প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

“সাস লিপি”, যা দিয়ে পৃথিবীর সব ভাষা লেখা যায়

ভূমিকা:

ইউনিফাইড স্ক্রিপ্ট বা সমন্বিত লিপি হচ্ছে এমন একটি লিপি যা দিয়ে পৃথিবীর সব ভাষা লেখা সম্ভব । সমন্বিত লিপি আবিষ্কার পৃথিবীর প্রখ্যাত ভাষাবিদদের দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে শাসক কুবলাই খান একজন তিব্বতী লামাকে ঐ সময়ে তিব্বত ও তার আশে পাশের অঞ্চলে প্রচলিত ভাষাগুলি লেখার উপযোগী একটিমাত্র লিপি উদ্ভাবনের দায়িত্ব প্রদান করেন। এই লামা যে লিপি উদ্ভাবন করেন তার নামে পাগস্‌ পা ( লিঙ্ক: http://babelstone.blogspot.com)। বলাবাহুল্য, সঙ্গত: কারণেই এই লিপি জনপ্রিয় হয়নি। এর পর হাজার হাজার পণ্ডিত ব্যক্তি উন্নততর সমন্বিত লিপি আবিষ্কারের চেষ্টা করেন । ভিতেলী ভিতেশ নামে একজন রাশিয়ান শিল্পী দীর্ঘ ২২ বৎসর পরিশ্রম করে ১৯৯৭ সালে ইণ্টারনেট (লিঙ্ক: : http://www.astrolingua.spb.ru/ ENGLISH/ inter_eng.htm and semiravet@yandex.ru) নামে একটি সমন্বিত লিপি আবিষ্কার করেন এবং দাবী করেন যে, তার লিপির সাহায্যে পৃথিবীর সকল ভাষা লেখা সম্ভব। বাস্তব সত্য এই যে, তাদের লিপিও জনপ্রিয় হয়নি।

২০০৯ সালের ২৪শে নভেম্বর “সাস” সমন্বিত লিপি আবিষ্কৃত হয় । এই তারিখে এটি ক্যানাডা ও আমেরিকার ট্রাফোর্ড পাবলিশিং থেকে ‘SUS FOR WRITING MULTIPLE LANGUAGES’ (ISBN: 978-1-4269-0939-9, লেখক ঃ ডাঃ মীরা রানী শর্মা পারই ও অধ্যাপক বিজন বিহারী শর্মা) নামে একটি কপিরাইটকৃত পুস্তকে প্রকাশিত হয় । এর পর ২০১০ এর জুলাই মাসে “প্রিয় অস্ট্রেলিয়া ডট কম”-এ এ বিষয়ে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় (লিঙ্ক: www.priyo-australia,.au / Articles/ Bangladeshi Scholars Invented Unified Scripts to Write All the Languages of the World) । একই সালের ১৯ শে জুলাই অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা রেডিও থেকে এ বিষয়ে একটি বেতার সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়, যা এই লিঙ্কটি ব্যবহার করে শোনা যেতে পারে: http://www.banglaradio.org.au/BR-Archive-2010-Summary.htm । এর পর আগস্ট ২০১০ এ জার্মানী থেকে প্রকাশিত হয় "SUS", THE LATEST UNIFIED SCRIPT (ISBN 978-3-8383-7411-6। অধ্যাপক বিজন বিহারী শর্মা ও ডাঃ মীরা রানী শর্মা পারই ) ।

“সাস” এর পূর্ণরূপ “শর্মা'স ইউনিফাইড স্ক্রিপ্ট” । ‘শর্মা’ এই লিপির আবিষ্কারকদের পারিবারিক উপাধি । আগে আবিষ্কৃত সকল সমন্বিত লিপিকারদের মতই সাসলিপির এই উদ্ভাবকগণও দাবী করছেন যে এর মাধ্যমে পৃথিবীর সকল ভাষা লেখা সম্ভব । এই দাবীর সত্যতা প্রমাণে সময়ের প্রয়োজন । বাংলাভাষা লেখার ক্ষেত্রে এখন যেসব সমস্যা আছে, সাসলিপির সাহায্যে লেখা হলে তার অধিকাংশই থাকবে না বলে এই উদ্ভাবকগণ দাবী করেছেন ।

সাসলিপি কেন ?

