চলচ্চিত্র
সমালোচনা: শূন্য অঙ্ক (২০১৩)
পরিচালনা ও গল্প: গৌতম
ঘোষ
সঙ্গীত পরিচালনা: অনুপম রায়
প্রযোজনা: রোজ ভ্যালি ফিল্মস লিমিটেড
শ্রেষ্ঠাংশে: প্রিয়াংশু চ্যাটার্জি, কঙ্কনা সেন শর্মা, সৌমিত্র
চ্যাটার্জি, ললিতা চ্যাটার্জি, প্রিয়াঙ্কা বোস, ধৃতিমান চ্যাটার্জি,
বরুণ চন্দ, অরিজিত দত্ত ...
২০১৩ সালের প্রথম মাসে
বহু প্রতীক্ষিত একটি বাংলা ছবি, শূন্য অঙ্ক, কলকাতায় মুক্তি
পেল । প্রতীক্ষার কারণ পরিচালকের পরিচিতি। বাংলা, তথা ভারতীয়
ও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র জগতে গৌতম ঘোষ এক সম্মানিত ব্যক্তিত্ব।
তাঁর সাফল্যের যাত্রা শুরু তথ্যচিত্র দিয়ে। তারপরে জয়যাত্রা
চলেছে দখল (১৯৮১), পার (১৯৮৪), অন্তর্জলী যাত্রা (১৯৮৯), পদ্মা
নদীর মাঝি (১৯৯২), দেখা (২০০১), আবার অরণ্যে (২০০৩), কালবেলা
(২০০৯), মনের মানুষ (২০১০) ইত্যাদির মধ্য দিয়ে। বাংলা ছবির ফাঁকে
ফাঁকে গৌতম হিন্দি ছবি পরিচালনা করেছেন, তথ্যচিত্র তুলেছেন,
এমন কি অভিনয় পর্যন্ত করেছেন ২২শে শ্রাবণ (২০১১) ছবিতে। এ পর্যন্ত
গৌতমের প্রতিটি ছবিই সাধারণ দর্শককে নাড়া দিয়েছে, তাদের মনে
দাগ কেটেছে – কিছু বেশী, কিছু হয়ত সামান্য কম। প্রতিটি ছবির
খুঁটিনাটির সঙ্গে সহমত না হয়েও বলা চলে চলচ্চিত্র তৈরীতে গৌতমের
মুন্সীয়ানা অনস্বীকার্য। দৃপ্ত বক্তব্য, সাধারণ মানুষের প্রতি
সহানুভূতিশীলতা, গল্প বলার ক্ষমতা, সঙ্গীতের সুষ্ঠু ব্যবহার,
সর্বোপরি ক্যামেরার কাজ গৌতমের প্রতিটি ছবিতে এক অন্য মাত্রা
যোগ করে। এই মনোভাব নিয়েই রিলিজের প্রথম দিনে শূন্য অঙ্ক দেখতে
দৌড়লাম। সঙ্গে কম্প্যুটার থেকে সদ্য উৎপাটিত গেঁতো স্বামী।
শুনেছিলাম শূন্য অঙ্ক রাজনৈতিক
ছবি – জটিল, আধুনিক, বর্তমান সমাজের সমস্যা সচেতনতার স্বাক্ষর
বহন করছে। এবং গৌতমের ছবি যা বলাই বাহুল্য, অবশ্যই চিন্তাশীল
এবং বুদ্ধিদীপ্ত। হলে পৌঁছে সীটে বসার কিছুক্ষণের মধ্যে বিভ্রম
জাগল, আমাকে কি আবার স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে! এই বুড়ো বয়সে
আবার স্কুল? শূন্য অঙ্কের গল্পটা সংক্ষেপে না বললে আমার অনুভূতিটা
হয়ত ঠিক বোঝানো যাবে না। তাই নিয়ে একটু লিখি। এ কিছু রহস্য রোমাঞ্চের
ছবি নয় – তাই টিকিটের কাটতিতে কোন ক্ষতি করব বলে মনে হয় না।
শূন্য অঙ্ক ছবিটি দশটি
পরিচ্ছেদে বিভক্ত – শেষের পরিচ্ছেদ বা অঙ্ক যে শূন্য হবে তা
বুঝতে খুব বেশী কষ্ট হয় না। তিনটি গল্পের সূত্র এতে সমান্তরাল
