গান:
বাংলা গানের রেকর্ডের স্বর্ণযুগ
বিংশ
শতকের তিরিশ দশকের শেষ ভাগ থেকে থেকে শুরু করে পুরো চল্লিশ দশককে
বাংলা গানের রেকর্ডের স্বর্ণযুগ বলা হয়। তবে তিরিশের দশকের প্রথমার্ধ
নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৩১ সালে বাংলা সবাক্ চিত্রের শুভারম্ভের
পর ১৯৩২ সালে হিন্দুস্থান ও মেগাফোন কোম্পানীর প্রতিষ্ঠা হয়।
১৯৩৫-এ জন্ম নেয় সেনোলা কোম্পানী । এই সময়ে নতুন নতুন গীতিকার,
সুরকার ও শিল্পীদের আত্মপ্রকাশ ঘটে এবং পূর্বে যাঁরা আত্মপ্রকাশ
করেছিলেন তাঁরাও সুপ্রতিষ্ঠিত হন। সর্বোপরি এই সময় থেকেই বাংলা
গানে এক নতুন ধারা পরিলক্ষিত হয়। পূর্বে বাংলা গানের ক্ষেত্রে
চিরাচরিত কীত্র্তন, ভক্তিমূলক গান, টপ্পা অঙ্গের গান প্রচলিত
ছিল। তিরিশের দশকে বাংলা গান আধুনিকতার দিকে ঝোঁকে। বিভিন্ন
প্রকারের নতুন ধারার গানের প্রকাশও এই সময়ে লক্ষণীয় - যেমন,
গ্রাম্য সুরের গান, পল্লীগীতি, লোকগীতি,ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া,
গম্ভীরা, চট্কা ইত্যাদি। এছাড়া শ্যামাসঙ্গীত ও ইসলামী গানের
নতুন ধারাও এই কালেই সংযোজিত হয়। এই সময় থেকেই বাংলা গীত ও গজলের
প্রচলন হয়, ভজন গানও বিশেষ প্রতিষ্ঠা পায়। প্রথম ইসলামী গানের
রেকর্ডও হয় এই তিরিশের দশকেই। আহ্মেদের গাওয়া ইসলামী গান দুটি
"ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে" এবং "ইসলামের ঐ
সওদা লয়ে" ১৯৩২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে এইচ এম ভি থেকে প্রকাশিত
হয় (রেকর্ড নং এন-৪১১১১)।
ভাটিয়ালী, পল্লীগীতি ও
ইসলামী গানে "পল্লীদুলাল" আব্বাসউদ্দিন আহ্মেদ, মিঃ
আবদুল লতিফ, মিঃ আশরফ আলি, সাকিনা বেগম, কে মল্লিক, ধীরেন্দ্রচন্দ্র
সরকার, সিরাজুর রহমান, গনি মিঞা, রোশন আরা বেগম, লালিয়া বিবি
প্রভৃতি শিল্পীদের নাম উল্লেখ যোগ্য। আব্বাসউদ্দিনের গাওয়া "রঙ্গিলা
নায়ের মাঝি' এবং অপর পিঠে "আমার গহীন গাঙের নাইয়া"
(এফ্টি ২৮১৮) এবং "তোরষা নদীর ধারে ধারে" ও অপর পিঠে
"কুঁচবরণ কন্যা রে তোর" (এফ্ টি ২২২৭)- এই ভাটিয়ালী
গানগুলি সেই সময়ে বিশেষ জনপ্রিয় হয়েছিল। এছাড়া ওঁর গাওয়া "মহরমের
চাঁদ এলো ঐ" এবং "বহিছে সাহারায় শোকেরই লু হাওয়া"
(এফ্টি ২৫৯৫) গানদুটিও বেশ লোকপ্রিয়তা অর্জন করেছিল । অন্যান্য
ইসলামী গানের মধ্যে যে গানগুলি জনগনের কাছে সমাদর পেয়েছিল সেগুলি
হল, মিঃ আশরফ আলির গাওয়া "সকাল হল শোন রে আজান" এবং
"নামাজ পড় রোজা রাখো"(এফ্টি ১২৫৯), এবং আবদুল লতিফের
"ঈদ্ মুবারক" এবং "যেওনা যেওনা মদিনা দুলাল"।
