প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

পারিবারিক নির্যাতন সম্পর্কে আবশ্যকীয় তথ্যসমূহ

পারিবারিক নির্যাতন যে কোনও নারীর উপর ঘটতে পারে -

যে কোন নারী পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হতে পারেন - তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা বা আর্থিক ক্ষমতা যাই হোক না কেন। মনে রাখবেন, আপনি পরিবারের একজন সম্মানিত সদস্য; আপনার ওপর নির্যাতন করার অধিকার বা আপনাকে অপমান করার অধিকার কারোর নেই।


প্রচলিত সামাজিক ধারণা - যা সঠিক নয়:

পারিবারিক নির্যাতন ঘটলে সেটা কাউকে বলা উচিত নয়। নির্যাতিতা নারী সেটা পরিবারের বাইরে কাউকে জানালে পরিবারের মান সম্মান নষ্ট হবে এবং তার জন্য দায়ী করা হবে নির্যাতিতাকে। নির্যাতিতাকে মেনে নিতে হবে যে এই নির্যাতন হল তাঁর কর্মফল বা ভাগ্য।


সব সময়ে মনে রাখতে হবে:

  • পারিবারিক নির্যাতনের ক্ষেত্রে দোষী হবেন যে বা যাঁরা নির্যাতন করছেন।
  • পারিবারিক নির্যাতন ঘটলে সেটা গোপন রাখা উচিত নয়, নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। চুপ করে থাকলে বা মেনে নিলে অত্যাচারীর মনে হবে তাঁর আচরণ সঠিক।
  • আপনি যে নির্যাতিতা হচ্ছেন সেটা বন্ধুদের বা শুভাকাঙ্খীদের কাছে খুলে বললে, পরবর্তীকালে অভিযোগ দায়ের হলে তাঁরা ঘটনার সাক্ষ্য দিতে পারবেন।
  • নির্যাতনের বিবরণ লিখে রাখুন। পরবর্তীকালে অভিযোগ দায়ের করার সময়ে সেটা প্রয়োজন হবে।
  • আপনি কোনো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্য নিতে পারেন।


তথ্য প্রমাণ নিজের কাছে রাখা জরুরী:

পারিবারিক নির্যাতনে আক্রান্ত হচ্ছেন বা নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত হতে পারেন - এমন হলে প্রয়োজনীয় ও জরুরী কাগজপত্র নিরাপদ হেফাজতে রাখুন। অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসও নিরাপদে রাখুন; যেমন,

  • নিজের শিক্ষাসংক্রান্ত মার্কশিট, সার্টিফিকেট, সন্তানদের স্কুলের যাবতীয় কাগজপত্র।
  • গয়নাপত্র, টাকা পয়সা ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিস।
  • রেশন কার্ড, ভোটার প্রমাণপত্র, পাসবুক, পাসপোর্ট ইত্যাদি।
  • মূল্যবান নথিপত্র - বাড়ির দলিল, চুক্তিপত্র, উইলের কপি, প্রয়োজনীয় রসিদ।
  • প্রয়োজনীয় ঠিকানা ও ফোন নম্বর। যেখানে বা যাদের কাছ থেকে প্রয়োজনে সাহায্য পাওয়া যাবে বা যেতে পারে।
  • নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস ও কাগজপত্র নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
  • নির্যাতনকারী যেন সেগুলো অবৈধ ভাবে অধিকার করে অসুবিধা না ঘটাতে পারে।

অভিযোগ থানা নতিবদ্ধকরণ:

যদি কোনও নারী মনে করেন যে কেউ পারিবারিক সম্পর্কের সূত্রে হয়রান করছেন বা হুমকি দিচ্ছেন বা কোনও অবৈধ দাবি করছেন বা কোনও আর্থিক বা শারীরিক ক্ষতি করতে পারেন, তাহলে আপনার আশঙ্কার কথা এবং কি ঘটনার ভিত্তিতে আপনি এই ধরণের অনিষ্ট আশঙ্কা করছেন তা থানায় নথিভুক্ত করতে পারেন। ঐ ডায়রিতে যদি কোনও তাত্ক্ষণিক প্রতিকার চান তাও উল্লেখ করতে পারেন।

পুলিশ যদি এই অভিযোগ না গ্রহণ করতে চায়, তাহলে কোনও সিনিয়র অফিসার যেমন সুপারিন্টেণ্ডেণ্ট অফ পুলিশ বা ডেপুটি পুলিশ কমিশানারকে জানাতে হবে।

ডায়রি লেখা হলে তার এণ্ট্রি নম্বর পাওয়ার অধিকার অভিযোগকারীর আছে।

যদি লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়, তাহলে ঐ অভিযোগের প্রতিলিপি থানার শিলমোহর, তারিখ এবং ডায়রি এণ্ট্রি নম্বর সমেত ফেরত্ পাওয়া যায়।
যদি লিখিত বক্তব্যের ভিত্তিতে এফ আই আর দায়ের করা হয়, তাহলে আপনার অধিকার রয়েছে বিনা পয়সায় তার কপি পাওয়ার।

সূত্র: 'সুতানুটির সখ্য' প্রকাশিত ও আইনজীবি মধুপূর্ণা ঘোষ সম্পাদিত 'পারিবারিক হিংসা প্রতিরোধ আইন, ২০০৫' পুস্তিকা।

[নারী ও শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশের পথে প্রতিবন্ধকতা লিঙ্গ বৈষম্য নির্মূল করতে উত্সর্গীকুত সংস্থা হল 'সুতানুটির সখ্য'। এই সংস্থার বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে: মহিলা ও বরিষ্ঠ নাগরিকদের বিনা খরচে আইনী পরামর্শ প্রদান, স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে পরিকল্পনা ঘ্রহণ করা, মানবী শাস্ত্র বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা করা, সামাজিক সচেতনতা ও জনমত গঠনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম। এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের ঠিকানা:
ই-মেইল: sutanutisakhya@yahoo.com চলভাষ: ৯৮৩০৭৫৩৬৭৮]

[আইন বিষয়ক যে-সব আলোচনা অবসর-এ রয়েছে তার উদ্দেশ্য সাধারণ ভাবে আইনের ব্যাপারে পাঠকদের অবহিত করা। এই আলোচনা কোনও ভাবেই উকিলের পরামর্শের বিকল্প নয়। কারোর আইন সংক্রান্ত কোনও সমস্যা থাকলে, তাঁর উচিত সরাসরি কোনও আইনজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা।]

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।