প্রথম
পাতা
শহরের তথ্য
বিনোদন
খবর
আইন/প্রশাসন
বিজ্ঞান/প্রযুক্তি
শিল্প/সাহিত্য
সমাজ/সংস্কৃতি
স্বাস্থ্য
নারী
পরিবেশ
অবসর
|
জ্যোতিষশাস্ত্র
প্রবেশিকা (অন্যান্য
অনুচ্ছেদ)
অনুচ্ছেদ - ১১
বিভিন্ন
লগ্ন ও গ্রহের শুভাশুভত্ব
এক একটি লগ্নের পক্ষে
এক একটি গ্রহ শুভ বা অশুভ। এখানে কিন্তু আধিপত্য হিসাবে
শুভ বা অশুভ বুঝতে হবে। যেমন বৃহস্পতি একটি নৈসর্গিক শুভ
গ্রহ। যে কোন লগ্নের পক্ষেই তার শুভত্ব কিছুটা থাকবে। কিন্তু
তুলা লগ্নের পক্ষে বৃহস্পতি ৬ষ্ঠ পতি হওয়ায় এবং একই সঙ্গে
৩য় স্থানের অধিপতি হওয়ায় এই লগ্নের ক্ষেত্রে বৃহস্পতিকে
কার্যতঃ অশুভ (functional malefic ) বলে ধরা হবে। এক্ষেত্রে
বৃহস্পতি অধিপতি অনুযায়ী শুভ ফল দেবে না, তবে নৈসর্গিক শুভ
গ্রহ হিসাবে তার শুভত্ব ত থাকবেই। এখানে বৃহস্পতির অবস্থান
দেখে সামগ্রিকভাবে তার ভালমন্দ বিচার করতে হবে। এইভাবে প্রতিটি
লগ্নের ক্ষেত্রে গ্রহদের শুভাশুভত্ব বর্ণনা করা হচ্ছে। এগুলি
মনে রাখলে কোষ্ঠি বিচারে সুবিধা হবে। এখানে উল্লেখ করা যেতে
পারে যে, ৬ষ্ঠ , ৮ম ও ১২শ স্থানকেই মুলতঃ দুঃস্থান হিসাবে
ধরা হয়। কিন্তু "ত্রিষড়ায়" অর্থাত্ ৩য়, ৬ষ্ঠ ও
১১শ স্থানের অধিপতিকেও জ্যোতিষীরা পাপ বলে চিহ্নিত করেছেন।
৬ষ্ঠ যে দুঃস্থান এ কথা আগেই বলা হয়েছে। ৩য়, ৬ষ্ঠ ও ১১শ
তিনটিই উপচয় স্থান এবং এদের অধিপতি কিছু না কিছু শুভ ফল
দেয় বলেই মনে করা হয়। বহু প্রচলিত “একাদশে বৃহস্পতি” কথাটার
অর্থ বোঝার জন্য জ্যোতিষশাস্ত্র জানার প্রয়োজন নেই। ১০ম
অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোণ এবং কেন্দ্রপতির সম্বন্ধ রাজযোগ
সৃষ্টি করে। কিন্তু কোনও কোণ বা কেন্দ্রপতি যদি একই সঙ্গে
৩য়, ৬ষ্ঠ ও ১১শ-এর কোন একটির অধিপতি হয় তবে রাজযোগ ভঙ্গ
হয় বলে বলা হয়েছে। নীচে মেষ লগ্ন আলোচনার সময়ে (ছ) নং ধারায়
এর উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। যদিও ১১শ আয়স্থান এবং ১১শে অবস্থিত
সব গ্রহই কিছু শুভ ফল দেয় তবুও ১১শের অধিপতিকে কেন পাপ বলা
হয় তা বোঝা কঠিন। পরাশরের এটাই মত। হয় ত একাদশের অধিপতি
শুধুই আয় বা বৈষয়িক চিন্তা মনে জাগায় বলে অহংকার ও অধঃপতন
ডেকে আনার সম্ভাবনা থাকে এবং এর পরিণাম অশুভ, এটাও হতে পারে।
ফল বিচারে ২য় ও ১২শ পতিকে 'পরতন্ত্রী' হিসাবে ধরা হয়। অর্থাত্
যেখানে সে অবস্থান করবে বা যার সঙ্গে সে যুক্ত থাকবে সেই
অনুযায়ী ফল দান করবে।
নীচে প্রতিটি লগ্নের
ক্ষেত্রে বিভিন্ন অধিপতি গ্রহ শুভ না অশুভ সেটা বলা হল।
এটা থেকে অত্যন্ত সাধারণভাবে একটা ফলাফলের আভাস পাওয়া যাবে
মাত্র। একটি গ্রহ কোন লগ্নে কোন ভাবের অধিপতি শুধু তার উপরই
ফল নির্ভর করে না। গ্রহটির অবস্থান কি, কি গ্রহের দ্বারা
দৃষ্ট, গ্রহটির বল কি রকম ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে সামগ্রিক
ভাবে ফল বিচার করতে হবে।
১। মেষলগ্ন
(ক) এই লগ্নের রবি
৫ম পতি। কোণপতি হিসাবে অবশ্যই শুভ। রবি বলবান হলে এর দশায়
প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফলতা আসতে পারে। সম্মান ও সুনাম
বৃদ্ধি হতে পারে ইত্যাদি।
(খ) মেষলগ্নে চন্দ্র
৪র্থ কেন্দ্রের অধিপতি; অতএব ক্ষীণচন্দ্র হলে পরাশরের
