ক্ষুধিতপাষাণ পুরী ও মাণ্ডু
অভিজিত চ্যাটার্জী
ধন-যৌবন হলো ক্ষণস্থায়ী!গর্বের স্থায়িত্ব ও ক্ষণস্থায়ী!
মাণ্ডু হলো একটা অভিজ্ঞতা।প্রকৃতির উদাত্ত সৌন্দর্য আর মাধুর্য মিশে গিয়েছে ইতিহাসের স্মৃতির সাথে, একসময়ের সদ্যব্যস্ত ঘটনাবহুল নগরীর পরিত্যক্ত ও মৃত নগরীতে পরিণত হয়ে যাওয়া আর বাজবাহাদুর-রূপমতীর রোমান্সের করুণ পরিণতি-তাই তো মাণ্ডুর ইতিহাসের অনবদ্যতা অনুভব করতে হয়।উপভোগ করতে হয় নিজের মনন দিয়ে।
ভোরের আলোয় আপনি যখন রূপমতী মহলে এসে বসবেন,পুবের আকাশ তখন সবে লাল হচ্ছে, শুনতে পাবেন তানপুরা আর সারেঙ্গির সাথে ভৈরবীর আলাপ! সেকি, রূপমতীর কণ্ঠ!
১৫৫৪ সালে মালওয়ার সুলতান সুজাত খানের মৃত্যু হলে,১৫৫৫ সালে সুলতান হলেন বায়াজীদ খান,নাম হলো বাজবাহাদুর,শিকারে গিয়ে রূপমতীর গান শুনে সুলতান পড়লেন রূপমতীর প্রেমে, কিন্তু রূপমতী শর্ত দিলেন, তিনি সুলতানের সাথে যাবেন বটে কিন্তু যেখানে যাবেন সেখান এ তাঁর নর্মদা নদী চাই, রাতারাতি সুলতান গড়ে তুললেন রেবা কুণ্ড, নর্মদা নদীর জল এসে মিশল সেই কুণ্ডে, গড়ে তুললেন 'রূপমতী মহল' - আগে যা নাকি ছিল সৈন্যাবাস।
প্রতিদিন, ভোরে সূর্য ওঠার আগে,মহলের সামনে নিমারের উপত্যকা যখন ভারী হয়ে থাকতো ভোরের গায়ের মৃদু সুগন্ধে,পাখিদের ডাক আর ভোরের গন্ধ মাখামাখি হয়ে এক স্বপ্নিল দৃশ্য তৈরি করতো, রূপমতী যেতেন সখী পরিবৃত হয়ে রেবা কুণ্ডে! ছিপছিপে শরীর আর বাঁধ না মানা চুল,কর্পূর-জাফরান-আতর এর খুশবু মাতাল করে তুলত আফগান নবাব বাজবাহাদুরের খুদাতালার তখত।
রাজকার্যের থেকে সুলতান বাজবাহাদুর পছন্দ করতেন সংগীত, নাচ ও জানতেন , গান-নাচ ,আমোদ-প্রমোদ এ ভেসে গেলেন দুজনে 'প্রেমের ও জোয়ারে'! তাকিয়ায় হেলান দিয়ে, আলবোলার সুবানি তামাকের গন্ধ আর লাজুক রুপমতীর লাজুক দৃষ্টি ও তার সাথে মেঘমল্লার এর আলাপ, জাহাজমহল যেন তখন মেঘযান -আকাশে উড়ে চলেছে।
কিন্তু সকলের অজ্ঞাতসারে মালোয়ার সুলতানিতে ঘনিয়ে এলো অন্ধকার! ১৫৬১ সালে শাহেনশা আকবরের সেনাবাহিনী আক্রমণ করল মাণ্ডু, আধম খাঁ ও পীর মোহম্মদের সেনাপতিত্বে।
বাজবাহাদুর চললেন যুদ্ধক্ষেত্রে-যে হাতে তানপুরা ওঠে, সেই হাতে কি তরবারি ধরা যায়, সারংপুরের কাছে ওই যুদ্ধে, গো-হারান হারলেন বাজবাহাদুর, ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলো সুলতান বাজবাহাদুরের সৈন্য-বাহিনী। বাজবাহাদুর যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে পালিয়ে গেলেন, অরক্ষিত মাণ্ডুতে পড়ে রইলো তাঁর রাজ্যপাট, ধনরত্ন, হারেম আর তাঁর 'The Lady Of Lotus '- পদ্মবালা-রূপমতী।
যুদ্ধ এর হারের খবর আসার সাথে সাথে মাণ্ডুতে ঘটে গেলো এক নৃশংস ঘটনা, যুদ্ধে যাবার আগে বাজবাহাদুরের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দয় হত্যালীলা শুরু হয়ে যায় মাণ্ডুতে -সুলতানের হারেমে চলে সেই হত্যাকাণ্ড! বাজবাহাদুরের সম্মানের কাছে কয়েকশো স্ত্রীলোকের জীবনের মূল্য আর কতটুকুই বা হতে পারে! নবাবের ' ইজ্জত' এর দাম দিতে হবে না!রেহাই পান নি রূপমতী স্বয়ং, প্রাণে মরলেন না রূপমতী, আহত রূপমতী পালিয়ে গেলেন মাণ্ডু ছেড়ে তাঁর ভাইদের কাছে।
