হাইপেশিয়া

হাইপেশিয়া

 

হাইপেশিয়া - শিল্পী লেখকগ্রিক দার্শনিক, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, এবং গণিতজ্ঞ হাইপেশিয়ার জন্ম আনুমানিক ৩৫৫ সালে,  মিশরের আলেকজান্ড্রিয়া শহরে।। হাইপেশিয়ার জীবৎকালে আলেকজান্ড্রিয়া ছিল অশান্ত, অস্থির মেডিটেরিয়ান সাগরের পাশেই অবস্থিত এই শহরটির প্রাকৃতিক রূপ ছিল অনবদ্য খ্রিস্টান, পাগান, আর ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের সমাহার ছিল সেইসময় সংস্কৃতমনস্ক এবং বুদ্ধিজীবী মানুষজনে সমৃদ্ধ আলেকজান্ড্রিয়া তখন বিজ্ঞানের পীঠস্থান

হাইপেশিয়ার পিতা থীয়ন ছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং গণিতে অত্যন্ত পারদর্শী প্রখর বুদ্ধিমতী কন্যাকে অসীম স্নেহে তাঁর সবকিছু উজাড় করে তিনি শিক্ষা প্রদান করেন হাইপেশিয়ার মাতা সম্পর্কে তেমন কিছু জানা না গেলেও, কন্যার শিক্ষাদানে যে তাঁর সম্যক সম্মতি ছিল, সে সম্পর্কে কিছু পুঁথিগত তথ্য পাওয়া যায় সেইসময় মিশরে মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদের অক্ষরজ্ঞান বা কিছু প্রাথমিক শিক্ষাদানের চল ছিল কিন্ত্তু উন্নতমানের শিক্ষাদীক্ষা মূলতঃ ধনী পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল থীয়নের প্রতিষ্ঠা আর খ্যাতির জন্য শিক্ষাগ্রহণ ছিল হাইপেশিয়ার জীবনে অনায়াস এবং স্বাভাবিক

কৈশোরের সূচনাতেই হাইপেশিয়া ব্যাকরণে সবিশেষ প্রশিক্ষণ পান এই প্রশিক্ষণ তাঁকে শুধু সাহিত্যে সমৃদ্ধ করে তাই নয়, বাগ্মিতা এবং বিতর্কেও যথেষ্ট পটু করে তোলে, যা পরবর্তীকালে তাঁকে শিক্ষাদানে প্রভূত সাহায্য করে অতি অল্প বয়সেই হাইপেশিয়া দর্শনতত্ত্বেও জ্ঞানলাভ করেন সেইসময়ে দর্শনের ছাত্রছাত্রীদের প্লেটো এবং অ্যারিস্টটলের দর্শনতত্ত্ব ছাড়াও জ্যোতির্বিজ্ঞান, জ্যামিতি, গণিত নিয়েও পড়াশোনা করতে হত এই প্রশিক্ষণ ছিল গভীর এবং প্রগতিশীল ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণ শুরু হত গণিতবিদ্যায়; শেষ হত ধর্মীয় তত্ত্বে সেইসময় দর্শন ছিল মূলতঃ পাঠ ও আলোচনাভিত্তিক শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রীরা কোনও প্রখ্যাত দার্শনিকের তথ্যসমৃদ্ধ পুঁথি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়াশোনা করে সেই বিষয়ে বিস্তৃতভাবে আলোচনা করত এই দলগত শিক্ষা ছাত্রছাত্রীদের একটি পুঁথির সারাংশ বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে অনুধাবনে সাহায্য করত দর্শনে একনিষ্ঠ ছাত্রছাত্রীরা তাদের পূর্বসূরীদের তথ্য মৌখিক আদানপ্রদানে, ল্পের ছলে এবং আনুষ্ঠানিকভাবেও আয়ত্ত্ব করত পাঠ্যক্রমে অর্জিত দর্শনের বিমূর্ত তত্ত্বের চর্চা  ব্যবহারিক জীবনে তার প্রয়োগের প্রচেষ্টা চলত বিশেষভাবে