মতে শুভ ফলদায়ক। কিন্তু শুক্লপক্ষের চন্দ্র হলে শুভ নয়।
তবে কেন্দ্রাধিপত্য দোষ চন্দ্রের ক্ষেত্রে অতটা প্রযোজ্য
নয়। চন্দ্র শুভ হলে গৃহলাভ, গৃহসুখ, আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে
সম্পর্ক ভাল ইত্যাদি হতে পারে। কিন্তু চন্দ্র দুর্বল হলে
অন্যান্য অশুভ ফল ছাড়াও পিতার শারীরিক সমস্যা হওয়া অসম্ভব
নয়; কারণ, ৪র্থ স্থান হ'ল ৯ম ( পিতৃস্থান ) স্থানের ৮ম
( নিধন ) স্থান।
(গ) মঙ্গল লগ্নপতি
ও ৮ম পতি। লগ্নপতি হিসাবে শুভ, আবার মূলত্রিকোণ লগ্ন হওয়ায়
মঙ্গল মুলতঃ লগ্নপতি হিসাবেই ফল দেবে। মঙ্গল সবল হ'লে
মঙ্গলের দশায় সুস্বাস্থ্য লাভ, সম্মান বৃদ্ধি, জমি ও অর্থাগম
ইত্যাদি হতে পারে। কিন্তু মঙ্গল দুর্বল হ'লে অর্শ, মূত্রাশয়
ইত্যাদি সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
(ঘ) বুধ এই লগ্নে
৩য় ও ৬ষ্ঠ পতি। দুটি অশুভ স্থানের অধিপতি হিসাবে শুভ নয়।
তবে ৩য় ও ৬ষ্ঠ দুই-ই উপচয় স্থান। কাজেই কিছু শুভ ফল দিতেই
পারে। তবে বুধ যেহেতু বালক গ্রহ এবং যে গ্রহের দ্বারা
প্রভাবিত হয় সেই গ্রহেরই ফল দেয় বলে বলা হয়েছে, অতএব শুভ
গ্রহের সঙ্গে যুক্ত বা শুভ দৃষ্ট হলে শুভ ফল দিতে পারে।
তবে একটা কথা আগেও উল্লেখ করা হয়েছে। ৩য়, ৬ষ্ঠ, ৮ম বা
১২শ পতি হলে সেই সমস্ত গ্রহদের অন্য কোন গ্রহের সঙ্গে
সম্পর্ক শূন্য হয়ে আলাদা ভাবে বসে থাকাই ভাল। উদাহরণ স্বরূপ,
মেষ লগ্নের একটি ছকে বুধ ( ৩য় ও ৬ষ্ঠ পতি ) ১১শে কুম্ভ
রাশিতে অবস্থিত এবং কোন গ্রহের দ্বারা দৃষ্ট নয় বা কোন
গ্রহকে দৃষ্টিও দিচ্ছে না। জাতকের এই বুধের দশা সামগ্রিক
ভাবে খুব খারাপ কাটে নি।
(ঙ) বৃহ্রপতি ৯ম
ও ১২শ পতি। যেহেতু বৃহস্পতির মূলত্রিকোণ লগ্ন থেকে ৯ম
স্থান ধনুরাশি; অতএব বৃহস্পতি শুভ। বৃহস্পতি বলবান হলে
এর দশায় নানা ভাবে ভাগ্যোন্নতি সম্ভব। কিন্তু বৃহস্পতি
দুর্বল বা পাপগ্রহ যুক্ত হলে পিতার দুর্ভাগ্য বা পিতার
শারীরিক সমস্যা ডেকে আনতে পারে।
(চ) এই লগ্নের শুক্র
২য় ও ৭ম পতি। দুটি-ই মারকস্থান। আবার শুক্র নৈসর্গিক শুভ
গ্রহ হয়ে ৭ম কেন্দ্রের অধিপতি হওয়ায় অশুভ। অতএব শুক্র
সম্পূর্ণই অশুভ ফলদায়ক। তবে সব সময় তত্ব অনুযায়ী ফল হয়
না। এটা দেখা গেছে, যদি শুক্র অত্যন্ত বলশালী হয় ও অন্যান্য
অশুভ সম্পর্ক থেকে মুক্ত থাকে, তবে শুক্রের দশা জাগতিক
সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের পক্ষে শুভই হয়। কিন্তু দুর্বল হলে,
চক্ষুরোগ বা শারীরিক সমস্যা হতে পারে। অনেক জ্যোতিষী বলেন,
শুক্র মারক হলেও মেষ লগ্নের জাতকের সাধারণতঃ মৃত্যু ডেকে
আনে না। সেটা অনেক সময়েই করে শনি।
(ছ) শনি ১০ম ও ১১শ
ভাবের অধিপতি। নৈসর্গিক পাপগ্রহ হয়ে ১০ম পতি হওয়ায় শুভ
কিন্তু ১১শ পতি হিসাবে অশুভ। এ কারণেই মেষলগ্ন জাতকের
বৃহস্পতি ও শনির ( ৯ম কোণ ও ১০ম কেন্দ্রের অধিপতি হওয়া
সত্বেও ) রাজযোগকারক নয় বলা হয়েছে। বৃহস্পতি ও শনি যদি
সংযুক্ত থাকে, তবে বৃহস্পতির সংযোগে শনির শুভত্ব বৃদ্ধি
হবে ঠিকই কিন্তু শনির সংস্পর্শে বৃহস্পতি অশুভ হয়ে পড়বে
এবং এই বৃহস্পতি ভাল ফল দেবে না। তবে বৃহস্পতি ও শনি যদি
অন্য শুভ গ্রহের দ্বারা প্রভাবিত হয় তবে শুভ ফল দিতেও
পারে।
(ক) এই লগ্নে রবি