ভাবে চলেছে। প্রথম এবং প্রধান গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে
রাকা বিশ্বাস (কঙ্কনা সেন শর্মা) এবং অগ্নি বোস (প্রিয়াংশু চ্যাটার্জি)।
রাকা একজন সাংবাদিক, অগ্নি বোস এক মাল্টি-ন্যাশনাল কর্পোরেশনের
(এম এন সি) উঠতি এক্সেকিউটিভ। রাকা অ্যাসাইনমেণ্টে জঙ্গল মহল
টাইপের এক অঞ্চলে আদিবাসী বসতিতে এসেছে। সেখানে সে অনুসন্ধান
করছে কিভাবে এক এম এন সি বক্সাইট খনির খোঁজে আদিবাসীদের জীবিকাবাহী
জঙ্গল, পাহাড়, ধ্বংস করার ছক কষছে; কি ভাবে সহজ সাধারণ খোলা
মনের মানুষগুলিকে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এই এম এন সি-র প্রচেষ্টার
শরীক হল সেখানকার প্রশাসন, পুলিশ, দেশের সরকার, ইত্যাদি, ইত্যাদি
– সেই চিরপরিচিত পাপীরা। প্রতিবাদীরাও আমাদের চেনা – আদিবাসী
সমাজ, যাঁরা বাস্তুচ্যুত, নিদেনপক্ষে জীবনযাত্রার খেই হারিয়ে
ফেলার মুখে। এঁদের অনির্বাচিত অ্যাডভোকেট হল রাকা বিশ্বাস। সাংবাদিকের
নিরপেক্ষতা কোথায় হরিয়ে গেল প্রশ্ন করছেন? সে সব কথা বাদ দিন।
অপ্রত্যাশিত ভাবে আর এক
সিম্পাটিকো আত্মপ্রকাশ করল রাকা বিশ্বাসের পাশে - সেই হৃদয়হীন
লোভী এম এন সি-র উঠতি এক্সেকিউটিভ অগ্নি বোস। আদিবাসী সমাজের
পরিবেশ নির্ভরতা আর সরল জীবনযাত্রার সঙ্গে অগ্নি বোসকে পরিচয়
করিয়ে দেবার দায়িত্ব নিল রাকা। ফল বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে না নিশ্চয়ই!
অল্প পরেই আমরা জানতে পারলাম
রাকা কেন এত সংবেদনশীল। তার জীবনে এক আদিবাসী প্রেমিক এসেছিল
– তাকে খুন করেছে অত্যাচারী পুলিশ। আর অগ্নি? তার বাবা তাকে
মনে করিয়ে দিয়েছিল দেশের অনেক বঞ্চিত মানুষের কঙ্কালের ওপর তার
সমৃদ্ধি দাঁড়িয়ে রয়েছে।
এরই সঙ্গে অন্য একটি অঙ্কে
বয়ে চলেছে আর দুটি জীবনের গল্প – অগ্নি ও তার স্ত্রী ঝিলিক বোস
(প্রিয়াঙ্কা বোস)। ঝিলিক বিয়ের আগে হাই ফ্লাইং ফ্লাইট অ্যাটেণ্ডেন্ট
ছিল, বিয়ের পর ডানা ছাঁটা যাওয়ায় ক্ষিপ্ত, গভীর নৈরাশ্যে ভুগছে।
কে বা কারা তার এমন অবস্থা ঘটাল বোঝা গেল না। আজকালকার দিনে
অগ্নি বোসের মত পশ্চিমী কায়দায় অনুপ্রাণিত স্বামীর ঘরণী হয়ে
একা-দোকা সংসারে ঘরে বসে থাকার মাথার দিব্যি কেউ দেবে বলে তো
মনে হয় না। যাই হোক, এম এন সিতে কর্মরত ব্যস্ত স্বামীর নাগাল
সে পায় না – তার রোজকার সঙ্গী মদ (বস্তা পচা শোনাচ্ছে? প্লিজ,
মেনে নিন একটু)। স্বামীর সঙ্গে একদিন শো-ডাউন-এর পরে অগ্নি ও
ঝিলিক ভাঙ্গা সম্পর্ক জোড়া লাগাতে মানালিতে দ্বিতীয় হনিমুন করতে
