ছোটোবেলায় আমাদের বাড়িতে একজন রান্নার ঠাকুর ছিল। সে প্রতি বছরে
একবার আর্ন্ড লিভ নিয়ে তার বাঁকুড়া জেলায় গ্রামের বাড়িতে যেত।
তখন বাড়ির বড়দের বলতে শুনতাম ঠাকুর ‘দেশে’ গেছে। তার সবই ভালো
ছিল। শুধু তার ওই ‘দেশ’-এ গেলে সে সহজে আর ফিরতে চাইতো না। তার
ছুটি ফুরায় ফুরায় , এমন সময়ে অবধারিত ভাবে একটি ‘পোস্টোকারড’ আসত।
‘আজ তিনদিন যাবৎ আমার ছোট ভাই ম্যালেরিয়া জ্বরে শয্যাশায়ী হইয়া
আছে। সে পথ্য না করা অবধি আমি যাইতে পারিতেছি না ’ বা এই রকম কিছু।
হয়তো ‘দেশ’ ছেড়ে এই পরদেশে তার আসতে ইচ্ছে করতো না। তবু একদিন
তাকে ফিরে আসতে হত জীবিকার তাগিদে। ফিরে আসার পর কয়েকদিন তার মনটা
একটু উচাটন হয়ে থাকত। তারপর আবার সব ঠিকঠাক হয়ে যেত।
আমরা যে শহরে থাকতাম সেটি একটি শিল্পশহর। আমরা থাকতাম কোম্পানির
দেওয়া কোয়ার্টারসে। ছোট বেলায় কোনো সত্যিকারের গ্রাম আমি নিজের
চোখে দেখিনি। তখন জানতাম দেশ মানে হল একটি গাঁ , যা একান্তভাবে
একজনের নিজের। ক্লাসের পাঠ্য পুস্তকে পড়া যতীন্দ্র মোহন বাগচীর
কবিতাটি পড়ে মনের ভিতরে না-দেখা গ্রামের একটি ছবি আঁকা হয়ে ছিল
- ‘ওই যে গাঁটি যাচ্ছে দেখা আইরি খেতের আড়ে – প্রান্তটি যার আঁধার
করা সবুজ কেয়াঝাড়ে, পুবের দিকে আম-কাঁঠালের বাগান দিয়ে ঘেরা, জটলা
করে যাহার তলে রাখাল বালকেরা – ওইটি আমার গ্রাম, আমার স্বর্গপুরী
ওইখানেতে হৃদয় আমার গেছে চুরি।‘
তখন ভাবতাম আমাদের রান্নার ঠাকুরের দেশটি নিশ্চয় এমনই একটি গাঁ।
কোনো এক নদীর ধারে। ভাবতাম, আহা, আমাদের যদি এমন যাবার মত একটি
গাঁ থাকতো, যেখানে ইস্কুলে ছুটি পড়লে আমরাও চলে যেতাম সেই ‘দেশ’-এ।
তারপর একদিন আমরা বড় হয়েছি আর জেনেছি দেশ মানে কোনো গাঁ, মুলু্ক
বা দেহাত নয়। আরও অনেক বড় একটা জায়গা। ভূগোলের ক্লাসে পেনসিল
দিয়ে সেই দেশটার মানচিত্র আঁকতে হত। অথবা একটা এঁকে দেওয়া মানচিত্রে
প্লট করতে বলা হত জয়পুর , কোচীন , আমেদাবাদ এই সব অদেখা অচেনা
জায়গা গুলো। তখন প্রশ্ন জেগেছে মনে- এই এত বড় একটা দেশ যেটার বেশির
ভাগটাই অচেনা অদেখা , কত রকমের অদ্ভুত পোষাক , অদ্ভুত ভাষা , অদ্ভুত
খাওয়া দাওয়া , সে বিচিত্র দেশটাকে কি আর তেমনি করে ভালোবাসা যায়,
যেমন করে আমাদের সেই রান্নার ঠাকুর ভালোবাসতো তার ‘দেশ’ কে ?
তারপর আরো বড় হয়েছি। দেশের জন্যে প্রাণ দেওয়া মানুষদের কথা শুনেছি।
দেশপ্রেম নিয়ে অনেক গান , অনেক কবিতা শুনেছি। । সে সব শুনে শুনে
দেশ নিয়ে মনে কোনায় কোথাও একটা আবেগ দানা বেঁধেছে। তারপর দেশ বললে
যে ছবিটি মনে ভেসে আসে সেটি বদলে বদলে গেছে সময়ের সঙ্গে। দেশ মানে,
পত পত করে উড়তে থাকা একটা তীরঙ্গা পতাকা , ‘সারে জঁহাসে আচ্ছা’
গানে গলা মেলানো , দেশ মানে নীল জার্সি পরা মান্না-পিকে-চুনী ,
দেশ মানে বিশ্বকাপ হাতে কপিলদেবের গজদন্ত হাসি , দেশ মানে অশোক
স্তম্ভের একটি ছাপ , দেশ মানে আমার দেশের সঙ্গে অন্য একটা দেশের
সঙ্গে যুদ্ধের উত্তেজনা , দেশ মানে হাজার হাজার মানুষের মিছিলের
লাল নিশান , দেশ মানে তেভাগা তেলেঙ্গানা , দেশ মানে Radcliffe
সাহেবের আঁকা একটি সীমারেখা , পাসপোর্ট না থাকলে যার ওপারে যাওয়া
যায় না।
যে দেশটাকে আমার বলে জানি , আমি জানি না সেই দেশে আমার প্রদেশের
এক পাশে ওড়িশায় কেমন ধরণের কবিতা লেখা হচ্ছে আজকাল , অন্য আর এক
পাশে অসমে কোন অহমিয়া গান খুব জনপ্রিয় এখন। একটু দূরে গারো পাহাড়ের
উপজাতিদের কি ভাবে বিয়ে হয় , বস্তারের গোঁদ উপজাতির মেয়েরা কি
ভাবে সাজগোজ করে, অন্ধ্র প্রদেশে উদগী উৎসব কখন হয় , এ সব জানতে
হলে আমাকে গুগল সার্চ ঘাঁটতে হবে। তবু এই যেটুকু জানি তার চেয়ে
অনেক বেশি অচেনা অজানা বৈচিত্র্য নিয়ে আমার যে দেশ , তাকে আমি
আমার ভালোসার কথা বলে থাকি। তার মাটিতে মাথা ঠেকাবার কথা বলি।
*****
টেলিভিশনের বেসরকারী চ্যানেল শুরু হওয়ার প্রথম পর্বে দেশ শুদ্ধ
লোকের কাছে খুব প্রিয় একটি অনুষ্ঠান ছিল অন্নু কাপুরের অন্ত্যাক্ষরী।
তখনো আমাদের হাতে মুঠোফোন আসেনি , আসেনি আন্তর্জালের জড়িয়ে থাকা
এক বিশ্বভুবন। সেই অন্ত্যাক্ষরী অনুষ্ঠানের একটি পর্বের কথা বিশেষভাবে
মনে আছে। সেই পর্বটি রেকর্ডিং হয়েছিল বিদেশে কোথাও , অনাবাসী ভারতীয়
দর্শকদের সামনে। বেশ জমে উঠেছিল অনুষ্ঠান। এমন সময়ে সেখানে অন্নু
কাপুর কখনো গেয়ে উঠেছিলেন – এয় মেরে প্যারে য়তন /এয় মেরে বিছড়ে
চমন , তুঝপে দিল কুরবান......।
(গানটি শুনতে চাইলে ক্লিক করুন ,থামাতে চাইলে আবার ক্লিক করুন )। ব্যাস, অমনি যে সভায় এতক্ষণ নানা রকম হাসি
ঠাট্টা চলছিল সেখানেই যেন অদ্ভুত একরকম থমথমে আবহাওয়া নেমে এলো।
গান শুনতে শুনতে দর্শকদের কারো কারো চোখের কোণ যেন একটু চিক চিক
করে উঠলো। গান এগোতে থাকলো –
মা কা দিল বনকে কভি সীনে সে লগ যাতা তু
আওর কভি ননহী সী বেটি বন কে ইয়াদ আতা হ্যায় তু
জিতনা ইয়াদ আতা হ্যায় মুঝকো উতনা তড়পাতা তু ......
জল আর শুধু চোখের কোণে চিক চিক করছে না। অশ্রুবারি আর লুকিয়ে
রাখা যাচ্ছে না , চোখের সীমানা ছাড়িয়ে তা নেমে পড়েছে গাল বেয়ে।
গালের মেক আপ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে , কাজল ধেবড়ে যাচ্ছে। গান আরো এগোতে
থাকলো –
সব বাঁধ ভেঙ্গে যেন অনেক দিনের জমা হয়ে থাকা জল উপচে পড়ল। সে
জলে সিক্ত হয়ে উঠলো উপস্থিত অনাবাসীদের পারফিউম-সুরভিত রুমালগুলি।
এও এক দেশ ! বুকের ভিতর লুকিয়ে থাকা সুখের মত একটা দুঃখ। কেউ
খুঁচিয়ে না জাগালে যেটা ঘুমিয়েই থাকে। যেটাকে স্মৃতির দূরবীন দিয়ে
দেখলে যতটা সুন্দর লাগে, চোখের সামনে হয়ত ততটা নয়। সেই দেশের একটা
ছবি বুকে আঁকা থাকে।
‘আমি যত দূরেই যাই
আমার সঙ্গে যায়
ঢেউএর মালা গাঁথা এক নদীর নাম
আমার চোখের পাতায় লেগে থাকে
নিকোনো উঠোনে
সারি সারি লক্ষ্মীর পা
আমি যত দূরেই যাই। ’
এও এক দেশ যার কোনো মানচিত্র নেই , যেখানে যেতে পাসপোর্ট ভিসা
লাগে না। যেখানে যাওয়া যায় তখনই যখন সেই সুখের মত লুকান দুঃখটি
বুকের ভিতর নিজের অজান্তে ব্রহ্মকমল হয়ে ফুটে ওঠে।
*****
পৃথিবীটা নাকি ছোট হতে হতে সেলফোন আর আইপড স্ক্রিনে বন্দী। মাউস
ক্লিক করলেই দূর দ্বীপ-বাসিনী ফ্রেন্ডের নাগাল। আর নিজের দেশের
‘মিস’ করবার মত কীই বা আছে ? এখন হনুলুলুতে বসেই খাওয়া যায় নলেন
গুড়ের সন্দেশ , আদ্দিস আবাবাতে বসে খাওয়া যায় মাছের মাথা দিয়ে
পুঁই শাকের চচ্চড়ি। পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে বসে ইউ টিউব খুললে
টাটকা কেঁদুলির মেলায় তরুণ বাউলের গান , বা ডোভার লেনে কৌশিকীর
গাওয়া মারু বেহাগ শুনতে পাওয়া কোনো ব্যাপারই নয়।
আর দেশের খবর ? সেতো না চাইতেই চোখে কানে ঢুকে পড়ছে অনবরত। বেখবর
থাকাটাইতো এখন মুসকিল।
একই কোলকাতায় , বেহালাতে বাস করে বাঁশদ্রোণীতে থাকা যে আত্নী্যের
সঙ্গে দেখা করা হয়েই ওঠেনা মাসের পরে মাস , বিদেশে বাস করে তার
সঙ্গে দিব্যি ফেবুতে চ্যাট অথবা স্কাইপে দেখা শোনা হয়ে যায়। বিজ্ঞান
তো জুড়ে দিয়েছে সারা পৃথিবীকে। যেটুকু বাকি আছে সেটুকূও জুড়ে দেবার
জন্যে উঠে পড়ে লেগেছেন মার্ক জুকেরবার্গের দল। তাহলে আর এই দেশের
জন্যে মন কেমন করার কোনো মানে হয়?
কি আছে সেখানে ? মাটি , শিকড় , স্বজন ? কারো শিয়রে গিয়ে বসার
ইচ্ছে , কাউকে জড়িয়ে ধরার ইচ্ছে , কারো পা ছোঁয়ার ইচ্ছে ? নাইবা
হোলো সে সব পাওয়া। তার বদলে মেইল চালাচালি, তার বদলে হোয়াটস আপ,
তার বদলে স্কাইপে। নাকের বদলে অন্য রকমের নাক। সেই বা মন্দ কি
?
*****
‘দেশ’ নামে একটি ভারতীয় রাগ আছে। খামাজ ঠাটের রাগ যার গায়ন সময়
রাত্রির দ্বিতীয় প্রহর। এই রাগটি যখন সৃষ্টি হয়েছিল সে সময় ‘দেশ’
রাগের সঙ্গে দেশপ্রেমের কোনো অনুষঙ্গ ছিল কিনা জানা নেই। তবুও
বঙ্কিমচন্দ্রের লেখা ‘বন্দে মাতরম’ গানে সুর করার সময় জন্মভুমি
দেশের কথা মাথায় রেখে রবীন্দ্রনাথ দেশ রাগটিই বেছে নেন। এর পরে
দেশপ্রেমের সব গানে দেশ রাগ লাগানো একটা প্রথার মত হয়ে যায়। অবশ্য
রবীন্দ্রনাথের তাঁর সব চেয়ে সুন্দর দেশপ্রেমের গান ‘সার্থক জনম
আমার’ কিন্তু বেঁধেছিলেন ভৈরবী রাগের ছোঁয়ায় (গানটি শুনতে চাইলে ক্লিক করুন
, থামাতে চাইলে আবার ক্লিক করুন )। তার কারণ কি এই
যে রবীন্দ্রনাথ এই দেশপ্রেম ব্যাপারটাকে প্রথার বাইরে গিয়ে একটু
অন্য রকম ভাবে দেখতেন ?
*****
বত্রিশ লক্ষ সাতাশি হাজার পাঁচশো নব্বই বর্গ কিলো মিটার একটি
ভূখন্ডের নাম ভারতবর্ষ। আলেকজান্ডার যে দেশকে দেখে বিস্মিত মন্তব্য
করেছিলেন , সত্য সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ। কপিলাবস্তুর সিদ্ধার্থ
, নবদ্বীপের নিমাই , আর শিমলের নরেন দত্ত এই দেশের আত্মার খোঁজে
চষে ফেলেছিলেন আসমুদ্রহিমাচল। রবীন্দ্রনাথ সে ভারতবর্ষকে বলেছেন
মহামানবের সাগরতীর। সেই দেশটাকে আমাদের মত ইতরজনা তেমন করে আর
কবেই বা বুঝতে পেরেছি। শুধু এ দেশে জন্মে নানাবিধ পদাঘাত পেয়ে
আমরা যখন জর্জরিত হয়েছি তখন এই দেশ নিয়ে আমাদের অনেক রাগ , দুঃখ
, ক্রোধ গুমরে গুমরে উঠেছে। ‘সকল দেশের রাণী’ , বা ‘সারে জঁহাসে
সে অচ্ছা’ নিয়ে নিজেরাই ব্যঙ্গ করেছি। তার পরে আবার কোনো বিশেষ
দিনে , সব ভুলে গিয়ে , একটি তীরঙ্গা পতাকাকে ভারতবর্ষ ভেবে স্যালুট
করেছি ভক্তি ভরে।
ভারতবর্ষ দেশ টা আসলে বইএর আলমারি তে রাখা রাজশেখর বসুর মহাভারতের
মত। হাতের কাছেই আছে , তবু পড়া হয় নি ভালো করে। হয়ত সারা জীবনে
হয়েও উঠবেনা কোনোদিন।
*****
যে চাঁদটি পেনিসেলভিনিয়া লেকের সরসী-আরসিতে মুখ দেখে , টাইমস
স্কোয়ারের মাথায় সোনার থালার মতন সেজে ওঠে , সেই চাঁদই তো নিশ্চিন্দিপুরের
অন্ধকারের বুক চিরে বাঁশ বাগানের মাথার উপর ধীরে ধীরে ওঠে। যাকে
দেখে কাজলা দিদির স্মৃতি মনে আসে। যেখানেই যাই সেই চাঁদটিকে আমরা
খুঁজে বেড়াই সারা জীবন। কারণ সেই চাঁদটিই আমাদের নাড়ি ধরে টান
মারে। সেই নিজস্ব চাঁদটির জন্যে যেমন রবি ঠাকুর আকুল হয়ে লেখেন
– কোন গগনে ওঠে রে চাঁদ এমন হাসি হেসে ......