মাণ্ডুর প্রাসাদে পৌঁছে বিজয়ী আধম খাঁ খুঁজে পেলেন না রূপমতীকে, জানতে পারলেন রূপমতী চলে গেছেন ধরমপুরীতে তাঁর ভাইদের কাছ , ছুটে চললেন আধম খাঁ ধরমপুরীর দিকে,রূপমতীর খোঁজে, বাধা দিলেন রূপমতীর ভাইয়েরা, মৃত্যু ঘটলো তাঁদের, আধম খাঁ র হাতে। সুস্থ করে তুললেন রূপমতী কে, প্রেম প্রার্থনা করলেন আধম খাঁ রূপমতীর কাছে।
আধম খাঁ র হাতে পরাজিত হয়েছেন তাঁর প্রেমিক বাজবাহাদুর, যে ছিল তাঁর চোখের মনি, এই আধম খাঁ র হাতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর ভাইদের,
কী করে তিনি আধম খাঁ র প্রেম নিবেদন মেনে নিতে পারেন।
আধম খাঁ কে বললেন, 'আমাকে পাওয়ার আশা কোন দিনও পুরবে না আপনার', বললেন বটে কিন্তু বুঝতে পারছিলেন পালাবার আর কোনও পথ খোলা নেই তাঁর কাছে, কোনও উপায় নেই আধম খাঁ-র অঙ্কশায়িনী হওয়া রোধ করার।
দিন যায়, উতলা হয়ে ওঠেন আধম খাঁ, রূপমতীর জন্য পাগলই হয়ে গেলেন, আজ একটা হেস্তনেস্ত করবেন, আদেশ দিলেন রূপমতীকে সাজাতে, হুকুম করলেন মহল সাজাতে, আলোয় , ফুলে, গন্ধ ওড়াতে, আতর ছড়াতে, আজ হবে তাঁর মিলনের রাত, বসলো মেহেফিল, বীণ আর আফগানী রাবাবের বেদনার মূর্ছনা ছড়িয়ে পড়েছিল সেদিনের মালওয়ার পাহাড়ে পাহাড়ে!
আর! রূপমতী সাজলেন, দাসীকে আদেশ দিলেন, তাঁকে সাজাতে , সেই রকম করে, যেরকম করে উনি যেতেন তাঁর প্রেমিক বাজবাহাদুরের কাছে! বাজবাহাদুরের সাথে বিয়ের রাতে যেরকম ভাবে সেজেছিলেন, সেরকম ভাবে। হাতে তুলে নিলেন তানপুরা, গেয়ে চললেন শেষের গান,মালওয়ার পাহাড়ে পাহাড়ে অনুরণিত হতে থাকলো সেই বিদায়ের গান। হিরেচুর বিষ খেয়ে ফেললেন তিনি-এক বিধুর হাসি ছড়িয়ে গেলো তাঁর মুখে।
উন্মত্ত মুঘল সেনাপতি,আধম খাঁ এসে দাঁড়ালেন রূপমতীর মহলে, দেখলেন, কালো চুল আর সব রূপ নিয়ে এলিয়ে আছেন রূপমতী তাঁর বিছানায়।
আমীর খসরু, যথার্থই বলেছিলেন, 'আমি যখন থাকবো না পৃথিবীতে তখন এই পৃথিবীর মাটিতে আমার কবরটি কোথায় আছে খুঁজতে যেও না তোমরা, দোহাই তোমাদের! কারণ প্রতিটি বিশ্বস্ত হৃদয়ই আমার স্মৃতিফলক ' মাণ্ডুর কয়েক শতাব্দীর ইতিহাসে একাধিক রাজা, সুলতান, সেনাপতি এসেছেন আবার চলেও গিয়েছেন কিন্তু তাঁদের মধ্যে সামান্য সময়ের জন্য এসেছিলেন বাজবাহাদুর ও রূপমতী।
মাণ্ডুর খাঁ খাঁ শহরে, প্রাচীন রিক্ত সৌধ গুলিতে কিংবা মাণ্ডুর বিশাল তালাও গুলির জল যখন হাওয়ায় ঢেউ তোলে অথবা অজানা কবরের ওপরের শুখনো ঝরা পাতা গুলো যখন হাওয়ায় উড়ে যায়-অনুরণিত হতে থাকে রূপমতী ও বাজবাহাদুরের নাম, এ এক দারুণ অনুভূতি, ছমছম করে ওঠে শরীর।
অবাক হতে থাকা
মাণ্ডুতে ঘুরতে পুরো গোটা তিন থেকে চার দিন সময় দিতে হবে-চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে ইতিহাসের ছিঁড়ে যাওয়া পাতা।
ঘোরার জন্য মাণ্ডুর সৌধ গুলিকে পাঁচভাগে ভাগ করতে হবে, এতে সময় ও বাঁচানো যাবে। কী ভাবে ঘুরেবেন, সেই কথায় পরে আসছি -