সঙ্গত: কারণেই প্রশ্ন উঠতে পারে, পূর্বে আবিষ্কৃত একটি সমন্বিতলিপিও জনপ্রিয় না হবার পরেও সাসলিপির আবিষ্কারকদের আশান্বিত হবার কারণ কি ? এ প্রশ্নের জবাবে প্রথমেই আলোচনা করা যাক, কেন পূর্বে আবিষ্কৃত সমন্বিত লিপিগুলি জনপ্রিয় হয়নি ।

সমন্বিতলিপির পূর্বের সকল আবিষ্কারকই লিপি উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে প্রধানত: একটি পন্থা অবলম্বন করেছেন। এটি হল, পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় ব্যবহৃত বর্ণের মধ্যে যেগুলির উচ্চারণ একই বা একই রকম (যেমন ঃ বাংলা “ক”, ইংরেজী “k” এবং আরবী “কাফ”), সেগুলিকে চিহ্নিত করা এবং তারপর এই বর্ণগুলি লেখার জন্য পুরানো বা নতুন কোন চিহ্ন বা হরফ ব্যবহার করা।

এই প্রচেষ্টার দুটি প্রধান সমস্যা আছে । প্রথমত: বিভিন্ন ভাষার বর্ণমালায় ঠিক একই উচ্চারণের বর্ণের সংখ্যা নগণ্য । আবার সমোচ্চারিত বা প্রায় সমোচ্চারিত কিছু বর্ণ থাকলেও ব্যবহারের স্থানভেদে তাদের উচ্চারণ বদলে যায় । যেমন, বাংলা “ক”, ইংরেজী “k” বা “c” এবং আরবী “কাফ” এর প্রকৃত উচ্চারণ সব সময় এক নয়। এর ফলে একটি মাত্র লিপির সাহায্যে বিভিন্ন ভাষার বর্ণ উচ্চারণ করতে গেলে তা কোন একটি ভাষায় ঠিক থাকলেও অন্য ভাষায় বিকৃত হয়ে যায় । তাই এই নিয়মে লিপি ব্যবহার করা হলে ভাষা তার পূর্বের উচ্চারণ হারায় । মানুষ কোনভাবেই চায় না যে তার ভাষা বিকৃত হোক । বাংলাদেশে এই ভাষার জন্য মানুষ জীবন বিসর্জন দিয়েছে ।

দ্বিতীয় সমস্যাটি হচ্ছে, ভাষা লেখার যে লিপিগুলি আমরা ব্যবহার করি তা কোন বিজ্ঞানসম্মত চেষ্টার ফসল নয়, একথা সবারই জানা আছে । প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে মূলত “চেষ্টা ও সংশোধনী”র মাধ্যমে এগুলি গড়ে উঠেছে । অনেক ক্ষেত্রেই এগুলি লেখা বেশ কষ্টকর, সময়সাপেক্ষ এবং ভালো করে না লিখলে পাঠোদ্ধারও অসম্ভব । কিন্তু তা সত্ত্বেও কেউ যখন ঐ লিপির বদলে অন্য কোন লিপি লেখার প্রস্তাব নিয়ে আসবে, তখন স্বাভাবিক কারণেই মানুষ বলবে, ‘অনেক কষ্ট করে এগুলো লেখা আয়ত্ত করেছি, এখন তা কেন বদল করবো ?’ তবে এ কথা সত্য যে তা তারা করতে রাজী হবে যদি নতুন লিপির কোন বিশেষ সুবিধা বা গুণ থাকে ।

সাসলিপির বৈশিষ্ট্য:

সাস কোন পূর্ণাঙ্গ ভাষা নয়, এটি একটি লিপি । এই লিপির নিজস্ব কোন উচ্চারণ নেই, বরং যে ভাষা লিখতে সাস লিপি ব্যবহার করা হয় লিপিগুলি সেই ভাষার বর্ণগুলির প্রচলিত উচ্চারণই গ্রহণ করে । এর ফলে ভাষার কথ্যরূপটি একেবারে অবিকৃত থাকে, কেবলমাত্র তার লিখিত রূপটি বদলে যায় । পূর্বে আবিষ্কৃত সমন্বিত লিপিগুলি যেখানে লিপি নির্ধারণ করতো উচ্চারণের মিলের উপর ভিত্তি করে, সেখানে সাসলিপিতে লিপি নির্ধারণ করা হয় বর্ণমালায় প্রতিটি বর্ণের গাণিতিক অবস্থানের উপর ভিত্তি করে ।