প্লেটোর মতাবলম্বী দার্শনিকেরা দর্শনতত্বের প্রাথমিক স্তরে গণিত দিয়ে শুরু করে ক্রমান্বয়ে অ্যারিস্টটল এবং প্লেটোর দর্শনতত্ত্বে শিক্ষার বিস্তার করতেন হাইপেশিয়ার শিক্ষাপ্রাপ্তিতেও এই ধারারই পরিচয় পাওয়া যায়। গণিতে হাইপেশিয়ার শিক্ষা ছিল মূলতঃ পিতৃদত্ত গণিতে পারদর্শী পিতা থীয়ন সহজাতভাবেই তাঁর কন্যাকে ছাত্রাবস্থায় গণিতবিদ্যায় জ্ঞানলাভে সবিশেষ জোর দিয়েছিলেন কিন্তু থীয়নের শিক্ষা ছিল মূলতঃ প্রণালীবদ্ধ সহজ, সরল উপপাদ্য থেকে শুরু করে টি গাণিতিক সমস্যার আঙিনায় বিচরণ করা হাইপেশিয়া এই তথাকথিত প্রণালীবদ্ধ শিক্ষায় বিশ্বাসী ছিলেন না গণিতবিদ্যা ছাড়াও ভাষায়, ব্যাকরণে এবং দর্শনেও তিনি অসম্ভব পারদর্শিতা অর্জন করেন খুব সম্ভবতঃ কৈশোরের শেষে বা যৌবনের প্রারম্ভেই তাঁর উচ্চস্তরের গণিতবিদ্যায় এবং দর্শনে শিক্ষাপ্রাপ্তি হয় কথিত আছে যে প্রখর বুদ্ধিমত্তা, একনিষ্ঠতা এবং একাগ্রতার গুণে হাইপেশিয়া জ্ঞানে এবং খ্যাতিতে তাঁর পিতাকে অতিক্রম করে যান উচ্চমানের শিক্ষাগ্রহণে তাঁর প্রবল আকাঙ্ক্ষা এবং প্রখর বুদ্ধিমত্তা জোরে হাইপেশিয়া থীয়নের পাঠাগারেরই ছাত্রী থেকে সহকর্মীর পদমর্যাদায় উন্নীত হন

হাইপেশিয়ার পূর্বসূরি আলেকজান্ড্রিয়ার গণিতজ্ঞ ডায়োফ্যান্টাস (Diophantus) তৃতীয় শতাব্দীতে   অ্যারিথমেটিকা (Arithmatica) নামে বীজগণিতের ওপর অনেকগুলি বই লেখেন, যা এখন লুপ্তপ্রায়।  জ্যোতির্বিজ্ঞানী হাইপেশিয়ার মূল কাজ থেকে কাজ অনেকটা পৃথক হওয়া সত্ত্বেও হাইপেশিয়া ডায়োফ্যান্টাসের বীজগণিতের ওপর কমেন্টারি লেখেন। একসময় বিশ্বাস করা হত হাইপেশিয়ার কমেন্টারির জন্যেই গ্রিক ও আরবি ভাষায় ডায়োফ্যান্টাসের কাজের কিছু নিদর্শন পাওয়া যায়। তবে এই তত্ত্বটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

তৃতীয় শতাব্দীতেই গ্রিসদেশের পাৰ্গা (Perga) শহরের জ্যামিতি ও জ্যোতির্বিজ্ঞান বিশারদ অ্যাপোলোনিয়াস (Apollonius) শঙ্কুর দ্বিমাত্রিক ভাগ বা কনিক সেকশনের (Conic section) ওপর অত্যন্ত টি গবেষণা করেন, যা অ্যাপোলোনিয়াসের অসাধার জ্ঞানের উদাহরণ হাইপেশিয়া অ্যাপোলোনিয়াসের কাজের ওপরেও সুচিন্তিত, বিস্তৃত মতামত লেখেন যার নিদর্শন এখন প্রায় লুপ্ত থীয়ন এবং হাইপেশিয়ার যৌথ কর্মধারার পরিচয় পাওয়া এখন দুর্লভ; তবে টলেমি (Ptolemy) হ্যান্ডি টেবল্স (Handy Tables), যা জ্যোতির্বিঙ্জ্ঞানে টলেমি লেখা প্রখ্যাত অ্যালগামাস্টে (Almagest) অন্তর্ভুক্ততার পর্যালোচনা থীয়ন যে তাঁর কন্যার সঙ্গে করেন – তার উদাহরণ কিছু লিপিবদ্ধ আছে এই হ্যান্ডি টেবলেরই দুটি অংশ থীয়নও তাঁর নিজস্ব মতামত দিয়ে মূল্যায়ন করেন প্রথম অংশটি প্রকাশিত হয় একটি ছোট সূচনামূলক পাঠ্য হিসেবে দ্বিতীয় অংশটি পাঁচটি বইয়ের সংগ্রহ হিসাবে প্রকাশিত হয় সম্ভবতঃ হাইপেশিয়ার মূল্যবান মতামত থীয়নকে এই কাজে সাহায্য করে হাইপেশিয়া আরেকটি প্রকল্পেও তাঁর সুচিন্তিত মতামত দিয়ে থীয়নকে সবিশেষ সহায়তা করেন। টলেমি অ্যালগামাস্টের ওপর থীয়নের পর্যালোচনা থীয়ন তেরোটি পুঁথিতে লিপিবদ্ধ করেন। তিন নম্বর পুঁথিতে থীয়ন তাঁর কন্যার অবদানের কথা উল্লেখ করেন:  Commentary by Theon of Alexandria on Book Three of Ptolemy’s Almagest, an edition revised by my daughter Hypatia, the philosopher. একথা অনস্বীকার্য যে থীয়নের ৩ – ১৩ নম্বর বইয়ের ওপর হাইপেশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ পর্যালোচনা অত্যন্ত গভীর জ্ঞান এবং দক্ষতা না থাকলে করা সহজসাধ্য নয়

