বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান
বিংশশতাব্দীতে
বিজ্ঞানে কিছু
আবিষ্কার ও উদ্ভাবন এবং ঘটনা
(
৬)
তেজস্ক্রিয়তার
কারণ ও প্রকৃতি
ঘটনা : ১৯০২ খ্রীষ্টাব্দ
বিজ্ঞানী : আর্নস্ট রাদারফোর্ড ও ফ্রেডারিক
সডি
১৯০১ খ্রীষ্টাব্দে
রাদারফোর্ড ও তাঁর সহকর্মী সডি থোরিয়াম মৌলের
তেজস্ক্রিয়-ধর্ম নিয়ে গবেষণা করছিলেন কানাডার
মণ্ট্রিয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে । থোরিয়াম যে তেজস্ক্রিয়
এটা জানা ছিল কিন্তু তেস্ক্রিয়তা কতটা গভীর
সেটা জানাই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ।
একটি পরীক্ষায় সডি থোরিয়াম-নাইট্রেটকে দুটো
ভাগে এমনভাবে বিভক্ত করলেন যে, ( ক ) একটি
ভাগ তেজস্ক্রিয় নয়, এবং (খ) অন্যটি বেশিমাত্রায়
তেজস্ক্রিয় । তিনি দ্বিতীয় ভাগটির নাম দিলেন
থোরিয়াম একস (thorium x) । গবেষণায় এই সাফল্যে
উল্লসিত হয়ে রাদারফোর্ড ও সডি তিন সপ্তাহের
ছুটিতে গেলেন ।
প্রত্যাবর্তনের পর তাঁরা সবিষ্ময়ে দেখলেন,
(খ)-নং নমুনায় থোরিয়াম এক্স তেজক্রিয়তা সম্পূর্ণভাবে
হারিয়েছে, কিন্তু অন্য (ক) নমুনাটি -থোরিয়াম
পূর্বের তেজস্ক্রিয়ক্ষমতা ফিরে পেয়েছে । দুই
বিজ্ঞানী বিশদভাবে উপলভ্য-বিষয়টি অনুসন্ধান
করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে,
প্রথম নমুনা (ক)-এর থোরিয়াম-পরমাণু বিভক্ত
হয়ে রূপান্তরিত হচ্ছে থোরিয়াম এক্স-এ (যা
আমরা এখন জানি, রেডিয়াম) ও থোরিয়ামে । একই
ভাবে থোরিয়াম এক্স পরমাণু বিভক্ত হয়েছে অন্যান্য
মৌলতে । রাদারফোর্ড ও সডি এই রূপান্তর প্রক্রিয়ার
নাম দিলেন 'ট্রান্স্মিউটেশন' (transmutation)
- যে নামটি তারা চয়ন করেছিলেন কিমিয়া (alchemy)
থেকে ।
১৯০২ খ্রীষ্টাব্দে তাদের এই অভিজ্ঞতার কথা
প্রকাশ করলেন একটি প্রবন্ধে- The Cause and
Nature of Radioactivity - এই প্রথম ট্রান্স্মিউটেশনের
বিশেষ বিবরণ সহ, আর তার সঙ্গে আলোকপাত করলেন
তেজস্ত্রিïয-ক্ষয় (radioactive decay)- বিষয়টির
উপর ।
Anne-Claire Pawsey
defining moments in SCIENCE
( ৭)
বোভারি-সাটন
ক্রোমোসোম তত্ব
আবিস্কার
: ১৯০২-০৩ খ্রীষ্টাব্দ
বিজ্ঞানী : ওয়ালটার সাটন,
থিওডর বোভারি ( স্বতন্ত্রভাবে )
বোভারি-সাটন
ক্রোমোসোম তত্ব (বা উত্তরাধিকারের ক্রোমোসোম
তত্ব বা সাটন-বোভারি তত্ব) হল জেনেটিকসের
একটি মৌলিক তত্ব যার দ্বারা ক্রোমোসোমকে চিহ্নিত
করা যায় জেনেটিক- উপকরণের বাহক হিসাবে । মেণ্ডেল-এর
উত্তরাধিকার বিষয়ে নিয়মগুলিকে সঠিকভাবেই বিবৃত
করেছে এই তত্ব ।
১৮৭৯
খ্রীষ্টাব্দে ওয়ালথার ফ্লেমিং (Walther Flemming)
ক্রোমোসোম এবং সালামাণ্ডারের ডিম-এ মাইটোসিস
(mitosis) , পরোক্ষে নিউক্লিয়াস বিভাজন আবিষ্কার
করেন । পরে অগাস্ট ভাইসম্যান (August Weismann)
মায়োসিস (মএেওসসে)-এর সঙ্গে মেণ্ডেলের গএরম
পলঅসম-তত্বের উত্তরাধিকার সূত্রের যোগাযোগ
দেখান । কিন্তু, ভাইসম্যান ক্রোমোসোম-বিভাজনকে
মেণ্ডেলের উত্তরাধিকারের উপাদন হিসাবে অনন্যতা
দেখাননি ।
উত্তরাধিকার বিষয়ে ক্রোমোসোম-তত্ব এলো ওয়ালটার
সাটন (Walter Sutton)-এর উপস্থাপনা থেকে ১৯০২
ও ১৯০৩ খ্রী-তে । প্রায় একই সময়ে প্রকাশিত
হল থিওডর বোভারি-র স্বতন্ত্র উপস্থাপনা ।
সাটনের গবেষণা ফড়িংদের নিয়ে, বোভারি-র সামুদ্রিক
শজারুদের নিয়ে । সাটন দেখালেন যে ফড়িং-এর
ক্রোমোসোম ঘটে পিতা ও মাতার ক্রোমোসোমের যুক্তভাবে
যা' মায়োসিসের সময়ে পৃথক হয়ে যায় এবং মেণ্ডেলীয়
বংশগতির নিয়মনুসারে । অন্যদিকে বোভারি দেখলেন
সমস্ত ক্রোমোসোমগুলিকে অবশ্যই হাজির থাকতে
হবে বিশেষ ভ্রুণবিকাশের জন্য
শঙ্কর
সেনের সৌজন্যে
( চলবে
)