নৈসর্গিক পাপগ্রহ হয়ে ৪র্থ পতি হওয়ায় শুভ। রবি বলবান হলে
এই গ্রহের দশায় চাকরীতে উন্নতি ইত্যাদি হতে পারে। কিন্তু
রবি দুর্বল বা অশুভত্ব প্রাপ্ত হলে, বন্ধু বা আত্মীয়দের
সঙ্গে মন মালিন্য, শারীরিক সমস্যা ইত্যাদি হওয়া অসম্ভব
নয়।
(খ) চন্দ্র ৩য়পতি
হিসাবে শুভ নয়। তবে শক্তিশালী হলে শুভ ফল দিতে পারে।
(গ) মঙ্গল ৭ম ও ১২শ
পতি। কেন্দ্রপতি হওয়ায় শুভ কিন্তু মূলত্রিকোণ ১২শ রাশিতে
পড়ায় অশুভত্বই বেশী। তবে ১২শ স্থান যেহেতু পরতন্ত্রী,
সেই হেতু মঙ্গল ৭ম-এর ফলই দেবে। তবে মঙ্গল যেহেতু ৭ম পতি,
তাই এর শুভত্ব অশুভত্বের উপর বিবাহিত জীবন বা স্বামী /
স্ত্রী সম্পর্কিত বিষয় অনেকটাই নির্ভরশীল। মঙ্গলের জোর
থাকলে ব্যবসার উন্নতিও হতে পারে।
(ঘ) বুধ ২য় ও ৫ম
পতি হওয়ায় শুভ। মূলত্রিকোণ ৫ম স্থানে হওয়ায় বুধের বল থাকলে
এর দশায় জাতকের পরীক্ষা, পুত্র-কন্যা ইত্যাদি সম্পর্কে
ভাল ফল দিতে পারে। তবে বুধ যেহেতু অন্য গ্রহের দ্বারা
প্রভাবিত হয় বেশী, তাই শুভ গ্রহের সঙ্গে যুক্ত হলে অর্থাগম
বা সঞ্চয় বিষয়ে শুভ ফল দিতে পারে। রবি ও বুধের যোগ অন্য
ভাবে অশুভত্ব প্রাপ্ত না হলে কিছুটা রাজযোগের ফল দিতে
পারে। ভাবার্থ রত্নাকরের মতে বৃষ লগ্নে বুধ ও শুক্র এবং
৭মে অর্থাৎ বৃশ্চিক রাশিতে বৃহস্পতি থাকলে, বুধের দশায়
প্রবল রাজযোগের ফল হবে।
(ঙ) বৃহস্পতির মূলত্রিকোণ
ধনু রাশি ৮ম স্থানে হওয়ায় বৃহস্পতি এই লগ্নের পক্ষে অশুভ।
১১শ পতি হিসাবে স্থান বিশেষে কিছু ভাল ফল দিলেও অশুভত্বই
বেশী। তবে শক্তিশালী বৃহস্পতি অর্থ প্রাপ্তিতে সাহায্য
করতে পারে এবং এই দশায় বড় ভাইএর ( ১১শ স্থান থেকে বড় ভাই
/ বোনের বিচার হয় ) ভাগ্য বৃদ্ধিও হতে পারে।
(চ) শুক্র লগ্নপতি
হিসাবে শুভ হলেও যেহেতু মূলত্রিকোণ তুলা রাশিতে অর্থাৎ
৬ষ্ঠে পড়েছে তাই শুক্র এই লগ্নের পক্ষে লগ্ন পতি হওয়া
সত্বেও সমভাবাপন্ন বলা হয়েছে। তবে খুব জোরালো হলে অবশ্যই
ভাল ফল দেবে।
(ছ) শনি ৯ম ও ১০ম
পতি হওয়ায় কেন্দ্র ও কোণ পতি হিসাবে একাই রাজযোগের ফল
দেবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় অনেক জ্যোতিষীর লব্ধ অভিজ্ঞতায়
দেখা গেছে শনি কুম্ভে অর্থাৎ ১০মে না থাকলে খুব ভাল ফল
দেয় না। ভাবার্থ রত্নাকর গ্রন্থেও শনিকে রাজযোগকারী বলা
হয় নি। জ্যোতিষশাস্ত্রের অনেক তত্বই বাস্তবে অন্য রকম
ফল দেয়। সব সময়েই অভিজ্ঞতা লব্ধ জ্ঞানের দ্বারা যাচাই
করে নেওয়া উচিত।
(ক) রবি ৩য় পতি হিসাবে
শুভ ফলদায়ক নয়। তবে জোড়ালো হলে কর্মক্ষমতা বাড়াতে পারে,
তবে একগুঁয়ে ভাবও বৃদ্ধি পেতে পারে।
(খ) চন্দ্র ২য় পতি।
যদি চন্দ্র বলবান হয়, তবে অর্থাগম, বিবাহ, পড়াশুনা ইত্যাদি
বিষয়ে শুভ ফল হতে পারে। কিন্তু চন্দ্র দুর্বল হলে বিপরীত
ফল হবে। চন্দ্র ২য় পতি হলেও মারকত্ব দোষ খুব একটা থাকবেনা
যদি না অন্য কোন মারক লক্ষণাক্রান্ত গ্রহের সঙ্গে সংযুক্ত
হয়।
(গ) মঙ্গল এই লগ্নে
৬ষ্ঠ ও ১১শ পতি। দুটো স্থানই অশুভ। তবে ভাবার্থ রত্নাকর
গ্রন্থে বলা হয়েছে, মিথুন লগ্নের মঙ্গল ও চন্দ্র ১১শ স্থানে
অর্থাত্ মেষ রাশিতে অবস্থিত হলে আয় বৃদ্ধি হবে। আবার শনি
৯মে অর্থাৎ কুম্ভে থাকলে বিশেষ ধনযোগ হবে। ১১শ পতি ( ১১শ
থেকে আয় বিচার হয় ) ২য় পতি ( ২য় স্থান সঞ্চয় নির্দেশ করে