থীয়ন খুব সম্ভবতঃ গণিতবিদ্যাকে দর্শনের থেকেও বেশী প্রাধান্য দেন। কিন্তু পন্ডিতেরা মনে করেন হাইপেশিয়া থীয়নের সঙ্গে এবিষয়ে একমত ছিলেন না। দর্শনে তাঁর জ্ঞানের পরিধি ছিল অসীমকথিত আছে যে দর্শনতত্ত্বে জ্ঞানার্জনে এবং শিক্ষাদানে হাইপেশিয়া থীয়নকে অতিক্রম করে যান। গণিতেও তিনি যারপনারই আগ্রহী এবং পারদর্শী ছিলেনগণিতের জটিল সমস্যা এবং তার সমাধান প্রক্রিয়া তাঁকে মুগ্দ্ধ করত। গণিতের প্রণালীবদ্ধ প্রশিক্ষণকে অতিক্রম করে দর্শনের বিমূর্ত আঙিনায় ছিল তাঁর বিচরণ। পন্ডিত ডামাসকিয়াসের (Damascius) মতে হাইপেশিয়া গণিতকে অবহেলা করেননিপরিবর্ত্তে গাণিতিক পদক্ষেপেই দর্শনের বিশ্লেষণ সম্ভব; দর্শন-গণিতের যুগলবন্দীই হলো উৎকৃষ্ট পথ – এমনই ধারণা মনে পোষণ করতেন তিনি

আলেকজান্ড্রিয়ার সেইসময়ে সম্ভবতঃ সবথেকে খ্যাতিমান এবং প্রথিতযশা গণিতজ্ঞ থীয়নের সেরা ছাত্রী ছিলেন তাঁরই কন্যা হাইপেশিয়া। তিরিশ বছর বয়েসের আগেই হাইপেশিয়া আলেকজান্ড্রিয়ায় বুদ্ধিজীবী হিসেবে প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেন। গণিতজ্ঞ পাপ্পুস্ (Pappus) আর থীয়নের গাণিতিক প্রণালীর সঙ্গে দার্শনিক প্লোটিনাস (Plotinus) এবং পোরফিরির (Porphyry) নিওপ্লেটোনিজমের মিশ্রণে হাইপেশিয়ার ছাত্রছাত্রীরা আলোকিত হয়একথা অনস্বীকার্য যে হাইপেশিয়ার গণিত সংমিশ্রিত দর্শনতত্ত্বের মৌলিকতা এবং তাঁর অনন্য শিক্ষাধারার আবেদন ছাত্রছাত্রীদের কাছে ছিল তীব্র, তার আকর্ষণ ছিল অপ্রতিরোধ্য, অদম্য। যেসব ছাত্রছাত্রীরা গভীর দর্শনতত্ত্বের পিপাসু ছিল, তারা হাইপেশিয়ার ভ্যন্তরীণ বৃত্তে বিরাজ করত। এরা গণিতের জটিল প্রশ্ন থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞান, অ্যারিস্টটলের লজিক, প্লেটোর ধর্মতত্ত্ব – এ সব কিছুই গভীর অনুসন্ধিৎসা নিয়ে মনোনিবেশ সহকারে কঠোর অধ্যবসায়ে আত্মস্থ করত। অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের অবস্থান ছিল বৃহত্তর পরিধিতে এরা মূলতঃ গণিতে পারদর্শিতা অর্জন করত। দর্শনের গভীর তাত্ত্বিক আলোচনায় আগ্রহী ছিল না

