ইউভিআইটিস (Uveitis)
ইউভিআইটিস
হল চোখের মধ্যস্তরের প্রদাহ বা inflammation। চোখের ভেতরের স্তর
হল রেটিনা আর একেবারে ওপরের স্তর হল স্ক্লেরা – যেটি অপেক্ষাকৃত
শক্ত সাদা স্তর। এই দুই স্তরের মধ্যে কোরয়েড ও আর দুয়েকটি অংশ
নিয়ে ইউভিয়া। এই তিনটি টিস্যুর স্তরের ভেতর জেলি জাতিয় পদার্থ
ভিট্রেয়াস থাকে।
ইউভিয়ার মধ্যে অনেক রক্তবাহী
শিরা উপশিরা ও ধমনী থাকে। চোখের ভেতর রক্ত চলাচলের দায়িত্ব পালন
করে ইউভিয়া। এর জন্যেই চোখের অনেক অংশ, যেমন রেটিনা তার পুষ্টি
সংগ্রহ করে। তাই ইউভিয়ার প্রদাহ চোখের পক্ষে ক্ষতিকারক।
রোগলক্ষণঃ
- আলোর দিকে তাকাতে অসুবিধা
- চোখে ঝাপসা দেখা
- ব্যথা
- চোখ লাল হওয়া
ইউভিআইটিস হঠাৎ দেখা দিতে
পারে - অনেক সময়ে ব্যথা ছাড়াই, শুধু চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে।
তবে সাধারণত ইউভিআইটিসে চোখ লাল হয়, আর সেই সঙ্গে চোখ ব্যথা
করে। চোখ অনেক সময়ে লাল হয়, কিন্তু সেই সঙ্গে যদি ব্যথা থাকে
আর লাল ভাব বা ব্যথা যদি তাড়াতাড়ি মিলিয়ে না যায়, তাহলে চোখের
ডাক্তারের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করা উচিত।
কেন ইউভাআইটিস
হয়?
নানা কারণে এই রোগ দেখা
দিতে পারে।
- ভাইরাস, যেমন শিঙ্গল্স,
মাম্প্স বা হার্পিস;
- কোনও ছত্রাক, যেমন
হিস্টোপ্ল্যাস্মোসিস
- কোনও পরজীবী, যেমন
টক্সোপ্ল্যাস্মোসিস
- শরীরের অন্য কোনও জায়গায়
সম্পর্কিত কোনও অসুখ, যেমন আরথ্রাইটিস
- চোখে কোনও আঘাত পেলে
- রোগজীবাণু, যেমন সিফিলিস।
- অবশ্য অনেক ক্ষেত্রেই
আসল কারণটা জানা যায় না।
কি করে রোগটি নির্ণয় করা হয়?
চোখের ডাক্তাররা চোখ ও
অন্যান্য পরীক্ষা করে রোগটি ধরতে পারেন। অনেক সময়ে অন্যান্য
বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে কি চিকিৎসা হবে সেটা স্থির করেন।
কত রকমের
ইউভিআইটিস আছে?
কি ধরণের ইউভিআইটিস সেটা
নির্ভর করে, চোখের কোন অংশে প্রদাহ হয়েছে।
- যদি আইরিস-এর কাছাকাছি
প্রদাহ হয়, তাহলে এটিকে বলা হয়, আইরাইটিস। আইরাইটিস হঠাৎ করে
হয় এবং সারতে দুমাসও লেগে যেতে পারে।
- চোখের মাঝামাঝি প্রদাহ
হলে, এটাকে বলা সাইক্লাইটিস। সাইক্লাইটিস চোখের পেশীগুলোর
উপর প্রভাব ফেলে, যার ফলে চোখের লেন্সের ফোকাস করতে অসুবিধা
হয়। এটি সারতেও কয়েকমাস লাগে।
- চোখের পেছনে প্রদাহ
হলে এটিকে বলা হয় কোরয়ডাইটিস। কোরয়ডাইটিস আস্তে আস্তে দেখা
দেয়। সারতেও সময় বেশী লাগে।
এর চিকিৎসা
কি?
নানা ভাবে এর চিকিৎসা হয়।
স্টেরয়েড বা বিভিন্ন আই-ড্রপ্স ব্যবহার করে। প্রদাহ বেশী হলে
ইনজেকশন বা ওষুধ খেতে হয়।
ইউভিআইটিস হলে গ্লাকোমা,
ক্যাটার্যাক্ট এবং নেওভ্যাস্কুলারাইজেশনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি
পায়। এছাড়া রেটিনাকেও এটি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
(আপনার
মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)
[স্বাস্থ্য বিষয়ক যে-সব আলোচনা
অবসর-এ রয়েছে তার উদ্দেশ্য সাধারণ ভাবে স্বাস্থ্য ও বিভিন্ন
রোগ সম্পর্কে পাঠকদের অবহিত করা। এই আলোচনা কোনও ভাবেই ডাক্তারের
পরামর্শের বিকল্প নয়। কারোর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও সমস্যা
থাকলে, তাঁর উচিত সরাসরি কোনও ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা।]