প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

অসত্য সাক্ষ্য এবং জনগণের ন্যায়বিচার পাবার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টির অপরাধ

১৯১ ধারা – অসত্য সাক্ষ্য দেওয়া –

কেউ যদি আদালতে সত্য বলার শপথ নিয়ে এমন কোনও বিবৃতি দেয় যা অসত্য এবং যা সে অসত্য বলে জানে বা বিশ্বাস করে অথবা, সত্য বলে বিশ্বাস করে না, তাহলে সে অসত্য সাক্ষ্য দিয়েছে দিয়েছে বলা হবে।
এখানে বিবৃতি অর্থ মৌখিক বা অন্য কোনও ভাবে দেওয়া বিবৃতি।

[ সব ক্ষেত্রে সাক্ষী যে সঠিক কথা বলছে – তা নাও হতে পারে। যেমন, ক খ-এর হাতের লেখার বৈশিষ্ট্য জেনে সদ্‌ভাবে (in good faith) বিবৃতি দিল – কোনও একটি নির্দিষ্ট স্বাক্ষর খ করেছে বলে। এই বিবৃতি ক দিল নিজের বিশ্বাস থেকে। অর্থাৎ বিবৃতিটা কেবলমাত্র ক-এর বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া। এক্ষেত্রে ওটা খ-এর স্বাক্ষর না হলেও ক অসত্য সাক্ষ্য দেয় নি।]

১৯২ ধারা অসত্য সাক্ষ্য সাজানো –

যদি কেউ এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করে, (যেমন, কাগজপত্রে বা ইলেকট্রনিক রেকর্ডে কোন অসত্য দাখিলা দেয়, বা অসত্য বিবৃতি দেওয়া কোন দলিল বা ইলেকট্রনিক রেকর্ড তৈরি করে) এবং এগুলো করে এই উদ্দেশ্যে যে ওই পরিস্থিতি, বা অসত্য দাখিলা কোনও বিচারক, মধ্যস্থতাকারী বা লোকসেবকের কাছে সাক্ষ্য হিসেবে তোলা হবে এবং যার ফলে তাঁদের মতামত বা রায়ে ভুল হয়ে যেতে পারে – সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি অসত্য সাক্ষ্য সাজিয়েছে।

১৯৩ ধারা – অসত্য সাক্ষ্য দেবার দণ্ড -

যদি কেউ আদালতে কোনও বিচার চলাকালীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে “অসত্য সাক্ষ্য’ দেয়। অথবা বিচারকার্যে ব্যবহৃত হবার জন্যে ‘অসত্য সাক্ষ্য সাজায়’ তাহলে, সে অনধিক সাত বছর সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং অর্থদণ্ড দিতেও দায়ী হবে।
[এটি অধর্তব্য ও জামিন-যোগ্য অপরাধ]


১৯৪ ধারা – কাউকে মৃত্যুদণ্ড-যোগ্য অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করিয়ে দেবার উদ্দেশ্যে অসত্য সাক্ষ্য দিলে বা অসত্য সাক্ষ্য সাজালে –

কেউ কাউকে মৃত্যুদণ্ড-যোগ্য অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করিয়ে দেবার উদ্দেশ্যে বা সম্ভবত সেটা ঘটতে পারে জেনে অসত্য সাক্ষ্য দিলে বা সাজালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনধিক দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং অর্থদণ্ড দিতেও হবে।
এবং যদি, ওইরকম অসত্য সাক্ষ্যের ফলে কোনও নির্দোষ ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হয় ও মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়, তবে যে ঐ অসত্য সাক্ষ্য দিয়েছে তার হয় মৃত্যুদণ্ড হবে নয় পূর্বে বলা কারাদণ্ড হবে।
[এটি অধর্তব্য ও জামিন-অযোগ্য অপরাধ]


১৯৫ ধারা – কাউকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড-যোগ্য অপরাধে বা সাত বা ততোধিক বছরের কারাদণ্ড-যোগ্য অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করিয়ে দেবার উদ্দেশ্যে অসত্য সাক্ষ্য দিলে বা অসত্য সাক্ষ্য সাজালে –

যে অপরাধের জন্যে মৃত্যুদণ্ড হয় না, কিন্তু যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কিংবা সাত বা ততোধিক বছরের কারাদণ্ড হয় – সেইরকম কোনও অপরাধে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করানোর জন্যে যদি কেউ অসত্য সাক্ষ্য দেয় বা অসত্য সাক্ষ্য সাজায়, তাহলে তাকেও সেই একই অপরাধের দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
[এটি অধর্তব্য ও জামিন-অযোগ্য অপরাধ]


১৯৬ ধারা – যে সাক্ষ্যপ্রমাণ অসত্য বলে জানা আছে সেই সাক্ষ্যপ্রমাণ ব্যবহার করলে –

কেউ – যে সাক্ষ্যপ্রমাণ অসত্য বা সাজানো বলে, সেই সাক্ষ্যপ্রমাণকে সত্য বা প্রকৃত সাক্ষ্যপ্রমাণ বলে – অসাধু উদ্দেশ্যে চালালে বা চালাবার চেষ্টা করলে ধরা হবে - সে নিজেই অসত্য সাক্ষ্য দিয়েছে বা অসত্য সাক্ষ্য সাজিয়েছে এবং সেই বিচারে দণ্ডিত হবে।
[এটি অধর্তব্য ও জামিন-যোগ্য/জামিন-অযোগ্য অপরাধ]


১৯৭ ধারা – অসত্য সার্টিফিকেট দিলে বা স্বাক্ষর করলে -

কেউ কোনও সার্টিফিকেট যা আইনমতে দেওয়া দরকার বা স্বাক্ষর করা দরকার, বা কোনও তথ্যের সাক্ষ্য হিসেবে আইনগ্রাহ্য হবে এমন একটি সার্টিফিকেট গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয়ে অসত্য – এটা জেনেও বা অসত্য বিশ্বাস করেও ঐরূপ কোন সার্টিফিকেট দিলে বা স্বাক্ষর করলে এমনভাবে দণ্ডিত হবে যেন সে অসত্য সাক্ষ্য দিয়েছে।
[এটি অধর্তব্য ও জামিন-যোগ্য অপরাধ]

১৯৮ ধারা – কোন সার্টিফিকেট অসত্য এটা জেনেও তা সত্য বলে চালালে -

কেউ কোন সার্টিফিকেট কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অসত্য – এটা জেনেও সত্য বা প্রকৃত সার্টিফিকেট বলে ঐ সার্টিফিকেট বদ্‌মতলবে চালালে বা চালাবার চেষ্টা করলে ধরে নেওয়া হবে সে অসত্য সাক্ষ্য দিয়েছে এবং সেই মতে দণ্ডিত হবে।
[এটি অধর্তব্য ও জামিন-যোগ্য অপরাধ]


১৯৯ ধারা – সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য কোন ঘোষণাপত্রে অসত্য বিবৃত দিলে -

কেউ তার দেওয়া ঘোষণাপত্রে - যেটি কোনও আদালত, বা কোনও লোকসেবক বা অন্য কোনও ব্যক্তি কোনও তথ্যের সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করতে আইনত বাধ্য বা অনুমোদিত – এমন কোনও বিবৃতি দেয় যেটি ঘোষণাপত্রের মূল উদ্দেশ্যের কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অসত্য এবং যা সে অসত্য বলে জানে বা বিশ্বাস করে, অথবা সত্য বলে বিশ্বাস করে না – তবে তার এমন দণ্ড হবে যেন সে অসত্য সাক্ষ্য দিয়েছে।
[এটি অধর্তব্য ও জামিন-যোগ্য অপরাধ]


২০০ ধারা – ঐরূপ ঘোষণাপত্র অসত্য জেনেও তা সত্য বলে চালাবার চেষ্টা করলে -

কেউ – ঐরূপ ঘোষণাপত্র কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অসত্য এটা জেনেও তা সত্য বলে বদ্‌মতলবে চালালে বা চালাবার চেষ্টা করলে – এমনভাবে দণ্ডিত হবে যেন সে অসত্য সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছে।
[এটি অধর্তব্য ও জামিন-যোগ্য অপরাধ]
ব্যাখ্যা – কোনও ঘোষণাপত্র যা শুধু রীতি বিরুদ্ধ হবার কারণে গ্রহণযোগ্য হয় না – সেই ঘোষণাপত্রও ১৯৯ ও ২০০ ধারার অর্থে ঘোষণাপত্র হবে।


২০১ ধারা – অপরাধীকে আইনের দণ্ড থেকে রক্ষা করতে অপরাধের সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট করলে বা অসত্য সংবাদ দিলে -

কেউ কোনও অপরাধ ঘটেছে এটা জেনে বা জানবার কারণ থাকা সত্ত্বেও যদি, ঐ অপরাধের অপরাধীকে আইনের দণ্ড থেকে রক্ষা পাবার উদ্দেশ্যে ঐ অপরাধের সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট করে বা ঐ অপরাধ সম্পর্কে এমন কোনও সংবাদ দেয় যা সে অসত্য বলে বিশ্বাস করে;

এবং যদি (i) ঐ অপরাধ যা সে ঘটেছে বলে জানে বা বিশ্বাস করে – তা মৃত্যুদণ্ড-যোগ্য অপরাধ হয় – তবে, তার (সাক্ষ্য লোপাটকারীর বা অসত্য সংবাদদানকারীর) অনধিক সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হবে, এবং সে অর্থদণ্ড দিতেও দায়ী হবে;

এবং যদি (ii) ঐ অপরাধ যা সে ঘটেছে বলে জানে বা বিশ্বাস করে – তা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড-যোগ্য অপরাধ হয়, বা অনধিক দশবছর কারাদণ্ড-যোগ্য অপরাধ হয় – তবে তার অনধিক তিন বছরের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড হবে এবং সে অর্থদণ্ড দিতেও দায়ী হবে;

এবং যদি (iii) ঐ অপরাধ যা সে ঘটেছে বলে জানে বা বিশ্বাস করে – তা দশ বছরের কম কারাদণ্ড-যোগ্য অপরাধ হয় – তবে ওই অপরাধের জন্যে যেরকম কারাদণ্ডের বিধান সেই কারাদণ্ডের সর্বাধিক মেয়াদের অনধিক এক-চতুর্থাংশ মেয়াদে তার কারাদণ্ড হবে, বা অর্থদণ্ড হবে বা উভয়বিধ দণ্ড হবে।
[এটি অধর্তব্য ও জামিন-যোগ্য অপরাধ]

[আইন বিষয়ক যে-সব আলোচনা অবসর-এ রয়েছে তার উদ্দেশ্য সাধারণ ভাবে আইনের ব্যাপারে পাঠকদের অবহিত করা। এই আলোচনা কোনও ভাবেই উকিলের পরামর্শের বিকল্প নয়। কারোর আইন সংক্রান্ত কোনও সমস্যা থাকলে, তাঁর উচিত সরাসরি কোনও আইনজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা।]

(আপনার মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)

অবসর-এর লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।

 

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।