বিংশশতাব্দীতে
বিজ্ঞানে কিছু
আবিষ্কার ও উদ্ভাবন এবং ঘটনা
(
৪৬ )
রিখটার স্কেল
আবিষ্কার
: ১৯৩৫ খ্রীষ্টাব্দ
বিজ্ঞানী : চার্ল্স এফ. রিখটার
ভূকম্পীয় ঢেউ হল ভূমিকম্প থেকে নির্গত কম্পন
যা পৃথিবীর ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয় ; এক ধরণের
গ্রাহকযন্ত্রে এই ঢেউ নিবেশিত হয় যার নাম
সাইসমোগ্রাফ(seismograph)। সাইসমোগ্রাফ আঁকাবাকা
নিদর্শন লিপিবদ্ধ করে যার থেকে যন্ত্রের নীচের
ভূকম্পনের পরিধি মাপা সম্ভব হয় । সুক্ষ সাইসমোগ্রাফ
ভূকম্পনের গতি বিবর্ধিত(magnify)করতে সক্ষম
যার ফলে পৃথিবীর যে কোনও স্থানের ভূকম্পন
ধরতে পারে ।
সাইসমোগ্রাফ
আবিষ্কার করেন ক্যালিফর্নিয়া ইন্স্টিটিউট
অফ টেক্নোলজির চার্ল্স এফ. রিখটার, ১৯৩৫ খ্রীস্টাব্দে,
একটি আঙ্কিক যন্ত্র হিসাবে ভূকম্পনের মাত্রা
তুলনা করার জন্য । ভূকম্পনের মাত্রা নির্ধারিত
হয় লগ স্কেলে (logarithmic scale) ; বিভিন্ন
সাইসমোগ্রাফ যন্ত্র এবং ভূকম্পনের উপকেন্দ্রের
দূরত্বের ব্যতিক্রম নিয়মিত করা যায় এই যন্ত্রে
।
রিখটার
-স্কেলে
মাত্রা দেখানো হয় পূর্ণ সংখ্যা ও ভগ্নাংশ
দ্বারা । উদাহণস্বরূপ, ৫.৩ মাত্রা বোঝাবে
সাধারণ ভূকম্পন যখন ৬.৩ বলতে বোঝাবে ভারী
ভূকম্পন । যেহেতু লগ-স্কেল ব্যবহৃত হচ্ছে,
পূর্ণসংখ্যার ১ বৃদ্ধি নিরুপন করে মাত্রার
দশগুণ বৃদ্ধি । অন্যদিকে শক্তির হিসাবে প্রতিটি
পূর্ণসংখ্যার বৃদ্ধি দেখাবে ৩১-গুণ শক্তি-বৃদ্ধি
।
প্রায়
২.০ বা তার নীচের মাত্রার ভূকম্পনকে বলা হয়
মাইক্রো-ভূকম্পন ; এটি সাধারণতঃ মানুষ বুঝতে
পারে না, তবে স্থানীয় সাইসমোগ্রাফ-যন্ত্রে
ধরা পরে । প্রতি বছরেই ৪.৫ বা তার বেশি মাত্রার
ঘটনা ঘটে থাকে কয়েক হাজারের মত- যা পৃথিবীর
বিভিন্ন স্থানের সুক্ষ যন্ত্রে ধরা পরে ।
বড় ভূকম্পন হয়েছিল ১৯৬৪ সালে- আলাস্কার গুড
ফ্রাইডে ভূকম্পন, যার মাত্রা ছিল ৮.০ ও তার
বেশি । রিখটার স্কেলের কোনও ঊর্ধসীমা নেই
।
ভূকম্পনের
ক্ষতি রিখটার স্কেলে মাপা যায়না । একই মাত্রার
ভূকম্পন জনবহুল স্থানে অনেক ক্ষতি করতে পারে,
আবার জনহীন স্থানে তা' কেবল পশুপাখীর ভীতির
সঞ্চার করে । সমুদ্রের তলায় ভূকম্পন মানুষের
গোচরে আসে না বললেই চলে ।
শঙ্কর
সেন
( চলবে
)