যখন এডউইন হাবল-কে ১৯১৯ সালে মাউণ্ট উইলসন
মানমন্দিরে ( ওয়াশিংটনের কার্নেগি ইন্সটিটিউশনের
মানমন্দিরের অংশ ) নিযুক্ত করা হল একজন জুনিয়র
জ্যোতির্বিদ হিসাবে, তখনকার দিনের সব থেকে
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছিল নেবুলি (nebulae)
নামে যে মেঘাচ্ছন্ন প্যাচগুলি (patches) দেখা
যায়, তাদের প্রকৃতি কি ? হাবল-এর সহকর্মীদের
বেশির ভাগই ভাব্তেন সেগুলি সবই ছায়াপথের অঙ্গ
; কিন্তু হাবল এতটা নিঃসংশয় ছিলেন না ।
তিনি এই প্রশ্নটির সঠিক উত্তর বের করার জন্য
সব থেকে ভালো ভালো চিত্র জোগাড় করলেন এবং দেখালেন
যে কিছু রয়েছে ছায়াপথের বেশ বাইরে । অন্যান্য
ছায়াপথ আবিষ্কার করে হাবল আমাদের জানা
বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডকে ১০০-গুণ বৃদ্ধি দেখতে
সক্ষম হলেন । তিনি কিন্তু এখানেই থামেননি
। ছায়াপথের মধ্যেকার দূরত্ব এবং ছায়াপথের
গতি পরিমাপ করে তিনি সবাইকে অবাক করে দিলেন
তিনি কিন্তু এখানেই থামেননি । ছায়াপথের মধ্যেকার
দূরত্ব ও ছায়াপথের গতি পরিমাপ করে তিনি আবিষ্কার
করলেন যে ব্রহ্মাণ্ড ক্রমবর্ধমান এবং আইনস্টাইন
সহ সবাইকে অবাক করে দিলেন ।
হাবল
খুব ভাগ্যবান যে তিনি মাউণ্ট উইলসনে এসেছিলেন
১০০-ইঞ্চি মুকুর দূরবীক্ষণ বসানো শেষ হবার
পর । একজন সতর্ক এবং পরিশ্রমী গবেষক হিসাবে
হাবা্ল নীহারিকার(spiral nebulae) অনেক ছবি
তুললেন । বস্তুতঃ অনেক ছবির প্রয়োজন ছিল সময়ের
সঙ্গে কি পরিবর্তন হচ্ছে তা জানতে । তিনি
কিছু nova পরিদর্শন করলেন যার ফলে জানতে পারলেন
একটি অনুজ্জ্বল তারা কি ভাবে নিকটবর্তী উজ্জ্বল
তারার সংস্পর্শে এসে উজ্জ্বল হয়ে যায় । ৪
অক্টোবর, ১৯২৩ সালে তিনি যখন সদ্য তোলা আন্ড্রোমেডা
ছায়াপথের একটি ফটোগ্রাফের সঙ্গে গতকালে তোলা
ফোটো মেলাচ্ছিলেন, হাবল সনাক্ত করলেন একটি
Cepheid-অস্থির নক্ষত্র, যে নক্ষত্রের দ্বারা
ছায়াপথের দূরত্ব মাপা যায় । পরবর্তী কিছু
মাসে হাবল নির্ণয় করলেন যে নক্ষত্রের উজ্জ্বলতা
পরিবর্তিত হয় ৩১.৪৫ দিনের আবর্তকালে, যার
অর্থ হল নক্ষত্রটি সূর্যের থেকে ৭,০০০ গুণ
উজ্জ্বল । বাহ্য উজ্জ্বলতার সঙ্গে প্রকৃত
উজ্জ্বলতা তুলনা করে হাবল নির্ধারণ করলেন
যে এটি ৯০০,০০০ আলোক-বত্সর দূরে ।
যেহেতু,
হারলো শেপলি (Harlow Shapely) পূর্বে পরিমাপ
করেছিলেন যে ছায়াপথের দূরত্ব প্রায় ১০০,০০০
আলোক-বত্সর, এই নূতন অনুসন্ধানের ফল প্রমাণ
করে যে আন্দ্রোমেডা ছায়াপথ অন্য ছায়াপথ থেকে
অনেক দূরে । পরে গবেষকগণ নির্ণয় করেন যে দু'প্রকারের
Cepheid variable নক্ষত্র আছে এবং হাবল
তুলনা করছিলেন আন্দ্রোমেডার ভিতরের উজ্জ্বল
Cepheid এর সঙ্গে আমাদের নিজস্ব ছায়াপথের
অনুজ্জ্বল Cepheld-এর । এর অর্থ আন্দ্রোমেডা
প্রকৃতপক্ষে প্রায় ২ মিলিয়ন আলোক-বর্ষ দূরে
। পরবর্তী দশকে অন্যান্য অনেক ছাযাপথের দূরত্ব
পরিমাপ করা হয়েছে । আজ, বিলিয়ন আকাশ-বর্ষের
দূরত্বে ছায়াপথের সন্ধান মিলেছে ।
কিন্তু
হবলের কাজ শেষ হয়নি । তিনি জ্ঞাত ছিলেন যে
পূর্বে জ্যোতির্বিদ Vesto Slipher কিছু ছায়াপথের
Doppler shift পরিমাপ করেছিলেন, এবং দেখেছিলেন
যে কিছু আমাদের ছায়াপথের দিকে এগুচ্ছে আবার
কিছু প্রচণ্ড বেগে দূরে সরে যাচ্ছে । সহকর্মী
Milton Humason-এর সঙ্গে মিলিত হয়ে হাবা্ল
যত্ন সহকারে আরও অনেক ছায়াপথের দূরত্ব ও Doppler
shift পরিমাপ করলেন ।
১৯২৯
খ্রীষ্টাব্দে হাবল একটি গবেষণা-পত্র প্রকাশ
করে দেখালেন যে, ব্রহ্মাণ্ড নিয়তই বেড়ে চলেছে
।