Group গুলি হল-
১) রেবা (Rewa) কুণ্ড গ্রুপ
জাহাঙ্গীর দরওয়াজা
সাগরতালাও ছাড়িয়ে সামান্য এগোলে পড়ে জালিমহল, এটি ছাড়িয়ে বাঁ দিক দিয়ে উঠে গেছে রাস্তা পাহাড়ের গা দিয়ে,আজ আর রাস্তা নেই, জঙ্গল এ ঢেকে গেছে,সম্রাট জাহাঙ্গীর যখন মাণ্ডু আসেন, তাঁর অভ্যর্থনার জন্য গড়ে তোলা হয় এই দরওয়াজা।
রেবা কুণ্ড
বাজবাহাদুর প্রাসাদের সামনেই এই কুণ্ড,স্থানীয়দের বিশ্বাস নর্মদা নদী এই তালাও তে এসে মিশেছে। রূপমতী নাকি রোজ সকালে এখানেই আসতেন। যদিও মাণ্ডু থেকে নর্মদা নদীর দূরত্ব ৪০-৫০ কিমি, তাই নর্মদা নদীর সাথে এই তালাওয়ের কোনও সম্পর্ক ছিল কিনা,তা নিয়ে ভাবা যেতেই পারে।
বাজবাহাদুর প্রাসাদ
এই প্রাসাদ তৈরি করেছিলেন সুলতান নাসিরুদ্দিন শাহ, পিতা ঘিয়াতুদ্দিন কে হত্যা করে, ১৫০৮ -১৫০৯ সাল নাগাদ।বাজবাহাদুর প্রাসাদ এ সুলতানি ঐশ্বর্যের যত টা না ঝলকানি তার থেকে, বেশী করে মনে হল এ যেন শিল্পীর আবাসস্থল!কানে ভেসে আসছিলো কোনও শিল্পীর বাঁশির আওয়াজ!হয়তো এই প্রাসাদের কোনও কুঠুরিতে বসে সুলতান বাজবাহাদুর শুনতেন তাঁর প্রেমিকা রূপমতীর গান!পড়ন্ত বিকালে এখানে বসে থাকলে , আপনি রোমান্টিক হয়ে উঠবেনই, পৌঁছে যাবেন ইতিহাসের সেই পাতায় ....
আপনার কানে ভেসে আসবে ...
এ যেন এক ক্ষুধিতপাষাণপুরী।
রূপমতী মহল
বাজবাহাদুর প্রাসাদ কে বাঁদিকে রেখে পাহাড়ের পাকদণ্ডী বেয়ে এগোলেই এসে পড়বেন রূপমতী মহলে।মধ্যযুগের স্মৃতি ও অনুভূতি নিয়ে বিরাজ করছে এককালের আনন্দনগরী-মাণ্ডু-আপনি উদাস হয়ে পড়তে পারেন।গাড়ি আপনাকে একটু আগেই নামিয়ে দেবে,সেখান থেকে আপনাকে হেঁটে উঠতে হবে.ছাদের ওপরে রয়েছে দুটি মণ্ডপ। তবে স্থাপত্যের দিক থেকে রূপমতী মহল ভীষণই সাদামাটা।
শহরের কোলাহল থেকে এই মহলে ঘুরে বেড়ালে, আর দূরে বাজবাহাদুর প্রাসাদের দিকে তাকিয়ে থাকলে শুনতে পাবেন আপনার কানে ভেসে আসছে আফগানী রাবাব আর মেঘমল্লারের তান। এখানে ঘুরে বেড়ালে, পাথরে পাথরে, চাতালে-চাতালে শুনতে পাবেন নৃত্যরত সুন্দরীদের পায়ের ঘুঙুরের শব্দ।
২) Royal Enclave গ্রুপ (শাহী গ্রুপ) ও মাণ্ডুর দরওয়াজা
মাণ্ডু শহরে প্রবেশের মুখে পাবেন কতগুলি দরওয়াজা (স্থানীয় ভাষায় -লবজে) যা পেরিয়ে প্রবেশ করতে হয় শহরে , প্রথমে পরে 'আলমগিরি দরওয়াজা' তারপর 'ভাঙি দরওয়াজা',তারপর 'কামানি দরওয়াজা'এরপর আসে 'গাড়ি দরওয়াজা' অবশেষে 'দিল্লী দরওয়াজা' ,মাণ্ডুর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য দরওয়াজা গুলি-লোহানী দরওয়াজা (Sunset দেখার অন্যতম স্থান), তারাপুর দরওয়াজা(এটিও Sunset দেখার জন্য অন্ত্যতম জাহাঙ্গীরপুর দরওয়াজা (জঙ্গলে ডেকে গেছে আজ,পর্যটকদের কাছে বেশ দুর্গম), ভাগানিয়া দরওয়াজা (ট্রেক করে যেতে হয়), সোনাগড় দরওয়াজা(সোনাগড় দুর্গের প্রবেশপথ - ১৫৩৪ সালে মুঘল রা মাণ্ডু আক্রমণ করলে,তৎকালীন মাণ্ডুর শাসক, গুজরাতের সুলতান বাহাদুর শাহ এই পথ ধরেই পালিয়ে যান - এখান থেকে মাণ্ডুর দিকে তাকালে বোঝা যায়,মাণ্ডু -প্রাকৃতিক ভাবে কতটা সুরক্ষিত ছিল -দুদিকে গভীর খাদ ও অরণ্যে ঢাকা মাণ্ডু কে দেখলে বেশ রহস্যময়ই লাগে)…