) সহ ১১শে থাকলে এবং ৯ম পতি ( ৯ম থেকে ভাগ্য বিচার হয়
) শনি ৯মে বসে ১১শে দৃষ্টি দিলে যে ধন লাভ হবে এতে আর
আশ্চর্য কি ! তবে মঙ্গল যদি লগ্নকে বা লগ্নপতিকে দৃষ্টি
দেয় বা অন্য পাপ গ্রহের সঙ্গে সংযুক্ত হয় তবে জাতকের শরীরের
ক্ষতি করতে পারে; কঠিন পীড়া হওয়াও অসম্ভব নয়।
(ঘ) বুধ লগ্ন ও ৪র্থ
পতি। বুধ শক্তিশালী হলে, জাতকের স্বাস্থ্য ভল হবে, আত্মীয়
বন্ধুদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকবে। কিন্তু বুধ দুর্বল বা
অশুভ গ্রহ দ্বারা যুক্ত হয়ে অশুভ স্থানে থাকলে, শরীর খারাপ
ছাড়াও নানা অশান্তি ডেকে আনতে পারে।
(ঙ) বৃহস্পতি ৭ম
ও ১০ম কেন্দ্রের অধিপতি হিসাবে কেন্দ্রাধিপত্য দোষে দুষ্ট।
তবে বৃহস্পতি উপচয় স্থানে অথবা কোণে ( ৫ম বা ৯ম ) থাকলে
সাধারণতঃ খারাপ ফল দেয় না। তা না হলে বিবাহ বা পারিবারিক
ক্ষেত্রে নানা বিপর্যয় ঘটতে পারে।
(চ) এই লগ্নের ক্ষেত্রে
শুক্রকেই ( ২য় ও ১২শ পতি ) একমাত্র শুভ গ্রহ হিসাবে ধরা
হয়। ১২শ পতি হিসাবে শুক্র 'পরতন্ত্রী'; কাজেই ৫ম পতি হিসাবে
ফল দেবে। শুক্র শক্তিশালী হলে পরীক্ষায় সাফল্য, সন্তানের
শুভ ইত্যাদি ঘটতে পারে। তবে শুক্র অশুভ গ্রহ দ্বারা প্রভাবিত
হলে মহিলা সংক্রান্ত ব্যাপারে জড়িয়ে পড়া অসম্ভব নয়।
(ছ) এখানে শনি ৮ম
ও ৯ম পতি হওয়ায় শুভ না অশুভ তা নিয়ে মতভেদ আছে। তবে মূলত্রিকোণ
৯মে পড়ায়, শনি বলশালী হলে শনির দশায় ভাগ্যোন্নতি হতে পারে।
বৃহ্রপতির কেন্দ্রাধিপত্য দোষ এবং শনির ৮ম পতিত্ব হেতু
শনি ও বৃহস্পতির যোগ রাজযোগকারী হবে না বলে বলা হয়েছে।
(ক) রবি এই লগ্নে
২য় পতি। শক্তিশালী হলে রবি অর্থযোগ, পারিবারিক শুভত্ব,
ক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি ঘটাতে পারে। আবার রবি দুর্বল হলে
ঠিক বিপরীত ফলও ফলতে পারে। চক্ষুরোগও হতে পারে।
(খ) চন্দ্র লগ্ন
পতি। চন্দ্র পক্ষবলে বলী এবং অবস্থানগত ভাবে শুভ হলে চন্দ্রের
দশায় শরীর ও মন সুস্থ থাকবে। সম্মান বৃদ্ধি পাবে। মাতার
ক্ষেত্রেও শুভ। কিন্তু দুর্বল চন্দ্র এর ঠিক উল্টো ফলও
দিতে পারে।
(গ) মঙ্গল কর্কট
লগ্নে কোণ ও কেন্দ্রপতি বলে ( ৫ম ও ১০ম পতি ) একাই রাজযোগকারী।
মঙ্গল শক্তিশালী হলে মঙ্গলের দশা খুব ভাল যাবার কথা। সাধারণতঃ
লগ্নপতি লগ্নে অবস্থিত হলে ভাল হবার কথা; কিন্তু এখানে
চন্দ্র কর্কট রাশিতে নীচস্থ হওয়ায় ফল কি হবে ? লগ্নপতি
নীচস্থ হয়ে লগ্নে থাকলে ফল ভাল না হবারই কথা। কিন্তু অনেকের
বক্তব্য হল মঙ্গল কর্কট রাশিতে থাকলে, তার স্বক্ষেত্র
বৃশ্চিক থেকে ৯মে এবং মেষ থেকে ৪র্থ কেন্দ্রে থাকার জন্য
ভাল ফলই দেবে।
(ঘ) বুধ এই লগ্নে
৩য় ও ১২শ পতি হওয়ায় অশুভ। তবে অনেকে মনে করেন যদি বুধ
এমন কোন ঘরে থাকে যাতে ৩য় ও ১২শ এই দুই অশুভ ঘরের অশুভত্ব
কেটে যায় তবে বুধ ভাল ফল দেবে। যেমন, বুধ যদি লগ্নের ৫মে
অর্থাত্ বৃশ্চিকে থাকে তবে বুধ ৩য় ঘরের থেকে ৩য়ে এবং ১২শ
ঘরের ৬ষ্ঠে থাকবে। অতএব ৩য় ও ১২শ ঘরের থেকে দুঃস্থানে
থাকায় ঐ দুই ঘরের অধিপতি হিসাবে বুধের অশুভত্ব কেটে যাবে
এবং বুধ ভাল ফল দেব। এটা পরীক্ষা সাপেক্ষ।
(ঙ) বৃহস্পতি এখানে
৬ষ্ঠ ও ৯ম পতি; যেহেতু মূলত্রিকোণ ৬ষ্ঠ স্থান ধনুতে পড়েছে,
