বিংশশতাব্দীতে
বিজ্ঞানে কিছু
আবিষ্কার ও উদ্ভাবন এবং ঘটনা
(২২)
উইলিয়াম
কুলিজ এবং তাঁর এক্স-রশ্মি টিউব
আবিষ্কার : ১৯১৩
খ্রীষ্টাব্দ
বিজ্ঞানী : উইলিয়াম কুলিজ
এক্স-রশ্মি
উইলহেল্ম
কনরাড রঞ্জন (Wilhelm Conrad Rontgen) আকস্মিক
ভাবেই আবিষ্কার করেছিলেন একটি বিম্ব, তাঁর
ক্যাথোড রশ্মি জেনারেটর থেকে প্রক্ষিপ্ত,
ক্যাথোড-রশ্মির সীমা ছড়িয়ে । পরবর্তী অনুসন্ধান
থেকে জানা গেল যে রশ্মিটি উদ্ভুত হয়েছে নির্বাত
নল (vacuum tube)-এর ভিতর দিকে ক্যাথোড-রশ্মির
স্পর্শ-বিন্দুতে, কোনও চৌম্বক-ক্ষেত্র দ্বারা
বিচলিত না হয়ে ।
এক্স-রশ্মি
টিউব
রঞ্জনরশ্মির
সাহায্যে যে রোগ নির্ণয়ের যে প্রথা আজ চালু
রয়েছে, কোনও সন্দেহ নেই তার জন্য পুরো কৃতিত্ব
হল ১৯১৩ খ্রীষ্টাব্দে আবিষ্কৃত কুলিজ একস্
রশ্মি টিউব । কুলিজের টিউব-এর বৈশিষ্টগুলি
হল উচ্চ ভ্যাকুয়াম এবং ইলেক্ট্রনের উত্স হিসাবে
উত্তপ্ত ফিলামেণ্ট । টিউবের ভিতরে এত কম গ্যাস
আছে যে একক্স্রশ্মি উত্পাদনে এর কোনও ভূমিকা
নেই ।
কুলিজ টিউবের মূল আকৃতি হল একটি বর্তুলাকার
বালব্ দুটি বেলনাকৃতি মুখোমুখি 'বাহু'-সহ
। বাহুদুটি হল ক্যাথোড ও অ্যানোড । টিউবের
পৃষ্ঠতলের আয়তন বেশি রাখা হয়েছে তাপ বিকিরণ
বর্ধিত করার জন্য । তা'ছাড়া বড় মাপ হলে ভিতরের
প্রতি একক ক্ষেত্রে টাংষ্টেন কম অবক্ষিপ্ত
হবে ।
ক্যাথোড-ফিলামেণ্ট যত তাপিত হবে তত বেশি ইলেক্ট্রন
বিচ্ছুরণ হবে ; ধাবিত হবে ধণাত্মক অ্যানোডের
দিকে । ইলেকট্র্নগুলি যখন অ্যানোডকে আঘাত
করবে , তা' দিকভ্রষ্ট হয়ে একস্রশ্মি নির্গত
করবে অবিচ্ছিন্নভাবে । একস-রশ্মির সর্বোচ্চ
শক্তির পরিমাণ হল ইলেক্ট্রনের গতীয় শক্তির
সমান ।
(২৩)
বোর-এর
আনবিক মডেল
আবিষ্কার : ১৯১৩ খ্রীষ্টাব্দ
বিজ্ঞানী : নীলস্ বোর
১৯১৩ খ্রীষ্টাব্দে
বিজ্ঞানী নীলস্ বোর পরমাণুর একটি মডেল প্রস্তাব
করলেন, যা'তে পরমাণুর কেন্দ্রে আছে একটি ক্ষুদ্র
নিউক্লিয়াস বা কেন্দ্রীণ যার চতুর্দিকে ঘুরছে
এক বা একাধিক ইলেক্ট্রন- অনেকটা সৌরমণ্ডলের
মতন, কিন্তু কেন্দ্রীণ ও ইলেক্ট্রনের মধ্যে
বাঁধন হল- অভিকর্ষ নয়, স্থিরতড়িত্ বল । এটি
আগেকার মডেল যথা, 'কিউবিক মডেল' ( ১৯০২ খ্রী
), 'প্লাম-পুডিং মডেল' ( ১৯০৪ খ্রী ), 'স্যাটারনিয়ান
মডেল' ( ১৯০৪ খ্রী ) এবং 'রাদারফোর্ড মডেল
( ১৯১২ )-র উত্কর্ষসাধন । বস্তুতঃ, বোর-মডেল
হল রাদারফোর্ড মডেলের কোয়াণ্টাম-তত্বভিত্তিক
ঔত্কর্ষ, যার জন্য অনেকসময় দুটিকে যুক্ত করে
বলা যায় 'রাদারফোর্ড-বোর মডেল' ।
চিত্র
: বোর মডেল
বোর-এর তত্বের
মৌলিক নীতিগুলি হল : ( ১ ) যে কোনও কক্ষপথে
ইলেক্ট্রনের শক্তি হল ধ্রুব (constant)- যতক্ষণ
কোনও ইলেক্ট্রন নিজস্ব কক্ষপথে থাকবে এটি
শক্তি শোষণ করবে না বা বিকিরণ করবে না । (
২ ) ইলেক্ট্রনের কক্ষপথ হল বৃত্তাকার ( চিত্র
) । অনেকসময় এই কক্ষপথকে উল্লেখ করা হয় 'শক্তিস্তর'
নামে । ( ৩ ) যদি কোনও ইলেক্ট্রন উঁচু শক্তিস্তর
থেকে নীচু শক্তিস্তরে লাফিয়ে যায়, এটি একটি
নির্দিষ্টমানের শক্তি বিকিরণ করে । সেইরকম,
যদি কোনও ইলেক্ট্রন নীচু শক্তিস্তর থেকে উঁচু
শক্তিস্তরে লাফিয়ে যায়, এটি একটি নির্দিষ্টমানের
শক্তি শোষণ করে ।
শঙ্কর
সেনের সৌজন্যে
( চলবে
)