প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সম্পর্কে কিছু তথ্য

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কথাটার অর্থ জীবনের বাকি সময়টুকু কারাগারে কাটাবার হুকুম। এটা ১৪ বছর বা ২০ বছরের সাজা বলে যে ধারণা অনেকের রয়েছে, সেটা সত্য নয়। তবে ভারতীয় সংবিধানের ৭২ এবং ১৬১ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের হাতে অপরাধ ক্ষমা করা, শাস্তি মুলতবি রাখা, শাস্তির মেয়াদ কমানো বা দণ্ড মকুব করে দেবার ক্ষমতা রয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫৪ এবং ৫৫ ধারাতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে মৃতু্যদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড লঘু করার ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বদলে সরকার ১৪ বছরের বেশী নয় এমন মেয়াদের কারাদণ্ড দিতে পারেন। ফৌজদারী বিধির ৪৩২ ধারায় বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সরকারের দণ্ডাদেশের সাময়িক মুলতবি, পরিহার বা লঘুকরণের অধিকার কোনও কারণ না দর্শীয়েই থাকবে। তবে একটা শর্ত সেখানে আছে। ৪৩৩ ও ৪৩৩ক ধারায় বলা হয়েছে যে, যদি কোনও দোষী মৃতু্যদণ্ডে দণ্ডিত থাকে অথবা মৃতু্যদণ্ডকে লঘু করে সরকার তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে থাকে, অথবা সে এমন একটি অপরাধ করেছে যার জন্য তার প্রাপ্ত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মৃতু্য আইন কর্তৃক বিধিত দণ্ডগুলির একটি, সেক্ষেত্রে দোষীকে অন্ততঃ ১৪ বছর কারাবাস করতে হবে।

বন্দীদের শাস্তি কমানো হয়েছে - এমন অজস্র উদাহরণ রয়েছে। এগুলি করা হয়েছে অনেক সময়ে মানবিক কারণে। একদিক থেকে মনে হতে পারে যে, দণ্ডাদেশ পরিবর্তন করার ক্ষমতা ব্যবহার করে সরকার আদালতের অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য এটিকে সেই চোখে দেখেন না। সুপ্রিম কোর্টের মতে সরকারের সংবিধানদত্ত ক্ষমতা খর্ব করার কোনও প্রশ্ন নেই, তবে সরকার এটার অপব্যবহার যেন না করে। দণ্ডাদেশ কমবার একটা সুযোগ আছে জানলে দোষীদের মধ্যে নিজেদের সংশোধন করার একটা উদ্যোগ থাকবে। আর এটাও ঠিক যদিও সরকারকে কোনও কারণ দর্শাতে হবে না কেন দোষীর শাস্তি কমানোর আবেদন মঞ্জুর করা হচ্ছে, তবে সেই মঞ্জুর করাটা যেন উপযুক্ত কারণের জন্যেই হয়।ইচ্ছেমত শাস্তি মকুব যাতে রাজনৈতিক বা অন্য কারণে না ঘটে, সেইজন্য এই ধরণের অর্ডার বিচারকদের কাছে পর্যালোচনার জন্যে যায়। ক্ষেত্রবিশেষে এই অর্ডারকে অবৈধ বলে ঘোষণা করার অধিকার আইন অনুসারে থাকে।

[আইন বিষয়ক যে-সব আলোচনা অবসর-এ রয়েছে তার উদ্দেশ্য সাধারণ ভাবে আইনের ব্যাপারে পাঠকদের অবহিত করা। এই আলোচনা কোনও ভাবেই উকিলের পরামর্শের বিকল্প নয়। কারোর আইন সংক্রান্ত কোনও সমস্যা থাকলে, তাঁর উচিত সরাসরি কোনও আইনজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা।]

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।