এখন আমরা সাসলিপির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি বর্ণনা করবো ।
১। সাসলিপির বর্ণগুলি একটি অত্যন্ত সহজ নিয়ম বা মূলসূত্র অনুসরণ করে তৈরী করা হয়েছে । এই সূত্রটি এত সোজা যে কোন শিশুকে তা বুঝিয়ে দিলে সে নিজেই বর্ণগুলি পর পর তৈরী করে নিতে পারে ।
২। সাসলিপির বর্ণগুলি সিম্বল বা আকার এর পরিবর্তে শুধুমাত্র সোজা দাগ (STROKE) দিয়ে তৈরী, যেখানে কোনাকুনি যাওয়া, বাঁকানো, প্যাঁচানো, এক দাগের উপর দিয়ে আবার দাগ দেয়া, পেছনে এসে বর্ণের উপরে/ নীচে/ আগে/ পরে চিহ্ন দেয়া, এসব কিছুই নেই । ফলে লিপিগুলি অত্যন্ত সহজে এবং দ্রুত লেখা যায় । আবার ব্যক্তির ভিন্নতার কারণে লিখিত লিপি পাঠে ভুল বোঝাবুঝির (CONFUSION) সম্ভাবনাও থাকে না । একই কারণে ব্যক্তিভেদে হাতের লেখা ‘ভাল’ বা ‘মন্দ’ হবার সম্ভাবনাও কমে যায় ।
৩। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাত্র ২, ৩ বা ৪টি দাগ (চিত্র-১) দিয়ে লিপিগুলি তৈরী করা হয়েছে বলে এগুলি লেখা ও চেনা অত্যন্ত সহজ । সাধারণ ভাবে যে সব ভাষা শুধুমাত্র বর্ণের মাধ্যমে লেখা হয় তা লেখার জন্য ৪টি এবং যে সব ভাষায় বর্ণ ও বর্ণচিহ্ন ব্যবহৃত হয়, তাদের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ টি স্ট্রোকের প্রয়োজন হয়।
৪। কম সংখ্যক স্ট্রোক দিয়ে তৈরী বলে এগুলি টাইপ করার জন্য স্বল্পসংখ্যক চাবি (KEY) লাগে ।


সাসলিপি তৈরীর মূলসূত্র:

সাসলিপি এমন একটি লিপি যা কয়েকটি মূলসূত্র জানার পর যে কেউ নিজেই তৈরী করে নিতে পারে । এই মূলসূত্রগুলি হচ্ছে,
১। প্রতিটি হরফ একটি বর্গক্ষেত্রের মধ্যে আবদ্ধ থাকবে, কোন চিহ্নই এই বর্গক্ষেত্রের বাইরে যাবে না ।

২। প্রতিটি হরফে বর্গক্ষেত্রের মাঝ বরাবর থাকবে একটি আনুভূমিক লাইন (১নং চিত্র, প্রথম লাইন)।

৩। বিভিন্ন ভাষার বর্ণগুলির প্রতি ৫টিকে নিয়ে একটি গ্রুপ বা বর্গ তৈরী করা হবে । এর প্রথম বর্ণটি হবে বর্গ প্রধান । বাংলায় এটি প্রচলিত আছে । অন্য ভাষায়ও এভাবে ৫টির বর্গ তৈরী করায় কোন সমস্যা নেই ।

৪। সাসলিপিতে প্রথমে বর্গপ্রধানগুলি তৈরী করা হবে । এ কাজে প্রথমে আনুভূমিক লাইন (১নং চিত্র,প্রথম লাইন) টি ব্যবহার করা হবে। এরপর উলম্ব অর্ধ-লাইন (১নং চিত্র, দ্বিতীয় লাইন) টি আনুভূমিক লাইনের নীচে বাম থেকে শুরু করে একে একে ২নং চিত্রে দেখানো ৪টি স্থানে ঘড়ির কাঁটার বরাবরে ঘুরে ঘুরে বর্গপ্রধানগুলি তৈরী করবে । ২নং চিত্র দেখানো ৪টি স্থান হল, (প্রথম) নিচে বামে, (দ্বিতীয়) উপরে বামে, (তৃতীয়) উপরে ডানে এবং (শেষে) নীচে ডানে । এই নিয়মে ১৪ টি বর্গ প্রধান তৈরী করা সম্ভব। ১৪টি বর্গ প্রধান থেকে (৫ X ১৪ =) ৭০টি বর্ণের বর্ণমালা তৈরী করা যায় । কোন ভাষার বর্ণসংখ্যা বেশী হলে প্রয়োজনে আরও ছোট উল্লম্ব লাইন ব্যবহার করে আরও ১৪ টি বর্গপ্রধান তৈরী করা যায়।

৫। বর্গপ্রধান তৈরী করার পর প্রতিটি বর্গপ্রধান থেকে এই বর্গের অন্য বর্ণগুলি তৈরী করা হবে । এটি করার জন্যও একই নিয়ম অনুসরণ করা হবে । এক্ষেত্রে ছোট উলম্ব লাইন (১নং চিত্র, তৃতীয় লাইন) টি বর্গপ্রধানটির ৩নং চিত্রে দেখানো ৪ টি স্থানে ক্রমান্বয়ে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘুরে ৪টি বর্ণ তৈরী করবে । নীচের ছবি দেখুন:


লিপি দ্বারা শব্দ তৈরী:

যে সব ভাষা শুধুমাত্র বর্ণ দিয়ে তৈরী হয়, তাদের ক্ষেত্রে ওপরের নিয়মে যে লিপি তৈরী হবে তা পর পর বসিয়ে শব্দ তৈরী করে নিলেই লিখিত ভাষা হয়ে যাবে । ইংরেজী এই ধরনের একটি ভাষা । তবে ইংরেজীতে ক্যাপিটাল ও স্মললেটার আছে । উপরের নিয়মে যে বর্ণগুলি তৈরী হবে সেগুলি স্মললেটার । প্রতিটি স্মল লেটারের নীচে ছোট আনুভূমিক লাইন (১নং চিত্রের ৪নং লাইন) টি দিলেই তা হয়ে যাবে ক্যাপিটাল লেটার ।

যে সব ভাষায় বর্ণ ছাড়াও স্বর বা ব্যঞ্জন চিহ্ন ব্যবহৃত হয় ( যেমন বাংলা ও আরবী ), তাদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন চিহ্ন (যেমন, া-কার, ে-কার, জের, জবর, পেশ ইত্যাদি) ব্যবহার করার জন্য সাসলিপির মধ্যভাগ খালি রাখা হয়েছে। এই খালি মধ্যভাগে উপরে, নীচে বা দুই স্থানে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের এবং ধরনের উল্লম্ব লাইন ব্যবহার করে সেগুলি উচ্চারণ করা যায়।

কিছু উদাহরণ: সাসলিপি লেখার মূলসূত্র চিত্র সহকারে উপরে বর্ণনা করা হয়েছে । এখন প্রবন্ধের আয়তন সংক্ষেপ করার জন্য আমরা শুধুমাত্র নিচের কয়েকটি উদাহরণগুলি দেব: (০১) বাংলা ও ইংরেজী ভাষার বর্গপ্রধান ও তাদের সাসলিপি, (০২) বর্গপ্রধান থেকে বর্গের অন্য বর্ণ তৈরী এবং (০৩) বাংলাভাষার স্বর ও অন্যান্য চিহ্ন ।

৪নং চিত্র: বাংলা ও ইংরেজী বর্গপ্রধান ও তাদের সাসলিপি




৫ নং চিত্র: বর্গ প্রধান থেকে বর্গের অন্যান্য বর্ণ

৬নং চিত্র: বাংলা স্বর ও অন্যান্য চিহ্ন

যুগোপযোগী বাংলাভাষা লেখা

ভূমিকা:

সাসলিপির মাধ্যমে কিভাবে একটি মাত্র লিপির সাহায্যে পৃথিবীর সব ভাষা লেখা যায় তার মূল সূত্রগুলি উপরে বর্ণনা করা হয়েছে । তবে মূলসূত্র জানার পরও বিভিন্ন ভাষার নিজস্ব চাহিদা পূরণ করার জন্য কিছু কিছু সংস্কারের প্রয়োজন হবে । বাংলাভাষার ক্ষেত্রেও এই কথা প্রযোজ্য । প্রচলিত বাংলা হরফের পরিবর্তে সাসলিপিতে বাংলাভাষা লেখা হলে প্রধান যে কয়টি সুবিধা পাওয়া যাবে তা হল- (০১) লেখা সহজ ও দ্রুত হবে, (০২) হাতের লেখা সুন্দর – অসুন্দরের বিষয়টি গৌণ হয়ে যাবে এবং (০৩) লেখায় দুর্বোধ্যতা বা confusion কমে যাবে ।

কিন্তু এত কিছুর পরেও বাংলা লেখা যে একেবারে আধুনিক ভাষার সুবিধা পাবে তা বলা যায় না । এর কারণ বাংলাভাষার লিপিতে কিছু দুর্বলতা আছে । যেমন,
(০১) অনেকগুলি প্রায় সমোচ্চারিত বর্ণ থাকায় এই ভাষায় বানানভুল অত্যন্ত বেশী।
(০২) স্বরচিহ্ন, সংযুক্ত বর্ণ, ফলা ইত্যাদি থাকার কারণে লেখা অত্যন্ত জটিল ও ধীরগতির ।
এক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তাব, সংস্কার যদি করাই হয় তাহলে আরও একটু বেশী সংস্কার করে তাকে যুগোপযোগী করা উচিত। এই উদ্দেশ্যে আমরা নিম্নলিখিত সংস্কার প্রস্তাবসমূহ রাখছি ।

