গুজরাতে কয়েকদিন

এই
রাজ্যের সাথে আমাদের প্রথম দেখা আমেদাবাদ বিমান
বন্দরে। সেখান থেকে মাইল দশেক দূরে গুজরাট Tourism-এর
হোটেলে রাতে থাকা। খুবই আরামপ্রদ ঘরগুলো। হোটেলের
সামনের রাস্তার অপর পারে গান্ধীজীর সাবরমতী
আশ্রম - সাবরমতী নদী তীরে। গুজরাতের নূতন রাজধানী
গান্ধীধাম এখান থেকে ২০ মিনিটের পথ।

আহমেদাবাদ
শহরে একটি জৈন মন্দির

মন্দিরের
গায়ে কারুকার্য
গুজরাতের
সর্বত্রই দেব-দেবীর মন্দিরের ছড়াছড়ি, আমেদাবাদও
তার ব্যতিক্রম নয়। প্রতি ১০-পা অন্তর কোন না
কোন মন্দিরের দেখা পাবেন। সমস্ত গুজরাট নিরামিষ।
এক মাত্র মুসলিম -চালিত খাওয়ার জায়গায় আমিষ
পাওয়া যাবে। আমেদাবাদ শহরের রাস্তাঘাট খুবই
চওড়া আর সুন্দর।

একটি
ট্র্যাফিক সার্কেলে যুক্ত-কর
দেখে
বোঝা যায় এরা ব্যবসা বাণিজ্যে অন্যান্য রাজ্যের
থেকে কতটা এগিয়ে রয়েছে। সবাই কে দেখা যায় কি
ভীষণ রকম ব্যস্ত। এখন ডিসেম্বর মাস - এখনও আবহাওয়া
বেশ গরম - দিনের বেলায় রোদ বেশ চড়া। তবে সূর্যাস্তের
পর আরাম দায়ক।
দ্রষ্টব্য
স্থান -
(১) রাণী কি ভাৰ
রাণী
কি ভাব গুজরাতের আতালেজ অঞ্চলে - রাস্তা পথে
আমেদাবাদ থেকে আধ ঘণ্টা । গুজরাটি ভাষায় “ভাবের
উচ্চারণ ভাও – শব্দটির ” মানে কূঁয়ো। বাগেলা
রাজপরিবারের রাণী রুদা এই Step well টি খনন
করান ১৮৪৫ সালে। কঠিন জলাভাবের জন্য সে সময়ের
শাসকরা এ রকমের বহু ভাব খনন করাতেন, প্রজাদের
মঙ্গলার্থে। ভাৰের চারপাশের স্থাপত্য না দেখলে
বোঝা যায় না সে সময় স্থাপত্যকলা কোথায় পৌঁছে
ছিল। অল্প দূরে আছে হাতী সিং সিতাম্বর জৈন মন্দির।
মোট ৫২টি মন্দির একসময় ছিল, এখন অক্ষত অবস্থায়
আছে ৩৬টি। সিতাম্বর ছিলেন সে সময়কার সফল মশলা
ব্যবসাই। মন্দিরগুলি প্রতিষ্ঠা শেষ হয়েছিল ১৮৪৫
সাল। প্রতিটি মন্দিরেই অপূর্ব।

প্রথম
রাণী কি ভাব

প্রথম
রাণী কি ভাব (দ্বিতীয় ছবি)
প্রথম
রাণী কি ভাবের থেকে মাইল পাঁচেক দূরে পাটন বলে
একটি জায়গায় দ্বিতীয় রাণী কি ভাৰ। এটি ১০৫০
সনে খনন করান রাণী উদয়মতী, রাজা ভীমদেবের স্ত্রী।
রাজা ভীমদেব ছিলেন সোলাংকি বংশের প্রতিষ্ঠাতা,
মূলা রাজার পুত্র। দ্বিতীয় ভাবের স্থাপত্যকলা
প্রথমটিরই মতন। Step well-টি গুজরাতের বৃহত্তম,
৬৪মিঃ লম্বা, ২০মিঃ প্রস্থ এবং ২৭মিঃ গভীর।

দ্বিতীয়
রাণী কি ভাব

দ্বিতীয়
রাণী কি ভাব (দ্বিতীয় ছবি)

দ্বিতীয়
রাণী কি ভাব (তৃতীয় ছবি)
(২) সূর্য মন্দির - মধেরা
রাজা ভীমদেব, ১০২২ থেকে ১০৬৭ সাল এর মধ্যে এই
সূর্য মন্দিরটি মধেরা অঞ্চলে স্থাপন করেন। এটির
সাথে কোনারকের সূর্য মন্দিরের প্রচুর সাদৃশ্য
পাওয়া যায়। ১১ শতকে আলাউদ্দিন খিলজি এই মন্দিরটিকে
ধ্বংস এবং লুঠ করেন। এর সামনে একটি ভাৰ বানিয়েছিলেন
রাজা ভীমদেব, ভক্তদের সুবিধার জন্য। ধ্বংস আগে
এখানে গণেশ, শীতলা, বিষ্ণু, কালীর ও নটরাজের
মন্দির ছিল। মোট মন্দিরের সংখ্যা ছিল ১০৮টি।
সেগুলো সুলতান খিলজি ধ্বংস করেন। স্থাপত্যকলা
তাক লাগিয়ে দেয়। সে সময়ে ভারতবর্ষের লোকদের
জ্যোতিষশাস্ত্র, সংখ্যাতত্ত্ব, ইত্যাদির জ্ঞান
কোন পর্যায় ছিল তা মন্দিরের স্থাপত্যকলা থেকে
বোঝা যায়।

সূর্য
মন্দির (প্রথম ছবি)

সূর্য
মন্দির (দ্বিতীয় ছবি)

সূর্য
মন্দির (তৃতীয় ছবি)
ছবি
– সুবীণ দাশ
লেখা – তুষারসিক্তা দাশ
(আপনার
মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)