কোলোনোস্কোপি
(Colonoscopy)
কোলোন
(colon) বা বৃহদান্ত্রের ভেতরে কোনও অস্বাভাবিকতা আছে কিনা সেটা
পরীক্ষা করার জন্য ডাক্তাররা কোলোনোস্কোপি করেন। কোলোন ক্যান্সার
হওয়ার সম্ভাবনা রোধ করতেও ডাক্তারা বয়স্ক ব্যক্তিদের (সাধারণতঃ
৫০ বছর বয়সের পরে) কোলোনোস্কোপি করাতে বলেন। কোলোনোস্কোপি করা
হয় একটা লম্বা টিউব দিয়ে যার সামনে একটা ক্ষুদ্র ক্যামেরা বসানো
থাকে। সেটি মলদ্বার দিয়ে প্রবেশ করিয়ে ডাক্তাররা কোলোনের বিভিন্ন
অংশ পরীক্ষা করেন।
এই পরীক্ষার সময় যদি কোনও
পলিপ বা অস্বাভাবিক টিস্যু চোখে পড়ে তাহলে ডাক্তাররা সেটি কেটে
বার করে পরীক্ষার জন্য পাঠান। কোলোনোস্কোপে এই টিস্যু বা পলিপ
কাটার যন্ত্র থাকে। পলিপ থাকাটা অস্বাভাবিক নয় এবং বেশির ভাগ
ক্ষেত্রেই সেগুলি থেকে ক্যানসার হবার কোনও সম্ভাবনা থাকে না।
তবে কিছু কিছু পলিপে ক্যনসার হবার প্রবণতা থাকে। সেগুলি বায়োপ্সিতে
ধরা পড়ে।
এই পরীক্ষাটি কষ্ট দায়ক
নয়, কারণ পরীক্ষার সময়ে রোগীকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়। কিন্তু কোলোনোস্কোপি
করার আগে, কোলোনের ভেতরে যাতে কোনও বিষ্ঠা বা জলীয় পদার্থ না
থাকে সেটা দেখতে হয়। তারজন্য পরীক্ষার চব্বিশ ঘণ্টা আগে থেকেই
ডাক্তাররা জোলাপ এবং অনেক স্বচ্ছ জলীয় জিনিস (জল, জিঞ্জারেল,
ইত্যাদি) খেতে বলেন। লাল রঙের কোনও জলীয় পদার্থ যেমন, টমেটো
জুস, বা
কোলা জাতীয় জিনিস খেতে বারণ করেন, যাতে কোলোন পরীক্ষার সময়ে
সেগুলো কে রক্ত বলে ভুল না হয়। জোলাপ খাবার জন্য ঘন ঘন বাথরুমে
যেতে হয়।
যাদের ডায়াবিটিস আছে বা
যারা অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ খাচ্ছেন, তাদের জন্য ডাক্তাররা অন্যরকম
ভাবে প্রস্তুত হতে বলতে পারেন।
কোলোনোস্কোপি হয়ে যাবার
পর এক ঘণ্টার মধ্যেই রোগীর ঘোর কেটে যায়। কিন্তু সেদিন গাড়ি
চালানো বা অন্য কোনও চিন্তার কাজ না করতে ডাক্তাররা বলেন। পরীক্ষার
পর প্রথম বার বাথরুমে গেলে একটু রক্ত দেখতে পাওয়াটা অস্বাভাবিক
নয়। কিন্তু যদি পরেও রক্ত পড়তে থাকে, তাহলে ডাক্তারের সঙ্গে
যোগাযোগ করা প্রয়োজন। এই রক্তগুলো পলিপ কাটলে বা কোনও টিস্যু
পরীক্ষা করার জন্য কাটলে সেখান থেকে পড়তে পারে।
কোলোন ক্যান্সার নিরোধ করার জন্য কোলোনোস্কোপির ব্যবহার এখন
পাশ্চাত্য দেশগুলিতে নিয়মিত করা হয়। ক্যানসার প্রবণ পলিপগুলিকে
কেটে বাদ দেওয়া এবং সেগুলি আবার হচ্ছে কিনা সেগুলো নিয়মিত পরীক্ষা
করে দেখা - ক্যানসার-প্রতিরোধ চিকিৎসার এখন একটি অঙ্গ।
[স্বাস্থ্য
বিষয়ক যে-সব আলোচনা অবসর-এ রয়েছে তার উদ্দেশ্য সাধারণ ভাবে স্বাস্থ্য
ও বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে পাঠকদের অবহিত করা। এই আলোচনা কোনও ভাবেই
ডাক্তারের পরামর্শের বিকল্প নয়। কারোর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও
সমস্যা থাকলে, তাঁর উচিত সরাসরি কোনও ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ
করা।]