জ্যোতিষশাস্ত্র
প্রবেশিকা (অন্যান্য
অনুচ্ছেদ)
এই
বিভাগ এখনও
UNICODE ফণ্ট-এ অসম্পূর্ণ। বাংলা হরফ ফণ্টে দেখতে এইখানে
ক্লিক করুন।
অনুচ্ছেদ
১৬
শেষের কথা
বিভিন্ন অনুচ্ছেদের
বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা করার সময় অনেক ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে কিছু
বিষয় পরে বিশদ ভাবে আলোচিত হবে । বস্তুতঃ জ্যোতিষশাস্ত্র
এত বৃহৎ এবং এর শাখা প্রশাখা এতদূর বিস্তৃত যে বহু আলোচনা
চালিয়ে যাওয়া সম্ভব । কিন্তু আমাদের মূল ধারাবাহিকের নাম
ছিল " জ্যোতিষশাস্ত্র প্রবেশিকা " অর্থাৎ মূল
প্রবেশ দ্বারে পৌঁছতে সাহায্য করা ; মনে হয় সেটা হয়েছে ।
ইচ্ছুক এবং কৌতূহলী পাঠকেরা বিভিন্ন অনুচ্ছেদে আলোচিত প্রাথমিক
বিষয়গুলি জেনে নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ের জ্ঞাতব্য বিষয়গুলি
নিজেরাই অনুধাবন করতে পারবেন । Number of hits দেখে মনে
হয়েছে বহু লোক বিষয়টি সম্বন্ধে কৌতূহলী হয়েছেন এবং এটা পড়েছেন
। এই অনুচ্ছেদের শেষে বেশ কিছু বই-এর নাম দেওয়া হয়েছে যেগুলির
সাহায্যে অযথা বিভ্রান্তির মধ্যে না পড়ে পাঠকেরা সহজে বিভিন্ন
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি জেনে নিতে পারবেন । বলা বাহুল্য এই
বই গুলিই সব নয়, অবশ্যই আরও ভাল বই রয়েছে ; পড়তে শুরু করলে
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাঠকেরা সেগুলির উল্লেখ পেয়ে যাবেন ।
এ পর্যন্ত যা কিছু
আলোচনা করা হয়েছে তাতে কোন ব্যক্তির জন্ম কুণ্ডলী থেকে কিছু
প্রধান বা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বিশ্লেষণ করা মোটামুটি সহজ
হবে বলে মনে হয়। ১৫ নং অনুচ্ছেদে ১০ জন খ্যাতনামা ব্যক্তির
কুণ্ডলী বিচার করে নির্দিষ্ট গ্রহের দশায় তাদের জীবনের বিশেষ
কিছু ঘটনা ঘটার কারণ নির্ণয়ের চেষ্টা করা হয়েছে। যে সব নিয়ম
কাজে লাগিয়ে এই বিশ্লেষণ করা হয়েছে তা সবই বিভিন্ন অনুচ্ছেদে
ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
একটা কথা মনে রাখা
দরকার। ভবিষ্যতের ঘটনা সম্বন্ধে পূর্বাভাষ দেওয়া কিন্তু
অতীতের কোন ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার থেকে অনেক কঠিন। কারণ,
বিভিন্ন গ্রহের অবস্থান এবং পারস্পরিক প্রভাব থেকে অনেক
সম্ভাব্য ঘটনার চিত্র ফুটে ওঠে; প্রতিটির জন্যই যুক্তি দেওয়া
যায়; কিন্তু সব গুলিই ত ঘটেনা। ঘটে কেবল একটি নির্দিষ্ট
ঘটনা। অতীতে যেটি ঘটে গিয়েছে সেটার স্বপক্ষে ( অবশ্যই নিয়ম
মেনে ) যুক্তি প্রতিষ্ঠিত করে বাকি গুলি বাদ দেওয়া অপেক্ষাকৃত
সহজ। কিন্তু যে ঘটনা গুলি ঘটতে পারতো অথচ ঘটল না, সে গুলি
কেন ঘটল না সেটা ব্যাখ্যা করার কোনো প্রয়োজনীয়তা থাকে না।
কিন্তু ভবিষ্যত সম্বন্ধে বলতে গেলে কোনো একটি ঘটনাকে নির্দিষ্ট
করে বের করে নিয়ে আসতে হবে। সেটার জন্য যে নিয়ম গুলি আগে
ব্যাখ্যা করা হয়েছে সেগুলি অবশ্যই প্রয়োজনীয় তবে সব সময়ে
শুধু সেগুলিই যথেষ্ট নয়। বহু সম্ভাবনার মধ্যে বেশ কিছু ছেঁটে
ফেলে কয়েকটিকে চিহ্ণিত করে পরবর্তী স্তরে পরিসর আরও ছোট
করে সর্বাধিক সম্ভাবনাময় একটিকে নির্দিষ্ট করতে হলে শুধু
নিয়ম ছাড়াও ব্যক্তির অভিজ্ঞতা, বিশ্লেষণ ক্ষমতা ও সহজাত
জ্ঞান (intuition) যথেষ্ট সহায়ক হয়। দেশ কাল ও পাত্রের বিবেচনা
ত আছেই।
ফলিত জ্যোতিষের মূল
কথা হল , ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ঘটনা সম্বন্ধে আলোকপাত করা
। এটা না হলে শুধু তত্ব আলোচনা করলে বা বিভিন্ন প্রামাণ্য
গ্রন্থ থেকে সূত্র উদ্ধৃত করে কোন লাভ নেই ; এতে বড় জোর
কোথাও বক্তৃতা করার বা প্রবন্ধ লেখার সুবিধা হতে পারে মাত্র।
প্রাথমিক ভাবে যা আলোচনা করা হয়েছে সেটা ছাড়া পরবর্তী পর্যায়ে
যে বিষয়গুলি অবশ্যই জানা বা করা দরকার সেগুলি হল -
(ক) গোচর ফল (effect
of transit)
(খ) বর্গ বিভাগ ও তার বিশ্লেষণ ( use of Divisional Charts
)
(গ) অষ্টকবর্গ পদ্ধতি
(ঘ) জৈমিনী পদ্ধতিতে কুণ্ডলী বিশ্লেষণ
(ঙ) পূর্বে বর্ণিত এবং উপরে উল্লেখ করা বিষয় সব গুলি একত্রে
বিচার করে একটি নির্দ্দিষ্ট ফলে উপনীত হওয়া । এতে হয়ত ভবিষ্যতের
একটি সম্ভাব্য ঘটনার আভাষ পাওয়া যেতে পারে ।
(চ) প্রতিকারের উপায়
খুব সংক্ষেপে কয়েকটি
কথা বলে বর্তমান আলোচনার উপসংহারে পৌঁছন যাক ।
(১) জন্ম কুণ্ডলীতে
অর্থাৎ একটি ন্র্দিষ্ট কাঠামোয় সন্নিবেশিত লগ্ন এবং নয়টি
গ্রহের ( রাহু ও কেতু সহ ) অবস্থান দেখেই কোন ব্যক্তির শারীরীক
গঠন , তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য , মানসিক গঠন , তার ব্যবহার
, জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে যা যা ঘটবে এবং তজ্জনিত ঐ ব্যক্তির
মানসিক প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি সম্বন্ধে কুণ্ডলীটি দেখে গড়
গড় করে বলে যাওয়া যে সহজ কাজ নয় সেটা সহজেই বোঝা যায় । এর
মধ্যে আবার রয়েছে কিছু বিষয় সম্বন্ধে বিভিন্ন মত - এদের
মধ্যে কোনটি গ্রহণীয় সেটাও অভিজ্ঞতা দিয়ে ঠিক করতে হবে ।
জ্যোতিষশাস্ত্রে বহু কিছু লিপিবদ্ধ হয় নি ; বেশ কিছু বিষয়
চিরকালের জন্য লুপ্ত হয়ে গিয়েছে । বিতর্কিত বিষয় গুলি নিয়ে
কোন একটি সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে গেলে এ নিয়ে গবেষণার
যথেষ্ট প্রয়োজন ও সুযোগ রয়েছে ।
(২) একটি বিভ্রান্তিকর
বিষয় হচ্ছে অযনাংশ । অনেকে লাহিড়ী অয়নাংশ ব্যবহার করেন ,
অনেকে আবার রমনের অয়নাংশ মেনে চলার পক্ষপাতী । এ ছাড়া অন্যান্য
অয়নাংশও রয়েছে । লাহিড়ী ও রমন অয়নাংশের মধ্যে তফাৎ মোটামুটি
১ ডিগ্রি ২৭ মিনিট ; অর্থাৎ লহিড়ীর অয়নাংশ ধরে গ্রহস্ফুট
বের করলে সেটা রমনের গ্রহস্ফুট থেকে ১ ডিগ্রি ২৭ মিনিট কম
হবে ; এর প্রভাব বর্গ বিভাগেও ( নবাংশ সহ ) পড়তে পারে ।
মনে হয় এখন অধিকাংশ জ্যোতিষী , অন্তত উত্তর ভারতে , চিত্র
পক্ষ অয়নাংশ বা লাহিড়ী অয়নাংশ ব্যবহারের পক্ষপাতী । এ রকম
ভিন্ন মত আরও অনেক বিষয় সম্বন্ধে রয়েছে ; তার মধ্যে একটি
হল - শিক্ষা লাভের বিষয়টি । সন্তানের পড়াশোনা কেমন হবে ,
উচ্চশিক্ষা হবে কি না ইত্যাদি খুবই সাধারণ এবং গুরুত্বপূর্ণ
প্রশ্ন। অনেকেই এটা জানতে চান , সেটাই স্বাভাবিক । যেটা
নিয়ে মতভেদ সেটা হল , শিক্ষা কোন ভাব থেকে বিচার্য - ৪র্থ
না ৫ম ? এর কারক গ্রহই বা কি ? বুধ না বৃহস্পতি , না কি
দুটিই ? অনেকে আবার ২য় ভাবটিকেও বিদ্যালাভের সঙ্গে যুক্ত
করেন । এ সম্বন্ধে কিছু আলোচনা করা হয়েছে , বাকিটা পাঠকেরা
আরও পড়াশোনা করে নিজেদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে
পারবেন বলে আশা করা যায় ।
(৩) অপর একটি বহু জিজ্ঞাসিত
প্রশ্ন হল বিবাহ কখন হবে , বিবাহিত জীবন সুখের হবে কি না
, আয়ুর পরিমাণ কত ইত্যাদি । আয়ু নির্ণয় অত্যন্ত কঠিন, হয়
ত সেই জন্যই বলা হয় জন্ম , মৃত্যু , বিবাহ ভগবানের হাতে
। আয়ু নির্ণয়ের বহু নিয়ম আছে , কোন একটি নিয়ম সঠিক ফল দেয়
না । আমার মনে হয় শাস্ত্রোক্ত নিয়ম গুলি ছাড়াও লগ্ন ও লগ্ন
পতির বল , অন্যান্য গ্রহের অবস্থান ও তাদের বল থেকে সামগ্রিক
ভাবে বিচার করলে একট মোটামুটি সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে
।
(৪) বর্গবিভাগ সম্বন্ধে
৬ষ্ঠ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে। রাশিচক্র প্রস্তুত করার
সময়ে ৩৬০ ডিগ্রিকে ১২ টি সমান ভাগে ভাগ করে প্রত্যেকটি রাশির
জন্য ৩০ ডিগ্রি নির্দিষ্ট করা হয়। কিন্তু এই ৩০ ডিগ্রির
মধ্যে কোন গ্রহ সব অবস্থানের জন্যই সমান ফল দান করে না।
সেটার জন্য একটি রাশিকে আরও ভাগ করার প্রয়োজন হয়। কোন রাশিকে
৯ ভাগ করে প্রতিটি অংশ ৩ ডিগ্রি ২০ মিনিট ধরে নবাংশ প্রস্তুত
করার পদ্ধতি ৬ষ্ঠ অনুচ্ছেদেই আলোচনা করা হয়েছে। নবাংশ বর্গের
গুরুত্ব সব জ্যোতিষীই স্বীকার করেছেন। জন্ম কুণ্ডলী বিশ্লেষণে
নবাংশকে রাশি চক্রের পরেই সর্বাধিক প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ
বলে ধরা হয়। নবাংশের ব্যবহার ১৫ নং অনুচ্ছেদে বিভিন্ন কুণ্ডলী
বিশ্লেষণের সময় বিশদ ভাবে করা হয়েছে।
শুধু রাশিচক্র এবং
নবাংশ থেকে অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্তে আসা খুব সহজ নয় - এ
কথা আগেও বলা হয়েছে ; রাশিচক্রে সন্নিবিষ্ট গ্রহ গুলি থেকে
তাদের পারস্পরিক সম্বন্ধ বা প্রভাব বিষয়ে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে
পৌঁছোন কঠিন ; এর জন্য বিভিন্ন বর্গ বিভাগের প্রয়োজন । এ
সম্বন্ধে একটি সুন্দর দৃষ্টান্ত দেওয়া যেতে পারে ; এটি গায়ত্রী
দেবী বাসুদেবের ( প্রয়াত জ্যোতিষী বি. ভি. রমনের সুযোগ্যা
কন্যা ) 'Modern Astrology' থেকে নেওয়া , তবে বর্তমান আলোচনায়
রমন অয়নাংশের পরিবর্তে লাহিড়ী অয়নাংশ ব্যবহার করা হয়েছে
। ছকটি বিখ্যাত শিল্পপতি ধিরুভাই আম্বানির ।
ধিরুভাই আম্বানির জন্ম
তারিখ ২৮শে ডিসেম্বর , ১৯৩২ খৃষ্টাব্দ । সময় সকাল ৬ - ৩৭
মিনিট ; স্থান : Chorwad, GujraT; 21 N 30, 70 E 30 ; ভোগ্য
দশা : শুক্র ৮ বছর ৪ মাস ১ দিন । ছকটির রাশিচক্র (Natal
Chart) এবং নবাংশ বর্গটি (D9) যথাক্রমে ১৬(১)ক ও ১৬(১)খ
চিত্রে দেখান হয়েছে । অত্যন্ত সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে
জন্ম ধিরুভাই-এর , পড়াশোনা ম্যাট্রিক পর্যন্ত । প্রথম জীবনে
তীর্থযাত্রীদের খাবার বিক্রি করে এবং পরে একটি পেট্রোল পাম্পে
কাজ করে কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করতেন । ১৯৫৮ সালে মশলার
ব্যবসা এবং পরে ৭০-এর দশকে Reliance Textile তাকে চূড়ান্ত
সাফল্য এনে দেয় । সফল শিল্পপতি হিসাবে তার নাম এখন সবারই
জানা । কিন্তু কুণ্ডলীটি পরীক্ষা করলে এই সাফল্য বোঝা যায়
কি ? কুণ্ডলীতে সফলতার কারণ হিসাবে যেটা পাওয়া যায় সেটি
হল লগ্নপতি বৃহস্পতির ১০মে ( সেটাও মিত্র ক্ষেত্রে নয় )
এবং ৯ম পতি রবির লগ্নে অবস্থান । অপর দিকে অশুভ দিকটাও যথেষ্ট
প্রকট । ১১শ পতি শুক্র ও ১০ম পতি বুধের ১২শে অবস্থান কর্মক্ষেত্র
ও অর্থলাভের পক্ষে মোটেই অনুকূল নয় । নবাংশ চক্রেও ১০ম ও
১১শ পতি শনি এবং ৯ম পতি বৃহস্পতি নীচস্থ , ২য় পতি শুক্রের
লগ্নপতির সঙ্গে যুক্ত ভাবে ৮মে অবস্থানও মোটেই শুভ নয় ।
অতএব রাশিচক্র ও নবাংশ থেকে সাফল্যের সম্পূর্ণ চিত্রটি একেবারেই
ফুটে ওঠে না । অর্থাৎ রাশি ও নবাংশের উপর নির্ভর করে ভবিষ্যৎ
সম্বন্ধে বললে সেটা না মিলবার সম্ভাবনা যথেষ্ট রয়েছে । আগে
উল্লেখ করা হয়েছে জীবিকা সম্বন্ধে জানার জন্য দশাংশ বর্গ
বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন । দশাংশ বর্গটি (D10) ১৬(১)গ চিত্রে
দেখান হয়েছে । দশাংশটি পরীক্ষা করলে দেখা যাবে লগ্ন ও ৪র্থ
পতি বৃহস্পতির সঙ্গে ১১শ ( ও ৬ষ্ঠ ) পতির স্থান বিনিময় হয়েছে,
যেটা ধন লাভের সহায়ক । ২য় পতি শনি ও ১১শ পতি শুক্র লগ্নে
যুক্ত , এটিও খুব কার্যকরী । ৯ম পতি রবি তুঙ্গী এবং ৫ম পতি
মূলত্রিকোণস্থ মঙ্গলের সঙ্গে ৫মে যুক্ত । অর্থোপার্জন ও
ভাগ্যোন্নতির পক্ষে বিশেষ সহায়ক । চন্দ্রও স্বক্ষেত্রে অবস্থিত
। চন্দ্র লগ্ন থেকেও রাজযোগকারী মঙ্গল ২য় পতি রবির সঙ্গে
১০মে অবস্থিত । উভয় গ্রহই শক্তিশালী । চিত্রটি এখন যথেষ্ট
পরিষ্কার । অতএব বোঝা গেল , শুধু রাশিচক্র ও নবাংশ থেকে
বিচার করলে সৌভাগ্য ত দূরের কথা বিপরীত ফল নির্দেশের সম্ভাবনা
ছিল । অবশ্য সব কুণ্ডলীতেই এত অস্পষ্টতা থাকবে তা নয় , তবে
রাশিচক্র এবং নবাংশ থেকে যদি জোরাল ভাবে ফল লাভের সম্ভাবনা
দেখা যায়, তবে সেটা প্রায় নিশ্চিত হয়ে বলা যেতে পারে ।
এবার ধিরুভাই-এর অপর
একটি বর্গ নেওয়া যাক । আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে ধন লাভের
সম্ভাবনা পরীক্ষা করর জন্য হোরা (D2) বর্গ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
। হোরা বর্গ তৈরী করার বিভিন্ন নিয়ম আছে , এখানে কেরল হোরা
পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে । এটি ১৬(১)ঘ চিত্রে দেখান হয়েছে
। কেরল হোরায় ২য় পতি ২য়ে স্বক্ষেত্রে , ৯ম পতি রবি লগ্নে
৫ম পতি মঙ্গল দৃষ্ট ; তুঙ্গী ১০ম পতি বুধ , লগ্ন ও ৪র্থ
পতি বৃহস্পতি এবং নীচভঙ্গ ১১শ পতি শুক্রের সঙ্গে ১০মে যুক্ত
এবং ৫ম পতি মঙ্গল দ্বারা দৃষ্ট - ধনলাভের অত্যন্ত সহায়ক
। বর্গ বিভাগের প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব এবার নিশ্চয়ই পরিষ্কার
বোঝা যাচ্ছে । অপর একটি লক্ষণীয় বিষয় হ'ল , বর্গ-বিভাগ করলে
দেখা যাবে , ধিরুভাই-এর লগ্নটি রশিচক্র সহ দ্রেক্কন , চতুর্থাংশ
, সপ্তাংশ , দশাংশ , দ্বাদশাংশ ও ষোড়শাংশতে ধনু রাশিতে পড়েছে
; এর ফলে লগ্নটি অত্যন্ত বলবান হওয়ায় সফলতার সহায়ক হয়েছে
।
কৌতূহলী পাঠকের সুবিধার্থে
১৬(১)ঙ চিত্রে বিল গেট্সের কেরল হোরাটি দেখান হয়েছে , পর
পর কয়েক বছর বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনী ব্যক্তির সমর্থনে যথেষ্ট
তথ্য আছে কি না দেখার জন্য। এটা জানা আছে যে ধনযোগের জন্য
২য় , ৫ম , ৯ম এবং ১১শ পতির বল গুরুত্বপূর্ণ । বিল গেট্সের
হোরা বর্গে ২য় পতি শুক্র , ৯ম পতি বৃহস্পতি এবং ১১শ পতি
শনির সঙ্গে ৫মে সিংহ রাশিতে অবস্থিত । এটা পরিষ্কার দেখা
যাচ্ছে ধিরুভাই-এর চেয়ে বিল গেট্সের হোরা লগ্ন অনেক শক্তিশালী
; যেটা প্রত্যাশিত । বর্গ বিভাগ ও তার গুরুত্ব সম্বন্ধে
মোটামুটি একটা ধারণা করা গেল ।
(৫) এবার একটি উদাহরণের
মাধ্যমে অপর একটি বিষয় সম্বন্ধে কিছুটা আলোকপাত করা হবে
। অনেক সময় দেখা যায় কোন ব্যক্তির লগ্ন কোন রাশির একেবারে
প্রথমে বা শেষে গিয়ে পড়েছে ; যেমন কারো লগ্ন মিথুন রাশির
২৯ ডিগ্রি ২০ মিনিট বা ধনু রাশির শূণ্য ডিগ্রি ৪০ মিনিট
। এখানে একটা প্রশ্ন মনে আসতেই পারে যে , লগ্নটি কর্কট বা
বৃশ্চিক নয় তো ? কারণ , ৪ মিনিটের হেরফের হলেই লগ্ন ১ ডিগ্রি
সরে যেতে পারে এবং চার পাঁচ মিনিটের তফাৎ হওয়াটা আশ্চর্যজনক
কিছু নয় ; ঘড়িটি হয় ত ঠিক সময় দিচ্ছিল না বা জন্ম মুহূর্তের
ঠিক সময়টি দেখে লিখে রাখা হয় নি । এই ধরণের লগ্ন হলে , সঠিক
উপায় হল জীবনের কিছু অতীত ঘটনার সঙ্গে কুণ্ডলীটি মিলিয়ে
দেখা । এ রকম একটি ছক এখানে আলোচনা করা হচ্ছে ( কৃতজ্ঞতা
স্বীকার - Vaughn Paul Manley এবং Marc Boney )। ছকটি হল
Tiger Woods-এর । জন্ম তারিখ ও সময় : ৩০শে ডিসেম্বর , ১৯৭৫
সাল ; রাত্রি ১০টা ৫০ মিনিট । স্থান : Long Beach, California;
118 W 11, 33 N 46; Time Zone : 8-0-0 west; No day light
saving। লাহিড়ী অয়নাংশ । ভোগ্য দশা : বুধ ১ বছর ৫ মাস ১৬
দিন । রাশিচক্র , নবাংশ ও দশাংশ বর্গ যথাক্রমে ১৬(২)ক ,
১৬(২)খ এবং ১৬(২)গ চিত্রে দেখান হয়েছে । লগ্ন কন্যা রাশির
শূণ্য ডিগ্রি ৪৭ মিনিট । সন্দেহ হতেই পারে লগ্নটি সিংহ রাশির
শেষে নয় তো ?
