কৈশোরের মুজতবা আবিষ্কার

কৈশোরের মুজতবা আবিষ্কার

আমাদের কৈশোর কাল কেটেছে সত্তরের দশকে। সেই সময়কার বাংলা এখনকার থেকে অনেক আলাদা ছিল। তখন বাংলা ভাষার ও বাংলা মাধ্যম স্কুলের বেশ ভালো কদর ছিল। শিক্ষকরাও ছিলেন ছাত্রদরদী। শুধু পরীক্ষায় ভাল নম্বর নয়, তাদের সামগ্রিক বোধ যাতে পরিণত হয় সেদিকেও তাঁদের তীক্ষ্ণ নজর থাকতো।

এছাড়া জানিনা কতটা বিশ্বাসযোগ্য হবে, সেই সময় আমাদের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মফস্বলেও যথেষ্ট হিন্দু মুসলমান সম্প্রীতি ছিল। আমাদের বন্ধু বান্ধব বা স্কুলের সতীর্থদের মধ্যেও মুসলিম ধর্মাবলম্বী নেহাৎ কম ছিল না। এমনকি বিভিন্ন পরবে পাড়ায় তাদের বাড়িতে গিয়ে সিমাইয়ের পায়েস খাওয়ার বেশ চল ছিল। আমাদের ক্লাসের এক বন্ধু থাকতো কামালগাজিতে। আমরা কজন তার বাড়ি গিয়েছিলাম ইদের উৎসবে। বেশ ভালো খাওয়া দাওয়ার পর সে একটু ফিস ফিস করে বললো – ‘গরুর মাংস খাবি?’ আমরা সাহস করিনি। তবে আর কিছুদিন পরে কলেজে এসে নিজামের সেই বিখ্যাত ‘বিফ রোল’ খেয়ে আমাদের দীক্ষা হয়ে গেল।

কিন্তু তা সত্ত্বেও মুসলিম সাহিত্যিকদের লেখা আমরা তেমন পড়িনি। হ্যাঁ, কাজি নজরুল ছিলেন। কিন্তু বাকিরা? ছোটদের লেখাতে বন্দে আলি মিয়ার কবিতা থাকতো। আর পাঠ্যে ছিল এস ওয়াজেদ আলির – ‘ভারতবর্ষ’। তার বিখ্যাত সেই পংক্তি ছিল, প্রবাদের মত – ‘সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে’।

তখন ক্লাস এইট, ১৯৭৪ সাল। একদিন দুপুরে হঠাৎ ছুটি ঘোষণা হল – সৈয়দ মুজতবা আলী মারা গেছেন। তাঁর একটি স্মরণসভা হবে, তারপরে ছুটি।

সৈয়দ মুজতবা আলী

আমার বেশ অবাক লাগলো, তখনো আমি নাম শুনিনি। যাইহোক, স্যরদের কথা শোনা যাক। আমাদের বিভিন্ন বাংলার শিক্ষকেরা তাঁর নাম করে বিভিন্ন পুস্তকের নাম করলেন – কটি নাম গেঁথে গেল – দেশবিদেশে, পঞ্চতন্ত্র চাচা কাহিনি আর শবনম। সবাই তাঁর সম্পর্কে বলছিলেন ভাষায় তাঁর সবিশেষ দক্ষতা নিয়ে।

আমার সাহিত্যগুরু ছিলেন আমার কাকা। কাকার আবার অনেক লেখককে পছন্দ ছিল না। কিন্তু মুজতবার কথা জিজ্ঞেস করতেই উচ্ছ্বসিত – ‘ওরকম লেখক হাতে গোনা।’ কি দিয়ে শুরু করবো বলতেই ‘দেশে বিদেশে’র নাম। সৌভাগ্যক্রমে বাড়ীতে ছিল একট পুরনো সংস্করণ। ব্যস, আর পায় কে?

