ধীরাজ
ভট্টাচার্য (১৯০৫ - ১৯৫৯)

পূর্ববঙ্গের যশোর জেলায়
জন্ম। সাহিত্যে ডিগ্রী পাবার পর যোগ দিলেন পুলিশে। সেখান থেকে
অভিনয়ের জগতে। ম্যাডান থিয়েটারের ছবি দিয়ে অভিনয় জীবনের শুরু।
প্রথম ছবি ১৯২৫ সালের 'সতী লক্ষ্মী'। ১৯৩০ সালে রবীন্দ্রনাথের
লেখা গল্প 'গিরিবালা'-য় পরিচালক মধু বসু ওঁকে প্রধান চরিত্রে
অভিনয় করতে দিলেন। সেই ছবিরই আরেকটি চরিত্রে ছিলেন বাংলার এক
দিকপাল অভিনেতা নরেশ মিত্র। ১৯৩০ সালে আরও একটি ছবিতে ধীরাজ
অভিনয় করেন - ছবিটি প্রিয়নাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের 'কাল পরিণয়'। সবগুলিই
ছিল নির্বাক চিত্র। নিজেকে অভিনেতা সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ
হন চারু রায়ের সবাক চিত্র 'বেঙ্গলী'-তে (১৯৩৬)। নায়ক ও খল-নায়ক
- দুটো ভূমিকাতেই তিনি অভিনয় করেছেন এবং দুটোই করেছেন সমান দক্ষতার
সঙ্গে । তবে খল-নায়কের চরিত্রেই দর্শকরা ওঁকে বেশি চিনতেন। ১৯৩৮
সালের 'অভিনয়' ছবিতে ও ১৯৪০ সালের 'কুমকুম' ছবিতে নায়কের ভূমিকায়
অভিনয় করেন। দুটি ছবিতেই ওঁর বিপরীতে ছিলেন সুন্দরী সাধনা বসু।
ছবিদুটি পরিচালনা করেছিলেন মধু বসু। প্রেমেন্দ্র মিত্রের অনেকগুলি
ছবিতেও ধীরাজ ভট্টাচার্য কাজ করেছেন, যেমন, 'সমাধান' (১৯৪৩),
'কাঁকনতলা লাইট রেলওয়ে' (১৯৫০) ও 'ময়লা কাগজ' (১৯৫৪)।
চলচ্চিত্র দিয়ে অভিনয় শুরু
করলেও নাট্যজগতকেও তিনি উপেক্ষা করেন নি। ' সিন্ধু গৌরব', 'চরিত্রহীন'
ইত্যাদি নাটকে তিনি তাঁর নাট্যপ্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। রংমহল
থিয়েটারে ১৯৫৩ সালের নাটক 'আদর্শ হিন্দু হোটেল'-এ তাঁর অসামান্য
অভিনয় তিনি আবার দেখান সেই নাটকেরই চিত্ররূপে - ১৯৫৭ সালে অর্ধেন্দু
সেনের পরিচালনায় 'আদর্শ হিন্দু হোটেল' ছবিটিতে। ঐ একই বছর আরও
দুটি ছবিতে তিনি ছিলেন - 'বড়দিদি' ও 'রাত একটা'। তারপর আর কোনো
ছবি করতে পারেন নি।
মাত্র ৫৪ বছর বয়সে ধীরাজ
ভট্টাচার্যের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে তিনি তাঁর আত্মজীবনী দুই
খণ্ডে লেখেন - যখন পুলিশ ছিলাম আর যখন নায়ক ছিলাম। দেশ পত্রিকায়
সেগুলি ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হবার পর বই হিসেবেও বার হয়।