প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

বিশাখাপত্তনম

বিশাখাপত্তনম ভারতের পূর্ব উপকুলে অন্ধ্র প্রদেশের একটি সমুদ্র বন্দর এবং সাধারণত ভাইজাগ নামে পরিচিত। এই বন্দরনগরী একটি ব্যস্ত বাণিজ্য কেন্দ্র ও গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক প্রতিরক্ষা কেন্দ্র। এখনে আছে ভারতীয় নৌবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তর। আর আছে সরকারি ইস্পাত কারখানা, ভারী শিল্প উদ্যোগ এবং ভারতের সর্ববৃহৎ জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্র। ভালুরের হিন্দু দেবতা বিশাখার নাম অনুসারে এই শহরটি পূর্বঘাট পর্বতমালায় বঙ্গোপসাগরে তীরে একটি প্রাকৃতিক পোতাশ্রয় এবং আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র।

বিশাখাপত্তনম কলিঙ্গ রাজ অশোকের অধীনে ছিল খ্রী পুঃ ২৬০ সালে এবং ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত উৎকল রাজ্যের অধীনে। তার পর চলে যায় অন্ধ্ররাজ ভেঙ্গি এবং পরে পল্লব রাজের অধীনে।

বিশাখাপত্তনম ও আশে পাশে অনেক আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র আছে। এখানে অনেক সুন্দর বিচ আছে। এর মধ্যে রুশিকোন্ডা বিচ, রামকৃষ্ণ বিচ, কৈলাস গিরির নিচের বিচ ইত্যাদি।
সোনালী বালিতে মোরা রুশিকোন্ডা বিচটি ছবির মত সুন্দর। সমুদ্র, পাহাড় ও ছোট ছোট কটেজ মিলিয় এক অপূর্ব দৃশ্য। এখনে ওয়াটার স্পোর্টসেরও ব্যবস্থা আছে। বিচ থেকে উঠে গেছে উঁচু পাহাড়, পাহাড়ের কোলে ছাবির মত সুন্দর অন্ধ্র প্রদেশের সরকারের রিসোর্ট – হারিতা রিসোর্টের কটেজের সারি।

রামকৃষ্ণ বিচ (যা R K বিচ হিসাবে পরিচিত) খুব জনপ্রিয়। তবে ভীড় এখানে অপেক্ষাকৃত বেশী। বিচের উপরেই আছে কালীমন্দির – দক্ষিণেশ্বরের নবরত্ন মন্দিরের আদলে তৈরি। তা ছাড়া রামকৃষ্ণ বিচের আশে পাশে আছে সাবমেরিন মিউজিয়াম, বিশাখা মিউজিয়াম, আকুয়ারিয়াম, অনেক পার্ক, নেতাদের মূর্তি, ওয়ার মেমোরিয়াল ইত্যাদি। এছাড়াও আছে অনেক খাবার দোকান। এই বিচের কাছেই আছে ডলফিন নোজ।

কৈলাস গিরি এক অপূর্ব সুন্দর জায়গা। ১৩০ মিঃ উঁচু এই পাহাড়ের উপরে আছে বিশাল শিব-পার্বতীর মূর্তি। এই মূর্তি ছাড়াও আছে সুন্দর প্রবেশ দ্বার, পার্ক, সুন্দর রাস্তা, ফুলের বাগান, বনপথ ও খাবার দোকান। এখান থেকে ভাইজাগের panoramic view পাওয়া যায়। এর পাশেই আছে টয় ট্রেন আর রোপওয়ে – যাতে করে নীচের বিচে যাওয়া যায়।

বিচ ছাড়াও ভাইজাগের আশে পাশে কিছু আকর্ষণ আছে – যেমন সীমাচলম মন্দির, থোতলাকোন্ডা, ভুদা পার্ক, ইন্দিরা গান্ধী জুলোজিকাল পার্ক ইত্যাদি। সীমাচলম মন্দিরটি ভাইজাগের ১৬ কিঃমিঃ দূরে পাহাড়ের উপর ১১ শতকে তৈরি। মন্দিরে আছে বিষ্ণুর নৃসিংহ অবতারের মূর্তি যাতে সব সময় চন্দনের প্রলেপ লাগান থাকে। অনেক ভক্ত এই মন্দিরে পূজো দিতে আসেন। ১৫১২ সালে চৈতন্যদেব এই মন্দিরে এসেছিলেন।

থোতলাকোন্ডা ১২৮ মিঃ পাহাড়ের ওপর একটি প্রাচীন বৌদ্ধ ধর্ম ও শিক্ষা কেন্দ্র যা ভারতীয় নৌবাহিনীর সার্ভের ফলে আবিষ্কার হয়। ১৯৮৮ - ১৯৯২ সালে মাটি খুঁড়ে অনেক তথ্য ও নির্মানকার্যের ধংশাবশেষ পাওয়া যায়। এর মধ্যে আছে মহা স্তূপ, ১৬ টি স্তূপ, হল, ১১ টি জলাধার, ৩ টি চৈত্য গৃহ, ৭২ টি কামরা সমেত ১০ টি বিহার, রান্না ঘর, ভোজনশালা, রাস্তা ঘাট ইত্যাদি। ২০০০ বছরের পুরনো এই কেন্দ্রে শতাধিক ভিক্ষু থাকতেন এবং ধর্ম চর্চা ও বিদ্যা শিক্ষা করতেন।

ভাইজাগে বেড়াতে এলে নিশ্চয়ই থোতলাকোন্ডা দেখে যাবেন।

বিমল কুমার বসাক

১ নং রুশিকোন্ডা বিচ। একটু শান্ত, অনেক লোক স্নান করছে, দূরে স্পিড বোট চলছে।

২ নং রুশিকোন্ডা বিচের বা দিক - চাঁদের মত বেঁকে গেছে। দূরে দেখা যাচ্ছে অভিজাত সিঙ্গাপুর কলোনি।

৩ নং রুশিকোন্ডা বিচের ডান দিক – বেশ বড় ঢেউ। স্নান করতে নামা বিপদজনক।

৪ নং পাহাড়ের উপর অন্ধ্র প্রদেশ ট্যুরিজমের ‘হারিতা রুশিকোন্ডা বিচ রিসোর্টের’ সারি সারি কটেজ গুলো ছাবির মত দেখাচ্ছে। প্রতিটি কটেজ থেকে বিচ এবং সমুদ্র সুন্দর ভাবে দেখা যায়।

৫ নং সীমাচলম মন্দির যেখানে আছে বিষ্ণুর নৃসিংহ অবতারের মূর্তি

৬ নং কৈলাস গিরির কারু কার্জ করা প্রবেশ দ্বার।

৭ নং কৈলাস গিরির উপর থেকে নীচে বিচের কাছে রোপওয়েতে যাতায়াত করা যায়।

৮ নং কৈলাস গিরির উপর থেকে ভাইজাগ শহরের দৃশ্য

৯ নং কৈলাস গিরির উপর বিশাল শিব-পার্বতীর মূর্তি। এই মূর্তির জন্যই পাহাড়টির নাম হয়েছে কৈলাস গিরি।

১০ নং রামকৃষ্ণ বিচ বা RK Beach

১১ নং রামকৃষ্ণ বিচের পাশে মূর্তি আর তার পিছনে পার্কে ড্রাগন!

 

আরও ছবি পরের পাতায়

 

(আপনার মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।