এই একই সময়ে সুকণ্ঠী কমল ঝরিয়া-র গাওয়া পল্লীগীতি "ও বিদেশী
বন্ধì" এবং "ও দুটি নয়ন" এবং হরিমতীর গাওয়া "আমি
বন্ধìর প্রেমাগুণে পোড়া" গানগুলি বিশেষ পরিচিতি লাভ করে।
শ্যামা সঙ্গীতের ক্ষেত্রে এই সময়কার জনপ্রিয় শিল্পী ছিলেন মৃণালকান্তি
ঘোষ ও ভবানী চরণ দাস। কাজী নজরুল ইস্লাম রচিত ও সুরারোপিত শ্যামাসঙ্গীত
এইসময় বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। মৃণাল কান্তি ঘোষের গাওয়া
"বল রে জবা বল", "মহাকালের কোলে এসে", "আমার
কালো মেয়ের পায়ের তলায়" ও "আর লুকাবি কোথায় মা কালী"
এক সময়ে লোকের মুখে মুখে ফিরতো।
এই সময়ে গীতিকার হিসাবে
প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম, প্রণব রায়, রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর, হেমেন্দ্র কুমার রায়, অতুলপ্রসাদ সেন, সুবোধ পুরকায়স্থ,
অজয় ভট্টাচার্য, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, শৈলেন রায় প্রভৃতিরা। এঁদের
রচিত নানাধরনের বাংলা গান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত এবং স্বল্প প্রতিষ্ঠিত
শিল্পীর কণ্ঠে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। সুরকারদের মধ্যে নজরুল
ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ , দ্বিজেন্দ্রলাল, অতুলপ্রসাদ তো ছিলেনই,
আর ছিলেন সুরসাগর হিমাংশু দত্ত, কমল দাশগুপ্ত, শচীনদেব বর্মন,
শৈলেশ দত্তগুপ্ত, রাইচাঁদ বড়াল প্রভৃতিরা। বাংলা গানের গীতিকার
ও সুরকার হিসাবে খ্যাত রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল ইসলাম, অতুলপ্রসাদ
সেন প্রভৃতির স্বকণ্ঠের গান ছিলো বাংলা গানের রেকর্ডের ক্ষেত্রে
বিশিষ্ট সম্পদ। হিন্দুস্তান কোম্পানী তাদের প্রথম রেকর্ড প্রকাশ
করে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের কণ্ঠের গান দিয়ে।গানদুটি হলো "তবু
মনে রেখো" এবং অপর পিঠে রয়েছে আবৃত্তি "আমি যখন বাবার
মতো হব"।কাজী নজরুলের স্বকণ্ঠের গান হলো "দিতে এলে
ফুল হে প্রিয়" এবং অপর পিঠে "পাষাণে ভাঙ্গালে ঘুম"।
অতুল প্রসাদ সেনের নিজকণ্ঠের গান হলো "মিছে তুই ভাবিস মন"
এবং "জানি জানি তোমারে"।
পুরুষ শিল্পীদের মধ্যে
যাঁরা এই সময়ে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন,তাঁরা হলেন কুন্দনলাল
সাইগল (কে.এল.সাইগল), অন্ধ গায়ক কৃষ্ণ চন্দ্র দে (সঙ্গীতাচার্য
কে.সি.দে), শচীন দেব বর্মন, জ্ঞানেন্দ্র প্রসাদ গোস্বামী ও পঙ্কজ
মল্লিক। কীর্তনে কে.সি.দে-এর গাওয়া একটি বিখ্যাত গান হলো "এই
তো মাধবীতলে" এবং "শুন শুন হে পরাণ প্রিয়"। কে.
এল.সাইগলের গাওয়া প্রেমসঙ্গীত "নাইবা ঘুমালে প্রিয়"
ও "এখনি উঠিবে চাঁদ" এবং শচীন দেব বর্মনের গাওয়া গান
"ডাকলে কোকিল রোজ বিহনে" ও "এই পথে আজ এস প্রিয়"
আধুনিক-সঙ্গীত পিপাসুদের মনে এক সময়ে বেশ আলোড়ন তোলে।পঙ্কজ মল্লিক
তাঁর বিশেষ অবদান রেখে গেছেন রবীন্দ্রসঙ্গীতের ক্ষেত্রে । ১৯৩২
সালের আগষ্ট মাসে পঙ্কজ মল্লিকের গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীত "প্রলয়
নাচন নাচলে যখন আপন ভুলে" এবং "তোমার আসন শূন্য আজি"
বিশেষ জনপ্রিয় হয়। রেকর্ডটি হিন্দুস্থান কোম্পনি থেকে প্রকাশিত
হয়। এই সময়ে ওঁর গাওয়া আর দুটি উল্লেখযোগ্য গান হল "মুক্তি"
ছায়াছবির দুটি গান "আমি কান পেতে রই" (রবীন্দ্রসঙ্গীত)
এবং "দিনের শেষে ঘুমের দেশে"(রবীন্দ্রনাথের কথা, কিন্তু
পঙ্কজ মল্লিকের সুরে ও কণ্ঠে গাওয়া গান)। কৌতুক বা হাসির গানে
নতুনত্ব আসে কমল দাশগুপ্তের অগ্রজ বিমল গুপ্ত এবং হাস্য কৌতুক
অভিনেতা ও গায়ক রঞ্জিত রায়ের প্রচেষ্টায়। হাসির গানে রঞ্জিত
রায়-এর গাওয়া গান দুটি " আমার খোকার মাসী " এবং "মটকু
মাইতি বাঁটকুল রায়" বিশেষ আকর্ষণীয় ছিল।
বাংলা গানের ক্ষেত্রে দুই
বিখ্যাত গায়ক জগন্ময় মিত্র ও ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য ৩০-এর দশকের
শেষ দিকে আত্মপ্রকাশ করেন।জগন্ময় মিত্রের কণ্ঠে "শাওন রাতে
যদি" এবং "গুনগুনিয়ে ভ্রমর আসে" বিশেষ জনপ্রিয়তা
পায়। গানদুটির রেকর্ড ১৯৪০ সালের এপ্রিল মাসে এইচ্.এম.ভি. থেকে
প্রকাশিত হয়।ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের কণ্ঠে গীত " যদি ভুলে
যাও মোরে" এবং "ছিল যে আঁখির আগে", এই রেকর্ডটি
১৯৪০ সালে প্রকাশিত হয়।
মহিলা শিল্পীদের মধ্যে
উল্লেখযোগ্য ছিলেন কমল ঝরিয়া, যুথিকা রায়, আঙুরবালা, ইন্দুবালা,
কানন দেবী, রেণুকা দাশগুপ্ত, গোপালীবালা, বীনাপাণী দেবী, হরিমতী
প্রভৃতিরা। আঙুরবালা বিশেষ সুকণ্ঠের অধিকারিণী ছিলেন। রাগ সঙ্গীতে
ছিল তাঁর বিশেষ দক্ষতা। বাংলা গজল গানেও তাঁর অবদান ছিল অসামান্য।
বাংলা রাগ সঙ্গীতের ক্ষেত্রে কমলা ঝরিয়া অপর একজন উজ্জ্বল তারকা।
এছাড়াও আছেন হরি বাঈজী, ইন্দুমতী প্রভৃতিরা। কমল ঝরিয়া-র কণ্ঠে
গজল "প্রিয় যেন প্রেম ভুল না এ মিনতি করি হে" এবং
"নিঠুর নয়নবান কেন হানি" উল্লেখযোগ্য। যুথিকা রায়-এর
কণ্ঠের "সাঁঝের তারকা আমি" এবং "ভোরের যুথিকা"
বিশেষ জনপ্রিয়তা পায়।
স্বনামধন্য অভিনেত্রী ও
গায়িকা কানন দেবী এই সময়েই তার গান রেকর্ড করেন। তার প্রথম রেকর্ড
"ছুঁয়োনা ছুঁয়োনা শঠ" এবং "প্রিয় তোমারি লাগি
জাগি সারারাতি"(১৯৩২)। কানন দেবী তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
অবদান রেখে গেছেন বাংলা সিনেমার গানের ক্ষেত্রে। মুক্তি, বিদ্যাপতি,
সাথী, পরাজয়, পরিচয়, শেষ উত্তর, নববিধান এইসব চলচ্চিত্রে তিনি
রবীন্দ্রসঙ্গীত, আধুনিক, পদাবলী, লোকগীতি ইত্যাদির মধ্য দিয়ে
বাংলা গানকে সুখশ্রাব্য করে তোলেন। এগুলির মধ্যে "আনে আওব
যব রসিয়া" (বিদ্যাপতি), "আমি বনফুল গো" (শেষ
উত্তর), "আজ সবার রঙে রঙ মেলাতে হবে" (মুক্তি), "তার
বিদায় বেলার মালাখানি" (মুক্তি), "তোমায় হারাতে পারিনা"
(সাথী), "প্রিয় তোমার তুলনা নাই" (অভিনেত্রী), "প্রাণ
চায় চক্ষু না চায়" (পরাজয়), "সেই ভালো সেই ভালো"
(পরিচয়) - এইসব গানগুলি বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
তিরিশের দশক থেকেই শিশু
সঙ্গীতের রেকর্ড বেরোতে থাকে। পুরোপুরি শিশুদের জন্যই এধরনের
নার্সারী রেকর্ডের প্রবর্তন। শিশুদের মন আকৃষ্ট করার জন্য এগুলি
আকারে ছোট করা হতো। গানগুলির বিষয়বস্তু ছিল শিশুদের উপযোগী।
বিশেষ ধরণের গায়কী ও কথোপকথনের ঢং থাকায় এগুলি শিশুদের চিত্তগ্রাহী
হত। এই সমস্ত রেকর্ডগুলিতে 'সাউণ্ড এফেক্টের' প্রয়োগও শিশুদের
মনকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করত। "হিজ মাস্টার্স ভয়েস"
কোম্পানী থেকে জিটি, এফজি কোড নাম্বারে যে রেকর্ডগুলি প্রকাশিত
হতো সেগুলিই সব নার্সারী রেকর্ড।
নাটকে সঙ্গীতের প্রয়োগ
বহুদিন থেকেই এবং রেকর্ডিং-এর আদি যুগ থেকেই এইসব নাটকের গান
রেকর্ড করা হতো। চলচ্চিত্রের সঙ্গীতের আগমনের ফলে এবং নাটক,
যাত্রা ইত্যাদির মঞ্চস্থ হওয়ার ব্যাপার কমে যাওয়ায় চলচ্চিত্রের
সঙ্গীতই রেকর্ডে প্রাধান্য পায় ।তবুও নাটকে ব্যবহৃত কিছু কিছু
জনপ্রিয় গানের রেকর্ডও প্রকাশ করা হতো । ৩০-এর দশকে কিছু নাটকের
গান রেকর্ড করা হয়েছিলো।
আগেই বলা হয়েছে যে, বাংলা
সবাক চলচ্চিত্রের সূত্রপাত ১৯৩১ সালে। প্রথম ছবি হলো 'জামাইষষ্ঠি'
। এই বত্সরেই বিভিন্ন চলচ্চিত্রে সঙ্গীতের প্রয়োগ দেখা যায়।
কিন্তু চলচ্চিত্রের সঙ্গীত-রেকর্ডের প্রকাশ সব্র্বপ্রথম ১৯৩২
সালে চিত্র চণ্ডীদাস- 'ফিরে চলো ফিরে চলো আপন ঘরে', শিল্পী -
কৃষ্ণচন্দ্র দে। ক্রমে চলচ্চিত্রে সঙ্গীতের বিভিন্ন ধারার প্রয়োগ
বিভিন্ন শ্রেণীর শ্রোতাকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে । ফলে সহজেই
বাংলা গান জনপ্রিয় হতে থাকে।
১৯৩৫ সালে 'ভাগ্যচক্র'চিত্রের
সঙ্গীত গ্রহণের মাধ্যমে প্রথম প্লে-ব্যাক প্রথার প্রচলন হলো।
গানটি হলো 'মোরা পুলক যাচি তবু সুখ না মানি'। এই প্রথার উদ্যোক্তা
ছিলেন নীতিন বসু, হীরেন বসু ও পঙ্কজ মল্লিক। এই পদ্ধতি সঙ্গীত
জগতে যুগান্তর আনে। যেহেতু সঙ্গীত শিল্পীর কাজ শুধু গানটি গাওয়া
সে কারণে তিনি মনোযোগ সহকারে গান গাওয়ার সুযোগ পেতেন। ফলে গানের
মান উন্নত হলো । এই পদ্ধতিতে, শুটিং এর আগেই প্রাথমিকভাবে গান
রেকর্ড করে নেওয়া হতো। শুটিং-এর সময় অভিনতা-অভিনেত্রীরা গানের
কথার সঙ্গে মুখ মেলাতেন। প্রথম প্লে-ব্যাক শিল্পী পঙ্কজ মল্লিক
ও সুপ্রভা ঘোষ (সরকার)। এছাড়াও এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ শিল্পীরা
হলেন কানন দেবী, কে.এল.সায়গল, বিনয় গোস্বামী,পাহাড়ী সান্যাল,
কৃষ্ণচন্দ্র দে, বীণাপানি, পূর্ণিমা, শৈল দেবী, ছায়া দেবী প্রমুখেরা।
বাংলা গানের ক্ষেত্রে বহু
শিল্পীর মধ্যে ছদ্মনাম ব্যবহারের প্রচলন ছিলো। বিশেষতঃ ইসলামী
গানের ক্ষেত্রে এর প্রচলন ছিলো। বলা বাহুল্য ইসলামী গানের ক্ষেত্রে
মুসলমান শিল্পী তো আছেনই, বহু হিন্দু শিল্পীও মুসলমানী ছদ্মনামে
গান রেকর্ড করেছেন । এইসব শিল্পীরা কেবলমাত্র ইসলামী গানের ক্ষেত্রেই
নয়, হিন্দী গানের ক্ষেত্রেও অথবা অন্য কোম্পানী থেকে রেকর্ড
করার সময়ও ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন। কারণ প্রখ্যাত শিল্পীরা বিশেষ
বিশেষ কোম্পানীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকতেন ।ফলে স্বভাবতই অন্য
কোম্পানীতে রেকর্ড করার সময় তাদের অন্য নাম গ্রহণ করতে হতো ।
তবে হিন্দু শিল্পীর ইসলামী গান রেকর্ডের ক্ষেত্রেই ছদ্ম নামের
ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্যণীয়। নিচে আসল নাম ও ছদ্মনামের একটি তালিকা
দেওয়া হল:
এই লেখায় যে-সব বই ও যাঁদের সাহায্য নেওয়া হয়েছে:
গ্রন্থপঞ্জী
কানন দেবী, "সবারে আমি নমি", কলিকাতা, এম.সি.সরকার
এণ্ড সন্স, ১৩৯৭;
দেবব্রত বিশ্বাস; "ব্রাত্যজনের রুদ্ধ সঙ্গীত", কলিকাতা,
করুণা প্রকাশনী ,১৩৮৭;
পঙ্কজ কুমার মল্লিক; "আমার যুগ আমার গান", কলিকাতা,
ফার্মা কে. এল. এম , ১৯৮০;
সিদ্র্ধাথ ঘোষ; "রেকর্ডে রবীন্দ্রসঙ্গীত, কলিকাতা, ইন্দিরা
সঙ্গীত শিক্ষায়তান,১৯৮৯;
ব্যক্তিগত উত্স:
বরদা গুপ্ত, ২ এ বিপিন মিত্র লেন, (সঙ্গীত শিল্পী ও শিক্ষক),
কলকাতা-৭০০০০৪;
সুরজলাল (হারুবাবু) মুখোপাধ্যায়, (পুরনো রেকর্ড সংগ্রাহক), ১/২
সমর সরণী, কলকাতা-৭০০০০২।
মিতালি
দাশগুপ্ত