হাইপেশিয়ার উচ্চমানের দর্শনতত্ত্ব শুধু শিক্ষার আদানপ্রদানেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নিজস্ব জীবনেও তা অনুশীলন করতেন। বিশ্বাস করতেন দার্শনিক প্রেমে, বিমূর্ত প্রেমে – যে প্রেম পার্থিব বা বস্তুবাদী নয়, যে প্রেম শরীরতত্ত্বে বাঁধা যায় না। হাইপেশিয়ার সৌন্দর্য্যখ্যাতি ছিল সূদুরপ্রসারী। তাঁর ছাত্রদের মধ্যে অনেকেই তাঁর প্রতি আকৃষ্ট ছিল। কথিত আছে যে তাঁর এক প্রিয় ছাত্র তাঁকে প্রেম নিবেদন করলে, হাইপেশিয়া তাঁর ছাত্রকে বোঝান, যে প্রেমের জন্য সে ব্যাকুল, তা শুধুই দৈহিক। বুঝিয়ে দেন যে বস্ত্তুবাদী পার্থিব পরিধির সীমানা অতিক্রম করে দার্শনিক বিমূর্ততাতেই প্রেমের অধিষ্ঠান। তাঁর ছাত্রছাত্রীদের কাছে হাইপেশিয়া ছিলেন মাতৃসুলভ এই বন্ধন ছিল আদর্শমূলক, যে বন্ধন দেহাবসানেও থেকে যায় অটুট, অনড়, অবিচল

হাইপেশিয়ার দর্শনতত্ত্বের মূল ভিত্তি ছিল নিওপ্লেটোনিজম্ (Neoplatonism)নিওপ্লেটোনিজমের জন্মদাতা মূলতঃ তৃতীয় শতকের প্লোটিনাস্ (Plotinus, 204 to 370 CE) এবং পোরফিরি (Porphyry, 232 or 234 to 305)নিওপ্লেটোনিজমের চর্চার মূল বিষয় ছিল কী কী পদ্ধতিতে বা প্রক্রিয়ায় আত্মার অমর, অজাগতিক জগত থেকে পার্থিব জগতে আগমন ঘটে এবং আবারও আত্মা বিমূর্ততায় প্রত্যাগমন করে। প্লোটিনাসের মতানুসারে সবকিছুরই সৃষ্টি একম্ থেকে। একমের অবস্থান সর্বোচ্চ স্তরে যা মানুষ বাস্তবে উপলব্ধি করতে পারে। একমের থেকে উৎপত্তি হয় বোধের; এই বোধই পার্থিব জগত সংগঠিত করেবোধের পরবর্তী স্তরে হয় আত্মার বিকাশ। আত্মাই জন্ম দেয় জাগতিক পৃথিবীরপোরফিরি প্লোটিনাসের দর্শনতত্ত্বের বিস্তার করেন এবং ব্যবহারিক জীবনে এই দর্শনতত্ত্বের প্রচারে যত্নশীল হন। পোরফিরির মতে একম্ হচ্ছে সৃষ্টিকর্ত্তা ঈশ্বর। হাইপেশিয়া এই দুই দার্শনিকের দ্বারা অত্যন্তই প্রভাবিত হন এবং প্রধানত এঁদের দর্শনতত্ত্বই তাঁর শিক্ষকতার মাধ্যমে প্রচার করেন। গাণিতিক পদক্ষেপে তাঁর শিক্ষাদানের সূচনা হয়ে নিওপ্লেটোনিজমের দর্শনতত্ত্বে তা সমাপ্তি পায়

এই প্রখ্যাত দার্শনিক এবং অনন্য শিক্ষিকা, যাঁর কাছে শিক্ষালাভের অন্বেষণে দূরদূরান্ত থেকে মানুষজন আসতেন, ৪১৫ সাল নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয় অত্যন্ত নৃশংষভাবেতাঁর মৃত্যু নিয়ে আলোচনা এই লেখার বিষয় নয়; পৃথিবীতে আমাদের মনোজগতে বরং চিরন্তন হয়ে থাকুক এই বিদূষী নারীর অসামান্য অবদান – তাঁর দর্শন, তাঁর সৃষ্টি এবং তাঁর কৃতি। 

অঙ্কের প্রফেসর এবং গবেষক, নিউ ইয়র্ক সিটি কলেজ অফ্ টেকনলজি, সিটি ইউনিভার্সিটি অফ্ নিউইয়র্ক। সমাজ সচেতন এবং মানবতাবাদী। অবসর সময়ে লেখালেখি, আঁকাআঁকি, এবং শিল্পচর্চা করতে ভালোবাসেন। প্রবন্ধ, ভ্রমণ কাহিনী, ছোট গল্প, কবিতা, ছোটদের গল্প – এসব কিছু ইদানীংকালে প্রকাশিত হয়েছে।

1 Comment

Avarage Rating:
  • 0 / 10
  • Utpal Sengupta , April 8, 2022 @ 9:00 pm

    খুব খুশী হলাম অবসরে প্রকাশিত হয়েছে দেখে l আরো এ রকম দেখতে চাই l – উৎপল দা l

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *