প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান

বিংশশতাব্দীতে বিজ্ঞানে কিছু
আবিষ্কার ও উদ্ভাবন এবং ঘটনা


( ৪৩ )
চন্দ্রশেখর সীমা

আবিষ্কার : ১৯৩০ খ্রীষ্টাব্দ
বিজ্ঞানী : সুব্রাহ্মনিয়ন চন্দ্রশেখর

সুব্রাহ্মনিয়ন চন্দ্রশেখর ছাত্রাবস্থায় বিজ্ঞানী আর্থার এডিংটনের লেখা 'The Internal Constitution of the Stars' বইটি পড়ে জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানে আকৃষ্ট হন । নক্ষত্রদের মধ্যে white dwarf বা শ্বেতবামন অন্যান্য নক্ষত্রদের থেকে আলাদা । আসলে শ্বেতবামন একটি মৃত নক্ষত্র । চন্দ্রশেখরের মতে শ্বেতবামনের এই স্বাতন্ত্রতা একেবারে মৈলিক ।
শ্বেতবামনের স্বাতন্ত্রের কথা প্রথম বলেন আর. এইচ. ফাউলার, তার মতে শ্বেতবামনদের অভ্যন্তরে ইলেকা্‌ট্রন গ্যাসের ঘনত্ব এত বেশি যে তাকে কোয়াণ্টাম বলবিদ্যার আওতায় আনতে হবে । এখান থেকেই চন্দ্রশেখরের কাজ শুরু, যার পরিণতি তাঁর বিরাট আবিষ্কার । ফাউলারের কাজে তিনি পলিট্রপির তত্ত্ব ঢোকালেন । তবে এতে তিনি সন্তুষ্ট হতে পারলেন না । কারণ শ্বেতবামনে বিরাজমান ঘনত্ব ও ফের্মি- ভরবেগ এত বেশি হবে যে আপেক্ষিকতাবাদের তত্ত্ব বাদ দিয়ে কোনও কাজ সম্ভব নয় । চন্দ্রশেখের দেখলেন, নক্ষত্রের অভ্যন্তরে ইলেকা্‌ট্রন গ্যাসের ঘনত্ব সসীম হতে গেলে তার অসীম ভর থাকবে । চন্দ্রশেখর গবণা করে দেখালেন,

প্রতি একেক আয়নে ভরের পরিমান ಝ ১.৪ x সূর্যের ভর ।

অর্থ্যাত্‍‌ যদি কোনও নক্ষত্র সূর্যের চেয়ে সামান্য ভারী হয় আর তার জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে যদি সঙ্কুচিত হতে শুরু করে তবে তা' ততক্ষণ পর্যন্ত সঙ্কুচিত হবে যতক্ষণ না তার ব্যাসার্ধ শূণ্য হয়ে যাচ্ছে । প্রতি একেক আয়নে ভরের এই পরিমানকে বলা হয় 'চন্দ্রশেখর সীমা' ।

শ্বেতবামনেরা মৃত নক্ষত্র । তাদের ভিতরকার কেন্দ্রীন জ্বালানি নিঃশেষ হয়ে গেছে । এ ধরণের নক্ষত্রে মাধ্যাকর্ষণ প্রাধান্য পায় । সনাতনী পদার্থ বিজ্ঞান অনুযায়ী এই মাধ্যাকর্সন -জনিত সঙ্কোচনকে বাধা দেবার কেউ নেই । ১৯২৭ খ্রী-তে ফাউলার বললেন নক্ষত্রের ভিতরে একটি বলের অস্তিত্ব আছে যা' বহির্মুখী । স্বেতবামন খুব ঘন হয়ে গেলে এই বল সক্রিয় হয়ে ওঠে । এই বলই নক্ষত্রের পূর্ণ সঙ্কোচন বন্ধ করে । একথা প্রমাণ করতে গিয়ে ফাউলার আপেক্ষিকতাবাদ-বর্জিত কোয়াণ্টাম পরিসংখ্যান বা ফের্মি-ডিরাক সাংখ্যায়ণ কাজে লাগালেন । চন্দ্রশেখর তত্ত্বের মধ্যে আপেক্ষিকতাবাদ সংযুক্ত করলেন । তিনি দেখালেন একটি সীমানার পর আভ্যন্তরীণ বহির্মুখী বল ব্যাসার্ধ শূণ্য হয়ে যাবার ব্যাপারটিকে আটকাতে পারে না ।

চন্দ্রশেখর তত্ত্বের পরীক্ষামূলক প্রমাণ আজ অনেক পাওয়া গেছে । তবে প্রথমে কুইপার শ্বেতবামন(Kuiper's white dwarf)- এর পরীক্ষালব্ধ ফলের সঙ্গে চন্দ্রশেখরের গনণা মিলে যায় । অচিরেই বোঝা গেল চন্দ্রশেখর কেবল শ্বেতবামনের উত্‍‌পত্তি ব্যাখ্যা করেছেন তা' নয় চরম তাপ ও চাপে বস্তুর অবস্থা সম্বন্ধে এক নূতন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন ।

এই আবিষ্কারের পঞ্চাশ বত্‍‌সর পর চন্দ্রশেখরকে নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত করা হয় ।

শঙ্কর সেন

 

( চলবে )

 

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।