লেওয়া
সাফারিকম ম্যারাথন ইন কেনিয়াঃ আফ্রিকার মালভূমিতে আনন্দ ও বেদনা
৬৯ বছর বয়সে সাতটা মহাদেশে
ম্যারাথন দৌড়ানোর ভূত মাথায় যখন চাপল, তখন ঠিক করলাম তৃতীয় ম্যারাথন
দৌড়বো আফ্রিকাতে – মাউণ্ট কেনিয়ার পাদদেশে সাফারিকম ম্যারাথনে।
লেওয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষিত অঞ্চলে আনন্দ ও বেদনা দুটোই হবে বেশ
বুঝতে পারছিলাম। রেসটা হবার কথা ছিল ২০১১ সালের জুন মাসের ২৫ তারিখে
– অর্থাৎ চীনের প্রাচীরে আমার হাফ ম্যারাথন দৌড়ের ঠিক এক বছর বাদে।
দারুণ গরমে বুনো জন্তুগুলোর সঙ্গে পাগলের মত দৌড়নো - মধ্যে মধ্যে
কেনিয়ার আন্তর্জাতিক ম্যারাথন দৌড়বীরদের সোঁ করে পাশ দিয়ে যাওয়া
- একটা অভিজ্ঞতা বটে! এর জন্যেই বোধহয় সাফারিকম ম্যারাথনকে বলা
হয় জীবনে করার মত প্রথম দশটি কাজের মধ্যে একটি!
এই ম্যারাথন আর কালো গণ্ডারদের
লেওয়া কনসারভেটরি ইতিহাস(এই লেখার সময় এটা ১২ বছর ধরে চলছে) বেশ
মজার। সয়াহেলি ভাষায় লেওয়া হল মদ। ম্যারাথনের আগে তিনদিন ধরে ক্রমাগত
মদ খেয়ে যখন লোকে দৌড়ত তখন তাদের গায়ের ঘাম থেকে মদের গন্ধ বেরত।
সেই থেকেই নাকি এই জায়গাটার নাম হয়ে গেছে মদ! এগুলো হল গল্প। আসলে
এই ম্যারাথনটা শুরু হয়েছে, আফ্রিকার এই লুপ্তপ্রায় কালো গণ্ডারদের
সংরক্ষণ করার জন্যে অর্থোপার্জন। শুধু এটার জন্যেই নয় আশেপাশে
সম্বুরু লাইকপিয়া এবং মেরু অঞ্চলের বিভিন্ন জনহিতকর প্রকল্পের
জন্যে টাকা তোলা।
সমুদ্রতল থেকে সাড়ে ছ’হাজার ফুট উঁচুতে ৬০ হাজার একর জুড়ে লেওয়া
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্পটি রোদে পোড়া শুকনো ঘাসে ভরা লেওয়া
ওয়েসির মাঝখানে অবস্থিত। নাইরোবি বিমানবন্দর থেকে এর দূরত্ব গাড়িতে
গেলে প্রায় পৌনে পাঁচ ঘণ্টা। লেওয়ার এও সংরক্ষিত অঞ্চলে শুধু কালো
গণ্ডার নয়, গ্রেভির জেব্রা, হাতি, সিংহ, জিরাফ, চিতা, হরিণ আরও
অনেক জন্তু থাকে।
১৯শে জুন, ২০১১। আমি ও আমার
স্ত্রী সুপ্তি সন্ধ্যায় নাইরোবি বিমানবন্দর পোঁছলাম। আমরা একা
নই, সঙ্গে আমেরিকার আরও জনা চল্লিশেক ম্যারাথন দৌড়বীর। আমাদের
সঙ্গে ম্যারাথন ট্যুর ও ট্র্যাভেল কোম্পানির গাইড কেলি অ্যালেন।
হাসিখুসী সপ্রতিভ কেলির বয়স বেশী নয়, কিন্তু এর মধ্যেই ২০-টির
বেশী ম্যারাথন দৌড়েছে। ও-ও আমাদের সঙ্গে এই ম্যারাথনে দৌড়বে। রাতটা
নাইরোবিতে কাটিয়ে আমরা পরের দিন গাড়িতে চড়ে এবারডেয়ার কাণ্ট্রি
ক্লাবের কাছে থাকার জন্যে যেখানে গেলাম সেটার নাম হল ‘আর্ক’।
কাঠের তৈরি এই বাড়িটা বানানো
হয়েছে বাইবেল-এর ‘নোয়ার আর্ক’ বা নোয়ার জাহাজের মত করে। কান্ট্রি
ক্লাব আর আর্ক দুটোই ৬ হাজার ৮০০ ফুট উঁচু একটা পাহাড়ের ওপর বসানো।
পাহাড়ের নীচে সমতলে বন্যপ্রাণীদের জন্যে আলোকিত করে জলের জায়গা
আর নুনের রাখা আছে। তার লোভে সেখানে ভিড় করে আসছে হাতি, গণ্ডার,
মহিষ, চিতা ইত্যাদিরা দল। আর্ক-এর তিনটে পাটাতনে অজস্র বারান্দা
ও বসার জায়গা। যেখানে বসে জন্তুজানোয়ারদের দেখা যায় ও ছবি তোলা
যায়। সবচেয়ে নীচের পাটাতনে গেলে জন্তুদের প্রায় সামনা সামনি দেখা
যায়!
আবেরডেয়ার কান্ট্রি ক্লাবটিও
ছোটখাটো ব্যাপার নয়। এটি প্রায় ১৩০০ একর জমির ওপরে। একদিকে টেনিস
কোর্ট, গলফ কোর্স, ফুলের বাগান যেমন রয়েছে, সেই সঙ্গে আবার রয়েছে
সংরক্ষিত জঙ্গল যেখানে জেব্রা, জিরাফ, চিতা ইত্যাদি অবাধে বিচরণ
করতে পারে।
এই কাণ্ট্রি ক্লাবেই ১৯৫২
সালে ব্রিটেনের রাজকুমারী এলিজাবেথ বেড়াতে এসে ঘুম থেকে উঠে জানতে
পারেন যে তিনি আর রাজকুমারী নন - রাজা ষষ্ঠ জর্জ মারা গেছেন এবং
তিনিই এখন ব্রিটেনের রাণী! উচ্চতার সঙ্গে অভ্যস্ত হতে এইখানেই
আমরা তিন রাত্রি কাটালাম। বেশ কয়েকটা প্র্যাকটিস দৌড়ও হল। দৌড়নোর
ট্র্যাক বলতে জন্তু জানোয়ারদের চলার ধুলোর রাস্তা – কোথাও উঁচু
কোথাও নিচু এবং এবং অনেক সময়ে এলোমেলো পাথরে ভর্তি।
তিনদিন প্রায় স্বর্গভূমিতে
কাটানোর পর, আমরা এলাম দৌড়নোর আসল জায়গায়। আমাদের থাকার বন্দোবস্ত
অল মারদাদি অস্থায়ী ক্যাম্পে। বনের মধ্যেই বড়বড় তাঁবু খাটিয়ে এই
ক্যাম্প। তাঁবুর ভেতরে বিছানা, চাদর, টেবিল, চেয়ার, তোয়ালে, হারিকেন
হাতমুখ ধোবার বেসিন ও আয়না এমন কি গরম জলে স্নানের বন্দোবস্ত এবং
বাথরুম করার জন্যে তাঁবুর পেছন দিকে একটা আউট হাউস। খাবার বন্দোবস্ত
কাছেই একটা বড় তাঁবুতে। সেখানে যাবার পথে অন্ধকার দূর করার জন্যে
অনেকগুলি হারিকেন ঝোলানো রয়েছে। রাইফেল ধারী একজন নৈশ প্রহরী বন্য
জন্তুদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্যে পথ পাহারা দিচ্ছে। আমাদের
বলা হল, তাঁবুর সামনে ও পেছনের বেরনোর পথ জিপার টেনে বন্ধ করে
রাখতে। মোটামুটি গুছিয়ে বসার পর ফোর-হুইলার গাড়ি চাপিয়ে আমাদের
দৌড়ের রাস্তাটা দেখাতে নিয়ে যাওয়া হল।
আমরা সবাই উত্তেজিত আবার
মনে মনে একটু শঙ্কিতও। কখনো কেউ শুনেছেন, যে আন্তর্জাতিক কোনও
ম্যারাথন দেরি করে শুরু হয়েছে, কারণ একটা সিংহী তার ছানাপোনা নিয়ে
দৌড়ের রাস্তায় বসে রোদ পোয়াচ্ছে! ঠিক তিন বছর আগে ২০০৮ সালে এখানেই
সেটা ঘটেছিল। তাকে তাড়াতে হেলিকপ্টারের সাহায্য নিতে হয়েছিল।
যাইহোক, দৌড়ের ঠিক আগের দিন
উদ্যোক্তারা আমাদের আস্বস্ত করলেন। একটু মজা করেই বললেন, দৌড়ে
সিংহকে হারাবার দরকার হবে না, পেছনে যে আসছে তার আগে যেতে পারলেই
চলবে। এমন কোন ম্যারাথনের কথা আমি জানি না, যেখানে সব সময়ে আগে
হেলিকপ্টার যাচ্ছে বুনো জন্তুজানোয়ারদের দৌড়পথ থেকে সরাতে এবং
সারা পথেই সশস্ত্র বনরক্ষী নিরপত্তা দেবার জন্যে।
রেসের দিন সকাল বেলা তিনটে
হাতীকে তাড়াতে হল। রেসের উদ্যোক্তারা রাস্তার নিশানা দেবার বোর্ডগুলো
আর জলের বোতলের বাক্সগুলো দৌড় সুরু হবার অল্প আগে রাখা শুরু করলেন।
আগের রাতে রাখলে, জন্তুরা এসে বোর্ডগুলো লণ্ডভণ্ড করত। জলের বোতলও
আর অক্ষত থাকত না, চারপেয়েরা জল খুব পছন্দ করে। এই শিক্ষাটা তারা
ঠেকে শিখেছেন!
দৌড়ের দিন সকাল বেলা – তখনো
একটু ঠাণ্ডা। কিন্তু বেরিয়ে দৌড়ের লাইনে দাঁড়াতেই সূর্যের আলোয়
গরম শুরু হল। পেছনে মাউণ্ট কেনিয়া আর লোলোকে, উপরে হেলিকপ্টার
কানা-ফাটানো প্রবল আওয়াজ করছে – যার তীব্রতায় আশেপাশে কোনও জন্তু
থাকবে বলে মনে হয় না। আমার চারদিকে পৃথিবীর বেশ কয়েকজন বিখ্যাত
দৌড়বীর। ৬৫০০ ফুট উঁচুতে ৮৫ ডিগ্রি উষ্ণতায় উঁচুনিচু পাহাড়ি জঙ্গলের
মধ্যে এই দৌড়কে অনেকেই মনে করেন পৃথিবীর অন্যতম কঠিন ম্যারাথন
দৌড়।
এ কথা ঠিক যে ২৩টি দেশ থেকে
আগত ১২৫০ জন দৌড়বীরকে সুরক্ষা দিতে ৫০ জন বনরক্ষী রাইফেল নিয়ে
দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু তাও মনের মধ্যে একটা চিন্তা থাকে - কখন কোন
ঝোপের আড়াল থেকে এক সিংহ বাবাজি ঘাড়ের ওপর লাফিয়ে পড়ে এক ঢোঁক
লুকোজেড-এর (আফ্রিকার এনার্জি ড্রিঙ্ক) সঙ্গে আমাকে গিলে না ফেলে!
২৬.২ আইলের পুরো পথটাই ধুলোর
রাস্তা। দুপাশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপূর্ব। হেলিকপ্টারের আওয়াজের
ফাঁকে বন্দুকের আওয়াজে সুরু হল দৌড়। দৌড়ের মাঠে সবরকমের লোকই আছে।
পৃথিবীর বিখ্যাত দৌড়বীরদের সঙ্গে নিতান্ত সখের রানার – যারা দৌড়ের
থেকে হাঁটেই বেশী।
পায়ের দুপদাপ শব্দে ধুলোয়
চারিদিক আচ্ছন্ন হল – কয়েক কিলোমিটার পিঁপড়ের মত সারি দিয়ে সবাই
ছুটতে লাগলো।
একটু বাদেই অবশ্য সেটা আর
সারি থাকল না – অনেকে এগিয়ে গেল। প্রথম ছয় কিলোমিটার আমার প্রধান
লক্ষ ছিল এই উঁচুতে ঠিকমত নিঃশ্বাস নেওয়া আর যাতে হোঁচট খেয়ে না
পড়ি! আড়াই কিলোমিটার অন্তর অন্তর ছিল ঝর্ণার জল, লুকোজেড এবং ঠাণ্ডা
স্পঞ্জ।
১৫ মিনিটের মধ্যেই সূর্যের
তাপে গায়ের চামড়া ঝলসাতে শুরু করল। যারা সত্যিকারের দৌড়বীর তারা
ইতিমধ্যেই অনেকটা এগিয়ে গেছে – দূর থেকে তার সারি করে দৌড়চ্ছে
চোখে পড়ছে।
প্রথম ৬ কিলোমিটার মোটামুটি
সহজ, তারপরেই শুরু হল চড়াই। যাতে বেদম না হয়ে পড়ি, আমি গতি কমালাম
- কমাতে কমাতে এক সময়ে বলতে গেলে প্রায় হাঁটছি। তাতে দেরি হচ্ছে
ঠিকই, কিন্তু এই জিরিয়ে নেওয়ার ফাঁকে দুদিকের দৃশ্যাবলী উপভোগ
করার সুযোগ পাচ্ছি! বৃক্ষহীন সুদূর প্রান্তর - এদিক ওদিন বাবলা
জাতিয় গাছ, দূরে যেখানেই ঝর্ণার জলে এসেছে সেখানেই দেখছি জঙ্গল।
পেছনে মাউণ্ট কেনিয়া আর লোলোকে-র চুড়গুলির ছায়া এখনও মাঠ থেকে
চলে যায় নি। চিতা সিংহরা অদৃশ্য, তাই নির্ভয়ে হরিণরা রোদ পোয়াচ্ছে।
এ একেবারে অভূতপূর্ব দৃশ্য! এখন বুঝলা কেন ২০১০ সালে প্রিন্স উইলিয়াম
আর কেট মিডলটন তাদের বাকদানের জন্যে এই জায়গাটাকেই বেছেছিল!
সিরিকয় উপত্যকায় যখন এসে
পৌঁছলাম তখন দেখলাম আমার ডানদিকে একটা জেব্রা ধুলো উড়িয়ে ছুটছে।
মনে হল জেব্রা আমাকে দেখতে পায় নি। দেখলে কি হবে কে জানে! শুনেছিলাম
জেব্রারা একটু বদমেজাজি, বিশেষ করে যদি ভয় পেয়ে যায় উল্টোপাল্টা
অনেক কিছুই করতে পারে। সামনে জল নিয়ে যারা দাঁড়িয়েছিল, তাদের একজন
চেঁচিয়ে বলল, “ছুটতে থাকো।“ আমি তার হাত থেকে একটা ভিজে স্পঞ্জ
নিয়ে ছুটে চললাম। ভাগ্যক্রমে জেব্রা যখন আমাকে দেখল, তখন নিজের
থেকেই আমার সঙ্গে পাল্লা না দিয়ে নাক দিয়ে একটা বিশ্রী আওয়াজ করে
কেশর ঝাঁকিয়ে থেমে গেল।
চড়াই আর শেষ হচ্ছে না, আমার
পাও আর চলছে না। আমার সামনে ঘর্মাক্ত টি-শার্ট পরে একজন দৌড়চ্ছে।
হঠাৎ মনে পড়ল একটা প্রবাদের কথা, আফ্রিকায় প্রত্যেকটি মৃগ প্রতিদিন
সকালে উঠে ভাবে সিংহদের মধ্যে যে সবচেয়ে দ্রুত দৌড়ে তাকেও টেক্কা
দিতে হবে, নইলে সে বাঁচবে না। আবার প্রত্যেকটা সিংহ ভাবে তাকে
সবচেয়ে ধীরজ মৃগকে দৌড়ে হারাতে হবে, নইলে সে না খেতে পেয়ে মারা
যাবে। অর্থাৎ আফ্রিকায় দৌড়তে সবাইকেই হবে... আমাকেও।
যখন ১৬ কিলোমিটার দৌড়েছি,
তখন হঠাৎ পেছনে শুনি ঘন ঘন নিঃশ্বাস। দেখতে তিনি জন লম্বা পাৎলা
চেহারার কেনিয়াবাসী লম্বা লম্বা পা ফেলে প্রায় ঝড়ের বেগে আমাকে
পেছনে ফেলে এগিয়ে গেল। কে অপূর্ব তাদের দৌড়নোর ভঙ্গী! কেন কেনিয়ার
ছেলেমেয়েরা এতো ভালো দৌড়য়। আমার স্বল্প অভিজ্ঞতায় আমি এটুকু বুঝেছি,
এদের প্রত্যেকেই দিনে অন্তত চার থেকে দশ মাইল নিয়মিত দৌড়য় বা হাঁটে।
হয় স্কুলে যাতায়াতের জন্যে, নয় তো অফিস যাবার জন্যে বাস বা ট্রেন
স্টেশনে যাতায়াতে। এমন কি নাইরোবি শহরে যেখানে যেখানে বাসে যাতায়াতে
কোনও অসুবিধা নেই। সেখানেও লোকে হেঁটে অফিস যেতে অভ্যস্ত। এখানে
হাঁটা বা দৌড়নো জীবনের একটা অঙ্গ।
আমি এ যাত্রায় হাফ-ম্যারাথন
দৌড়চ্ছি, ফুল নয়। বাকি আছে আর ৫ কিলোমিটার। এর মধ্যেই দেখছি গাঁট্টাগোট্টা
চেহারার কয়েকজন কেনিয়ার মেয়েও আমাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে।
১৬ কিলোমিটারের পর থেকেই উৎরাই শুরু। এবার আমি একটু হাঁফ ছাড়লাম।
সামনে দেখলাম একদল বেবুন রাস্তা জুড়ে হল্লা করছে। প্রতিযোগীরা
তাদের এনার্জি ড্রিঙ্কের বোতলগুলো যেখানে ফেলছে সেখানেই ওরা দৌড়চ্ছে।
আমিও আমার বোতলটা একটু দূরে ছুঁড়ে ফেলতেও ওরা সেদিকে ছুটল। পথটা
ফাঁকা হল।
আমার শরীর আর বইছে না। মনের
জোরে চলেছি। এমন সময় দেখলাম দুটো সাইন। একদিকে দেখাচ্ছে ফুল ম্যারাথনের
দ্বিতীয় ভাগের শুরুর দিক। আরেকদিকে হাফ ম্যারাথনের ফিনিশিং লাইন।
২ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট দৌড়ের শেষে পৌঁছলাম ফিনিশ লাইনে।
এই রকম ম্যারাথন দৌড়নো কষ্টসাধ্য।
আমি নিজেরও মাঝে মাঝে মনে হয়েছে, কেন শুধু শুধু শরীরকে এই যন্ত্রণা
দিচ্ছি। কিন্তু যখন দৌড়টা শেষ হয়, তখন একটা তীব্র আনন্দ ও তৃপ্তিতে
মনটা ভরে ওঠে। সমস্ত কষ্ট ব্যথা বেদনা উবে যায়। এই সব ম্যারাথন
দৌড়ে সময় নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে, সময় ভালো কাটছে কিনা সেটাই বড় কথা।
সেটা করতে পারলে এই অভিজ্ঞতাটা হবে একটা সুখ-স্মৃতি।
ঘনশ্যাম
অধিকারী
(সুজন
দাশগুপ্তের সৌজন্যে)