অতএব বৃহস্পতি খুব ভাল ফল দেবে না। তবে অনেকে বলেন যেহেতু
বৃহস্পতি লগ্নপতি চন্দ্রের মিত্র অতএব অবস্থান বিশেষে
কিছু ভাল ফল দিতে পারে।
(চ) শুক্র ৪র্থ ও
১১শ পতি। কেন্দ্রাধিপত্য দোষ এবং ১১শের অধিপতি হওয়ায় দু
দিক থেকেই অশুভ। তবে এটা দেখা গেছে শুক্র শক্তিশালী হলে
অর্থভাগ্য খারাপ হয় না; যান বাহনেরও মালিক হতে পারে। তবে
দুর্বল শুক্র শরীর এবং অর্থ দুই এর পক্ষেই খারাপ।
(ছ) শনি ৭ম ও ৮ম
পতি। মূলত্রিকোণ ৮ম স্থানে হওয়ায় শনি অশুভ কিন্তু ৭ম কেন্দ্রের
অধিপতিত্ব হেতু শুভ ( কেন্দ্রপতি অশুভ গ্রহ হওয়ায় )। দুই-এ
মিলে শনিকে সম বলা যেতে পারে। তবে শনির ৮ম পতিত্ব হেতু,
অশুভ গ্রহের সংযোগ না থাকলে পরমায়ু বৃদ্ধি হওয়া সম্ভব।
(ক) রবি লগ্নপতি।
রবি শক্তিশালী হলে জাতক সুনাম, সম্মান, সুস্বাস্থ্য ইত্যাদি
ভোগ করবে; কিন্তু রবি যদি দুর্বল হয় এবং অশুভ গ্রহের সঙ্গে
সম্বন্ধযুক্ত হয় তবে এর বিপরীত ফলও হতে পারে। দুর্নামও
রটতে পারে।
(খ) চন্দ্র এখানে
১২শ পতি। জোরালো হলে চন্দ্র কিছুটা শুভ ফল দিতে পারে।
তবে খুব একটা শুভ ফল আশা না করাই ভাল। চন্দ্র ও মঙ্গলের
সম্বন্ধ ঘটলে বিদেশে বসবাসের সম্ভাবনা থাকে।
(গ) মঙ্গল ৪র্থ ও
৯ম পতি হওয়ায় একাই রাজযোগকারী গ্রহ। বলশালী মঙ্গল জাতককে
সৌভাগ্য, মান-সম্মান, পড়াশুনা বিষয়ে ভাল ফল দিতে পারে।
দুর্বল হলে খুব ভাল ফল হবে না।
(ঘ) বুধ ২য় ও ১১শ
পতি। বুধের জোর থাকলে এবং অশুভ সংস্পর্শ থেকে মুক্ত থাকলে
অর্থলাভ হতে পারে। তবে অশুভ গ্রহের সংযোগে এলে বা শক্তিহীন
হলে শরীরের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
(ঙ) বৃহস্পতি ৫ম
ও ৮ম পতি। মূলত্রিকোণ ৫ম স্থান ধনু হওয়ায় বৃহ্রপতি ৫ম
স্থানের ফলই বেশী দেবে। অতএব শক্তিশালী বৃহস্পতি জাতককে
সন্তান, পিতা, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে
শুভ ফল দিতে পারে। তবে ৮ম পতিত্ব দোষও থাকায় বৃহস্পতি
দুর্বল হলে ভাল ফল হয় ত হবে না।
(চ) শুক্র ৩য় ও ১০ম
পতি; ১০ম পতি শুভ গ্রহ হওয়ায় পরাশরের মতে কেন্দ্রাধিপত্য
দোষ থাকবে। এখানে শুক্র শুভ গ্রহ নয়। অবস্থান খারাপ হলে
বা শুক্র দুর্বল হলে শুক্রের দশায় ভাল ফল কিছু আশা না
করাই ভাল।
(ছ) শনি ৬ষ্ঠ ও ৭ম
পতি। কেন্দ্রপতি হওয়ায় শুভ কিন্তু ৬ষ্ঠ পতি হওয়ায় শনিকে
সম বলে গণ্য করা ভাল। অশুভ শনি নানা ভাবে দুঃখের কারণ
হতে পারে।
(ক) রবি এই লগ্নে
১২শ পতি। খুব ভাল ফল আশা করা যায় না। তবে খুব জোরালো হলে
কিছু ভাল ফল হতে পারে। দুর্বল রবি চক্ষু পীড়ার কারণ হতে
পারে।
(খ) চন্দ্র ১১শ পতি।
শক্তিশালী চন্দ্র অর্থাগমের পক্ষে শুভ। তবে দুর্বল হলে
শরীরের পীড়া হতে পারে।
(গ) মঙ্গল ৩য় ও ৮ম পতি। অত্যন্ত অশুভ। তবে মঙ্গল শক্তিশালী
হলে জাতক দীর্ঘায়ু হতে পারে; কিন্তু দুর্ভোগ থাকবে।
(ঘ) বুধ লগ্ন ও ১০ম
পতি। লগ্নপতি বলে ১০ম কেন্দ্রের আধিপত্য দোষ থাকবে না।
বুধের জোর থাকলে এবং অশুভ গ্রহের সংযোগ হীন হলে ফল ভালই
দেবে।
(ঙ) বৃহস্পতি ৪র্থ
ও ৭ম পতি হিসাবে কেন্দ্রাধিপত্য দোষ থাকবে। বৃহস্পতি দুর্বল
হলে বা অশুভ গ্রহযুক্ত হলে বৃহস্পতির দশায় পারিবারিক সমস্যা
হতে পারে। এই লগ্নে বৃহস্পতির ২য়, ৬ষ্ঠ, ৭ম বা ৮ম স্থানে
না থাকাই ভাল।
(চ) শুক্র ২য় ও ৯ম