প্রস্তাব ০১: অপ্রয়োজনীয় বা স্বল্প প্রয়োজনীয় বর্ণ ও বর্ণচিহ্ন বাদ দেয়া । বিকল্প বা প্রায় সমোচ্চারিত বর্ণ থাকার কারণে বাংলা বর্ণমালা নিচের স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ ও স্বরচিহ্নগুলি বাদ দেয়া যায় – ঙ, ঞ, য, ষ, ঈ, ঊ, ঐ, ঔ, রেফ, ্য্য-ফলা, র-ফলা, া, ি, ী, ু, ূ, ৃ, ে, ৈ, ো ৌ । এগুলি বাদ দিলে নীচের ৩০টি ব্যঞ্জনবর্ণ আর ১০ টি স্বরবর্ণ, এই ৪০টি বর্ণ পাওয়া যায় । এর বাইরে প্রয়োজন হয় আর ১০তী বিশেষ বর্ণের । এই মোট ৫০টি বর্ণ দিয়ে বাংলা ভাষার ব্যাকরণ মেনে স্বচ্ছন্দে সব কিছু লেখা যায় । আর এই লেখায় ইচ্ছে করেও বানান ভুল করা যায় না ।

ব্যঞ্জনবর্ণ (৩০ টি): বর্গ-০১: ক খ গ ঘ য়, বর্গ-০২: চ ছ জ ঝ ল,
বর্গ-০৩: ট ঠ ড ঢ হ, বর্গ-০৪: ত থ দ ধ ন,
বর্গ-০৫: প ফ ব ভ ম, বর্গ-০৬: র ড় স শ অ ।
স্বরবর্ণ ও চিহ্ন (১০ টি): বর্গ-০৭: আ অ্যা ই উ ঋ, বর্গ-৮: এ ও ং ঃঁ।
বিশেষ বর্ণ:( ১০টি) অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে সাধারণ ভাবে যুক্তবর্ণের দ্বারা লেখা সম্ভব হলেও বিশেষ কতকগুলি শব্দ উচ্চারণের জন্য প্রায় ১০টি বিশেষ বর্ণ / যুক্তবর্ণ প্রয়োজন হয়। এগুলি হলও –
বর্গ-০৯: ঙ্ক (ঙ+ক), ক্ষ (ক+ষ), ঙ্গ (ঙ+গ), ঞ্চ(ঞ+চ), ঞ্ছ(ঞ+ছ),
বর্গ-১০: ঞ্জ(ঙ+জ),জ্ঞ (ঞ+গ),ষ্ণ (ষ+ঞ), হ্ম(ম+হ), ণ্ড (ণ+ড)।


প্রস্তাব ০২: স্বরচিহ্নের বদলে স্বরবর্ণ ব্যবহার করা । বাংলাভাষায় সকল স্বরচিহ্নেরই বর্ণ আছে । সাসলিপির ছোট আনুভূমিক লাইনটি স্বরবর্ণের নীচে ব্যবহার করে ঐগুলিকে স্বরচিহ্ন রূপে ব্যবহার করা যায় ।
প্রস্তাব ০৩: যুক্তবর্ণ লেখা সহজ করা । বাংলায় দুই ধরনের যুক্তবর্ণ আছে । যেমন-
(০১) প্রথম ধরনের যুক্তবর্ণ - পূর্ববর্তী বর্ণের উচ্চারণ সম্পূর্ণ থামিয়ে পরেরটির উচ্চারণ করা । যেমন ঃ চেষ্টা ( চেশ –টা), তক্তা (তক – তা) ইত্যাদি । হসন্তের সাহায্যে এগুলি সহজেই লেখা হয় । সাসলিপির ছোট আনুভূমিক লাইনটি বর্ণের নীচে ব্যবহার করে এই যুক্তবর্ণ লেখা বা উচ্চারণ করা যায় ।
(০২) দ্বিতীয় ধরনের যুক্তবর্ণ -পরবর্তী বর্ণের উচ্চারণের সাথে পূর্বেরটির উচ্চারণ মিশিয়ে ফেলা । যেমন ঃ স্পর্ধা (স+প র্ধা), ব্রত (ব+র ত), অক্লান্ত (অ ক+ল া ন্ত) ইত্যাদি । এগুলিকে ফলা ও বলা হয় । ছোট আনুভূমিক লাইনটি বর্ণের উপরে ব্যবহার করে এগুলি লেখা যায় ।


শিশু শিক্ষায় প্রচলিত লিপি ও সাসলিপির তুলনামূলক ব্যবহার:

