পেট
(PET) স্ক্যান
পসিট্রন এমিশন টোমোগ্রাফি
(PET) স্ক্যান হল এক বিশেষ ধরণের ইমেজিং টেস্ট যা দিয়ে ডাক্তাররা
শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ এবং টিস্যু কিভাবে তাদের কাজ করছে সেটা
বুঝতে পারেন। এই পরীক্ষায় খুব অল্প পরিমান রেডিও-অ্যাক্টিভ কেমিক্যাল
(রেডিও ট্রেসার) হাতের শিরার মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এই রেডিও-অ্যাক্টিভ
কেমিক্যাল সারা দেহের মধ্যে যখন ভ্রমণ করে, তখন শরীরের বিভিন্ন
অঙ্গ ও টিস্যু সেটাকে শোষণ করতে থাকে। এই শোষণকালে রেডিও-অ্যাক্টিভ
কেমিক্যাল যে ভাবে এনার্জি বিচ্ছুরিত করে - সেটাকে মেপে কম্পিউটারের
সাহায্যে থ্রি-ডাইমেনশনাল ইমেজ বা ছবি সৃষ্টি করা হয়। সেই ছবি
বিভিন্ন ভাবে দেখে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বুঝতে পারেন - শরীরের
কোথায় কি সমস্যা হচ্ছে।
বর্তমানে
পেট স্ক্যান ব্যবহার করা হয় ক্যানসার, হার্টের সমস্যা, মস্তিষ্কের
সমস্যা (টিউমার, স্মরণশক্তির সমস্যা, এপিলেপ্সি ইত্যাদি) এবং
অন্যান্য স্নায়ু-সংক্রান্ত সমস্যা নির্ধারণের জন্যে।
পেট স্ক্যানের সঙ্গে সিটি
(CT) বা এমআরআই (MRI) স্ক্যানের পার্থক্য হল পেট স্ক্যান একেবারে
কোষের সমস্যাগুলি ধরতে পারে। সেইজন্য রোগ প্রকাশ পাবার একেবারে
প্রাথমিক অবস্থায় সমস্যাটা ধরা পড়ে। অন্য দুটিতে রোগ যখন কিছুটা
এগিয়ে গেছে - তখনি বুঝতে পারা যায়।
পেট স্ক্যানের জন্যে সাধারণত
হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় না। ডাক্তাররা আগে থেকেই বলে দেন স্ক্যান
করতে আসার আগে কি কি করণীয়। হার্টের রোগীদের ক্যাফিন জাতীয় কিছু
খেতে বারণ করা হয়। স্ক্যানের আগে অন্তত ছঘণ্টা কিছু না খেয়ে
থাকতে হয়।
স্ক্যান করতে আধ ঘণ্টা
থেকে এক ঘণ্টা লাগে। কিন্তু তার আগে রেডিও-অ্যাক্টিভ কেমিক্যাল
সারা শরীরে প্রবেশ করতে হবে। তার জন্যে প্রায় এক ঘণ্টা লাগে।
তবে শরীরের কোন অংশ স্ক্যান করা হচ্ছে তার ওপরে নির্ভর করবে
- আর কি করতে হবে। অনেক সময়ে পুরো পরীক্ষাটা শেষ হতে তিন চার
ঘণ্টা লেগে যেতে পারে। স্ক্যান করার সময়ে শরীর নাড়ানো চলবে না।
নড়লে ছবি ভালো আসবে না।
রেডিও অ্যাক্টিভ কেমিক্যাল
শরীরে গেলেও তার পরিমাণ খুব অল্প। সাধারণ লোকের এতে ক্ষতি হবার
সম্ভাবনা নেই। কিন্তু ক্ষুদ্র শিশু বা গর্ভস্থ সন্তানদের পক্ষে
এটা ভালো নয়। তাই গর্ভবতী নারী বা যেসব মায়েরা শিশুদের স্তনদান
করছেন, তাদের এই স্ক্যান করার আগে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে
স্থির করতে হবে, যে এটা না করলে চলবে কিনা।
(আপনার
মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)
[স্বাস্থ্য বিষয়ক যে-সব আলোচনা
অবসর-এ রয়েছে তার উদ্দেশ্য সাধারণ ভাবে স্বাস্থ্য ও বিভিন্ন
রোগ সম্পর্কে পাঠকদের অবহিত করা। এই আলোচনা কোনও ভাবেই ডাক্তারের
পরামর্শের বিকল্প নয়। কারোর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও সমস্যা
থাকলে, তাঁর উচিত সরাসরি কোনও ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা।]