গেল। আরম্ভ হল গল্পের তৃতীয় স্রোত – অন্য একটি অঙ্ক।
মানালিতে এক বৃদ্ধ দম্পতি,
কবীর চৌধুরী (সৌমিত্র চ্যাটার্জি) ও লায়লা (ললিতা চ্যাটার্জি),
বাড়ীতে স্বল্পস্থায়ী অতিথি রাখেন সংসার চালাতে এবং একাকীত্ব
কাটাতে। সেখানে এসে পড়ল ঝিলিক ও অগ্নি। চৌধুরীরা মুসলমান, লায়লা
ধর্মপ্রাণা, ভিন্ন ধর্মীদের প্রতি অসহিষ্ণু। এঁদের সন্দেহ ছেলে
দারা কাশ্মীরে যুদ্ধ বিধ্বস্ত অঞ্চলে ছবি তুলতে গিয়ে খুন হয়েছে
পুলিশের হাতে। তার দেহ পাওয়া যায় নি। ফলে মা লায়লা এক বিচিত্র
সাইকোসিসে ভুগছে (সে সব নিয়ে কথা আর নাই বাড়ালাম)। তার মানসিক
রোগের লক্ষণ রবীন্দ্রনাথের গোবিন্দমানিক্য (বিসর্জন) ও সেক্সপীয়রের
লেডি ম্যকবেথের পাঞ্চ। এদিকে অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী, অধুনা ফিলসফার,
কবীর চৌধুরী চেষ্টা করছেন একটি সুপার হ্যাকিং সিস্টেম তৈরী করতে
যাতে মানালি থেকে ভাইরাস পাঠিয়ে উনি পৃথিবীর সব যুদ্ধবাজ দেশের
কম্প্যুটার অকেজো করে ফেলতে পারেন। অগ্নি বোসের অজানা পাসওয়ার্ড
মুহূর্তে বলে দিয়ে উনি তাকে তাক লাগিয়ে দিলেন। হায় রে, এই বিদ্যে
নিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে সুরক্ষিত কম্প্যুটার সিস্টেম অকেজো করার
সদিচ্ছা একেবারেই হাস্যকর ছেলেমানুষি – কবীরের এবং গৌতমের।
অধৈর্য হচ্ছেন? শেষের দিকের
অঙ্কে কি হল জানতে চান? বেশ, বেশ! এতক্ষণে নিশ্চয়ই অনুমান করে
ফেলেছেন। আপনার অনুমান কিছু ভুল হবে বলে মনে হয় না। বোস দম্পতিকে
স্নেহের ছোঁয়া দিলেন কবীর ও লায়লা চৌধুরী। অগ্নি ও ঝিলিকের মধ্যে
একটা নতুন সমঝোতা গড়ে উঠল – ঝিলিক ফ্লাইট অ্যাটেণ্ডান্ট প্রশিক্ষণের
নতুন স্কুল খুলে শান্ত হল। অগ্নি ফিরে চলল রাকার বন্ধুত্ব-প্রেমের
টানে। পুলিশ সেই অজানা জঙ্গল মহলে মাওবাদীদের জন্যে চিরুনি তল্লাশি
চালাল। (ওঃ, বলতে ভুলে গেছি, নিজেদের সমাজ বাঁচাতে আদিবাসীরা
মাওবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে) রাকা সাংবাদিক জীবনের শ্রেষ্ঠ
কর্ম-মুহূর্তের জন্যে ... ইত্যাদি ইত্যাদি। এর মধ্যে বিনায়ক
সেনের অনুকরণে একটি চরিত্র (ধৃতিমান চ্যাটার্জী) এসেছে, আদিবাসীদের
সেবা করেছে, তাদের মনে মানব অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়িয়েছে,
এবং পুলিশের হাতে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার হয়েছে।
গল্পটি ধ্যাড়ধ্যাড়ে গোবিন্দপুর
মার্কা মনে করছেন? সে যাই ভাবুন না – আমি মেনে নিতে রাজি আছি।
