কৃষ্ণ
চন্দ্র দে (১৮৯৩ - ১৯৬২)
বাংলা
সিনেমার আদি যুগে নিউ থিয়েটার্সের অন্যতম সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন
কে সি দে (অন্যান্যরা হলেন রাইচাঁদ বড়াল, তিমিরবরণ, পঙ্কজ মল্লিক
প্রমুখ)। অভিনয়েও অংশ নিয়েছেন বহু ছবিতে। ১৪ বছর বয়সে অন্ধ হয়ে
যান। সে কালের যাত্রায় অন্ধ গায়ক থাকা প্রায় একটা ট্র্যাডিশনের
মত ছিলো। সেই ট্র্যাডিশন সিনেমাতেও নিউ থিয়েটার্স ব্যবহার করেছিলো
কে সি দে-কে দিয়ে - যেমন চণ্ডীদাস (১৯৩২), দেবদাস (১৯৩৫), ভাগ্যচক্র
ও তার হিন্দী সংস্করণ ধূপছাও (১৯৩৫) এবং বিদ্যাপতি (১৯৩৭) ছবিতে।
এক কালে এই সিনেমায় ওঁর গানগুলি লোকেদের মুখে মুখে ফিরতো। সুন্দর
গম্ভীর ভরাট গলা ছিল কে সি দে-র। হালকা ক্ল্যাসিকাল গানই বেশি
করেছেন। তবে কীর্তন, ভজন এবং বাউল জাতীয় গানও গেয়েছেন প্রচুর।
কীর্তনে কে.সি.দে-এর গাওয়া একটি বিখ্যাত গান হলো "এই তো
মাধবীতলে" এবং "শুন শুন হে পরাণ প্রিয়"। পাশের
ছবিটি দেশের মাটি-র হিন্দী সংস্করণ ধাত্রীমাতা ছবি থেকে নেওয়া।
নীতিন বসু পরিচালিত ১৯৩৮ সালের এই ছবির (বাংলা ও হিন্দী দুটিতেই)
প্রধান ভূমিকায় ছিলেন কে এল
সাইগল, উমাশশী এবং কে সি দে (উমাশশীর পিতার ভূমিকায়)। ছবিতে
সাইগল, উমাশশীর সঙ্গে কে সি দে-কে (ডানদিকে) দেখা যাচ্ছে।
শুধু সিনেমা নয়, নাটকের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন গভীর ভাবে। ১৯২৪ সালে
শিশির ভাদুড়ীর সঙ্গে বসন্ত লীলা-য় বসন্ত-দূত সেজেছিলেন। শিশির
ভাদুড়ীর বিখ্যাত নাটক সীতা-তে তাঁর ভূমিকা ছিল বৈতালিকের । ১৯৩১
সাল থেকে প্রায় ১০ বছর রংমহলের থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
বহু নাটকের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন সেখানে। বোম্বের হিন্দি ছবির
জগতেও অভিনয় ও সঙ্গীত পরিচালকের কাজ করেছিলেন কিছুদিন। পরের
প্রজন্মের বিখ্যাত গায়ক মান্না দে হলেন কে সি দে-র ভ্রাতুষ্পুত্র।