নতুন ‘অবসর’ পথচলার শুরুতেই এক আকস্মিক আঘাত পেল। ‘অবসর’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শ্রী সুমিত রায় ‘পেয়েছি ছুটি, বিদায় দেহ’ বলে গত ২৬শে মে যাত্রা করলেন অমৃতলোকে।
‘অবসর’ পত্রিকার জন্মলগ্ন থেকেই তিনি পত্রিকার সঙ্গে জড়িত। এখনকার যারা লেখক বা সম্পাদক, তাদের অনেককেই তিনি হাতে ধরে নিয়ে এসেছেন। তাঁর নিজের লেখাতেই আমরা জেনেছি কত ঘাম ঝরিয়ে তিনি ও শ্রী সুজন দাশগুপ্ত পত্রিকাটির জন্ম দিয়েছেন ও লালন-পালন করেছেন। সুমিত রায় মোটামুটি পরিচিত ছিলেন জনসমাজে। কলকাতায়ও তাঁর অন্য একটি পরিচয় ছিল, তাঁর পিতা বাংলা বিনোদন জগতের বিখ্যাত অভিনেতা শ্রী বিকাশ রায়। সম্ভবতঃ সে কারণে অন্তর্জালে সুমিত রায় সম্পর্কে নানান ভুল তথ্য আমাদের চোখে পড়েছে। নীচে তাঁর বিগত চার দশকের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী সুজন দাশগুপের নিকট হতে প্রাপ্ত সংক্ষিপ্ত জীবনী আমরা দিলাম –
সুমিত রায় (ডিসেম্বর ১০, ১৯৪০ – মে ২৬, ২০২১)
ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশুনো শিবপুরের বি ই কলেজ-এ। ১৯৬০ সালের স্নাতক। ১৯৬৪-তে মার্কিন মুলুকে আসেন। ইলিনয় ইনস্টিট্যুট অফ টেকনোলজি থেকে পিএইচ ডি ডিগ্রি পান ১৯৭০ সালে। কর্মজীবনের প্রায় পুরোটাই কেটেছে বিশ্ববিখ্যাত বেল ল্যাবে – প্রথমে শিকাগো অঞ্চলে ইন্ডিয়ান হিলস ল্যাবে, পরে নিউ জার্সিতে। কাজ করেছেন ইলেকট্রনিক সুইচিং এবং সেলুলার (মোবাইল) সিস্টেম নিয়ে। এর বাইরে সাহিত্য ও সঙ্গীত অনুরাগী সুমিত অভিবাসী বাঙালিদের নানান সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। রবীন্দ্রসঙ্গীতের একটি বাংলা এনসাইক্লোপেডিক সাইট ‘গীতবিতান.নেট’ ওঁর স্মরণীয় সৃষ্টি। ‘অবসর’ ওয়েবসাইটের অন্যতম প্রধান কাণ্ডারি।
এই সংখ্যাটিতে তাঁর অনুরাগীরা অকুন্ঠভাবে লিখেছেন সুমিতবাবুকে নিয়ে তাঁদের সোনালি স্মৃতির কথা। উজাড় করেছেন তাদের নিজস্ব গোপন কৌটো। আমরা মুগ্ধ হয়ে দেখেছি কীভাবে তাঁর ‘পরশরাগে’ নানাজনের ‘চিত্ত হল রঞ্জিত।’ সেই ‘প্রাণে সঞ্চিত’ মিলনসুধার রসের ধারায় সিক্ত আমাদের স্মরণিকা – ‘সুমিতেষু’। তাঁর আশীর্বাণী হয়ে থাক আমাদের ভবিষ্যতের পাথেয়। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব তাঁর প্রদর্শিত পথেই ‘অবসর’কে নিয়ে যেতে।