বিংশশতাব্দীতে
বিজ্ঞানে কিছু
আবিষ্কার ও উদ্ভাবন এবং ঘটনা
(৫০)
নিউক্লীয় বিভাজন
(Nuclear Fission)
আবিষ্কার : ১৯৩৮ খ্রীষ্টাব্দ
বিজ্ঞানী : অটো হান, লিজে মাইটনার
দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার ঠিক এক বছর আগে জার্মানিতে
অটো হান একটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন, সঙ্গে
ছিলেন লিজে মাইটনার । তাঁরা ভারী পরমাণু সহ
মৌল সৃষ্টি করার চেষ্টা করছিলেন যা' প্রকৃতিতে
লভ্য নয়, নিউট্রন দিয়ে ইউরেনিয়ামকে উত্তেজিত
করে ।
পরীক্ষার মাঝামাঝি সময়ে নাত্সীদের অত্যাচারে
ইহুদী-বংশোদ্ভূত লিজে মাইটনারকে জার্মানি
ত্যগ করে সুইডেনে চলে যেতে হল । অটো হান একাকী
পরীক্ষার ফল নিরীক্ষা করে দেখলেন যে তাঁরা
ভারী মৌলের স্থানে সৃষ্টি করেছেন অপেক্ষাকৃত
হালকা মৌল- রেডিয়াম এবং বেরিয়াম । হান ধন্ধে
পড়লেন- রেডিয়াম খুব বেশি হালকা নয়, কিন্তু
বেরিয়ামের পরমাণু-ভর(atomic mass)ইউরেনিয়ামের
ঠিক অর্ধেক । বেশি হালকা পরমাণু তৈরী করতে
নিউট্রনকে ইউরেনিয়ামের কেন্দ্রীণ থেকে একশতের
মত কণাকে আঘাত করে বাহির করতে হবে যা' বাহ্যতঃ
অসম্ভব । হতোদ্যম হান পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলগুলি
পাঠালেন মাইটনারকে । মাইটনার এই কুটিল করা
ফল আলোচনা করলেন তাঁর ভাগিনেয় পদার্থবিদা
অটো ফ্রিস্চা (Otto Frisch)- এর সঙ্গে ; তাঁদের
বেশী সময় লাগেনি মীমাংসা করার । যখন একটি
নিউট্রনকে ইউরেনিয়াম পরমাণুর দিকে 'ফায়ার'
করা হয়, সেটি কেন্দ্রীনে শোষিত হয়, পরমাণুটি
হয় অস্থির । পরমানুটির পক্ষে সবথেকে সুবিধাজনক
ভাবে সুস্থির হওয়ার একমাত্র উপায় দুই সমানভাগে
ভাগ হয়ে যাওয়া, উত্পাদিত হয় দুটি বেরিয়াম
পরমাণু । এই দুটি পরমাণুর সম্মিলিত ভর হবে
একটি ইউরেনিয়াম পরমাণুর থেকে কম, হৃত ভর পরিবর্তিত
হবে শক্তিতে, আইনস্টাইনের বিখ্যাত সমীকরণ
E = m. C2 দ্বারা ।
অনবধানতা হেতু এই আবিষ্কার আণবিক বোমা নির্মাণের
রাস্তা খুলে দিল ।
Anne-Claire
Pawsey
(অনুবাদ
শঙ্কর সেন)
( চলবে
)