সেই চাঁদ টির জন্যে জগজিত সিং-এর একটি গান , যেটি বিদেশের যে
কোনো অনুষ্ঠানে গাইতে বাধ্য হতেন – (গানটি শুনতে চাইলে ক্লিক করুন , থামাতে চাইলে আবার ক্লিক করুন )
...রাত নে এইসা পেচ লগায়া টুটি হাত সে ডোর
অঙ্গন ওয়ালি নিম মে জা কর অটকা হোগা চাঁদ
হম তো হ্যায় পরদেশ মে , দেশ মে নিকলা হোগা চাঁদ ......।
আমাদের বাঙ্গাল (বাঙ্গালরা মাফ করবেন ) বন্ধুরা যখন গল্প শুরু
করতেন – আমাগো দ্যাশে একখান পুকুর ছ্যাল , সে পুকুরের বোয়াল মাছে
যে কি সোয়াদ ছেল ... , আমরা, মানে ঘটিরা অমনি মুখ টিপে হাসতাম।
কারণ দেশকে ছেড়ে আসার যন্ত্রণা আমরা পাইনি। তাই সহজেই তাদের ব্যঙ্গ
করতে পারতাম।
আমি কখনো এ দেশ ছেড়ে মাস তিনেকের বেশি থাকিনি। অনেক দিনের জন্যে
এ দেশটাকে ছেড়ে থাকলে কেমন লাগে তা জানি না। তাই কখনো টনটনে ব্যথা
কখনো অনুভব করিনি তার জন্যে। বরং সকাল সন্ধে এ দেশটার নিন্দেই
করে যাই কারণে অকারণে। তাই যারা এ দেশ ছেড়ে পরবাসী হয়ে অন্য দেশে
থাকেন তাদের ব্যথাটা আমি সহজেই বুঝে নেব এমনটা দাবী করিনা।
তবু যে টুকু বুঝতে পারি , তাদের কাছে দেশ মানে হয়ত ছেড়ে আসা একটি
ছোট্টো গলি , বৃষ্টি তে ঝাপসা হয়ে যাওয়া একটি মাঠ , একটা বাড়ির
ছাত থেকে ঘুড়ি ওড়ানো , শীতের দুপুরে রোদ পিঠ করে বসার খাটিয়ায়
বসে পড়সিদের সঙ্গে গল্প গুজব , ঝুপসি মার্কা চায়ের দোকানে বসে
বন্ধুদের সঙ্গে ডবল হাফ চায়ের গেলাশ , ভোরবেলায় ঢং ঢং করতে করতে
ঢিমে তেতালার চলা ট্রামগাড়ি , এঁদো পুকুরের ধারে কয়েকটা নুয়ে পড়া
গাছ , কচু পাতার উপর টলটলে দু ফোঁটা জল , ঠাকুমার তৈরি আমের আচার
, বড়মাসির হাতে বোনা সোয়েটার , ভাইফোঁটার দিন দিদির হাতে বানানো
নারকেলের নাড়ু আরো কত কি যে।
সেই দেশটার খবর , গুগল সার্চে পাওয়া যাবেনা , সে দেশটাকে মার্ক
জুকেরবার্গরা জুড়ে দিতে পারবেন না। জানি, আমি তাদের সেই দেশ-টার
নাগাল আমিও কোন দিন পাবোনা , তবু -
‘তোমার সেই দেশেরই তরে আমার মন যে কেমন করে ......। ’
গানের লিঙ্কগুলি ইউ টিউব থেকে নেওয়া।
লেখক পরিচিতি - চাকুরী জীবন বেসরকারি এবং আধা সরকারি কর্পোরেট জগতের বিভিন্ন পদে। এখন অবসরপ্রাপ্ত। লেখেন নেহাতই মনের খিদে মেটাতে। লেখেন নানান বিষয় নিয়ে। তবে যাই লেখেন বিষয় নির্বাচনে কিছু অভিনবত্ব থাকে। গান , চলচ্চিত্র, ভ্রমণ, দিন বদলের ছবি, বাঙ্গালিয়ানা এ রকম আরও অনেক বিষয় এবং অবশ্যই রবীন্দ্রনাথ। তথ্যকে কৌতুকের মোড়কে এবং ভাবনা কে স্বচ্ছতার আবরণে পরিবেশন করতে চেষ্টা করেন। বিষয় যাই হোক ভাষা সব সময়েই ঝরঝরে, রসস্নিগ্ধ এবং মনোগ্রাহী।
বেশ কয়েকটি ওয়েব পত্রিকাতে লেখেন। দেশ বিদেশে অনেক গুণগ্রাহী পাঠক আছেন।