প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

তথ্য জানার অধিকার বা রাইট টু ইনফর্মেশন অ্যাক্ট ২০০৫

কারা এই আইনের আওতায় পড়ছে? ভারতবর্ষে সবাই, জম্মু ও কাশ্মীরের অধিবাসী ছাড়া।

কবে এই আইন বলবৎ হয়েছে? ১২ ই অক্টোবর, ২০০৫ সালে। এর কিছু অংশ আইনটি ১৫ই জুন ২০০৫ সালে পাশ হবার পর পরই বলবৎ করা হয়।


তথ্য বা ইনফরমেশন জানার অধিকার বলতে কি বোঝাচ্ছে?

  • নথিপত্র (ডকুমেণ্ট, রেকর্ড) বা কাজগুলি পরীক্ষা করার অধিকার।
  • প্রয়োজনীয় নথি অথবা তার প্রত্যায়িত প্রতিলিপি থেকে কিছু অংশ লিখে নেবার অধিকার।
  • কোনও বস্তুর প্রত্যায়িত নমুনা নেবার অধিকার।
  • তথ্যগুলি প্রিণ্ট করে নেওয়া, ডিস্ক, ফ্লপি, টেপ, ভিডিও ক্যাসেট ইত্যাদি কপি করে নেবার অধিকার।

এই আইনে ইনফরমেশন বা তথ্য বলতে কি বোঝাচ্ছে?

যে কোনও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সম্পর্কীত তথ্যাবলি (যে ভাবেই সেগুলো রক্ষিত হোক), যেগুলো প্রচলিত আইনের বলে সরকারী ক্ষমতাসম্পন্ন সংস্থা বা Public authorty-র দেখার অধিকার থাকে। তথ্যগুলি বিবরণী, নথিপত্র, ই-মেইলে প্রাপ্ত নির্দেশ, মতামত এবং উপদেশ, প্রেস বিজ্ঞপ্তি, নিয়মাবলি, লগবুক. চুক্তিপত্র, স্যাম্প্ল, মডেল, ডেটা ইত্যাদি রূপে যে কোনও মাধ্যমে (ইলেক্ট্রনিক মাধ্যম সহ) থাকতে পারে। কিন্তু এই তথ্যের মধ্যে 'ফাইল নোট'- গুলি অন্তর্ভুক্ত করা হবে না।

কোন কোন তথ্য এই আইনের আওতায় পড়ছে না?

  • যে সব তথ্য ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষার পক্ষে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী; ভারতের কৌশলগত, বৈজ্ঞানিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ ক্ষুণ্Ø করতে পারে।
  • যে সব তথ্য ভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনে বাধাস্বরূপ।
  • আদালত যেসব তথ্য প্রকাশ করতে নিষেধ করেছে।
  • যে সব তথ্য প্রকাশ করলে লোকসভা বা বিধানসভার স্বাধিকার ভঙ্গ করা হবে।
  • যে সব তথ্য (যেমন, বুদ্ধিপ্রসূত সম্পদ, বা ট্রেড সিক্রেট) তৃতীয় পক্ষের বাণিজ্যিক স্বার্থ ক্ষুণ্Ø করবে, যদি না কম্পিটেণ্ট অথরিটি মনে করে যে বৃহত্তর স্বার্থে এটি প্রকাশ করা উচিত।
  • কোনও বিদেশী সরকারের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যেটির গোপনীয়তা রক্ষা করতে রাজ্য দায়বদ্ধ।
  • এমন কোনও তথ্য যেটি প্রকাশ পেলে ব্যক্তিবিশেষের জীবন বা তার নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে। অথবা তথ্যের কোনও গোপন সূত্র যা আইন ও নিরাপত্তার খাতিরে পাওয়া গেছে তা উদ্ঘাটিত হতে পারে।
  • যে সব তথ্য কোনও তদন্তকার্যে বা দোষীকে ধরা বা শাস্তিদেবার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
  • মন্ত্রী, সচিব ও উচ্চপদস্থ অফিসারদের প্রশাসনিক ব্যাপারে ক্যাবিনেট পর্যায়ের কাগজপত্র।
  • কারোর ব্যক্তিগত তথ্য কোনও জনস্বার্থের সঙ্গে যুক্ত নয় এবং যা প্রকাশিত হওয়ার অর্থ কারোর ব্যক্তিগত-জীবনে হস্তক্ষেপ করা।
  • এইসব বাধা নিষেধ সত্বেও যদি পাবলিক অথরিটি মনে করে যে এই তথ্যের প্রকাশ বৃহত্তর স্বার্থে প্রয়োজন, তাহলে তা করা সম্ভব।


কোন কোন সংস্থা এই আইনের আওতা থেকে বাদ পড়েছে?

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা, ডিরেক্টর অফ এনফোর্সমেণ্ট, নারকোটিক কণ্ট্রোল ব্যুরো, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স, ইত্যাদি বহু সংস্থার তথ্যাদি এই আইনের আওতায় নেই। এইসব সংস্থার একটা লিস্ট এই আইনে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া রাজ্য সরকার উপযুক্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অন্যান্য সংস্থাকেও এই আইনের আওতা থেকে মুক্ত রাখতে পারে। কিন্তু এই সুবিধা নিরঙ্কুশ নয়। প্রতি সংস্থারই দায়িত্ব থাকবে মানবিক অধিকার লঙিঘত হওয়া বা দুর্নীতির কোনও অভিযোগ হলে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য উপস্থাপন করার। তবে মানবিক অধিকার লঙিঘত হবার অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র বা রাজ্যের তথ্য কমিশনের অনুমোদনের পর প্রকাশ করতে হবে।


তথ্য কী ভাবে জানতেচাওয়া যাবে?

  • ইংরেজি বা হিন্দিতে ঠিক কি তথ্য জানতে চাইছেন তা লিখে বা ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে জমা দিতে হবে পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার-এর কাছে। (পশ্চিমবঙ্গে, জেলাতে এই অফিসার হলেন ডেপুটি মেজিস্ট্রেট এবং সিনিয়র ডেপুটি কালেক্টর; উপজেলা স্তরে সাব ডিভিশানাল অফিসার; ব্লক স্তরে ব্লক ডেভালপেণ্ট অফিসার; এছাড়া প্রতিটি সরকারী বিভাগে একজন করে পি.আই.ও আছেন - পুরো লিস্ট-এর জন্য এইখানে ক্লিক করুন।)
  • কেন তথ্য চাইছেন তার কারণ না দিলেও চলবে।
  • তথ্যের জন্য নির্দিষ্ট ফি জমা দিতে হবে (দারিদ্রসীমান বীচে অবস্থান না করলে)।


কতদিনের মধ্যে তথ্য পাওয়া যাবে?

  • আবেদনপত্র জমা দেবার ৩০ দিনের মধ্যে।
  • ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি ব্যক্তির জীবন ও স্বাধীনতা জড়িত থাকে।
  • এর সঙ্গে আরও ৫ দিন যোগ করতে হবে, যদি তথ্যের জন্যে আবেদনপত্র অzাসিস্টেণ্ট পাবলিক ইনফরমেশন অফিসারকে জমা দেওয়া হয়।
  • যদি তৃতীয় কারোর (যিনি দেশের নাগরিক নন) স্বার্থ জড়িত থাকে, তাহলে এই সময়সীমার সঙ্গে আরও ৪০ দিন যোগ করা হবে যাতে সেই তৃতীয় ব্যক্তি নিজেকে উপস্থাপিত করতে পারে।
  • এই সময়ের মধ্যে কোনও তথ্য না পাওয়ার অর্থ তথ্য দেওয়া হবে না।


কত ফি জমা দিতে হবে?

  • যে ফি-টা চাওয়া হবে সেটা যুক্তিসঙ্গত হতে হবে। (পশ্চিমবঙ্গে কপি করা তথ্য প্রতি া৪ বা া৩ সাইজের পাতা পিছু ২ টাকা করে, স্যাম্প্ল বা মডেলের ক্ষেত্রে সেটি তৈরি করার খর্চা, ইত্যাদি))।
  • যদি আরও ফি নেওয়ার দরকার হয়, তাহলে সেটা লিখিত ভাবে অঙ্ক কষে দেখানো থাকবে, কিভাবে সেটা নির্ধারণ করা হযেছে।
  • আবেদনকারীরা ফি-র ব্যাপারে কোনও অভিযোগ থাকলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আপীল করতে পারবেন।
  • যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তথ্য না দেওয়া যায়, তাহলে সেই তথ্যের জন্য কোনও ফি নেওয়া হবে না।


তথ্য না দেবার কারণ কি?

  • তথ্যটি নিষিদ্ধ তথ্যের আওতায় পড়ে।
  • এটি রাজ্য ব্যতীত কোনও ব্যক্তির কপিরাইট লঙঘন করছে।


পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার্স (PIO) কারা?

পাবলিক অথরিটি যেসব অফিসারকে নাগরিকদের তথ্য সরবারহ করা দায়িত্ব দিয়েছে।


পাবলিক অথরিটি বলতে কো বোঝাচ্ছে?

প্রশাসন বা স্ব-শাসিত সংস্থা যেটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে -

  • সংবিধানের মাধ্যমে
  • লোকসভার কোনও আইনের বলে
  • বিধান সভার কোনও আইনের বলে
  • সরকারের দেয় বিজ্ঞপ্তি বা আদেশ অনুযায়ী বেসরকারী সংস্থা যেটি সরকারের অনুদানে চলে বা সরকারের অনুদান-পুষ্ট ও সরকার চালিত সংস্থা।

 

[আইন বিষয়ক যে-সব আলোচনা অবসর-এ রয়েছে তার উদ্দেশ্য সাধারণ ভাবে আইনের ব্যাপারে পাঠকদের অবহিত করা। এই আলোচনা কোনও ভাবেই উকিলের পরামর্শের বিকল্প নয়। কারোর আইন সংক্রান্ত কোনও সমস্যা থাকলে, তাঁর উচিত সরাসরি কোনও আইনজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা।]

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।