পতি। ২য় 'পরতন্ত্রী' হওয়ায় মুলতঃ শুক্র এখানে ৯ম স্থানের
ফলই দেবে। অতএব শক্তিশালী হলে শুভ। অশুভ শুক্র অর্থক্ষয়
ও ভাগ্য বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।
(ছ) শনি ৫ম ও ৬ষ্ঠ
স্থানের অধিপতি। মূলত্রিকোণ ৬ষ্ঠ হওয়ায় শনি শুভ নয়। অশুভ
শনি শত্রুভয়, ভবিষ্যত্ সম্ভন্ধে দুঃশ্চিন্তা, কর্মে বাধা
ইত্যাদি বয়ে আনতে পারে।
(ক) রবি ১১শ পতি
হিসাবে শরীরের দিক থেকে কিছুটা অশুভ কিন্তু যদি বল থাকে
তবে রবির দশায় অর্থাগম হতে পারে ও অন্যান্য বাসনাও পূর্ণ
হতে পারে।
(খ) চন্দ্র ১০ম পতি
হওয়ায় পরাশরের মতে ক্ষীণ চন্দ্র হলে শুভ। ৯ম পতি বুধের
সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত হলে রাজযোগের ফল দিতে পারে; যদিও বুধের
১২শ পতিত্বের জন্য কিছু অশুভ ফলও দিতে পারে।
(গ) মঙ্গল ২য় ও ৭ম
পতি। কেন্দ্রপতি বলে কিছুট শুভ হতে পারে; তবে দুই মারক
স্থানের অধিপতি হিসাবে যদি দুঃস্থানে ( ৬ষ্ঠ, ৮ম বা ১২শ
) অবস্থিত হয় তবে যথেষ্ট শারীরিক সমস্যা তৈরী করতে পারে।
(ঘ) বুধ ৯ম ও ১২শ
পতি। মূলত্রিকোণ ১২শে হওয়ায় ৯ম স্থানের ফল কমই দেবে। তবে
১২শ স্থান 'পরতন্ত্রী'; তাই ৯ম স্থানের ফল বেশ কিছু ফলবে
বলে অনেকে মনে করেন। চন্দ্রের সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত হলে
৯ম ও ১০ম পতির যোগ হিসাবে কিছু শুভ ফল আশা করা যায়।
(ঙ) বৃহস্পতি ৩য়
ও ৬ষ্ঠ স্থানের অধিপতি হিসাবে অশুভ। তবে দুই উপচয়ের অধিপতি
হিসাবে কিছু ভাল ফল দেবে। ভাবার্থ রত্নাকর গ্রন্থেও বৃহস্পতিকে
সম্পূর্ণ অশুভ বলা হয় নি।
(চ) শুক্র লগ্নপতি
ও ৮ম পতি। লগ্নপতি হওয়ায় অবশই শুভ; তবে শুক্র যদি ১২শে
অর্থাত্ কন্যা রাশিতে নীচস্থ হয়ে অবস্থান করে তবে কতটা
ভাল হবে সন্দেহ।
(ছ) শনি ৪র্থ ও ৫ম
পতি; অতএব রাজযোগকারী গ্রহ। শনি বলশালী হলে এবং শুভ দৃষ্ট
হলে শনির দশা খুব ভাল ফল দেবে আশা করা যায়।
(ক) রবি ১০ম পতি
হিসাবে শুভ। বলযুক্ত হলে রবি কর্মক্ষেত্রে উন্নতি, সম্মান
ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি ইতাদি ফল দিতে পারে।
(খ) চন্দ্র ৯ম পতি
হিসাবে শুভ ফল দেবে যদি শক্তিশালী হয়। দুর্বল হলে দুর্ভাগ্য
ডেকে আনতে পারে।
(গ) মঙ্গল লগ্ন ও
৬ষ্ঠ পতি। মূলত্রিকোণ ৬ষ্ঠে হওয়ায় মঙ্গলের জোর এবং অবস্থান
শুভ না হলে শারীরিক বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
(ঘ) বুধ এই লগ্নে
৮ম ও ১১শ পতি। শরীরের দিক থেকে শুভ নয় তবে বল ও অবস্থান
বিশেষে অর্থপ্রাপ্তির পথ সুগম করতে পারে। বলহীন হয়ে অশুভ
গ্রহের সঙ্গে যুক্ত হলে, মঙ্গলের বা যে অশুভ গ্রহের সঙ্গে
যুক্ত রয়েছে তাদের দশা অন্তর্দশায় শারীরিক সমস্যা ত হতেই
পারে, মৃত্যু হওযাও অসম্ভব নয়।
(ঙ) বৃহস্পতি ২য়
ও ৫ম পতি। শুভগ্রহ। বৃহস্পতির জোর থাকলে যথেষ্ট শুভ ফল
আশা করা যায়।
(চ) শুক্র ৭ম ও ১২শ
পতি। কেন্দ্রপতি হেয়ে নৈসর্গিক শুভ গ্রহ হওয়ায় ভাল ফল
দেবার কথা নয়। তবে ২য় ও ৭ম দুই ঘর থেকেই পরিবার, বিবাহ,
স্ত্রী ( বা স্বামী ) ইত্যাদি বোঝায়। শুক্রের বল থাকলে
এবং অবস্থানগত ভাবে শুভ হলে উক্ত বিষয়ে শুভ ফল দিতে পারে;
কিন্তু পাপগ্রহ যুক্ত হলে অবৈধ সংসর্গ ঘটাতে পারে।
(ছ) শনি ৩য় ও ৪র্থ
পতি। ৪র্থ কেন্দ্রের অধিপতি হিসাবে শুভ হলেও ৩য় পতি বলে
অশুভ। শুভ গ্রহের প্রভাব না থাকলে এখানে শনি খুব ভাল ফল
দেবে না।
(ক) রবি ৯ম পতি হিসাবে
অত্যন্ত শুভ। রবি বলশালী হলে ও অশুভ সংযোগ থেকে মুক্ত
থাকলে রবির দশায় জাতকের ভাগ্যোন্নতি, সম্মান ও সৌভাগ্য
লাভ ইত্যাদি সম্ভব। রবি দুর্বল হলে ভাগ্য বিপর্যয় ছাড়াও
পিতার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে ( রবি পিতৃকারক গ্রহ
)।
(খ) চন্দ্র ৮ম পতি
হলেও ৮ম পতিত্বের দোষ চন্দ্রকে স্পর্শ করে না বলে শাস্ত্রে
বলা হয়েছে। তবে ক্ষীণ চন্দ্র হলে বা অন্য কারণে চন্দ্র
দুর্বল হলে জাতকের ক্ষতি হতে পারে; পরমায়ু হ্রাস হতে পারে।
(গ) মঙ্গল ৫ম ও ১২শ
পতি এবং মূলত্রিকোণ ৫ম স্থানে হওয়ায় মঙ্গল শক্তিশালী হলে
শুভ ফলই দেবে।
(ঘ) বুধ ৭ম ও ১০ম
পতি বলে কেন্দ্রাধিপত্য দোষ রয়েছে। তবে রবি ও বুধের সম্বন্ধ
( ৯ম ও ১০ম পতির যোগ ) রাজযোগের ফল দেয় বলে কোন কোন জ্যোতিষী
মনে করেন। বুধ দুঃস্থানস্থ হলে শারীরিক অসুস্থতার কারণ
হতে পারে, পারিবারিক ক্ষেত্রেও অশান্তি ডেকে আনতে পারে।
(ঙ) বৃহস্পতি লগ্ন
ও ৪র্থ পতি। লগ্নপতি হওয়ায় ৪র্থ পতিত্বের দোষ থাকবে না।
বৃহ্রপতির জোর থাকলে এবং শুভ ভাবে থাকলে বৃহস্পতির দশায়
জাতকের সুখ শান্তি বৃদ্ধি পাবে।
(চ) শুক্র ৬ষ্ঠ ও
১১শ পতি। অশুভ গ্রহের সঙ্গে সংযুক্ত হলে শরীরের সমস্যা
তৈরী করতে পারে। তবে শুক্র বলশালী হলে আয়বৃদ্ধি হতে পারে
এবং কর্মক্ষেত্রে উন্নতিও হতে পারে।
(ছ) শনি ২য় ও ৩য়
পতি। মারক স্থান ও ৩য় স্থানের অধিপতি হিসাবে অশুভ।
(ক) রবি যদিও ৮ম
পতি তবে রবি ৮ম পতিত্বের দোষ থেকে মুক্ত বলে বলা হয়। তবে
রবি দুর্বল হলে বা দুঃস্থানস্থ হলে পরমায়ু হ্রাস হতে পারে।
(খ) চন্দ্র ৭ম পতি
বলে ক্ষীণ চন্দ্র হলে শুভ। তবে চন্দ্রের মারকত্ব দোষ থাকতে
পারে। চন্দ্র যদি ৫ম বা ৭মে থাকে তবে ভাল ফল হবে বলে মনে
হয়।
(গ) মঙ্গল ৪র্থ ও
১১শ পতি। কেন্দ্র পতি হিসসবে শুভ হলেও ১১শ পতি হিসবে অশুভ।
তবে জোর থাকলে মঙ্গলের দশায় গৃহসুখ ও ধন লাভ হতে পারে।
স্বাস্থ্যের ব্যাপারে তত ভাল নয়।
(ঘ) বুধ ৬ষ্ঠ ও ৯ম
পতি। মূলত্রিকোণ ৯ম স্থান কন্যা রাশিতে হওয়ায় ৯ম স্থানের
ফল দেবে বলে শুভ গ্রহ হিসাবেই ধরা যায়। তবে বুধ অন্য গ্রহের
দ্বারা সহজেই প্রভাবিত হয় বলে, পাপগ্রহের সঙ্গে সংযুক্ত
থাকলে তত ভাল ফল দেবে না।
(ঙ) বৃহস্পতি ৩য়
ও ১২শ পতি হিসাবে অশুভ।
(চ) শুক্র কোণ ও
কেন্দ্রপতি ( ৫ম ও ১০ম পতি ) হওয়ায় রাজযোগকারী গ্রহ। তবে
ভাল ফল দিতে হলে শুক্রকে অবশ্যই জোরাল হতে হবে।
(ছ) শনি লগ্ন ও ২য়
পতি। শনি বলশালী হলে শনির দশায় জাতকের স্বাস্থ্য, সম্মান
ও ধন লাভ হতে পারে। আবার শনি আয়ুষ্কারক হিসাবে আয়ুবৃদ্ধি
হওয়াও সম্ভব।
(ক) রবি ৭ম পতি;
অতএব কেন্দ্রপতি হিসাবে শুভ। রবির বল থাকলে এই দশায় জাতকের
ব্যবসায় লাভ, উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ
ইত্যাদি ফল লাভ হতে পারে।
(খ) চন্দ্র ৬ষ্ঠ
পতি বলে অশুভ।
(গ) মঙ্গল ৩য় ও ১০ম
পতি। ১০ম পতি হিসাবে হয় ত কিছুটা শুভ কিন্তু ৩য় পতিত্ব
হেতু অশুভ। অনেকে বলেন মঙ্গল শুধু ১০ম পতি হলে ভাল ফল
দেয় না; সেই সঙ্গে কোণের অধিপতি হলে তবেই শুভ ফলদায়ক।
(ঘ) বুধ ৫ম ও ৮ম
