ডাক্তারকে
দিয়ে শরীর পরীক্ষা
অসুখ হলে বড়রা ছোটদের ডাক্তার দেখাতে
নিয়ে যান। অনেক সময়ে ডাক্তাররা বাড়িতেও রোগীদের দেখতে আসেন। তবে
অসুখ না হলেও নিয়মিত ডাক্তারের কাছে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে
শরীরের ভেতরে সব কিছু ঠিকমত কাজ করছে কিনা দেখিয়ে নেওয়া ভাল। শরীরের
কোনও কষ্ট না থাকলে খুব সম্ভবতঃ ডাক্তাররা পরীক্ষা করে কিছুই অস্বাভাবিক
পাবেন না; খাওয়াদাওয়া, ব্যায়াম ইত্যাদি করার ব্যাপারে কিছু উপদেশ
হয়তো দেবেন। সুতরাং ভয়ের কিছু নেই। আর স্বাস্থ্য সম্পর্কে যদি
কোনও প্রশ্ন থাকে তাহলে এটাই হবে ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করার সবচেয়ে
ভাল সময়।
স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সময়ে ডাক্তাররা
অনেক কিছু দেখেন:
উচ্চতা: বয়সের সঙ্গে তাল রেখে উচ্চতা
বাড়ছে কিনা;
ওজন: উচ্চতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে
ওজন ঠিকমত বাড়ছে কিনা;
রক্তচাপ: যদিও ছোটদের রক্তচাপ সাধারণতঃ
স্বাভাবিক থাকে। তবুও সেটা মাপা হয়। মাপার জন্য হাতের কনুইয়ের
উপরে নল লাগানো চ্যাপ্টা ব্যাগের মতো জিনিস পেঁচিয়ে সেটাতে পাম্প
করে বাতাস ঢুকিয়ে আর বার করে ডাক্তাররা রক্তচাপ মাপেন।
গায়ের টেম্পারেচার বা উষ্ণতা: থার্মোমিটার
জিভের নিচে বসিয়ে বা বগলের ফাঁকে ঢুকিয়ে গায়ে জ্বর আছে কিনা দেখা
হয়। টেম্পারেচার যদি ৯৭ থেকে ৯৯.৫ ডিগ্রি ফারেনহিট-এর (৩৬.১ থেকে
৩৭,৫ সেণ্টিগ্রেড) মধ্যে থাকে তাহলে সেটা স্বাভাবিক বলে ধরা হয়।
এই কাজগুলো ডাক্তার নিজে না করে তাঁর
কোনো অ্যাসিস্টেণ্ট বা নার্সকে দিয়েও করাতে পারেন। এরপর ডাক্তার
চোখ, কান ও শরীর অন্যান্য অংশ পরীক্ষা করেন। অনেক সময়ে শরীরের
যন্ত্রপাতিগুলো কতটা ভালো কাজ করছে নিজেদের পক্ষে বোঝা সম্ভব হয়
না। ডাক্তারি পরীক্ষায় সেটা ধরা পড়ে। প্রাথমিক পরীক্ষার পর যদি
প্রয়োজন মনে করেন - তাহলে ডাক্তার প্রস্রাব, রক্ত, ইত্যাদি পরীক্ষা
করার কথাও বলতে পারেন।
হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুস: ডাক্তাররা স্টেথোস্কোপ
বলে একটা যন্ত্র বুকের ওপর বসিয়ে হার্ট কিরকম ভাবে ধুক ধুক করছে
আর ফুসফুস কিরকম আওয়াজ করছে সেটা শোনেন। শব্দগুলো যদি ওঁর কানে
অস্বাভাবিক লাগে, তাহলে উনি প্রস্রাব, রক্ত, ইত্যাদি পরীক্ষা করার
জন্য অন্য কোথাও পাঠাতে পারেন।
কান, গলা, নাক: ওটোস্কোপের আলো কানে,
গলায় ও নাকে ফেলে ডাক্তার পরীক্ষা করেন সেগুলো ঠিক দেখতে লাগছে
কিনা।
চোখ: অপ্থ্যালমোস্কোপ দিয়ে চোখে তীব্র আলো দিয়ে ডাক্তার দেখেন
চোখের ভেতরটা পরীক্ষা করেন।
রিফ্লেক্স: একটা রবারের হাতুরি দিয়ে
ডাক্তার হাঁটুতে বাড়ি দিয়ে দেখেন পাটা আপনি আপনি লাফিয়ে উঠছে কিনা।
লাফিয়ে ওঠাটা স্বাভাবিক।
পেট: ডাক্তার পেটে চাপ দিয়ে দিয়ে
পেটের নাড়িভুরি ও অন্যান্য জিনিসগুলো ঠিকমত অবস্থায় রয়েছে কিনা
পরীক্ষা করেন।
যৌনাঙ্গ: ডাক্তার ছোটদের যৌনাঙ্গও পরীক্ষা করেন। এতে লজ্জা পাবার
কিছু নেই। শরীর সঙ্গে যৌনাঙ্গের বৃদ্ধিও স্বাভাবিক হচ্ছে কিনা,
সে ব্যাপারে ডাক্তার নিশ্চিন্ত হতে চান।
শিরদাঁড়া: পিঠের শিরদাঁড়া ঠিকমত সোজা
হয়ে বড়ছে কিনা ডাক্তার পরীক্ষা করেন। সাধারণভাবে শিরদাঁড়া সোজা
থাকে। তবে অনেক সময়ে এটা বেঁকে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ডাক্তার
অন্য একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যেতে বলেন যিনি হাড়ের (অর্থোপেডিক)
ডাক্তার।
নিজের শরীর সম্পর্কে যদি কোনও প্রশ্ন
থাকে তাহলে লজ্জা না পেয়ে ডাক্তারকে জানানো দরকার। শরীরের বিষয়ে
প্রশ্ন তোলার মধ্যে লজ্জার কিছু নেই। সেক্ষেত্রে সেই সমস্যার জন্য
ডাক্তার বিশেষ ভাবে পরীক্ষা করবেন।