বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান

বিংশশতাব্দীতে
বিজ্ঞানে কিছু
আবিষ্কার ও উদ্ভাবন এবং ঘটনা
(
১৮ )
আলোর দ্বৈতসত্তা
প্রকাশ : ১৯০৫ বিজ্ঞানী
: আইনস্টাইন
১৯০৫ খ্রীষ্টাব্দে আইনস্টাইন আলোক-তড়িৎ প্রভাব
( photoelectric effect ) আলোচনায় আলোর দ্বৈত
চরিত্র প্রতিষ্ঠা করলেন- কণা ও তরঙ্গ । তিনি
আলোক-তড়িৎ প্রভাবের উপর একটি ব্যাখ্যা দিলেন
যা' আগেকার আলোর তরঙ্গ-তত্ব দ্বারা ব্যাখ্যা
করা যাচ্ছিল না । আইনস্টাইন 'ফোটন'-এর অস্তিত্ব
স্বীকার করে নিলেন আলোককণার শক্তির 'কোয়াণ্টা'
হিসাবে । ফোটন মডেল আলোকশক্তির কম্পাংকের
উপর ভিত্তি করে বস্তু ও বিকিরণের মধ্যে শক্তির
অদানপ্রদান ব্যাখ্যা করে ।
আলোক-তড়িৎ প্রভাব-এ দেখা গিয়েছিল যে কোনও
কোনও ধাতুর উপর আলো পতিত হলে ইলেক্ট্রিক কারেণ্ট
প্রবাহিত হয় । বোধ করি আলো ধাতুর ইলেক্ট্রনকে
বিচ্যুত করে যার ফলস্বরূপ ইলেক্ট্রিক কারেণ্ট
প্রবাহিত হয় । কিন্তু পটাসিয়াম ব্যবহার করে
দেখা গেছে, অত্যন্ত ক্ষীণ নীল আলো দ্বারা
যত সামান্যই হোক না কেন ইলেক্ট্রিক কারেণ্ট
প্রবাহিত হয়, উজ্জ্বল নীল আলো-তে তা' হয়না
। আলো ও বস্তুর সনাতনী বিদ্যা বলে যে আলোকতরঙ্গের
সঞ্চার-সীমা (amplitude) ঔজ্জ্বল্যের সঙ্গে
আনুপাতিক, উজ্জ্বল আলো বেশি কারেণ্ট দেবে
। দেখা গেল তা' নয় ।
এই হেঁয়ালির ব্যাখ্যা দিতে আইনস্টাইন স্বীকার
করে নিলেন যে, তড়িৎ-চুম্বকীয় ক্ষেত্র থেকে
ইলেক্ট্রন শক্তি আহরণ করতে পারে খণ্ডিত করণের
মাধ্যমে ( কোয়াণ্টা বা ফোটন ) যেখানে শক্তির
সঙ্গে আলোর কম্পকের সংযুক্তি হয় প্ল্যাঙ্কের
ধ্রুবক (৬.৬২৬ X ১০দ্ম৩৪ সেকেণ্ড ) । একমাত্র
সুউচ্চ, নিম্নতম ক্রিয়ামাত্রার উপরের কম্পক-
এবং ক্ষমতা-সম্পন্ন নীল আলোর ফোটোন ধাতু থেকে
ইলেক্ট্রনকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে, যা লাল
আলোর ফোটন পারে না ।
পরবর্তীকালে আলোর দ্বৈতসত্তা ইলেক্ট্রনের
চারিত্রিক বৈশিষ্টের মিলে গেল যখন লুই দ্য
ব্রগলি-র অনুমান (hypothesis) এবং ডেভিডসন
ও জারমার-এর পরীক্ষা এই সত্য প্রমাণ করল ।
আরও পরে, লেসার আবিষ্কৃত হলে এই তীব্রতা পরিমাপ
করা সহজ হয়েছে ।
(১৯)
অতি নিম্ন তাপমান
১৯০৮ খ্রীষ্টাব্দ
বিজ্ঞানী : হাইক কামেরলিং ওনেস
বিংশ শতাব্দীতে পরীক্ষামূলক পদার্থবিদ্যায়
একটি মূখ্য ভূমিকা পালন করেছেন নেদারল্যাণ্ডের
বিজ্ঞানী হাইক কামেরলিং ওনেস (Heike Kamerlingh
Onnes) (১৮৫৩-১৯২৬ খ্রী ) অতি নিম্ন তাপমান
বিষয়ে পরীষ্কা-নিরীক্ষা করে।
লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রায়োজেনিক ( cryogenic
) ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি ১৯০৪
খ্রীষ্টাব্দে। ল্যাবরেটরিটি অবশ্য প্রতিষ্ঠা
হয়েছিল মলিকুলের মধ্যে স্থিরতড়িৎ ভ্যাণ্ডারওয়াল
বলের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ; বেশ কয়েকটি
বৈপ্লবিক পরীক্ষা করার ফলে এর নাম ছড়িয়ে পড়ে
সারা বিশ্বে।
১৯০৮ খ্রীষ্টাব্দে ওনেস হিলিয়াম গ্যাসকে তরলায়িত
করে এক যুগান্তকারী সাক্ষর রাখলেন। এটিকে
মনে করা হয় 'পরম শূন্যতাপমান' (absolute zero
) অন্বেষণে প্রথম ধাপ।
অতিপরিবাহিতা-তত্ব ( সপেএরচওনদচেতেvতেয )
বিষয়ে একজন অগ্রগামী ব্যক্তিত্ব হিসাবে ধরা
হয় ওনেসকে। অতিপরিবাহিতা-তত্ব অনুযায়ী কোনও
ধাতুর তড়িতী বাধা ( superconductivity) শূণ্য
হয়ে যায় অতি নিম্ন তাপমাত্রায়। লাইডেন ল্যাবরেটরিতে
পারদ-এর উপর পরীক্ষা করে ওনেস অতিনিম্ন তাপমাত্রা
পাওয়ার এক নিখুঁত কৃৎকৌশল আবিষ্কার করেন,
যার জন্য তিনি ১৯১৩ খ্রী-র নোবেল পুষ্কার
পান।
শঙ্কর
সেনের সৌজন্যে
( চলবে
)