পতি; কিন্তু মূলত্রিকোণ ৮ম স্থানে হওয়ায় খুব শুভ নয়। এমন
কি অশুভ সংস্পর্শে থাকলে মারক দোষেও দুষ্ট হতে পারে।
(ঙ) বৃহস্পতি ২য়
ও ১১শ পতি। বৃহস্পতির বল থাকলে এর দশায় আয়বৃদ্ধি হতে পারে;
যদিও শরীরের দিক থেকে শুভ নয়।
(চ) শুক্র এই লগ্নে
৪র্থ ও ৯ম পতি হওয়ায় একাই রাজযোগকারী। শুক্র বলশালী হলে
শুক্রের দশায় জাতকের গৃহসুখ, বাহন লাভ, বন্ধু ও আত্মীয়দের
সঙ্গে যোগাযোগ এবং নানা ভাবে ভাগ্যোন্নতি হতে পারে।
(ছ) শনি লগ্ন ও ১২শ
পতি। পরাশরের মতে ১২শ ভাব 'পরতন্ত্রী' বলে, শনি লগ্ন পতি
হিসাবেই ফল দেবে। অতএব শনি শক্তিশালী হলে জাতকের শরীর
ভাল যাবে, আধ্যাত্মিক যোগাযোগও হতে পারে, অবশ্য যদি অন্যান্য
শুভ যোগ থাকে।
(ক) রবি ৬ষ্ঠ পতি।
দুঃস্থানের অধিপতি হিসাবে শুভ নয়। তবে ৬ষ্ঠ উপচয় স্থান
বলে, অবস্থান বিশেষে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভাল ফল দিতে পারে।
রবি যেহেতু পিতৃকারক গ্রহ এবং জীবনী শক্তিরও কারক অতএব
রবির অবস্থান এই লগ্নে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফলাফলের
সূচক হতে পারে।
(খ) চন্দ্র ৫ম পতি।
চন্দ্রের জোর থাকলে এর দশায় জাতকের শুভ ফল লাভ হবে।
(গ) মঙ্গল ২য় ও ৯ম
পতি। ২য় ভাব 'পরতন্ত্রী' বলে মঙ্গল ৯ম স্থানের ফলই মুলতঃ
দেবে, অতএব শুভ। তবে দুর্বল বা পাপযুক্ত হলে যথেষ্ট দুর্ভাগ্যের
কারণ হতে পারে।
(ঘ) বুধ ৪র্থ ও ৭ম
পতি; অতএব কেন্দ্রাধিপতির দোষ রয়েছে; দুঃস্থানস্থ ( ৬ষ্ঠ,
৮ম ) হলে বা ২য় স্থানে অবস্থান করলে সুখ-শান্তি ও চাকরীর
ক্ষেত্রে অশুভ ফল দিতে পারে।
(ঙ) বৃহস্পতি লগ্ন
ও ১০ম পতি। যেহেতু লগ্নপতি অতএব ১০ম কেন্দ্রের অধিপতি
হিসাবে অশুভ ফল দেবে না বলেই বলা হয়েছে। বৃহস্পতি শক্তিশালী
হলে জাতকের চাকরীর উন্নতি, সম্মান বৃদ্ধি, শুভ যোগাযোগ
ইত্যাদি ঘটতে পারে। জাতকের যথেষ্ট নৈতিকতা ও মূল্যবোধ
থাকবে।
(চ) শুক্র ৩য় ও ৮ম
পতি। যেহেতু ৩য় ও ৮ম স্থান থেকে আয়ু বিচার হয়, অতএব শুক্র
শক্তিশালী হলে ও অশুভ গ্রহের সংস্পর্শে না এলে পরমায়ু
বৃদ্ধি পাবে।
(ছ) শনি ১১শ ও ১২শ
পতি। ১২শ ঘর 'পরতন্ত্রী' বলে ১১শ স্থানের ফল দেবার কথা।
এই কারণে শনি শুভ হলে আয়বৃদ্ধি হতে পারে; কিন্তু শরীরের
পক্ষে শুভ নাও হতে পারে। দুর্বল শনি ক্ষতিবৃদ্ধি করবে।
তবে এগুলি সাধারণ নিয়ম
বলে অনেক জ্যোতিষী মনে করেন। যদিও কোন লগ্নের জন্য কোন গ্রহ
শুভ বা অশুভ এটা অবশ্যই জানা দরকার, তবে আক্ষরিক অর্থে এগুলি
মেনে চললে অনেক সময়েই ভুল হবার সম্ভাবনা। জ্যোতিষশাস্ত্রে
কোন কুণ্ডলীর বিচার সামগ্রিক ভাবে করতে হবে, শুধু কোনো একটি
নিয়মকে গুরুত্ব দিয়ে নয়। এই প্রসঙ্গে সুশ্লোকশতকে উক্ত আছে
-
গ্রহাঃ
খলাঃ খলা নাত্র, সৌম্যাঃ সৌম্যাঃ কদাচন।
তত্তত্স্থানানুসারেণ ভবন্তীহ খলাঃ শুভাঃ ।।
এর অর্থ হল, গ্রহদের
মধ্যে শুভ বা অশুভ বলে কিছু নেই, অর্থাত্ শুভ গ্রহ হলেই
শুভ ফল দেবে বা অশুভ গ্রহ মাত্রেই অশুভ ফল দেবে এমন কিছু
নয়। কোন গ্রহ কোথায় অবস্থিত তার উপরেই শুভাশুভ ফলাফল নির্ভর
করে।
দীপক
সেনগুপ্ত
ফেব্রুয়ারী ৭, ২০১১
(চলবে)
Copyright
© 2014 Abasar.net. All rights reserved.
|
অবসর-এ প্রকাশিত
পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।
|