প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

আঁচিল (wart)


ত্বকের উপরে ভাইরাস সংক্রমণে আঁচিল দেখা দেয়। ত্বকের এই ব্যাধিগ্রস্ত বৃদ্ধি (বা গুটিকা) ক্যানসার নয়। যে ভাইরাসের জন্যে আঁচিল হয়, সেটিকে বলা হয় হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (human papilloma virus বা HPV) । সাধারণত আঁচিলের রঙ গায়ের চামড়ার মত এবং হাত দিলে একটু অমসৃণ বা খসখসে লাগে। কনু আঁচিল অনেক সময় কালচে মসৃণ চ্যাপ্টা হতে পারে। আঁচিল দেখতে কিরকম হবে, সেটা অনেক সময়ে কোথায় হয়েছে – তার ওপর নির্ভর করে।

আঁচিল কত রকমের হতে পারে?

(১) সাধারণ আঁচিল (verruca vulgaris) -এগুলি সাধারণত আঙুলে নোখের কাছে অথবা হাতের উল্টোদিক হয়।

(২) প্ল্যান্টার আঁচিল (verruca plantaris) – এগুলি সাধারণত পায়ের পাতার নীচে হয়। হাতের তালুতে যেগুলো হয় সেগুলোকে palmer warts বলা হয়। অনেক সময়ে অনেকগুলি আঁচিল পাশাপাশি গায়ে গায়ে লেগে ওঠে। সেগুলোকে সারানো কঠিনতর হয়। পায়ের তলায় এ ধরণের আঁচিল চামড়া ভেদ করে ওঠে না, কারণ পায়ের চাপে থাকে। কিন্তু এগুলি যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে – মনে হয় জুতোর মধ্যে শক্ত কিছু ঢুকে আছে।

(৩) সমতল আঁচিল (verruca-plana) – ছোট ছোট মসৃণ আঁচিল – এগুলো একসঙ্গে অনেকগুলি হয়। যে কোনও জায়গাতেই হতে পারে। তবে বেশী হয় মুখে, ছেলেদের দাঁড়ির জায়গায় বা মেয়েদের পায়ে। লোম বা দাঁড়ি কামানোর সময় চামড়ার ওপর যে ঘষাঘষি হয় তার সঙ্গে এই ধরণের আঁচিল সৃষ্টির যোগ আছে বলে মনে হয়।

(৪) যৌনাঙ্গের আঁচিল বা Genital warts (condylomata acuminata) – এটি সংক্রামিত হয় অন্তরঙ্গ শারীরিক মিলনে। স্বাভাবিক ভাবে প্রসব হওয়া শিশুদের মধ্যে এটি দেখা দিতে পারে যদি মায়ের যৌনাঙ্গের ভেতর HPV থাকে। এগুলির রঙ চামড়ার রঙের মত; দেখা দেয় যৌনাঙ্গে, পায়ুদেশে বা নারী যৌনাঙ্গের ভেতরে।

আঁচিল সারানোর ওষুধ কি?

ছোটদের আঁচিল অনেক সময়ে বিনা চিকিৎসাতেই অদৃশ্য হয়। তবে যদি এগুলি কষ্টদায়ক হয় বা দ্রুতগতিকে বাড়তে থাকে, তাহলে চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। বড়দের ক্ষেত্রে আঁচিল সহজে নিজে থেকে অদৃশ্য হয় না।
ডাক্তারর নানা ভাবে এগুলোর চিকিৎসা করেন।

* স্যালিসিক অ্যাসিড জেল, দ্রবণ বা প্লাস্টার্স দেওয়া হয় বাড়িতে প্রতিদিব প্রলেপ দেবার জন্যে। বেশ কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে এর সুফল ফলতে। কিন্তু এটি ব্যবহার করলে যদি কোনও ঘা সৃষ্টি হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে এর ব্যবহার বন্ধ করা উচিত।

* ক্যান্থারিডিন এক ধরণের রাসায়নিক যেটি ডাক্তারয়া নিজেদের চেম্বারে ব্যবহার করেন। এটি আঁচিলের নীচে একটি ফোস্কার সৃষ্টি করে। সপ্তাহ খানেক বাদে ফোস্কার ওপরে আঁচিলের মৃত অংশ ডাক্তার কেটে ফেলে দেন।

* ক্রায়োথেরাপি – এটি হল আতি ঠান্ডা তরল (সাধারণত তরল নাইট্রোজেন) দিয়ে আঁচিলকে জমিয়ে দেওয়া। সপ্তাহ খানেক পরে মৃত অংশকে কেটে বাদ দেওয়া।

* ইলেক্ট্রো সার্জারি – ডাক্তারের অফিসে এটি করে আঁচিলকে সঙ্গে সঙ্গে পুড়িয়ে ধ্বংস করা যায়। তবে জায়গাটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে কিছুদিন সময় লাগে।

* লেজার ব্যবহার করে আঁচিল ধ্বংস করা।

* সাধারণ সার্জারি।

* ইমিকুইমোড – এক ধরণের ক্রিম যেটা যৌনাঙ্গের আঁচিলে সারাবার জন্যে বাইতে ব্যবহারের জন্যে দেওয়া হয়।

* ইম্যুনোথেরাপি,ইত্য্যাদি।

(আপনার মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)

[স্বাস্থ্য বিষয়ক যে-সব আলোচনা অবসর-এ রয়েছে তার উদ্দেশ্য সাধারণ ভাবে স্বাস্থ্য ও বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে পাঠকদের অবহিত করা। এই আলোচনা কোনও ভাবেই ডাক্তারের পরামর্শের বিকল্প নয়। কারোর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও সমস্যা থাকলে, তাঁর উচিত সরাসরি কোনও ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা।]

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।