আসল
খুনীর সন্ধানে - গোয়েন্দা একেনবাবুর রহস্য কাহিনী
সুজন দাশগুপ্তের
মানসপুত্র পেশাদার গোয়েন্দা একেনবাবু হলেন দাবাখেলার দাবা, অর্থাৎ
মন্ত্রী। কিশোরসাহিত্য থেকে প্রাপ্তবয়স্কদের বোর্ডে উঠেছেন বেশ
কিছুদিন হোলো। আমেরিকায় গিয়েছিলেন কোনো এক সময়ে কোনো রহস্য সমাধান
করতে। তা খুনী তো ধরা পড়লোই, দাবা একেনবাবু পেয়ে গেলেন দুটি
বোড়ে-- বাপি এবং প্রমথ। তাঁদের মধ্যে একজন একেনকীর্তির সংরক্ষক,
আরেকজন ফুট কাটেন এবং দুজনে একেনবাবুকে সাহচর্য দেন। তা এই দাবাবোড়ে
নিয়ে একেনবাবু মারফৎ সুজন দাশগুপ্ত আমেরিকার কিছু দুর্জনদের
প্রাণে আতঙ্ক সঞ্চার করছিলেন আর আমরা রুদ্ধশ্বাসে তার ধারাবিবরণী
পড়ে পরবর্তী কিস্সার সাধনা করে যাচ্ছিলাম। এদিকে আমাদের এই আকুঞ্চনের
কথা ভেবে একেনবাবু ইতিমধ্যে খাস ম্যানহাটানেই আপিস খুলে ফেলেছেন।
সর্বাধুনিক একেনকাহিনীতে
[আসল খুনীর
সন্ধানে] সুজন একটা নতুন চমক লাগিয়েছেন। এবার একেনবাবুকে
লড়তে নামিয়েছেন খাস কোলকাতায়। শুধুই দাবার খেলা, বোড়েদের দেখা
পাওয়া যাচ্ছে শুধু টেলিফোনের মাধ্যমে, তা সে না থাকারই মতো।
একটু ভয়ে ভয়ে ছিলাম, বোড়েদের বকলমে অভ্যেস তো। তা সেই অভাব পূর্ণ
করে এবার পাওয়া গেছে একেনগিন্নিকে, নাম... না থাক, বই পড়ে জেনে
নেবেন। পতিপ্রাণা মহিলা, কর্তার বেয়াড়া মতিগতি জানেন এবং মৃদু
ভর্ৎসনা করে মানিয়ে নেন, নিয়ে মাছের ঝোল রাঁধেন কর্তার জন্য।
আর অমন আলাভোলা একেনবাবুর ভেতরে যে রসিক মনটি লুকানো আছে তার
দেখা পাইয়ে দেন। কথায় বলে না, প্রতি সফল পুরুষের পিছনে থকেন
এক সমর্পিতপ্রাণা মহিলা, এ তাই আর কি।
তা বলে রহস্যকাহিনীর রোমহর্ষকতায
সুজন কার্পণ্য করেননি কোনো। একাধিক খুন আছে, কাহিনীতে সূত্রের
ছড়াছড়ি। একেনবাবুর গল্পে আমরা যা পেতে অভ্যস্ত-- গোড়ার টোপ আর
শেষে বঁড়শিবেঁধা মাছ, সে আছে ঠিকই। অবশ্যই আছে যথোপযুক্ত লাল
মাছ, রেড হেরিঙের সাপ্লাই, তবে বাপি নামের বোড়ে না থাকায় মাছের
চাষটা একটু কম হয়েছে বোধ হচ্ছে। এদিকে সরেজমিন হচ্ছে একেবারে
খাস কোলকাতা -- যদিও ম্যানহাটান টুক করে একটু ঝিলিক দিয়ে গেছে--
অন্যদের কথা জানিনা, তবে আমার মতো যাঁরা বহুদিন কোলকাতা ছেড়েছেন,
আমার মতো তাঁদেরও এই কোলকাতার পশ্চাত্পট ভালো না লেগেই যায় না।
রাস্তাঘাটগুলো চিনি চিনি বোধহয়, আর কিছু কিছু পাড়া-- ওরে বাবা
খুনখারাপি তো হতেই পারে! শীতের ধোঁয়াশা ঢাকা সন্ধ্যায় একটু গা
ছমছমিয়ে একনিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার মতো বই। সঙ্গে বলবর্ধক পানীয়
থাকলে তো কথাই নেই তা চাটের মুড়ি একটু মিইয়ে যদি যায় তো গেলো।
আমি বলছি, আপনারা দেখে
নেবেন, আমাদের এই একেনবাবুকে একদিন ব্যোমকেশ / পরাশরদের মিছিলে
দেখতে পাবেন। আর সেই দিনটার, স্যার, খুব বেশী দেরী নেই।
সুমিত
রায়
পেপারব্যাক ১০৪ পাতা
মূল্য ১০০ টাকা
প্রাপ্তিস্থান দাশগুপ্ত এণ্ড কোম্পানি, কলেজ স্ট্রিট