিল। সমীক্ষায় দেখা গেছে, গ্রামীণ ভারতে মোট ৫১% পরিবারের স্মার্ট ফোন আছে। এদের মধ্যে মাত্র ১২% পড়ুয়ার কাছে নিজের স্মার্টফোন রয়েছে। শহরাঞ্চলে মাত্র ২৪% শিক্ষার্থী নিয়মিত অনলাইন ক্লাস করেছে। গ্রামে এই পরিসংখ্যানটি ভয়ানক। মাত্র ৮%। গ্রামে ৩৭% শিক্ষার্থী অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার সুযোগই পায়নি। শহরে সংখ্যাটা ১৯%। তপশিলি জাতি ও উপজাতির ক্ষেত্রে পরিসংখ্যান অত্যন্ত হতাশাজনক। মাত্র ৪% শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাস করেছে। এই সমীক্ষার শেষে যে তথ্যটি উঠে এসেছে, তা সমগ্র পৃথিবীর ভবিষ্যতের জন্য দুঃসংবাদের মত। শহরে ৭৬% ও গ্রামে ৭৫% ছাত্র ছাত্রীরা পড়াশোনা করার দক্ষতা কমে গেছে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায়।

ছোট ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে ওই সমস্যাটা বেশ প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। স্কুল খোলার পর দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ শিশুই ব্ল্যাকবোর্ডে লেখা বর্ণমালা চিনতে পারছে না। এমনকি দীর্ঘদিন একই জায়গায় বদ্ধ থাকার ফলে তাদের ব্যবহারেও নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের মনোজগৎ নিয়েও গবেষণা করা হয়েছে। মনোবিদরা বলছেন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীর নৈকট্যের অভাব তাদের সামগ্রিক মানসিক শাস্তি চূড়ান্ত প্রভাব ফেলেছে। যে শিক্ষাগ্রহণের বাতাবরণ ছিল নিজেই আলোর দিশারী, তাতেই বাসা বেধেছে অন্ধকার। স্কুলজীবন এক প্রকার মুক্ত বাতাসের মতো। শিক্ষক-শিক্ষিকার স্নেহের পরশ শীতল ছায়ার মত। একটা প্রজন্মের কাছে সেই সুস্থ বিকাশের উপযুক্ত পরিবেশ হারিয়ে গেছে এই ব্যবস্থায়। মনের গভীরে অনেক অনুভূতির শেকড় গড়ে ওঠে শিক্ষকদের সরাসরি সাহচর্য্যে। তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে শিক্ষার্থীরা। এমন কী এখনো আতঙ্ক পুরোপুরি যায়নি,  আবার নতুন করে অতিমারির ঢেউয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে শিক্ষাবিদরা সম্পূর্ণ দুশ্চিন্তামুক্ত হননি। আবার যে কখনো এমন পরিস্থিতিতে তৈরি হবে না – তা বলা বেশ কঠিন। তাই ছাত্রছাত্রীদের মনের নরম মাটিতেই চারিয়ে যাচ্ছে অনিশ্চয়তায় মাখানো অনুভূতির শেকড়।

তবে এসব কিছুর পরেও এটুকু স্বীকার করতেই হয়, অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তত একটি বিকল্প ব্যবস্থার সন্ধানটুকু পাওয়া গেছে। অতিমারির অন্ধকার সময়ে পড়াশোনার মত একটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়েছে এই অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে। সাদা কালো অক্ষরের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার পথটুকু খুঁজে দিয়েছে এই ভার্চুয়াল ব্যবস্থা। ৩রা ফেব্রুয়ারি থেকে সমস্ত স্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল খুলেছে অবশেষে। অন্ধকারের পরে একটা ঝলমলে রোদ মাখা দিনের মত। উদয়ন পন্ডিতদের পাঠশালা থেকে শুরু করে আধুনিক ধাঁচের সাজানো শ্রেণিকক্ষে ফিরেছে কচিকাঁচাদের কলতান। অনিশ্চয়তা, দুশ্চিন্তার চোরা স্রোত বইছে আজও। সেই সব দুশ্চিন্তাকে মিথ্যা করে, অতিমারির অন্ধকার পেরিয়ে শৈশব-কৈশোরের গায়ে জীবনের পরশ লেগে থাকুক সবসময়, এটাই কাম্য।

তথ্যসূত্র:-

১. https://newsonair.gov.in/News-From-State.aspx?cat=RNU24

২. https://www.sangbadpratidin.in/bengal/aser-published-a-report-on-west-bengals-school-student/

৩.কর্মসূত্রে প্রাপ্ত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা

আকাশবাণী কলকাতায় জাতীয় সম্প্রসারক হিসেবে কর্মরত। লেখালিখির সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক। শুরু স্কুল জীবন থেকে। পেশাগত সূত্রেও লেখালিখির সঙ্গে জড়িত। যে ভাবনারা অনবরত ভেতরে দাগ কেটে চলেছে তাকেই অক্ষর দিয়ে সাজানোর চেষ্টা। শখ - বেড়াতে যাওয়া, গিটার বাজানো।

1 Comment

Avarage Rating:
  • 0 / 10
  • Samiran Banerjee , June 5, 2022 @ 3:04 am

    আজকের করুণ বাস্তব। এখনই এই অসুখ সারাতে না পারলে ভবিষ্যতে একরাশ অন্ধকার। অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা আংশিক সমাধান, সার্বিক নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *