প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

সাধনা বসু (১৯১৪ -১৯৭৩)

সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে - কেশবচন্দ্র সেনের নাতনী ও ব্যারিস্টার সরলচন্দ্র সেনের কন্যা সাধনা বসু ভারতজোড়া খ্যাতি অর্জন করেন ১৯৩৪ সালের ভারত লক্ষ্মী পিকচারের ছবি আলিবাবা-তে মর্জিনা-র পার্ট অভিনয় করে। সেই খ্যাতি আরও ছড়িয়ে পরে ১৯৩৭ সালে সেই একই ভূমিকায় আবদুল্লা ছবিতে অভিনয় করার পর। এই ছবির "ছি ছি এত্তা জঞ্জাল" গানটি এক সময়ে লোকের মুখে মুখে ফিরতো। এই দুটি ছবিই পরিচালনা করেছিলেন প্রতিভাবান অভিনেতা ও পরিচালক মধু বসু, যিনি বাস্তব জীবনে ছিলেন সাধনার স্বামী। সাধনা বসুর অভিনয় জীবনের শুরু মাত্র ১৬ বছর বয়সে - রবীন্দ্রনাথের গল্পের উপর ভিত্তি করা ছবি দালিয়া-তে। ১৯৩০ সালের ম্যাডান থিয়েটার্সের প্রযোজিত সেই ছবির পরিচালকও ছিলেন মধু বসু। এ ছাড়া 'বিদ্যুত্পর্ণা', 'রাজনটী', 'রূপকথা' ইত্যাদি অনেকগুলি বাংলা ছবিতে উনি অভিনয় করেন। বেশ কিছু হিন্দী ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন সাধনা বসু।

সঙ্গীত ও নৃত্য - দুটিতেই ওঁর দক্ষতা ছিল। কথক শিখেছিলেন তারকনাথ বাগচীর কাছে। মণিপুরী নাচে সাধনা বসুর গুরু ছিলেন সেনারিক রাজকুমার। এনা প্যাভলোভার সঙ্গেও কাজ করার সুযোগ হয়েছিল কিছুদিন। সঙ্গত কারণেই বহু নৃত্য-বহুল ছবিতে ওঁকে দেখা গেছে। নিজের আত্মজীবনীতে সাধনা বসু তাঁর সিনেমার নাচগুলিকে নিও-ক্ল্যাসিকাল ও ফিল্ম-ব্যালে আখ্যা দিয়েছেন।

১৯৪১ সালের ছবি 'রাজনর্তকী'তে ওঁর মণিপুরী ঢঙের নাচ বহু প্রশংসিত হয়েছিল। প্রসঙ্গতঃ রাজনর্তকী (The court dancer) ছিল ওয়াদিয়া মুভিটোন কোম্পানীর একটা বিরাট প্রকল্প। ওয়াদিয়া ভাইদের বড় ভাই জেবিএইচ-এর উদ্যোগে চারটে ভাষায় এই ছবিটি করা হয়েছিল। অজস্র অর্থ ব্যয় করে নির্মিত ছবি বক্স অফিসে সাফল্য লাভ করে নি। ফলে ওয়াদিয়া মুভিটোন বন্ধ হয়ে যায় । আরেকটি ছোট্ট ঘটনা।The court dancer-এ সুন্দরী ও নৃত্যপটিয়সী সাধনা বসুকে সিনেমায় দেখে মুগ্ধ হয়ে এক সিন্ধী দম্পতী ১৯৪১ সালে তাঁদের কন্যার নাম রেখেছিলেন সাধনা। পরবর্তী কালে ষাট দশকে সেই মেয়েটিই হিন্দী সিনেমা জগতের এক বিখ্যাত নায়িকা হন।

দুঃখের কথা যে, সুখের সংসার বলতে যা বোঝায় - তা সাধনা বসুর বেশি দিন করা হয় নি। জীবনের প্রথম দিকে অর্থ, খ্যাতি, স্তাবকদল - সেই সঙ্গে নিজের অস্থিরতা - ঘর থেকে তাঁকে বাইরে নিয়ে গিয়েছিলো। পরে ঘটনাচক্রে অবশ্য আবার স্বামীর কাছেই ফিরে এসেছিলেন। তখন অভিনয়ের সুযোগ যা পেতেন করতেন, নৃত্যশিক্ষা দিয়েও কিছু অর্থ আসত। কিন্তু সে অর্থ অসংযমী জীবন যাপনের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ফলত দারিদ্রের সঙ্গে যুদ্ধ করে প্রথমে মারা যান মধু বসু, তার কয়েক বছর পরে সাধনা বসু।

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।