হোসাঙ্গ শাহ ঘোরীর রাজত্ব কালে, যখন মালওয়ার রাজধানী মাণ্ডু তে সরিয়ে নিয়ে আসা হয় ,সম্ভবত: এই এলাকা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা হয় , যদিও কালের নিয়মে তা আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত,কিছু কিছু জায়গায় এর অস্তিত্ব দেখা যায়। প্রথমে চলুন হাতি গেট বা হাতি পোল,খুব সম্ভবত: বাদশা নিজে রাজপ্রাসাদ আসার জন্য এই দরওয়াজা ব্যবহার করতেন , আজকাল আর কেউ ব্যবহার করেন না। শহরের এক প্রান্তে, কালো পাথরের তৈরি এই দরওয়াজা রোমন্থন করে চলে তার অতীত গৌরবের কথা।
এবারে চলুন 'দিলওয়ার খান ঘোরীর মসজিদ'- এটির বিশেষত্ব এই যে এটি প্রথম মালওয়ার রীতিতে তৈরি ইন্দো-সোরাসনিক ভাস্কর্য।মাণ্ডু তে পাকাপাকি ভাবে সুলতানি শাসন কায়েম হয় দিলওয়ার খান ঘোরীর হাত ধরেই ,সময় টা ১৪০১ সাল।
আসুন, এর পরে 'নাহার ঝরোখা'তে-মাণ্ডু তে আসা পর্যটকেরা কেন জানিনা একটু উদাসীন থাকেন এই জায়গাটি থেকে, গাইড কে বলুন অবশ্যই আপনাকে নিয়ে যেতে, নাহার ঝরোখা র উঠোনে এসে দাঁড়ালে আপনাকে গ্রাস করে নেবে ইতিহাসের প্রতিটি শব্দ-জাহাঙ্গীর যখন মাণ্ডু তে এসে ছিলেন তখন প্রতিদিন প্রজাদের দর্শন দিতেন -এখান থেকেই,তাই হয়তো এরকম নাম!
নাহার ঝরোখা র পাশেই 'হিন্দোলা মহল' কে তৈরি করেছিলেন তাই নিয়ে বিতর্ক আছে-কারুর মতে হোসাঙ্গ শাহ এটি তৈরি করেন আবার অন্য কারুর মতে ঘিয়াতউদ্দিন খিলজি এটি তৈরি করেন।এই মহলটি কে বাইরে থেকে দেখলে 'T' অক্ষরের মতো লাগে-মনে হয় যেন হাওয়ায় দুলছে-বোধহয় তাই নাম হিন্দোলা মহল, মহলটির স্থাপত্যের মধ্যে একটা কাঠিন্যের ছাপ পাওয়া যায়।
হিন্দোলা মহল ছাড়িয়ে একটু পশ্চিমের দিকে এগোলে এসে দাঁড়াবেন 'মুঞ্জ তালাও'এর কাছে-এর উত্তর দিক জুড়ে মাণ্ডুর রাজপ্রাসাদ।অবস্থা বড়ই করুন-কিছু দেওয়াল দাঁড়িয়ে আছে শুধু।
আসার পথে দেখে নিন, রেলিঙে ঘেরা কুয়ো 'চম্পা বাউরি' (অতীতে প্রাসাদের সুন্দরীরা এখানে স্নান করতেন, চাঁপা ফুলের সঙ্গে তুলনা করে নাম রাখা হয় -চম্পা বাউরি) ছাড়িয়ে একটু এগোলে দেখতে পাবেন একটি চতুষ্কোণ জলাধার-এখন অবশ্য শুকনো-চারিদিক দিয়ে অনেকগুলো আলাদা সিঁড়ি নেমেছে নিচে-কিছু ঘর ও অলিন্দ আছে নিচের দিকে-গাইড জানালো এই গুলির নাম 'তেহখানা'-গ্রীষ্মের প্রখর তাপে-এই জলাধারের জল ঠাণ্ডা বাতাস বইয়ে দিতো এই অলিন্দ ও ঘর গুলিতে।জানা যায় সম্রাট জাহাঙ্গীর ও নুরজাহান যখন মাণ্ডু এসে ছিলেন তখন এরকমই কোনও কক্ষ কে বেছে নিয়েছিলেন নিজেদের থাকার জন্য।পার্সিয়ান wheel দিয়ে চম্পা বাউরি ও জলাধার এর জল কে প্রাসাদে তোলা হতো -প্রাসাদ কক্ষ গুলি কে ঠাণ্ডা রাখার জন্য,মধ্য যুগের এই শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করে ছিলেন মালওয়ার সুলতানের।চম্পা বাউরি র বাঁ-দিকে চোখে পড়বে 'হামাম',এখানে জল আসতো দুটি চ্যানেল দিয়ে,গরম জল ও ঠাণ্ডা জল,অন্ধকার হামাম ঘরে ছাদের প্রকোষ্ঠ গুলি দিয়ে চাঁদ ও তারার আলো এসে পড়তো স্নানরতা রমণীদের গায়ে।
সুলতান ঘিয়াতউদ্দিন খিলজির ১৫০০০ রমণী ছড়িয়ে থাকতেন এই প্রাসাদ জুড়ে, ভরে থাকতো প্রাসাদ তাঁদের কলকলানি তে, তাঁদের হাসি ও কান্নার শব্দ আজ ও অনুরণিত হতে থাকে প্রাসাদের দেওয়ালে দেওয়ালে-পাথরে পাথরে।
হামাম ছাড়িয়ে এসে দাঁড়াবেন 'মুক্তমঞ্চে' -পাঁচিল দেওয়া একটি মাঠ আজ হয়তো তাতে গজিয়ে গেছে ঘাস কিন্তু এখানে এসে দাঁড়ালে আপনার কানে ভেসে আসবে কোনও সুন্দরী নর্তকীর ঘুঙুরের শব্দ ও সুরেলা আওয়াজ, যা মাতিয়ে রাখতো তৎকালীন মাণ্ডুর রাজপ্রাসাদ কে-আক্ষরিক অর্থেই তৎকালীন মাণ্ডু ছিল 'সাদিয়াবাদ'- 'আনন্দনগরী'।
মাণ্ডুর হামামে আলোর ছটা
চলে আসুন, মুঞ্জতালাওয়ের মাঝখানে-'জল মহল' প্রাসাদ এ,থামগুলি প্রায় সবই ভেঙে গেছে,ছাদ ও আর অবশিষ্ট নেই, জলের একেবারে ওপরে জাহাজমহলের দিকে মুখ করে এখনো একটি তোরণ দাঁড়িয়ে আছে, ঐতিহাসিকদের মতে ১৬ স শতাব্দীতে মাণ্ডু যখন গুজরাটের অধীনে, সুলতান বাহাদুর শাহ এই প্রাসাদ টি তৈরি করেন।এই মহলের ছাদ এক আশ্চর্য জায়গা-মাণ্ডু ঘুরতে আসা পর্যটকেরা বড়োই উদাসীন থাকেন এই প্রাসাদ থেকে,কিন্তু এই প্রাসাদে স্থাপত্যের ঘনঘটা হয়তো নেই , কিন্তু আছে একাকীত্ব, নীরবতা, এখান থেকে উপলব্ধি করা যায় জাহাজ মহলের বিশালত্ব, উপভোগ করা যায় শাহী মহলের রোমান্স।প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্য আর ইতিহাসের ফিসফিসানি-একাকার হয়ে মিশে আছে এখানে।
মুঞ্জতালাওয়ের গা দিয়ে উঠে গেছে 'জাহাজমহল' এর দেওয়াল, এই মহল টি কে তৈরি করেন তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ আছে,কারুর মতে মাহমুদ শাহ আবার অন্য মতে ঘিয়াতউদ্দীন খিলজি।
মুঞ্জাতালাও ও জাহাজমহল
মাণ্ডুর ইতিহাসে ঘিয়াতউদ্দীন খিলজি র নাম এক অন্য মাত্রা যোগ করেছে, আক্ষরিক অর্থেই উনি ছিলেন এই আনন্দনগরীর সুলতান, সূরা পান করতেন না কিন্তু নারী আসক্তিতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার!১৫০০০ হাজার রমণী ছিলেন শুধু তাঁর মনোরঞ্জনের জন্য, হারেমে।তাঁর নিত্যনৈমিত্তিক কাজ বা দেহরক্ষী, সবই ছিল নারী।জীবনে কোনোদিন যুদ্ধ করেননি, কিন্তু আনন্দনগরীতে যে ভাবে জীবন কাটানো উচিত,উনি সেভাবেই জীবন কাটাতেন। জাহাজমহল ,সংলগ্ন রাজপ্রাসাদ, হিন্দোলা মহল জুড়েই ছিল সুলতানের আমোদ-প্রমোদ এর বিস্তৃতি।
কাপুরতালাও ও জাহাজ মহল
একদিকে মুঞ্জতালাও আর একদিকে কাপুরতালাও -মাঝখানে জাহাজমহল -যেন জাহাজের মতো দুলছে-এ যেন কল্পনার এক জীবন্ত দলিল! এই মহলের স্থাপত্যের মধ্যে রয়েছে রোমান্টিকতার চূড়ান্ত রূপ! আনন্দময় জীবনের এক চরম বহিঃপ্রকাশ যেন!কোনও পূর্ণিমার রাতে যখন এই মহলের প্রতিচ্ছবি কাপুরতালাও ও মুঞ্জতালাও এর জলে প্রতিফলিত হয়, হাওয়ায় যখন ঢেউ তোলে জলে-জাহাজমহলের প্রতিচ্ছবি যখন তির তির করে কাঁপতে থাকে-ইতিহাস যেন তখন ফিসফিস করে বলে 'আমি ছিলাম, আমি আছি, আমি থাকবো '..
জাহাজমহলের মণ্ডপের দৃশ্য
জাহাজমহল সংলগ্ন একটি মহল আছে, নাম 'তাবেলি মহল'-গাইড এর কাছ থেকে জানলাম,জওহরলাল নেহেরু, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এই মহলেই এক রাত কাটিয়ে গিয়েছিলেন। A .S .I র অধীনে এই মহলে রাত্রিবাস করার সুব্যবস্থা আছে, পূর্ণিমার রাতে এই মহল থেকে জাহাজমহল এর দৃশ্য, মনে হয় যেন 'স্বপ্ন -যান '- এই জন্যই হয়তো সম্রাট জাহাঙ্গীর মাণ্ডু তে থাকাকালীন- জ্যোৎস্না রাতে বেছে নিতেন এই জাহাজমহল কে! দিওয়ালির রাতে সম্রাটের আদেশে আলোয় সেজে উঠেছিল এই মহল- অন্ধকার আকাশে-আলোকিত এই মহল-আর বাঁশির সুরের মূর্ছনা- সম্রাট জাহাঙ্গীর ও নুরজাহান হয়তো মেতে গিয়েছিলেন রোমান্টিকতায়!
দূরে জাহাজ মহল মহল
৩) Village গ্রুপ (Central গ্রুপ)
চারটি সৌধ নিয়ে গড়ে উঠেছে এই গ্রুপটি-জমি মসজিদ,হোসাঙ্গ শাহের সমাধি, আশরাফি মহল ও মাহমুদ খিলজির সমাধি। মাণ্ডু শহরের কেন্দ্রস্থলে বলা যেতে পারে। দোকানপাট, হোটেল-রেস্তোরাঁ, বাস স্ট্যান্ড সবই এই জায়গায়।
বিশাল সুন্দর বাগানের মাঝে শ্বেত পাথরের তৈরি 'হোসাঙ্গ শাহের সমাধি'-সমগ্র ভারতবর্ষে মার্বেল পাথরের তৈরি সৌধ গুলির মধ্যে এটি প্রাচীনতম।
হোসাঙ্গ শাহের সমাধির ঠিক পেছনেই রয়েছে 'জামি মসজিদ'-ঘোরী বংশীয় সুলতান হোসাঙ্গ শাহ এই মসজিদের পরিকল্পনা করলেও এটির নির্মাণ শেষ হয় খিলজি বংশীয় সুলতান মাহমুদ খিলজির সময়।
হিন্দোলা মহল
জামি মসজিদের বিপরীতেই 'আসরফি মহল'-আসরফি কথার অর্থ সোনার মোহর-মাহমুদ শাহ খিলজি এটি তৈরি করেন।তাঁর আমলে মাণ্ডু উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছয়-আফ্রিকার সাথে গড়ে ওঠে বাণিজ্য-মাণ্ডুর পথে ঘাটে দেখা যায় বাওবাব গাছ (স্থানীয়রা বলে 'খোসরানি ইমলি')-সেই সাক্ষীই বহন করে চলেছে। ভারতবর্ষে আর কোথাও পাওয়া যায় কি না আমার জানা নেই। আশরফি মহল সংলগ্ন বিজয় স্তম্ভ আজ প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত-চিতোর আক্রমণের সাক্ষী! সিঁড়িতে আসরফি রাখা থাকত-আর নুরজাহান সেই গুলি কুড়িয়ে ওপরে উঠতেন-মাণ্ডুতে থাকাকালীন জাহাঙ্গীর-নূরজাহানের প্রিয় জায়গা ছিল এটি, তাই নাকি নামকরণ-'আশরফি মহল'! ইতিহাস তো এক কল্পনা! রেশ আর আবেশ রেখে যায় মাত্র।
এখানেই রয়েছে মাণ্ডুর ইতিহাসের সর্ববিখ্যাত সুলতান 'মাহমুদ খিলজি' র সমাধি- কালের নিয়মে আজ তা ধ্বংসপ্রাপ্ত-দেওয়াল ছাড়া আর কিছুই নেই! কিন্তু যা রয়েছে, সেটা হল আপনার কল্পনা শক্তি-দুদণ্ড বসুন! তাকিয়ে দেখুন আপনার চোখের সামনে রয়েছে মাণ্ডুর উপত্যকা- ইতিহাসের হাওয়া বইছে যে! শিহরণ বয়ে যাচ্ছে আপনার শরীর ও মনে!
