১
একদা মদন করিয়ে যতন,
বাছি বাছি তুলি কুসুম-রতন,
শয়ন রচিলা মনের মতন,
শয়ন-সন্তোষ লাভের তরে;
অতি অনুপম সে ফুল-শয়ন
হইল, দেখিলে জুড়ায় নয়ন,
সুরভি-নিকরে ভরিল ভুবন,
শুইলা মদন তাহর'পরে।
২
ঘুমের ঘোরেতে হয়ে অচেতন,
মুদিয়ে নয়ন রহিলা মদন;
ফুলদল-তলে শোভিল বদন,
তারাপতি যথা তারার মাজ।
ক্ষণকাল পরে আসব-আশায়,
মধুমাছি এক আসিল তথায়,
বসিল কুসুমে, সুখেতে যথায়
শায়িত আছেন মদনরাজ।
৩
ঘুমঘোরে কাম নড়িলা যেমন,
মধুমাছি-দেহে বাজিল চরণ;
রাগ-ভরে মাছি সবলে তখন
ফুটাইল কাম-চরণে হুল;
অধীর হইয়ে বিষের জ্বালায়,
উঠি রতিপতি ছুটিয়ে পালায়,
প্রিয়তমা রতি বসিয়ে যথায়,
গাঁথিতেছিলেন মালতী-ফুল।
৪
"অয়ি প্রিয়তমে!" কহিলা রতিরে
রতিনাথ "প্রাণ যায় যে,-অচিরে
ফেল ফুলমালা, চেয়ে দেখ ফিরে,
একি জ্বালা, উহু, হইল হায়!
কেন শুইলাম বিছাইয়া ফুল?
তাই মধুমাছি ফুটাইল হুল,
বিষের জ্বালায় হয়েছি আকুল,
কি হবে-কি করি-প্রাণ যে যায়!"
৫
ব্যথিত হৃদয়ে, অথচ হাসিয়ে,
কহে কামে রতি-সমীপে আসিয়ে,-
"ছোট মধুমাছি দিয়েছে বিঁধিয়ে
বিষভরা হুল তোমার পায়;
তাই তুমি নাথ! হইলে কাতর?
ভাল, বল দেখি দাসীর গোচর,
কতই জ্বলিবে তাহার অন্তর,
পঞ্চশর তুমি বিঁধিবে যায়?"