সত্যি বলছি, সেই ছোট বয়সেই বইটি পড়ে অভূত আনন্দ পেয়েছিলাম। বইটি রুদ্ধ্বশ্বাসে পড়ার মত নয়, বরং বেশ দুলকি চাল আস্তে পড়লেই বেশি ভাল লাগে। এ এমন এক ভ্রমণকাহিনি যার প্রত্যেক পাতায় পাতায় অন্যরকম স্বাদ। মুজতবার হাত ধরে সেই সফরের শুরু।

সত্যি কথা বলতে সেই বয়সে আমি খুব কতিপয় ভ্রমণকাহিনিই পড়েছি। তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য সুবোধকুমার চক্রবর্তী প্রণীত ‘রম্যাণী বীক্ষ’। কিন্তু ‘দেশে-বিদেশে’ একেবারে অন্যরকম। রম্যাণী-বীক্ষ তে সব ভ্রমণই ভারতের মধ্যে, সেখানে ছড়িয়ে থাকা ইতিহাস ও পুরাণের গল্প শুনিয়েছেন লেখক। কিন্তু এখানে একেবারে অন্যদেশে ভ্রমণ, তাও আবার ট্রেনে চড়ে। যে জায়গায় যাওয়া তাদের সঙ্গে ভারতের খুব যোগ ছিল, সেকথাও চলে আসবে পরে পরে। সেখানকার সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় মুসলিম। তাদের আতিথেয়তা ও সৌজন্যবোধ মুগ্ধ করেছিল মুজতবাকে। প্রথম যাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় তার নাম আব্দুর রহমান।

আফগানিস্তান বলতে আমাদের মনে তখন বিশেষ ভাবে রয়েছে কাবুলীওলার স্থান। রবিঠাকুরের ছোট গল্প পড়া এবং সেই অবলম্বনে তপন সিংহের সিনেমাটিও দেখা হয়ে গেছে। সেসময় আমাদের মফস্বলেও কাবুলিওয়ালারা নিয়মিত আসতো। তারা হিং বিক্রি করতো। তাদের দশাসই চেহারা আর পরনের অন্যরকম পোশাক ছোট ছেলেমেয়েদের মনে ভীতির উদ্রেক করতো। তাদের ভয় দেখানোর এই সুযোগ নিতে অভিভাবকরাও দ্বিধা করতেন না। দুষ্টুমি করলে কাবুলিওয়ালারা ধরে নিয়ে যাবে, এরকম ভয় দেখানোর রেওয়াজ ছিল। এছাড়া কাবুলীরা নাকি চড়া সুদে টাকা ধার দেয়, এ ধারণাও খুব প্রচলিত ছিল। রবিঠাকুরের নায়ক ব্যতিক্রম। পরে অবশ্য এই কাবুলিওয়ালা নিয়ে বিপদে পড়তে হয়েছিল স্বয়ং মুজতবাকেই, সেই আফগানিস্তানেই। ‘কাবুলিওয়ালা’ নাকি ভুল, হয় কাবুলী নয় কাবুলওয়ালা। যাহোক, সে যাত্রা কোনক্রমে তিনি বাঁচিয়েছিলেন তাঁর গুরুকে।

কাবুলীওয়ালা চলচ্চিত্রে নামভূমিকায় ছবি বিশ্বাস

সে যাই হোক, “দেশে-বিদেশে” তেই ফেরা যাক! প্রথম বাক্যটিই এত মনোমুগ্ধকর –

‘চাঁদনী থেকে ন’সিকে দিয়ে একটা শর্ট কিনে নিয়েছিলুম।”

অর্থাৎ একেবারে আন্তরিক আলাপ পাঠকের সঙ্গে। “দেশে – বিদেশে” – গ্রন্থের নাম, আর শুরুতেই কিনা চাঁদনী থেকে শর্ট (শার্ট) কেনার গল্প? মানে একেবারে পাঠককে যেন হাত ধরে তাঁর যাত্রার সঙ্গী করে নিলেন। এমনই সে ভঙ্গী যে এক চতুর্দশবয়স্ক বালকও নির্দ্বিধায় তাঁর হাত ধরে গাড়ীতে উঠে পড়লো।

সেই রেল গাড়ীতেই এক সায়েবের সঙ্গে আলাপ। প্রাথমিক কিছু গল্পগুজবের পর সেই খাবার প্রসঙ্গ। লেখকের কিনে আনা খাবার আর সাহেবের প্রেমিকার রান্না করে দেওয়া খাবারের মধ্যে সাংঘাতিক মিল! দুজনেরই চক্ষু চড়ক গাছ। ছোট্ট মজার ঘটনা বালক পাঠকের মনেও দাগ কাটে – নাঃ, বেশি শক্ত ব্যাপার নেই। মেশ মজা আছে।

