স্ত্রীকে পরিত্যাগ এন.আর.আই-রা
বেশি করছে তা হয়তো নয়, তবে এন.আর.আইদের ক্ষেত্রে খোরপোষ ইত্যাদির
ব্যাপারে ভারতীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়াটা অপেক্ষাকৃত কঠিন
- যেহেতু তাঁরা দেশের বাইরে থাকেন এবং দেশের আইনের আওতার পড়েন
না।। দেশের আদালতে মামলা দায়ের করা যায় ঠিকই, কিন্তু অভিযুক্তরা
যদি দেশে না ফেরেন, তাহলে কি করা যেতে পারে! বিদেশে গিয়ে তাঁদের
বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ এবং সামর্থ্য অনেক মহিলা বা তাঁর পরিবারের থাকে
না। ফলে ব্যাপারটা আরও মর্মস্পর্শী হয়ে দাঁড়ায়।
বিদেশের প্রাচুর্যপূর্ণ
জীবনযাত্রার কথা জানলেও, বহু বাবা-মাই জানেন না যে, বিয়ের
পর তাঁদের পড়াশুনো জানা মেয়ে বিদেশে গিয়ে কতটা স্বাধীন ভাবে
থাকতে পারবে। সেটা নির্ভর করছে, মেয়েটির এন.আর.আই স্বামীর
নাগরিকত্ব ও ভিসা-র শ্রেণী বা টাইপের উপর। যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে
বহু এন.আর.আই কাজ করছেন এইচ-১ বি অথবা এল-১ ভিসা নিয়ে। এঁদের
স্ত্রীদের আমেরিকায় কাজ করার কোনো অধিকার নেই। সুতরাং বিয়ের
পর স্বামী যদি স্ত্রীকে আমেরিকায় নিয়ে আসেন, স্বামীর উপর তাঁকে
সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে। এই পরম নির্ভরশীলতার
সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ স্ত্রীদের উপর শারীরিক বা মানসিক অত্যাচার
চালাতে দ্বিধা করেন না। স্ত্রীদের পরিত্যাগ করাও এঁদের পক্ষে
সহজ - বেড়াতে নিয়ে যাবার ছলে তাঁকে দেশে রেখে এলেই চলবে। চাইলেও
স্ত্রীর পক্ষে আমেরিকাতে ফিরে যাওয়া আর সম্ভব হবে না। কারণ
তাঁর ডিপেণ্ডেণ্ট ভিসা (এইচ-৪ অথবা এল-২) স্বামীর কাগজপত্র
ছাড়া অকেজো। স্বামী যদি আমেরিকাতে স্ত্রীকে পরিত্যাগ করেন,
তাহলেও তাঁকে দেশে ফিরতে হবে। প্রসঙ্গত: এন.আর.আই স্বামী মার্কিন
নাগরিক বা স্থায়ী ভিসার অধিকারী হলেও বিবাহিতা স্ত্রীকে আমেরিকায়
থাকার যে ছাড়পত্র দেওয়া হয় তা শর্তাধীন। সেক্ষেত্রে কাজ করার
অধিকার স্ত্রীর থাকে, কিন্তু বিয়ের দুবছরের মধ্যে স্বামী পরিত্যাগ
করলে, স্ত্রীকে নিজের দেশে ফিরে যেতে হয়। তবে এই সময়ের মধ্যে
স্ত্রী নির্যাতিতা হলে তাঁর পক্ষে আইনানুগ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া
সম্ভবপর হয়; যেমন, self-petitioning।
পাঞ্জাব, গুজরাত এবং
আরও কিছু কিছু জায়গায় এন.আর.আই-পরিত্যক্ত স্ত্রীদের সমস্যা
এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, অনেকেই বলছেন এন.আর.আইদের সঙ্গে বিয়ে
দেওয়ার আগে তাদের ভিসা, অবিবাহিত হওয়ার এফিডেভিট,
তাদের সোশাল সিকিউরিটি নম্বর, আয়কর বিভাগের সার্টিফিকেট, ইত্যাদি
পরীক্ষা করা উচিত! এগুলি রেজিস্ট্রেশনের আগে জমা না পড়লে বিয়ের
রেজিস্ট্রেশন করা যাবে না।!
১৯৯৪ সালে নীরজা সরফ
বনাম জয়ন্ত সরফ-এর মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নারীদের প্রতিরক্ষার
জন্য কতগুলি আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন
। যেমন,