এবারে চলে আসুন উজালা বাউড়ি ও আন্ধেরি বাউড়ি ও গদা শাহের প্রাসাদ ও দোকান দেখতে। মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, রাজস্থান-এই জায়গা গুলিতে এরকম কুয়ো দেখতে পাওয়া যায়-স্থানীয়রা বলেন বাউড়ি-নিচে নামার জন্য সিঁড়ি থাকে, 'উজালা' শব্দের অর্থ আলোকিত ও 'আন্ধেরি' শব্দের অর্থ অন্ধকার।
গদা শাহ ছিলেন সুলতানি আমলে প্রভাবশালী এক ব্যাবসাদার-সুলতানের শাসনকার্যের তাঁর ছিল মস্ত হাত!এই প্রাসাদ আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত-কোথাও ছাদ ও ভেঙে পড়ে গেছে, সিঁড়ি দিয়ে সাবধানে ওপরে উঠলে-চোখের সামনে ভেসে উঠবে-জাহাজমহলের অবয়ব! হলফ করে বলতে পারি জাহাজমহলের ওই দৃশ্য মাণ্ডুর আর কোনও জায়গা থেকে পাবেন না! কোনও এক পড়ন্ত বিকালে-দুদণ্ড বসুন এখানে, আপনার চোখের মণিকোঠায় চির-স্মরণীয় হয়ে থাকবে এই দৃশ্য।
৪) সাগর তালাও গ্রুপ
মাণ্ডু ঘুরতে আসা পর্যটকেরা রূপমতী মহল ও জাহাজ মহল দেখেই তাঁদের বেড়ানোতে দাঁড়ি টানেন। কিন্তু আমি বলবো, সারা মাণ্ডুতে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য সৌধ -সেগুলি না দেখলে মাণ্ডু ঘোরা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
মাণ্ডু যে, কেন World Heritage Site এর তকমা পেলো না? এই প্রশ্ন আমাকে আজও ঘুরে ফিরে ধরে, প্রশাসন যে কেনও ভাবল না!
নাহার ঝরোখা
এই গ্রুপ এ দেখবেন - 'মালিক মুঘিতের মসজিদ' ও তাঁর বিপরীতে 'কারাভানসরাই' -একটু এগিয়ে পথের ধারে বাওবাব গাছ গুলি পার হয়ে 'দাই এর ছোটবোনের মহল' ও তারপর বাঁ হাতে 'দাই কা মহল'। আর একটু এগিয়ে সাগর তালাওয়ের ধারে 'আঁধার গম্বুজ' তারপর দেখে নিন 'জালি মহল'।
মধ্যপ্রদেশ রাজ্য পর্যটনের 'মালোয়া রিসর্ট' সাগরতালাওয়ের ধারেই অবস্থিত। আমাকে অবাক করেছিল এই সৌধ গুলি সম্বন্ধে পর্যটকদের উদাসীনতা! মাণ্ডু একটি ঘুমন্ত শহর, এককালের আনন্দনগরী মৃতের নগরীতে পরিণত হওয়ার সাক্ষী এই সৌধ গুলি।
৫) দরিয়া খান গ্রুপ
চলুন দেখতে 'দরিয়া খান এর মোকবরা' বা সমাধি, দরিয়া খান ছিলেন তৎকালীন সময়ে এক প্রভাবশালী ওমরাহ।এর পরে চলে আসুন 'লাল সরাই'-মূলত এটি একটি সরাইখানা,তারপর আসুন দেখতে 'হাতি পাগা মহল' , চলে আসুন 'রোজা কা মোকবরা'-রোজা ওরফে খাদিজা বিবি ছিলেন এক সুফী গায়িকা,গানের সুরে মজিয়ে রাখতেন সুলতানের সভা।
সাগরতালাও গ্রুপ ও দরিয়া খান গ্রুপ এর সৌধ গুলি কে অনেকে ই রেবা (Rewa) কুণ্ড গ্রুপ এর সাথে দেখে নেন, কিন্তু এতে বড্ডো তাড়াহুড়ো হয়ে যায়,তাড়িয়ে উপভোগ করা যায় না!
অন্যান্য সৌধ
চিস্তি খানের সমাধি
গাড়ি দরওয়াজা র পাস দিয়ে রাস্তা উঠে গেছে এই সৌধের কাছে, চিস্তি খান ছিলেন সুলতান প্রথম মাহমুদ খিলজির বিশ্বস্ত সেনাপতি।সিঁড়ি দিয়ে এই সৌধের ওপর থেকে ভেসে ওঠেমাণ্ডুর Skyline- জামি মসজিদ, হোসাঙ্গ শাহের সমাধির গম্বুজ,জাহাজমহলের ছাদের মণ্ডপ-চোখের সামনে ধরা দেয়।
নীলকণ্ঠ প্রাসাদ
এখন থেকে আপনার চোখে পড়বে মাণ্ডুর অনাবিল পাহাড়ি প্রকৃতি-সম্রাট জাহাঙ্গীর এর প্রিয় জায়গা ছিল এটি- সময় কাটাতেন এখানেই -একাকী!এই মহলের ভিতরের জালির কাজ আপনার চোখ টানবেই।
মাণ্ডু কী ভাবে ঘুরবেন
প্রথম দিন -ইন্দোর থেকে মাণ্ডু ঘণ্টা তিনেকের পথ, মসৃণ রাস্তা, চেষ্টা করুন বেলা বারোটার মধ্যে মাণ্ডু পৌঁছতে, মাণ্ডুতে থাকার সেরা জায়গা মধ্যপ্রদেশ পর্যটনের 'মালোয়া রিসর্ট ', হোটেলে চেক-ইন করে আজ চলুন, সাগর তালাও গ্রুপ ও দরিয়া খান গ্রুপ এর সৌধ গুলি দেখতে।চেষ্টা করুন বিকাল চারটে-পাঁচটার মধ্যে শেষ করে ফেলতে, চলে যান রূপমতী মহল-সানসেট দেখতে।
দ্বিতীয় দিন-ঘুম থেকে উঠে চলে যান জাহাজমহল-Sunrise দেখতে, সকাল ছটায় দরজা খুলে যায় জাহাজমহলের। তারপর ব্রেকফাস্ট করে চলুন Royal Enclave গ্রুপ (শাহী গ্রুপ) ও Village গ্রুপ(Central গ্রুপ)এর সৌধ গুলি দেখতে।দুপুরের খাওয়ার পর চলুন নীলকণ্ঠ প্রাসাদ, তারপর চলুন সোনাগড় দুর্গের দিকে, পথে পড়বে ছপ্পন মহল, একখাম্বা মহল ও চেরেকট, সোনাগড় দুর্গ ও দরওয়াজা দেখা হয়ে গেলে চলে আসুন তারাপুর দরওয়াজা-সানসেট দেখতে।
তৃতীয় দিন-সকালে ঘুম থেকে উঠে চলে যান Sunrise দেখতে রূপমতী মহল এ, ফিরে এসে ঘুরে নিন রেবা (Rewa) কুণ্ড গ্রুপ-আজকের দিনটি রাখুন মাণ্ডুর নীরবতা কে উপভোগ করার জন্য, ঘুরে বেড়ান জলমহল, চিস্তিখানের সমাধি,বাজারে গিয়ে চেখে নিন মালোয়া খাবার-একটু ঘী এর বাড়াবাড়ি আছে,সানসেট দেখুন লোহানী গুহা থেকে। কাল তো ছেড়ে যাওয়া মাণ্ডুকে!
কোথায় থাকবেন ও কী ভাবে যাবেন
মাণ্ডুর নিকটবর্তী রেলস্টেশন ও বিমানবন্দর হল ইন্দোর, মাণ্ডুএখান থেকে মাত্র ১০০ কিমি। অনেকে ইন্দোর থেকে মহেশ্বর (৯৫কিমি)এ একরাত কাটিয়ে মাণ্ডু আসেন (মাত্র ৪০ কিমি), সেক্ষেত্রে মহেশ্বর দেখা হয়ে যায়।
মধ্য প্রদেশ পর্যটনের দু -তিনটি থাকার হোটেল আছে মাণ্ডুতে, কিন্তু আমার মতে থাকার সেরা জায়গা মধ্যপ্রদেশ পর্যটনের 'মালোয়া রিসর্ট'-একদম সাগরতালাওয়ের ধারে। পূর্ণিমার রাতে -সাগরতালাওয়ের বুকে জ্যোৎস্নার ছটা আপনি ঘরে বসেই দেখতে পাবেন।
লেখক পরিচিত - পেশাগত ভাবে ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার হলেও ভ্রমণ ওনার নেশা, নেশার তাগিদে 'ভ্রমণ তথ্যচিত্র' তৈরী করাটাও ওনার এক ভালোলাগা,চিত্রনাট্য লিখতে গিয়ে, কখনো কখনো লিখে ফেলেন 'ভ্রমণ কাহিনী'।
(আপনার মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)
অবসর-এর লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।
Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.