তবে বই জুড়ে ছড়িয়ে আছে পাণ্ডিত্যের সমাহার। ‘মডলিন’ শব্দ, ইংরেজি ভাষাতত্ত্বের বই – মরুকগে সেসব নিয়ে অত ভাবার দরকার নেই। গাড়ী ছুটছে, পালটে যাচ্ছে পাশের ভূখণ্ড। গাড়ীতে সহযাত্রীদের মধ্যে পাঠান আর শিখদের লম্বা চওড়া বপু নিয়ে নড়াচড়া দেখা যাচ্ছে। ভাষাও পালটে গেছে, হিন্দীর বদলে শিখদের পাঞ্জাবী আর পাঠানের উর্দু শোনা যাচ্ছে। দাড়ির বাহার দেখা যাচ্ছে। লেখকের দাড়ি নিয়ে বিভিন্ন গল্প মনে পড়ে যাচ্ছে।

পেশওয়ার স্টেশনে কিকরে তাঁকে চেনা যাবে সেই প্রসঙ্গে এসে গেল ‘শিলওয়ার’ শব্দটি। মনে পড়ে বেশ চমৎকৃত করেছিল কথাটি। শালওয়ার কমিজ তখন কেউ কেউ পরতেন, বিশেষতঃ অবাঙালীরা। তারই আসল নাম শিলওয়ার বুঝি? তা হবে। সেই ধরেই এগুতে থাকলাম। লেখকের মজার প্রশ্নও ছিল – শিলওয়ার বানাতে কত কাপড় লাগে? সর্দারজীর উত্তরখানা ছল জবরদস্ত – “‘দিল্লীতে সাড়ে তিন, জলন্ধরে সাড়ে চার, লাহোরে সাড়ে পাঁচ, লালামুসায় সাড়ে ছয়, রাওলপিণ্ডিতে সাড়ে সাত, তারপর পেশাওয়ারে এক লম্ফে সাড়ে দশ, খাস পাঠানমুল্লুক কোহাট খাইবারে পুরো থান

সর্বনাশ! তারপর চমকপ্রদ ভঙ্গীতে শিলওয়ার বানানোর কাহিনি জানা যায়। ছোকরা পাঠান নাকি বিয়ের সময় বিশগজী থান পায় শ্বশুরের কাছ থেকে। সেটিকে সে খুব কায়দা করে ভাঁজ করে পরে, এরপরে বাইরের অংশ ছিঁড়তে শুরু করলে সেটিকে সযত্নে বাদ দিয়ে ভিতরের অংশ বাইরে আসে। এভাবে জীবন কাটিয়ে দেয়, মরার সময়ে ছেলেকে দিয়ে যায়, ছেলেও চালায় – যদ্দিন না সে তার শ্বশুরের কাছ থেকে নতুন বিশগজী না পাচ্ছে।

তাজ্জব লেখক সন্দেহ প্রকাশ করেন, জিজ্ঞেস করেন এতে কতটা দুধ আর কতটা জল! সর্দারজী হেসে উত্তর দেন – ‘গভীর বনে রাজপুত্তরের সঙ্গে বাঘের দেখা বাঘ বললে, ‘তোমাকে আমি খাব এ হ’ল গল্প, তাই বলে বাঘ মানুষ খায় সেও কি মিথ্যে কথা?

পড়তে পড়তে মনে হয়, এই কথাগুলি কি তার সহযাত্রীদের না এর রচয়িতা স্বয়ং লেখক?