কিন্তু যা একেবারেই মানা যায় না তা হল দর্শকের বুদ্ধিমত্তার
প্রতি পরিচালকের নিরাস্থা। সেই যে বললাম মনে হল স্কুলে পৌঁছে
গেছি – একেবারে চতুর্থ শ্রেণীতে! একটু উঁচু ক্লাসেও এর চেয়ে
বেশী ছাত্র ছাত্রীদের চিন্তাশক্তির প্রতি শ্রদ্ধা রাখা হয়। এরই
সঙ্গে গৌতম ভুলে গেছেন চলচ্চিত্র রেডিও নয় – একটি ভিজুয়াল (বা
দৃষ্টি) মাধ্যম। স্থাণু কুশীলবের মুখে লম্বা লম্বা বক্তৃতা (আজকালকার
ভাষায়, বক্তব্য রাখা) ঘুমের বটিকা হিসেবে ভাল, কিন্তু চলচ্চিত্রের
প্রাথমিক দায়িত্ব থেকে ছবিটিকে বিচ্যুত করেছে। এর আগেও বহু রাজনৈতিক
ছবি হয়েছে, পরিচালকের বক্তব্য আমরা খুঁজে পেয়েছি গল্প আর অ্যাকশনের
মধ্যে। ইদানীং কালে বেদব্রত পাইনের চিটাগং একটি সুন্দর উদাহরণ।
এছাড়া আমু, বম্বে, হাজার চৌরাসি কি মা, মিসিং, ইত্যাদি তো রয়েইছে।
গ্রাম্ভারি ধ্রুপদী চলচ্চিত্র তো আছেই। এমন কি “সেলুলয়েড অ্যাকটিভিজিম”
বলে একটি নামই সৃষ্টি হয়েছে এই ধরণের চলচ্চিত্রের সংজ্ঞা দিতে।
তিনটি গল্পের সূত্রের মধ্যেও
কোন জটিল (বা সরল) মিল খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ধরে নিতে পারি ঝিলিকের
অবতারণা রাকার চরিত্রের সঙ্গে বৈপরীত্য দেখাতে – ফয়েল হিসেবে।
আশ্চর্য ভাবে দুটি চরিত্রকে আমার তেমন কিছু বিপরীত মনে হল না
– দুজনেই সমাজের উচ্চ শ্রেণীভুক্ত, সিগারেট ফোঁকেন, মদ খান,
জিনস পরেন, নিজের কেরিয়ার সম্পর্কে শ্রদ্ধাশীল – মনোযোগী। আর
দুজনেই অগ্নি মিত্রকে পছন্দ করেন, ভালোও হয়ত বাসেন। সে বিষয়ে
সঠিক সিদ্ধান্তে আসা অবশ্য কঠিন – অগ্নির সঙ্গে এঁদের কোন রাসায়নিক
স্ফুলিঙ্গ (কেমিস্ট্রি) যদি থেকেও থাকে তা এত ক্ষীণ যে চোখে
পড়ে না। দুটি নারী চরিত্রই ওয়ান ডাইমেনশানাল, ব্যঞ্জনা ও অভিব্যক্তি
বিহীন, কার্ডবোর্ড কাট আউট মাত্র। কঙ্কনা ও প্রিয়াঙ্কা, দুজনেই
অভিনয় করেছেন রক্তশূন্য ভাবে, শুধু মাত্র পরিচালকের নির্দেশ
মেনে। চরিত্র দুটির দ্বন্দ্ব, জটিল অনুভূতি, চেতনা, সবই উহ্য
থেকে গেছে।
বরং অগ্নি বোসই কিছুটা
সজীব। তাছাড়া প্রিয়াংশু চ্যাটার্জী দেখতে খুব সুন্দর। সুন্দর
বলে তাঁর সব দোষ আমি ক্ষমা করে দিলাম। সমালোচক হিসেবে এটুকু
স্বাধীনতা আমি দাবী করতেই পারি।
চৌধুরী দম্পতি – কবীর এবং
লায়লা – অন্যদের মতন একই রকম। শুধু ইসলামিক দর্শন থেকে পাঠ করে,
রবীন্দ্রনাথের কবিতা আউড়ে, হিন্দু অগ্নি ও ঝিলিকের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ
ব্যবহার করলেই মুক্তমনের পরিচয় দেওয়া হয় কি?
গৌতম ছবিতে অনেক কিছু বলতে
চেয়েছেন – ধর্ম সহিষ্ণুতা (চৌধুরী দম্পতি মুসলমান, রাকা খৃশ্চান,
বোস দম্পতি হিন্দু), সমাজের প্রান্তিক গোষ্ঠীর প্রতি শ্রদ্ধা,
তাদের সামাজিক ও প্রশাসনিক অবদমনের (আদিবাসীদের থেকে তাদের সংস্কৃতি
ও অস্তিত্ব কেড়ে নেওয়া) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, নারী মুক্তি, তৃতীয়
বিশ্বের ওপর এম এন সি-র ধ্বংসাত্মক প্রভাব, কোন কিছুই বাদ দেন
নি। সব চেয়ে দুঃখ শূন্য অঙ্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন যে আদিবাসীরা
গৌতমের তুলিতে তাঁরা “হ্যাপি নেটিভ” হয়ে উঠেছেন। এ যেন রুশোর
“নোবেল স্যাভেজ”-এরই সমকালীন রূপ। তাঁরা রোগ শোক সংসারের যাবতীয়
খানা খন্দের ঊর্ধ্বে। তাদের লড়াই শুধু মাটির জন্যে, গোষ্ঠী পরিচয়
বজায় রাখার জন্যে। গৌতমের মত চিন্তাশীল পরিচালকের কাছ থেকে এ
ধরণের ছেলেমানুষি সরলতা আশা করা যায় না।
শূন্য অঙ্কের চরিত্রেরা
সকলে কবিতা আওড়ায়, থেকে থেকে গান গেয়ে ওঠে। পর্দায় তাদের জীবন
সমস্যা যাই হোক না কেন, অন্তর্দ্বন্দ্বের কোন ইঙ্গিত আমরা পাই
না। শুধু কথার মাধ্যমে জানি এদের প্রত্যেকেরই প্রাণে কোন না
কোন দুঃখ জমাট বেঁধে রয়েছে। অগ্নির দাদাকে সত্তরের দশকে পুলিশ
খুন করেছে (দাদার থেকে অন্তত: কুড়ি বছরের ছোট না হলে অগ্নির
সঙ্গে তার বয়স মেলে না। অথচ অগ্নির নিজের কথাতেই জানি, দাদার
মৃত্যুর সময় সে বাড়ীতে ছিল); চৌধুরী দম্পতির সন্তানকে পুলিশ
(অথবা অন্য কেউ) খুন করেছে; রাকার প্রেমিককে পুলিশ খুন করেছে।
একেবারেই কাঁচা হাতের গল্প!
যে ক্যামেরার কাজের জন্যে
গৌতম বিখ্যাত, সেই ছবিও মনে হয় কোন বাচ্চার হাতে ক্যামেরা দিয়ে
ছেড়ে দেওয়া। মাঝে মাঝে এত খারাপ যে মনে হল তাঁর কোন নতুন সহকারীকে
হাত পাকাতে সুযোগ দিয়েছেন।
ছবির শেষে মাথা ধরার ওষুধ
খেয়ে শুধু বলতে ইচ্ছে করে গৌতম ঘোষকে কে অপহরণ করেছো – ফিরিয়ে
দিয়ে যাও আমাদের সেই পরিচিত গৌতমকে! আর আপনাদের প্রতি শেষ কথা?
আমার এক মেসোমশাইয়ের ভাষায় বলতে ইচ্ছে করছে – এ শুধু অর্থ নষ্ট,
মনঃকষ্ট। এখন আপনাদের সিদ্ধান্ত!
শমীতা
দাশ দাশগুপ্ত
(আপনার
মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)