প্রচলিত বাংলালিপিতে লেখাপড়া শেখার জন্য এখন শিশুদেরকে সবার আগে বর্ণমালাগুলির উচ্চারণ শিখতে হয় । সারা পৃথিবীতেই এই প্রয়োজনে ছবির বই ব্যবহার করা হয়, যেখানে সাধারণভাবে রঙ্গিন ছবিগুলির নামের প্রথম বর্ণটিই বর্ণমালার অক্ষর । অনেক শিশুই একমাসে এই উচ্চারণগুলি শিখে ফেলে । এর পর তাদেরকে মানসিক ভাবে প্রতিটি বর্ণের উচ্চারণের সাথে একটি করে লিপি সংযুক্ত করতে হয় । সব বর্ণমালা একসাথে থাকা কালে তারা তা সহজে চিনতে পারে, কিন্তু বিচ্ছিন্ন ভাবে চিনতে বেশ সময় লাগে । সাধারণ ভাবে এ কাজে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে । এরপর লেখা শেখানোর পালা । একটি লাইন ডানে, বামে, উপরে, নীচে বাঁকা সোজা করে, ধরা যাক, তাদেরকে অনেক কষ্টে ‘ক’ শেখানো হল । এরপর নতুন করে শেখানো হবে ‘খ’ এবং এমনই চলতে থাকবে । একাজে বাংলাদেশে শিশুদের মোটামুটি বারোমাস সময় লেগে যায় । এরপর আ-কার, উ-কার, সংযুক্ত বর্ণ ইত্যাদি শেখানো হবে । দরকার হবে আরও অন্তত: ছয় মাস ।

সাসলিপি লেখা শেখার জন্যও বর্ণগুলির উচ্চারণ শিখতে হবে । ধরা যাক, একাজে সময় লাগলো এক মাস । কিন্তু এর পরের কাজটি এত সোজা (লিপিগুলি পর পর সামঞ্জস্য রেখে নিজে নিজেই তৈরী হয়ে যায়, কোন বাঁকা বা প্যাঁচানো লাইন নেই, আ-কার, উ-কার, সংযুক্ত বর্ণের ঝামেলা নেই ) যে এই কাজে একেবারে সাধারণ মানের শিশুদেরও পাঁচ মাসের বেশী লাগার কথা নয় । তাহলে শিশুদের মোট শিক্ষাকাল আঠারো মাস থেকে কমে দাঁড়ায় ছয় মাসে । এভাবে যদি শিশু শিক্ষাকাল একবৎসর কমে যায়, তাহলে একটি দেশের কোটি কোটি শিশুর জন্য ব্যয়িত উপকরণ, এনার্জি, শিক্ষক ও অভিভাবকের পরিশ্রম খাতে যে বিপুল সাশ্রয় হবে তা সহজেই অনুমান করা যায় ।

উপসংহার:

“পৃথিবীর সকল ভাষা লিখতে সক্ষম” এই দাবী নিয়ে আসা সাস লিপির জন্ম মাত্র ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে । স্বাভাবিক ভাবেই এটি প্রমাণের জন্য সময়ের প্রয়োজন । এই প্রবন্ধে “সাসলিপি” নামে যে লিপি দেখান হয়েছে, তার সাথে প্রচলিত বাংলালিপির নিরপেক্ষ তুলনা করা কোন বাংলাভাষীর পক্ষেই সম্ভব নয় । এর কারণ, আজন্মকাল প্রচলিত বাংলালিপি দেখে তাদের কাছে সেগুলি মনে হয় পরমাত্মীয়, এমনকি প্যাঁচানো ঘোচানো হলেও । অন্য দিকে সাসলিপি সহজ হলেও তাদের কাছে মনে হবে অদ্ভুত । আমরা বাংলা, ইংরেজি বা আরবী লিপির সঙ্গে পরিচিত । এর সব গুলিই “ফিগার” ধরনের লিপি । চীনা, জাপানী বা কোরিয়ানদের স্ট্রোক ভিত্তিক লিপির সঙ্গে আমাদের তেমন পরিচয় নেই । বাস্তব সত্য এই যে স্ট্রোক দিয়ে লেখা খুবই সহজ । তবে চীনা, জাপানী বা কোরিয়ান ভাষায় স্ট্রোকের সংখ্যা বেশী হওয়ায় এবং সেগুলির কোন বৈজ্ঞানিক যৌক্তিকতা না থাকায় সেগুলি শেখা বা লেখা তেমন সহজ নয়।

(০১) এই প্রবন্ধে প্রচলিত বাংলালিপি ও সাসলিপি পাশাপাশি দেখানো হয়েছে। এই দুটি তুলনা করলে সহজেই বোঝা যায় যে, প্রচলিত একটি লিপি লিখতে যে সময় বা কষ্ট লাগে, ঐ সময়ে তার চেয়ে সহজে ৪, ৫ বা তার চেয়ে বেশি সংখ্যক সাসলিপি লেখা সম্ভব ।
(০২) সাস লিপি তৈরীর জন্য যে “লজিক” বা যুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তাতে এটি শিখতে প্রচলিত লিপির চেয়ে অনেক কম সময় লাগবে ।
(০৩) বাংলা ভাষার কিছুটা সংস্কার সাপেক্ষে এখানে যে সাসলিপির প্রস্তাব করা হয়েছে তা করা হলে “বানান ভুল” নামক জিনিসটি বাংলা ভাষা থেকে দূর হয়ে যাবে ।
(০৪) ছাপার অক্ষরে সব লিপিই সুন্দর দেখায় । কিন্তু ঔগুলি আমরা যখন লিখতে যাই তখনই নানা প্যাঁচ ও টান এসে লেখাকে দুর্বোধ্য করে ফেলে । অনেক ভালছাত্র শুধুমাত্র হাতের লেখা খারাপ বলে পরীক্ষায় ভাল ফল করতে পারে না । সাসলিপি দুর্বোধ্য হবার কোন যৌক্তিক কারণ নেই । সেই সঙ্গে এই লিপিতে হাতের লেখা খুব খারাপ হবারও কোন সুযোগ নেই ।
(০৫) সরকার মাঝে মাঝেই নিরক্ষরতা দূর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকেন এবং আমরা জানি, পরে তা সফল হয় না । সাসলিপিতে একটি আদর্শলিপি এবং শুধুমাত্র প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীর বইগুলি লিখে এ ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলে তা যে সফল হবে তা একরূপ নিশ্চিন্তে বলা যায় ।

পৃথিবীতে এক আশ্চর্য জাতি এই বাঙ্গালী জাতি । দীর্ঘকাল ভারতের অসংখ্য জাতিগোষ্ঠীর সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে বসবাস করে, ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে, একই পরিবেশ ও আবহাওয়ায় জীবন কাটিয়েও তারা তাদের স্বতন্ত্র সংস্কৃতি বজায় রেখেছে । একই ধর্মের মানুষের অন্যায় শোষণ তারা যে শুধু মেনে নেয় নি তাই নয়, তাদের শোষণের বিরুদ্ধে মরণপণ যুদ্ধ করেছে। সামরিক দিক দিয়ে অত্যন্ত শক্তিশালী একটি রাষ্ট্র এবং পৃথিবীর দুইটি পরাশক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে মাত্র নয় মাসে তারা স্বাধীনতা লাভ করেছে । এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল । ধর্মীয় প্রভাব ও রাষ্ট্রীয় আনুগত্য অস্বীকার এবং পেশীশক্তিকে পরাজিত করার যে প্রচণ্ড শক্তি তারা দেখিয়েছে তার উৎস তাদের সংস্কৃতি । আর তাদের সংস্কৃতির ধারক তাদের মাতৃভাষা, বাংলাভাষা । এই ভাষা নোবেল পুরস্কার পেয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্বে তার উপযুক্ত স্থান লাভ করেছে । এমনকি মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় জীবনদানের বিরল গৌরবও এই জাতির ।

এতো সাফল্য এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এতো গুরুত্ব পাবার পরেও আমরা দুঃখের সাথে লক্ষ্য করি, তরুণ প্রজন্ম বাংলা লেখায় আগ্রহী নয় । সুযোগ পেলেই তারা ই-মেইল বা মেসেজে বা বাংলার পরিবর্তে রোমান হরফ ব্যবহার করে । এর ফলে বাংলা ভাষার উচ্চারণ ক্রমে ক্রমেই বিকৃত হয়ে যাচ্ছে । আমরা জানি, বিদেশীরা বাংলা খুব পছন্দ করে, কিন্তু লেখার জটিলতায় আর বানান ভুলের ভয়ে তারা বাংলা শিখতে ভয় পায় । আমাদের অভিজ্ঞতা আছে, তিন পাতা ইংরেজি লিখতে যে সময় ও পরিশ্রম লাগে এক পাতা বাংলা লিখতে তার চেয়ে বেশী সময় ও পরিশ্রম লাগে ।

এসব কারণে ইতিপূর্বে অনেকবার বাংলাভাষা সংস্কার করার প্রস্তাব করা হয়েছিল । তবে সেই সব সংস্কার করা হলে এই ভাষার উচ্চারণে বেশ পরিবর্তন আসতো । সাসলিপির মাধ্যমে সংস্কার হলে উচ্চারণে বিন্দুমাত্র পরিবর্তন আসবে না । সাস শুধু বাংলা ভাষার জন্য আসে নি । এই লিপিতে এমন সব গুণাবলী সন্নিবেশিত করা হয়েছে যাতে ‘কোনরকম উচ্চারণ বিকৃতি না ঘটিয়ে’ এর মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোন ভাষা লেখা সম্ভব হয় ।

আসুন এখন আমরা কল্পনা করি, বাংলা লেখার সংস্কার করা হলে এবং না করা হলে কি হতে পারে। যদি সাসলিপি গ্রহণ করে বাংলালেখার সংস্কার করা হয়, তাহলে আমাদের শিশুরা অনেক সহজে বাংলা লিখতে পারবে, সঙ্গত কারণে বিদেশীরাও এই ভাষা শিখতে আগ্রহী হবে । ইতিমধ্যে অনেক বিদেশী এই ভাষার গান ও নাটক শুনে মুগ্ধ হয়েছে, কিন্তু লেখ্য ভাষার জটিলতার কাড়নে শেখার আগ্রহ হারিয়েছে । বাংলাদেশে নিরক্ষরতা দূর করাটা কোন সমস্যাই থাকবে না । আমাদের কথা, কবিতা, সাহিত্য, গান, নাটক, সিনেমা একেবারে অবিকৃত বা অক্ষুণ্ণ থাকবে । আমাদের ভাষার যে বিশাল লিখিত সম্পদ কাগজে লেখা আছে তারও হারিয়ে যাবে না । আসলে কাগজের বই কিছু বৎসর পর পরপরই নতুন করে ছাপাতে হয় । এক্ষেত্রে পরবর্তী সংস্করণগুলি সাসলিপিতে ছাপালেই আর কোন সমস্যা হবে না । যদি প্রশ্ন করা হয়, এই ছাপানোর কাজে কোন সমস্যা হবে কি না, তাহলে তার উত্তরে বলা যায়, কম্পিউটারে প্রচলিত বাংলার চেয়ে সাসলিপি লেখা অনেক সহজ । তাছাড়া কম্পিউটারে মাত্র কয়েকটি সুইচ টিপে “আগে কম্পোজ করা” যে কোন প্রচলিত বাংলালিপিকে মুহূর্তে সাসলিপিতে রূপান্তর করা যায়।

আসুন, এবার আমরা দেখি, বাংলালেখার সংস্কার করা না হলে কি হতে পারে। একজন মানুষের সামনে যখন কোন কাজ করার দুটি পথ খোলা থাকে, তখন স্বাভাবিক ভাবেই সে সোজা পথটি গ্রহণ করে থাকে । মোবাইলে, কম্পিউটারে আজকের প্রজন্ম ঠিক এই কাজটিই করে চলেছে । এর ফল যে শুভ নয় তা বলাই বাহুল্য। মজার ব্যাপার এই যে, যদিও রোমান হরফে উচ্চারণ বিকৃতি ঘটিয়ে বাংলালেখা প্রচলিত বাংলাহরফে লেখার চেয়ে সহজ, সাসলিপিতে অবিকৃত উচ্চারণে তা লেখা এর চাইতেও অনেক সহজ ।

এটা সত্য যে দীর্ঘ দিনের চেষ্টায় অনেক কষ্ট করে মানুষ তাদের ভাষার যে বর্ণ সমূহ লেখা আয়ত্ত করেছে তা তারা চট করে পরিবর্তন করতে চাইবে না। তবে নতুন উদ্ভাবিত লিপির উল্লেখযোগ্য গুণ বা সুবিধা থাকলে তা করায় কোন আপত্তি থাকার কথা নয় । আমরা যারা অনেক কষ্ট করে এই কঠিন ভাষা লেখা আয়ত্ত করে বসে আছি, তারা ছাড়াও আমাদের আছে নতুন প্রজন্ম । এই নতুন প্রজন্মকে গুরুত্ব দিতে, আমরা যে কষ্ট করেছি তা থেকে তাদেরকে নিষ্কৃতি দিতে আমরা তাদের হাতে এই সহজ লিপিটি তুলে দিতে পারি । আমাদের মনে হয় নতুন শিক্ষার্থীকে যদি তাদের প্রচলিত লিপি আর সাসলিপির মধ্যে একটি বেছে নিতে বলা হয় তাহলে তারা পরেরটিই পছন্দ করবে ।

অর্জন আর বর্জনের মধ্য দিয়েই সভ্যতা এগিয়ে চলে । আমরা যদি আবেগের বশে টাইপরাইটার ধরে রাখতাম, তাহলে কম্পিউটার আসতো না, টেলিগ্রাফ আঁকড়ে ধরে থাকলে মোবাইল আসতো না । বাংলাভাষা লেখার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য ।

সমাপ্ত

অধ্যাপক বিজন বিহারী শর্মা,
স্থাপত্য বিভাগ,
আহসানুল্লা বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

(আপনার মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)

 

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।