আর সারাক্ষণই আছে বিভিন্ন ভাষার অনবদ্য মিশ্রিত প্রয়োগ। বাংলার সঙ্গে উর্দু, পশতু, ইংরেজি, জার্মান মিলেমিশে একাকার – কিন্তু এমন স্বচ্ছন্দ, গতিময়, অনায়াস, মজলিসী ধাঁচের লেখা – কখনো তা দুর্বোধ্য লাগেনা। কোন শব্দ অপরিচিত লাগলে পাশ কাটানো যায়, কারণ ততক্ষণে জানা হয়ে গেছে পরেই নতুন কিছু মজাদার জিনিষ আসছে। এ যেন পাঠক নেমন্তন্ন খেতে বসে গেছেন বিয়ে বাড়িতে, ভুরিভোজের পুরো ব্যবস্থা। লুচি, বেগুনভাজার মোহে না পড়লেও চলে, পরে মাছ, মাংস আছে। আরো আছে হরেক রকম মিষ্টি। যে যার মত বেছে নিলেই চলে।

যেমন ওমর খৈয়ামের নেশার গল্প – রুবাইয়াৎ লিখতে লিখতে রাত কাবার। সুঁড়ির কাছে গিয়ে দেখলেন মদ শেষ। সুঁড়িও বিব্রত! কবিই শেষরক্ষা করলেন, পড়ে থাকা পেয়ালা চাইলেন। সুঁড়ি তো অবাক! ‘ওমর বললেন, পরোয়া নদারদ, ঐ যে সব এটো পেয়ালাগুলো গড়াগড়ি যাচ্ছে সেগুলো ধুয়ে তাই দাও দিকিনি–নেশার জিম্মাদারি আমার।’ এ যেন একেবারে পুষ্পবনে পুষ্পনাহি আছে অন্তরে!

তবে রসিক জনের জন্য উপচার অনেক বেশী। খাদ্যরসিক যেমন প্রত্যেক খাদ্যের সমাদর করতে পারে, তারিফ করতে পারে রান্নার বা অতিথিপরায়ণতার, “দেশে-বিদেশে” তেও মেধাবী এবং আগ্রহী পাঠকের পক্ষে তা সম্ভব। সাধারণ পাঠক এড়িয়ে চলতে পারেন, অথচ অত্যুৎসাহী পাঠক খোঁজ পাবেন বিচিত্র সম্ভারের। যেমন এক জায়গায় বলছেন, বোখারা সমরখন্দের কথা, সামোভারের কথা, পুস্তীনের কথা। খুবই অপরিচিত শব্দ গুলি, বিশেষ করে কিশোর পাঠকের কাছে। কিন্তু সে আশ্চর্য হয় যখন সরস ব্যাখ্যা থাকে – জানা যায় সামোভার হচ্ছে রাশান ধাতুর পাত্র, যাতে জল রেখে গরম করা যায়। আবার কথায় কথায়  এসে যায় চিনা মিঙ বংশের কথা।

ধরা যাক, দুই বন্ধু একই সঙ্গে বইটি পড়েছেন। দুজনের উপভোগের ধারা হতে পারে ভিন্ন। মুজতবা সেই সুযোগ রেখেছেন। এক বন্ধু সুখপাঠ্য গদ্য পড়ে চমৎকৃত হতে পারে, তার মানসভ্রমণও হয়ে যেতে পারে মুজতবার সঙ্গে সুদূর কাবুলের রাস্তায় রাস্তায়। অন্য আগ্রহী, উৎসাহী বন্ধুটি কিন্তু সামোভার, মিঙ বংশ, বোখারা সমরখন্দ নিয়ে পড়াশুনো করে ফেলতে পারে।

আমার কাকা বিকাশ বসু ছিলেন আমার আরো এক সাহিত্যগুরু। তিনি মুজতবার এই বিশেষ গুণটিকে বলতেন ‘সরস পাণ্ডিত্য’। আর এক শ্রদ্ধেয় মানুষ এরকম শিক্ষককে তুলনা করেছিলেন সিনেমা হলের ‘Usher’ এর সঙ্গে। যে আলো দেখিয়ে সিনেমা হলের সিটে নিয়ে গিয়ে বসায়। তার দায়িত্ব এই পর্যন্ত। এর পরে সিনেমা দেখা ও তার রসাস্বাদন কিন্তু দর্শকের নিজের দায়িত্ব।

তবে এর মধ্যেও তিনি আমাদের কাছে টেনে এনেছিলেন পাঠানের আন্তরিকতাকে। ‘দেশে – বিদেশে’র সবচেয়ে মর্মস্পর্শী চরিত্র ‘আব্দুর রহমান’কে।