Tiger Woods একজন বিখ্যাত
গল্ফ খেলোয়াড় এবং প্রচুর অর্থের মালিক । অতএব কুণ্ডলীটিতে
ধন যোগ থাকা খুবই স্বাভাবিক । ১৯৯৭ সালে শুক্র-শনির দশাতে
তার ৬০ মিলিয়ান ডলারের একটি চুক্তি সই হয় ; শুক্র শনির অনুরাধা
নক্ষত্রে অবস্থিত ; শনি ৫ম পতি এবং ১১শে অবস্থিত । কিন্তু
যদি সিংহ লগ্ন ধরা যায় তবে অবশ্য রাজযোগকারী মঙ্গলের সঙ্গে
১০ম পতি শুক্রের স্থান বিনিময় হয় , এটা খুবই ভাল ; কিন্তু
সে ক্ষেত্রে শনির অবস্থান লগ্নের ১২শে হয় এবং ১২শ পতি চন্দ্রের
সঙ্গে শুক্র যুক্ত হয় - ধন যোগের অনুকূল হিসাবে এটাকে মেনে
নেওয়া যায় না । Woods-এর পিতৃবিয়োগ হয় ১০৯৬ সালের ৩রা মে
, রবি-রাহুর দশায় । কন্যা লগ্ন ধরলে পিতৃকারক গ্রহ রবি ৯মের
৮মে অবস্থিত হয় ; রাহুর শুক্রের ঘরে শুক্রের ফল দেবে এবং
শুক্র ৯মের ৭মে অবস্থিত । অপর পক্ষে লগ্ন সিংহ হলে রবি ৯ম
স্থান থেকে ৯মে অবস্থিত হয় এবং রবির মহাদশাতে পিতৃ বিয়োগের
সম্ভাবনা সমর্থিত হয় না । দশাংশ বর্গে লগ্ন বৃষ রাশি হয়
( রাশি চক্রে লগ্ন কন্যা ধরলে ) ; শনি ৯ম ও ১০ম পতি হিসাবে
রাজযোগকারী গ্রহ এবং লগ্নে শুক্রের ঘরে অবস্থিত এবং শুক্র
লগ্নের ৪র্থে অবস্থিত হওয়ায় শুক্র-শনির দশা অর্থ সংক্রান্ত
ব্যাপারে খুবই অনুকুল হয় । যদি রশিচক্রে লগ্ন সিংহ হয় তবে
দশাংশ বর্গে লগ্ন হয় মেষ । তখন শনি ১০ম ও ১১শ পতি হয়ে লগ্নের
২য়ে অবস্থিত হবে এবং শুক্রের অবস্থান হবে লগ্নের ৫মে ; এটাও
ধনযোগের পক্ষে যথেষ্ট শুভ । তবে কন্যা লগ্নের ক্ষেত্রে শুক্র
ও শনি পরস্পরের কেন্দ্রে থাকায় , কন্যা লগ্নের সম্ভাবনাই
বেশী । তবে এখনও কিন্তু কিছুটা সন্দেহ থেকেই যায় - লগ্ন
কন্যা না সিংহ ।
অন্য ঘটনা বিশ্লেষণ
করা যাক । Tiger Woods-এর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক সারা পৃথিবীতে
সোরগোল ফেলে দিয়েছিল । ৮ম স্থান থেকে গোপনীয় বিষয় , বিবাহ-বহির্ভূত
সম্পর্ক বোঝাতে পারে । বৃশ্চিক রাশির বৈশিষ্ট্য হ'ল গোপনীয়তা
, একগুঁয়ে ভাব ইত্যাদি । এটা যে সব সময় অশুভ হবে তা নয় ,
অনেক সাধকের , বিশেষ করে যারা গুপ্তভাবে সাধনা করেন , তাদেরও
এই রাশির প্রভাব থাকতে পারে । কিন্তু Tiger Woods-এর ক্ষেত্রে
যৌন শক্তির কারক গ্রহ মঙ্গল ৩য় ও ৮ম স্থানের অধিপতি ( বৃশ্চিক
ও মেষ রাশির ) এবং বক্রী হয়ে শুক্রের ( যৌন সংক্রান্ত বিষয়ক
গ্রহ ) ৭মে অবস্থিত । তাদের স্থান বিনিময়ও হয়েছে । অতএব
কুণ্ডলীটিতে এই বৈশিষ্ট্য পুর মাত্রায় বিদ্যমান । ২০০৯ সালে
রবি শুক্রের দশায় তিনি নতুন করে আবার যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে
পড়েন । রবি লগ্নের ৪র্থে অবস্থিত এবং মঙ্গলের ৮ম দৃষ্টির
দ্বারা দৃষ্ট । এ ছাড়া নীচস্থ চন্দ্র ( মনের কারক গ্রহ )
ও শুক্রকে ত মঙ্গল দৃষ্টি দিচ্ছেই । অতএব Woods-এর লগ্ন
সন্দেহাতীত ভাবে কন্যা ।
অপর একটি ঘটনাও মিলিয়ে
নেওয়া যেতে পারে । এটা থেকে গোচর ফল সম্বন্ধেও কিছুটা ধারণা
করা যাবে । ২০০৭ সালের ২৭শে নভেম্বর Tiger Woods একটি গাড়ী
দুর্ঘটনায় পড়েন । তখন তার রবি-শুক্র-রাহু দশা-অন্তর্দশা-প্রত্যন্তর্দশা
চলছিল । উক্ত তারিখে বিভিন্ন গ্রহের অবস্থান ( গোচর ) ১৬(২)ঘ
চিত্রে দেখান হয়েছে । ৪র্থ স্থান বাহন স্থান হিসাবে কথিত
এবং শুক্র বাহনের কারক গ্রহ । গোচর ছকটিতে দেখা যাবে ঐ দিন
রাহু ৪র্থে অবস্থান করছে এবং রবি ও শুক্র শনির দ্বারা দৃষ্ট
। যেহেতু ৪র্থ থেকে গৃহ এবং গৃহসুখেরও বিচার হয় , ঐ দশা-অন্তর্দশাতেই
Woods-এর স্ত্রী Elin Nordegren গৃহত্যাগ করেন । গোচর (transit)
বিচার ব্যাখ্যা করার জন্য এটি একটি সুন্দর উদাহরণ ।
বিভিন্ন ঘটনা বিশ্লেষন ও পর্যালোচনা করে Tiger Woods-এর
কন্যা লগ্নের পক্ষেই মত দেওয়া যায় ।
(৬) অষ্টকবর্গ ও জৈমিনি
দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিচার পদ্ধতি ; এক কথায় এটা বলা সম্ভব
নয় । বই-এর নাম দেওয়া হচ্ছে , ইচ্ছুক পাঠকেরা পড়ে দেখতে
পারেন ।
(৭) সবার শেষের প্রশ্ন
বিরূপ গ্রহের কি কোন প্রতিকার আছে ? একটা কথা প্রথম পরিচ্ছেদেই
ব্যাখ্যা করা হয়েছে , মানুষ পৃথীবিতে এসে তারই সঞ্চিত কর্মফল
ভোগ করে । এমন কোন ব্যবস্থা হতে পারে না যার দ্বারা বিরূপ
কর্মফলকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়ে সুখে শান্তিতে বাস করা যায়
- এটা সৃষ্টির নিয়ম বিরুদ্ধ । মানুষ যতই পাণ্ডিত্য দেখাক
আর হাত পা নেড়ে বক্তৃতা দিক , পরিশেষে তাকে সেই প্রকৃতির
অধীনেই থাকতে হয় । গ্রহ রত্ন ধারণে হয় ত কিছুটা কাজ হয় ,
হতেও দেখেছি , কিন্তু একটা সীমা পর্যন্ত । এই তত্ত্বে বিশ্বাস
করলে মানুষের অসুখও ভোগ করে কর্মফলের জন্য , তা বলে কি ওষুধে
কাজ হয় না ? কিন্তু সব অসুখ কি ওষুধে সম্পূর্ণ নির্ম্মূল
হয় ? এরও একটা সীমা আছে - ঠিক একই নিয়ম রত্ন ধারণ বা অন্যান্য
প্রতিকার সম্বন্ধে খাটে । তবে আপত্তিটা অন্যখানে । বিপদে
পড়লে বহু লোকই অসহায় বোধ করেন এবং তখন তারা প্রতিকারের জন্য
জ্যোতিষীর শরণাপন্ন হন এবং তাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কিছু
অজ্ঞ বা স্বল্পজ্ঞানী ব্যক্তি নিজেকে অভিজ্ঞ বলে জাহির করে
প্রতিকারের নামে লোককে ঠকান । এটা সমর্থনযোগ্য ত নয়ই বরং
অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ । এর জন্য এই শাস্ত্র সম্বন্ধেও মানুষের
মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় ।
যারা ঈশ্বরে বিশ্বাসী
, তারা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে পারেন । এতে কাজও হয়
। হয় ত অল্পের উপর দিয়ে ভোগ হয়ে যায় , বাকীটা ত ভোগ করতেই
হবে ।
যারা ঈশ্বর বিশ্বাসী নন , তারা স্বাভাবিক ভাবেই জ্যোতিষ
শাস্ত্রকেও বিশ্বাস করবেন না - কারণ এ দুটির কোনটিই কোন
গবেষণাগারের নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে
অথবা গণিতের সাহায্যে প্রমাণ করা যায় না । অতএব তাদের জন্য
এসব কিছুরই প্রয়োজন নেই । যারা প্রতিকার ও রত্ন ধারণ সম্বন্ধে
জানতে চান , বই পড়ে নিতে পারেন ।
পরিশেষে বিখ্যাত যোগী
স্বামী যোগানন্দের কথা দিয়ে শেষ করি । তাঁর এই কথাগুলি যারা
জ্যোতিষশাস্ত্রে বিশ্বাস করেন বা করেন না , উভয় পক্ষের সমর্থনেই
কিছুটা রসদ যোগাবে । 'ছোটবেলা থেকেই জ্যোতিষশাস্ত্রের ওপর
আমার একটা অশ্রদ্ধা আর অবিশ্বাসের ভাব ছিল খানিকটা এই কারণে
যে , যাদের কোন যুক্তি বিচার নেই , এমন অনেকেই এর প্রতি
অন্ধ আনুগত্য প্রদর্শন করে আর খানিকটা এই কারণে যে , আমাদের
বাড়ীর জ্যোতিষী মহাশয় বলেছিলেন যে, তোমার তিন তিনটে বিয়ে
হবে , আর দু-দু'বার পত্নীবিযোগ হবে ।' আমি ব্যাপারটা নিয়ে
খুবই ভাবতাম - নিজেকে মনে হত ত্রয়ী বিবাহ মন্দিরের সামনে
আমি যেন যূপকাষ্ঠে সমর্পিত ছাগ । ....... কিন্তু একরাত্রে
সুস্পষ্ট অনুভব করলাম যে এই ভবিষ্যদ্বাণী একেবারেই মিথ্যা
। কোষ্ঠিটা আগুনে পুড়িয়ে একটা খামে তার ছাইগুলো পুরে তার
উপরে লিখে দিলাম : জ্ঞানের আগুনে পুড়লে প্রাক্তন কর্মের
বীজ আর কখনও অঙ্কুরিত হতে পারে না ।'........ তবে একথা সত্য
যে , সাবালক হবার আগেই বাস্তবিকই তিন তিনবার আমার বিবাহের
সম্বন্ধ করার চেষ্টা হয়েছিল ; কিন্তু প্রতিবারই আমি সে ফাঁদ
এড়াতে পেরেছিলাম এই ভেবে যে , কোষ্ঠিতে লেখার ফল ঘটতে দেওয়ার
চেয়ে ঈশ্বরের প্রতি আমার ভালবাসা ছিল ঢের ঢের বেশী আন্তরিক
। ......... আমার যা বিশ্বাস ছিল , তা শেষ অবধি একেবারে
খাঁটি বলেই প্রতিপন্ন হয়েছে । সেটা হচ্ছে এই যে , ভগবানই
একমাত্র রক্ষাকর্তা এই বিশ্বাস ; আর মানুষের ঈশ্বরদত্ত ইচ্ছার
উপযুক্ত সদ্ব্যবহার - এ দুটোর এতই শক্তি যে , সারা সৌরজগতের
এমন ক্ষমতা নেই যা তাকে উল্টাতে পারে ।' বাস্তবিক পক্ষে
প্রকৃত সাধক জ্যোতিষ শাস্ত্র নিয়ে মাথা ঘামান না , ঈশ্বরের
ইচ্ছাতেই সব কিছু হচ্ছে এই তাদের দৃঢ় বিশ্বাস এবং তাদের
মন অনেক উচ্চ স্তরে বিরাজ করে । সাংসারিক সুখ দুঃখ তাদের
মনে কোন আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে না । তবে এ তো হল প্রকৃত
সাধক ও যোগী পুরুষদের কথা । সাধারণ মানুষকে কৃতকর্মের ফল
ভোগ করতেই হয় ।
এই ধারাবাহিকে বিল
গেটসের কুণ্ডলীটি বের হবার পর জনৈক পাঠক প্রশ্ন তুলেছিলেন
যে, বিল গেটসের জন্ম মুহূর্তে আরও যারা জন্মেছেন তাদের কি
হবে ? একই বা কাছাকাছি জায়গায় বিভিন্ন মানুষের জন্মের কোনো
পরিসংখ্যান অভিজ্ঞ জ্যোতিষীদের কাছে আছে কি না জানি না ;
যমজ সন্তানদের বেলাতেও একই জিনিস খাটে । এদের রাশিচক্রে
গ্রহের অবস্থান এমন কি লগ্নও একই হতে পারে ; অনেক বিষয়ে
মিল থাকলেও বহু ঘটনার আলাদা ফল হয় । এ থেকেই বোঝা যায় শুধু
রাশিচক্র থেকে সব ঘটনা বলা সম্ভব নয় । এ সম্বন্ধে নীচের
তালিকার ১০ নম্বর বইটি কাজে আসতে পারে । তবে এর বিষয়বস্তু
একটু জটিল , এটা ভাল ভাবে আয়ত্ব করতে হলে প্রাথমিক বিষয়গুলি
সম্বন্ধে খুব স্বচ্ছ ধারণা থাকা দরকার । এই ধারাবাহিক সম্বন্ধে
একটা কথা বলা দরকার । জ্যোতিষশাস্ত্র বহু বিষয়ের মত একটি
বিষয় মাত্র । যারা এটার সম্বন্ধে আগ্রহী এবং কিছুটা জানতে
চান তাদের জন্যই এই আলোচনা করা হল ।
কৌতূহলী পাঠকদের সুবিধার
জন্য অল্প কয়েকটি বই এর নাম নীচে দেওয়া হল ; পড়ে দেখতে পারেন
। প্রাপ্তিস্থান ও দাম জানতে ইন্টারনেটের সাহায্যে Vani
Publication, Delhi এবং Agrany Publications, Bangalore
-র ওয়েব সাইট দেখতে পারেন । শুভেচ্ছা রইল ।
১. How to judge a
horoscope vol I -B. V. Raman
২. How to judge a horoscope vol II-Gayatri Devi Vasudev
৩. Advanced priciples of prediction- Gayatri Devi Vasudev
৪. The art of prediction in astrology-Gayatri Devi Vasudev
৫. My experiences in astrology-B. V. Raman
৬. Ashtakavarga system of prediction-B. V. Raman
৭. Studies in Jaimini astrology-B. V. Raman
৮. Astrology,destiny and wheel of time-K. N. Rao
৯. Predict comprehensively through divisional charts-K.
N. Rao
১০. Interpreting divisional horoscopes (Innovative approach
through the destinies of twins)-K. N. Rao
১১. Timing of events through vimshottari dasha-K. N. Rao
১২. Predicting through Jaiminis chara dasha-K. N. Rao
১৩. Planets and education-K. N. Rao
১৪. Astrology and timing of marriage-K. N. Rao
১৫. How to identify significant events (through transit)-V.
K. Choudhry
১৬. জাতক কৌমুদী - কালীপদ ভট্টাচার্য্য