প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

পঙ্কজ মল্লিক (১৯০৪ - ১৯৭৮)

পঙ্কজ মল্লিকের জন্ম একটি মধ্যবিত্ত বাঙালী পরিবারে। বাবা মণিমোহন গানবাজনা ভালো বাসতেন, সেই সঙ্গীতানুরাগ ছেলের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়েছিল। স্কুলের পাঠ চুকিয়ে পঙ্কজ কলেজে ঢুকলেন, কিন্তু সঙ্গীতের নেশা কলেজের পাঠ শেষ করতে দিল না। ১৯২৮ সালে যখন অল ইণ্ডিয়া রেডিও শুরু হল, তখন পঙ্কজ মল্লিক সেখানে যোগ দিলেন। সেই ২৪ বছর বয়স থেকে ৭১ বছর বয়স পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন।

রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্য ছিলেন। রবীন্দ্রসঙ্গীতের দ্রুত জনপ্রিয়তার মূলে পঙ্কজ মল্লিকের সুকণ্ঠ এবং চলচ্চিত্র ও রেডিও জগতে এই সঙ্গীতের ব্যাপক ব্যবহারে তাঁর প্রচেষ্টা যথেষ্ট কাজ করেছে। প্রতি রবিবারে তাঁর সঙ্গীত শিক্ষার আসর ছিল একটি জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। প্রথম দিকে যখন রবীন্দ্রনাথের গান রেকর্ড করা হচ্ছে, তখনকার গাওয়া পঙ্কজ মল্লিকের গান "গগনে গগনে আপনার মনে" ও "যৌবন সরসী নীরে মিলন শতদল" - আজও অনেকের কানে বাজে।

পঙ্কজ মল্লিক নিউ থিয়েটার্সের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। সেখানকার কয়েকটি ছবির পরিচালনায় তিনি জুটি বেঁধেছিলেন রাইচাঁদ বড়ালের সঙ্গে। কিন্তু বহু ছবিতে তিনি একাই ছিলেন সঙ্গীত পরিচালক। পঙ্কজ মল্লিকই প্রথম চলচ্চিত্রে (প্রমথেশ বড়ুয়ার ১৯৩৭ সালে তোলা ছবি মুক্তি-তে) রবীন্দ্রসঙ্গীতের ব্যবহার শুরু করেন। মুক্তি ছবিতে বেশ কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত ছিল। গানগুলি হল "তার বিদায়বেলার মালাখানি" ও "আজ সবার রঙে রঙ মেলাতে হবে"-কানন দেবী এবং "আমি কান পেতে রই" ও "দিনের শেষে ঘুমের দেশে"-পঙ্কজ মল্লিক। রবীন্দ্রনাথের গানে কদাচিত্ অন্য কেউ সুরসংযোজন করেছেন। কিন্তু পঙ্কজ মল্লিককে রবীন্দ্রনাথ অনুমতি দিয়েছিলেন।

সঙ্গীত পরিচালকের ভূমিকায় পঙ্কজ মল্লিক সেকালের বহু খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পীদের (যাঁদের অনেকেই ছিলেন নায়ক নায়িকা) গান শিখিয়েছেন। জনপ্রিয় নায়ক নায়িকা কাননদেবী ও সাইগল পঙ্কজ মল্লিকের শিক্ষায় বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছিলেন। বিশেষ করে কাননদেবীর রবীন্দ্রসঙ্গীতের পেছনে কাজ করেছে ওঁর সযত্ন শিক্ষা।

ব্যক্তিত্বপূর্ণ চেহারা ছিল পঙ্কজ মল্লিকের। কিন্তু অভিনেতা হওয়ার কোনো বাসনা ছিল না। তবুও কয়েকটি বইয়ে ছোটখাটো চরিত্রে ওঁকে দেখা গেছে। বহু পুরস্কার ও সন্মান জীবনে পেয়েছেন। ১৯৫৬ সালে ওঁকে সঙ্গীত রত্নাকর উপাধী দেওয়া হয়। ১০৭০ সালে পদ্মশ্রী। ১৯৭২ সালে দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার।


Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।