মুজতবার বাবুর্চি ছিল আব্দুর রহমান। সে যেন একটি নরদানব। উচ্চতায় ছ ফুট চার ইঞ্চি, বেড়ও সেইরকম। যেটা সবচেয়ে বেশী মনে ধরছিল, তা হল হাতের বিবরণ।

“দুখানা হাত হাঁটু পর্যন্ত নেবে এসে আঙুলগুলো দু’কাঁদি মর্তমান কলা হয়ে ঝুলছে।” অকল্পনীয় বিবরণ। ‘দেশে – বিদেশে’ প্রথম পাঠের স্মৃতি হিসেবে আজও এগুলি উজ্জ্বল।

আসলে এই ভ্রমণ কাহিনিতে থরে থরে সাজানো আছে রত্নসম্ভার – ভ্রমণ, প্রতিবেশী, ইতিহাস, ভূগোল, প্রকৃতি, ধর্ম, স্থাপত্য, কাব্যকলা, প্রত্নতত্ত্ব। হেন বস্তু নেই যাঁর ওপর মুজতবার স্পর্শ পড়েনি। আর পড়েছে এমনভাবে যা কোন আগ্রহী পাঠককে সেই জ্ঞান সাম্রাজ্যের দ্বার অবধি নিয়ে যেতে পারে। ঠিক যেন সেই সিনেমার টর্চওয়ালার মত। পরের পথটুকু তাকেই পার হতে হবে। তবে ‘দুয়ারটুকু পার হতে’ যদি কারো সংশয় থাকে তারও বিশেষ ক্ষতি নেই। ‘কোন অচেনা কুসুমের গন্ধে, কী গোপন আনন্দে’ শুধু পাঠের আনন্দেই তার মন মাতোয়ারা হতে পারে।

মনে হয় এই বইখানির প্রত্যেক অধ্যায়কে নিয়ে রচিত হতে পারে এক অনুপম বৃহদাকার প্রবন্ধ। আমাদের উদ্দেশ্য অবশ্য তা নয়, শুধু কৈশোর কালের সেই মধুর স্মৃতিকে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়াই এ লেখার মূল উদ্দেশ্য। তবে লিখতে গিয়ে আবার পড়তে পড়তে মনে হল, এখন আরো বেশি নিবিড়, বিস্তারিত, সাগ্রহী পাঠের আরো প্রয়োজন। ‘মৌক্তিকং ন গজে গজে’ – এই প্রবাদ এই বইখানি সম্বন্ধে আদৌ প্রযোজ্য নয়।

লেখা শেষ করে মনে পড়ে গেল আজ মহালয়া, পিতৃতর্পণের দিন। সেই প্রচলিত মুজতবার গল্পটিও মনে পড়ে যায়। এক মহালয়ার দিন এক দরিদ্র সন্তানকে তার পিতৃতর্পণে সাহায্য করতে নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিলেন, নিজের পরিচয় গোপন করেই তাকে শুদ্ধ মন্ত্রোচ্চারণে তাঁর তর্পণ করিয়েছিলেন।

এই লেখাটি আমার সেই তর্পণ। এক সুরসিক, জ্ঞানপিপাসু, আন্তর্জাতিক বাঙালীকে যাঁদের অভাব আমরা আজ খুবই অনুভব করি।

জন্ম কলকাতায়, বেড়ে ওঠা দক্ষিণ চব্বিশ-পরগনার রাজপুর-সোনারপুর অঞ্চলে। ১৯৮৩ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেক্ট্রনিক্স ও টেলিকম্যুনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে কর্মসূত্রে ব্যাঙ্গালোরে। শখের মধ্যে অল্প-বিস্তর বাংলাতে লেখা - অল্প কিছু লেখা রবিবাসরীয় আনন্দবাজার, উনিশ-কুড়ি, নির্ণয়, দেশ, ইত্যাদি পত্রিকায় এবং বিভিন্ন ওয়েব ম্যাগাজিন (সৃষ্টি, অবসর, অন্যদেশ, পরবাস ইত্যাদিতে) প্রকাশিত। সম্প্রতি নিজের একটি ব্লগ চালু করেছেন – www.bhaskarbose.com

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *