প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান

বিংশশতাব্দীতে বিজ্ঞানে কিছু
আবিষ্কার ও উদ্ভাবন এবং ঘটনা


(৩১)


জীন-তত্ব এবং প্রাকৃতিক নির্বাচন-তত্বের সংশ্লেষণ
আবিষ্কার : ১৯১৮ থেকে পরবর্তীকাল
বিজ্ঞানী : ফিশার, হলডেন, রাইট

পরীক্ষামূলক জীববিজ্ঞান এবং বিবর্তনের মধ্যে এবং একইভাবে মেণ্ডেলীয় জেনেটিক-তত্ব, প্রাকৃতিক নির্বাচন এবং উত্তরাধিকার বিষয়ে ক্রোমোজোম-তত্ব (chromosome theory)-এর মধ্যে একটি গুরুতর যোগসূত্র এসেছিল টমাস মরগানের fruit flyDrosophila melanogastএর উপর গবেষণা থেকে । উত্তরাধিকার বিষয়ে তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা মেণ্ডেলীয় ক্রোমোজোম-তত্ব ব্যক্ত করেন ১৯১৫ খ্রী-তে তাঁদের গবেষণাপত্র The Mechanism of Mendelian inheritance-এর মধ্য দিয়ে । এসময়ে বহু জীববিজ্ঞানীই ক্রোমোজোমের মধ্যে জীনের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিয়েছেন, তবে কিভাবে এটি প্রাকৃতিক নির্বাচন ও ক্রমিক বিবর্তনের সঙ্গে সুসঙ্গত তা' পরিষ্কার হয়নি ।
প্রশ্নটির আংশিক সমাধান দিলেন রোনাল্ড ফিশার ১৯১৮ খ্রী-তে তাঁর গবেষণপত্র The Correlation Between Relatives on the Supposition of Mendelian Inheritance-এর মধ্য দিয়ে । ফিশার দিয়েছিলেন মেণ্ডেলিয়ীয় উত্তরাধিকার তত্বের একটি দৃঢ় পারিসাংখ্যিক মডেল যা মেণ্ডেলীয় ও জীবমিতি (biometric)- দুটি ধারাকেই সন্তুষ্ট করেছিল । এই পত্রটিকে অনেক সময় বলা হয় আধুনিক সংশ্লেষণ-তত্বের প্রথম ধাপ ।
১৯১৮ থেকে ১৯৩২ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে বংশগতি বিজ্ঞানে গবেষণার সমারোহে বিপুল উত্সহের সঞ্চার হয়েছিল তার থেকে বেড়িয়ে এলো যে মেণ্ডেলিয়ান বংশগতি তত্ব প্রাকৃতিক নির্বাচন (natural selection ) এবং ক্রম-বিবর্তন (gradual evolution)- দু'-এরই সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ । ১৯৩৬ থেকে ১৯৪৭ খ্রীস্টাব্দের মধ্যে এই সংশ্লেষণ একটা সম্মিলিত ভাবধারার সৃষ্টি করলো বিবর্তনের গতিপ্রকৃতি বিষয়ে । সৃষ্টি হল ' আধুনিক বিবর্তনীয সংশ্লেষণ (modern evolutionary synthesis ) যা' প্রদান করলো বিবর্তনের এক বহু স্বীকৃত কারণ । এই সমন্বয় বর্তমানে বহুলাংশে বিবর্তনীয জীববিদ্যার আদর্শ ।


(৩২)


তুষারযুগের এক নূতন ঘূর্ণন
আবিষ্কর : ১৯২০ খ্রী
বিজ্ঞানী : মিলুটিন মিলানকোভিচ

ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি বিজ্ঞানীরা ভূতাত্বীয় ও জীবাশ্মের রেকর্ড দেখে এক সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে পৃথিবী একটা হিমক্রিয়ারর বশে ছিল দীর্ঘ সময় ধরে । কিন্তু হিমযুগের কারণ তাঁরা ধরতে পারেননি ।

১৯২০ খ্রী-তে সার্বিয়ার বিজ্ঞানী মিলুটিন মিলানকোভিচ একটি সমাধান দিলেন । জোসেফ আধেইমার (Joseph Adhema) এবং জেমস্ ক্রোল-এর পূর্বেকার জ্যোতির্বিজ্ঞানসম্ভূত তত্বের ভিত্তিতে তিনি ধৈর্যসহকারে পরিমাপ করলেন সূর্যের চারিদিকে পৃথিবীর অক্ষপথের পরিবর্তন, হিসাব করলেন মহাকর্ষীয় প্রভাব, অধ্যয়ন করলেন পৃথিবীর সম্পর্কে গ্রহ ও তারাদের অবস্থান । তিনি দেখালেন, মহাশূন্যে আমাদের গ্রহের কক্ষপথ নির্ভরশীল তিনটি আবর্তমানীয় (cyclical) পরিবর্তনের উপর ।

প্রথমতঃ, পৃথিবীর কক্ষপথের উত্কেন্দ্রতা (eccentricity) । প্রায়-বৃত্তাকার থেকে উপবৃত্তকারে পরিণত হচ্ছে এক ১০০,০০০ বত্সরের চক্র-অনুসারে ।
দ্বিতীয়তঃ, পৃথিবীর অক্ষের ক্রান্তিকোণ (obliquity), যা' এর বিভিন্ন গোলার্ধের ঋতু স্থির করে ; এই ক্রান্তিকোণ ৪১,০০০ বত্সর-চক্রে উঠা-পড়া করে ২২.১ ডিগ্রী থেকে ২৪.৫ ডিগ্রীর মধ্যে ।
তৃতীয়তঃ, পৃথিবীর ঘূর্ণনাক্ষ (axis of rotation) একটা ঘূরন্ত লাট্টুর মতো, যার জন্য পৃথিবী ২৪,০০০ বত্সর-চক্রে অয়নচলনে (precession) ।
এইসবই ব্যাখ্যা দেয় হিমক্রিয়ারর, যার ফলে পৃথিবীতে আসা সৌর-বিকিরণে ঋতুজ এবং অক্ষাংশীয় পরিবর্তন হয় । জলবায়ু-পরিবর্তন বুঝতে এটি একটি তাত্পর্যপূর্ণ তত্ব ।

(James Urquhart)
শঙ্কর সেনের সৌজন্যে

( চলবে )

 

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।