ভারতীয়
চলচ্চিত্রের সময়রেখা
প্রথম পর্ব (১৮৯৬ - ১৯৬০)
১৮৯৬ মুম্বাইয়ের
(সেকালের বোম্বাইয়ে) লুমিয়ের (Lumiere) ভাইদের প্রথম চলন্ত ছবি
দেখানো হয় ওয়াটসন হোটেলে। দিনটি ছিল ৭ ই জুলাই।
১৮৯৮ স্টার থেয়েটারে বিদেশী ক্যামেরাম্যানের তোলা কলকাতার ছবি
'প্যানারোমা অফ ক্যালকাটা' দেখানো হয়।
১৯০১ হীরালাল সেন বিভিন্ন নাটকের নানান অংশের চলচ্চিত্র তোলেন।
১৯০২ জে.এফ ম্যাডান কলকাতার ময়দানের টেণ্ট খাটিয়ে বায়োস্কোপ
দেখানো শুরু করেন।
১৯১৩ 'রাজা হরিশ্চন্দ্র' - প্রথম ভারতীয় গল্পের চলচ্চিত্র (৩৭০০
ফুট দীর্ঘ) তৈরী করেন ডি.জি. ফালকে। মুম্বাইয়ের করোনেশন থিয়েটারে
সেটি দেখানো হয়।
১৯১৭ বাংলায় প্রথম পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র 'সত্যবাদী রাজা হরিশচন্দ্র'
তোলেন জে.এফ মদন।
১৯১৮ ভারতীয় সিনেম্যাটোগ্রাফ আইন পাশ হয়। এই আইনে সেন্সরশিপ
ও সিনেমার লাইসেন্স প্রথা সম্পর্কিত বিষয়ে বিধান দেওয়া হয়।
১৯১৯ মাদ্রাসের আর নটরজন মুদলিয়ার প্রথম পূর্ণাঙ্গ দক্ষিণ ভারতীয়
চলচ্চিত্র তৈরী করেন।
১৯২১ প্রথম ভারতীয় সামাজিক চলচ্চিত্র তৈরী করেন ধীরেন গঙ্গোপাধ্যায়।
বিদ্রুপাত্মক এই ছবিটির নাম ছিল, 'বিলেত ফেরত্'।
১৯৩০ বিদেশে শিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ার বি এন সরকার কলকাতায় পরবর্তীকালের
বিখ্যাত কোম্পানী নিউ থিয়েটার্স প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৩১ ভারতের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র 'আলাম আরা' মুক্তি পায়। প্রযোজক
ছিলেন এ এম ইরাণী। সে বছরের অন্যান্য অন্যান্য ভাষার প্রথম সবাক
চিত্র: 'শিরিন ফারহাদ' (উর্দু), 'কালীদাস' (তামিল), 'ভক্ত প্রহলাদ'
(তেলেগু) ও 'জামাই ষষ্ঠী' (বাংলা)।
১৯৩৩ ইংরেজি ভাষায় তোলা প্রথম ভারতীয় ছবি হল 'কর্ম'। হিমাংশু
রাই ছবিটি তোলেন ইংল্যাণ্ডে। ছবি তোলাকালীনই নায়িকা দেবিকারাণীর
সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।
১৯৩৪ ভেনিস ফিল্ম উত্সবে যায় প্রথম ভারতীয় ছবি 'সীতা'। পরিচালক
দেবকী বসু। অভিনেতা ও অভিনেত্রী ছিলেন পৃথ্বিরাজ কাপুর ও দুর্গা
খোটে।
১৯৩৫ সিনেমায় নেপথ্য সঙ্গীত বা প্লে-ব্যাক প্রথা চালু হয়। ভারতীয়
চলচ্চিত্রের একটি নতুন পর্যায় শুরু নিউ থিয়েটার্সের 'দেবদাস'
(প্রমথেশ বড়ুয়া পরিচালিত ও অভিনীত) মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে। এই
বছরই হিমাংশু রাই ও দেবিকারাণী মুম্বাইয়ে বোম্বে টকিজ প্রতিষ্ঠা
করেন।
১৯৩৬ কলকাতায় বেঙ্গল মোশন পিকচার এসোসিয়েশন স্থাপিত হয়।
১৯৩৭ মুম্বাইয়ে ইণ্ডিয়ান মোশন পিকচার এসোসিয়েশন স্থাপন করা হয়।
এই বছরই এ. এম. ইরাণী ভারতবর্ষের প্রথম রঙিন ছবি 'কিষাণ কন্যা'
প্রযোজনা করেন।
১৯৪৭ ১৯৪৩ সালে বোম্বে টকিজ-এর তোলা কিসমত্ কলকাতার একটি সিনেমা
হলে সাড়ে তিন বছরেরও বেশি চলে রেকর্ড স্থাপন করে।
১৯৪৮ জেমিনী স্টুডিওতে তোলা এস.এস. ভাসন পরিচালিত 'চন্দ্রলেখা'র
(তামিল ও হিন্দীতে) বক্স-অফিস সাফল্য। উদয় শঙ্করের নাচভিত্তিক
ছবি 'কল্পনা'র মুক্তি।
১৯৫১ সেণ্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সেন্সর-এর সৃষ্টি। ফিল্ম ফেডারেশন
অফ ইণ্ডিয়ার জন্ম।
১৯৫২ চেকোশ্লোভাকিয়া ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এম.পি. প্রডাকশনের তৈরী
বাবলা-র পুরস্কারপ্রাপ্তি। ভারতের প্রথম টেকনিকালারে তোলার ঝান্সী
কি রাণী ছবির মুক্তি। কলকাতা, চেন্নাই, মুম্বাই ও দিল্লীতে আন্তর্জাতিক
চলচ্চিত্র উত্সবের শুরু।
১৯৫৫ সত্যজিত্ রায়ের পথের পাঁচালী বিশ্বের দরবারে ভারতীয় সিনেমাকে
সসন্মানে পৌঁছে দিল।
১৯৫৬ ভারতীয় ছবির বিদেশী চলচ্চিত্র উত্সবে নিয়মিত প্রদর্শন শুরু।
পথের পাঁচালীর কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পুরস্কার এবং রাজকাপুরের
জাগতে রহো-র কার্লোভি ভ্যারি ইণ্টারন্যাশেনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে
পুরস্কার।
১৯৫৭ বিমল রায়ের তথ্যচিত্র 'গৌতম বুদ্ধ', তপন সিংহের 'কাবুলিওয়ালা',
সত্যজিত্ রায়ের 'অপরাজিত'র বিদেশী পুরস্কার ও সন্মান। প্রথম
ইন্দো-সোভিয়েত চলচ্চিত্র 'পরদেশী'র মুক্তি। গুরু দত্তের অসমান্য
ছবি 'পিয়াসা'র মুক্তি।
১৯৫৮ ভি শান্তারামের 'দো আঁখে বারা হাত'-এর বার্লিন ফেস্টিভ্যালে
পুরস্কার। ঋত্বিক ঘটকের 'অযান্ত্রিক' ছবির মুক্তি। কার্লোভি
ভ্যারি ইণ্টারন্যাশেনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে নার্গিস দত্তের শ্রেষ্ঠ
অভিনেত্রীর সন্মান লাভ। সত্যজিত্ রায়ের অপু ট্রিয়োলজির শেষ ছবি
'অপুর সংসার'-এর মুক্তি।
১৯৬০ সত্যজিত্ রায়ের দুই কন্যা এবং অপুর সংসারের বিদেশে সন্মান
লাভ। কে. আসিফ-এর বহু অর্থব্যায়ে তৈরী মুঘল-ই-আজম-এর মুক্তি।
সহায়িকা:
সেভেণ্টি ইয়ারস অফ ইণ্ডিয়ান সিনেমা, টি এম রামচন্দ্রন ও এস রুক্মিনী
সম্পাদিত, সিনেমা ইণ্ডিয়া ইণ্টারন্যাশেনাল, মুম্বাই।