অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।


খেলা‘ঘর’ বাঁধতে লেগেছি

অবসর বিশেষ সংখ্যা সেপ্টেম্বর ১, ২০১৭

 

মুকুটের অপেক্ষায় ফুটবলের ক্রুশবিদ্ধ যীশু

অরিন্দম মুখোপাধ্যায়

একটা স্বপ্ন। সেই স্বপ্নটাকে সত্যি করার জন্য অপরিসীম পরিশ্রম। তারপর সেই স্বপ্নের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া। হৃদয় যখন ডানা মেলতে শুরু করেছে ঠিক তখনই স্বপ্নভঙ্গের নিস্তব্ধতা নিস্তেজ করে দেয় উত্তেজনায় ফুটে ওঠা মনটাকে। অবশ করে দেয় লড়াইয়ে ক্ষত বিক্ষত হয়ে যাওয়া শরীরটাকে। আর এগোতে ইচ্ছে করে না। ভাঙা কাঁচের মতো সাহসের টুকরোগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায় চারিদিকে। সেই টুকরো গুলোকে কুড়িয়ে এনে এক সুতোয় বাঁধার জন্য যে আশা দরকার সেটাই হারিয়ে গিয়ে লুকিয়ে থাকে অন্ধকার কোনো এক চিলেকোঠার ঘরে। আর সেটা যদি আপনার সাথে বার বার হয়। প্রতিটা চেষ্টার পর শেষ ধাপে গিয়ে কেউ যদি গলা টিপে খুন করে দেয় স্বপ্নটার। এগোতে ইচ্ছে করে না আর। ২০১৪ র ব্রাজিল, ২০১৫ র চিলি আর ২০১৬ র আমেরিকা যার সাক্ষী। প্রতিটা ফাইনালের পর তিনি যখন রানার্স আপের ট্রফি নিতে যাচ্ছিলেন তার মুখের মধ্যে সেই হতাশার ছবি ধরা পড়েছিলো। এমনকি রিওতে বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হিসাবে গোল্ডেন বল নিতে যাওয়ার সময় মনে হচ্ছিলো তিনি যেন গিলোটিনের দিকে হেঁটে যাচ্ছেন মৃত্যুর সাথে কোলাকুলি করতে। তারপর ২০১৬ তে অবসর ঘোষণা করা বুঝিয়ে দিয়েছিলো কী পরিমাণ মানসিক পীড়ার মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবুও অনেকের কাছেই এসব নাটক, সিম্প্যাথি আদায়ের চেষ্টা আর নিজেকে প্রমোট করে সমালোচনার হাত থেকে বেঁচে যাওয়ার রাজনীতি। পৃথিবী দিন দিন এতটাই যান্ত্রিক হয়ে উঠছে যে আবেগে - হতাশায় ভেঙে পড়া কান্নাও তার রাজনীতি বলে মনে হচ্ছে। তবে তাতে দোষের কিছু নেই। কলিযুগে সবই সম্ভব আর কী!

কত কাছে, তবু কত দূরে

ছোটবেলা থেকে লোকটাকে এসব সহ্য করেই বেঁচে থাকতে হয়েছে। নিজের শরীর যার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে পৃথিবীর দ্বারা সে প্রতারিত হবেই এতে আর আশ্চর্য কী? এগারো বছর বয়সে গ্রোথ হরমোন ডেফিসিয়েন্সি রোগে জর্জরিত হয়ে নিজের দেশ, পরিবার ছেড়ে স্পেনের উদ্দেশে রওনা দেওয়া। তারপর বার্সেলোনায় যোগদান। প্রতিদিন পায়ের পাতায় রোগ নিরাময়ের জন্য একটি করে ইনজেকশন। তবুও যখনই বলের সাথে পায়ের স্পর্শ হতো মাথা নীচু করা শান্ত, রুগ্ন ছেলেটা যেন এক দৈত্য হয়ে ছিঁড়ে খেত বিপক্ষকে। জীবনে ঘটে যাওয়া প্রতিটা কষ্ট, প্রতিটা বেদনা যেন ফেটে বেরিয়ে আসতো গোল হয়ে। প্রতিটা ড্রিবল, নিজের থেকে বয়সে দ্বিগুণ বড়ো ছেলেদের একটা পায়ের টোকায় হুমড়ি দিয়ে ফেলা যেন বলতে চাইতো আমিই সেরা, আমিই শ্রেষ্ঠ। নিজেকে প্রণাম করার যে তাগিদ তা বেরিয়ে আসতো গোলের দিকে বাজের মতো দৃষ্টিতে। তাই বার বার ফিরে এসেছেন তিনি। দেশবাসীর দ্বারা অপমানিত হয়ে ফিরে এসেছেন। বার বার অসফল হয়ে ফিরে এসেছেন। বার বার হারের কান্নার বোঝা বুকের মধ্যে বয়ে নিয়ে জেতার তাগিদে ফিরে এসেছেন। তাই আবার ফিরে এলেন অবসর ঘোষণার পরেও। দেশের জন্য। জানতেন পৃথিবী আবার মেতে উঠবে নোংরা হাসাহাসিতে। সোশাল মিডিয়ায় ট্রলের বন্যা বয়ে যাবে। তাও ফিরে এলেন তিনি। দেশকে ভালোবেসে। ফুটবলকে ভালোবেসে।

৬ এপ্রিল, ২০১০। প্রথম লেগে ২-১ এ আর্সেনালের কাছে হার। এই ম্যাচেও শুরুতেই নিকোলাস বেন্টনারের গোলে পিছিয়ে পড়া। মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি । তার মনের মধ্যে বয়ে যাচ্ছিলো অপমানিত - লাঞ্ছিত হওয়ার গ্লানি। তাই শুরু করলেন তিনি বিদ্যুৎ বর্ষণ। আর চ্যাম্পিয়নস লিগ দেখল প্রথম কোনো ম্যাচে একজন প্লেয়ারের চার গোল দেওয়ার ইতিহাস। প্রথম গোল বুলেট শটে। দ্বিতীয় টা অসাধারণ প্লেসিং এ। তৃতীয় টা লব বা চিপ, যা ঐশ্বরিক বল কন্ট্রোল ছাড়া সম্ভব নয়। আর চতুর্থটি চারজনকে গায়ে নিয়ে গোলকিপারকে নাটমেগ (Nutmeg)# করে অনবদ্য ফিনিশিং।

১২ই মার্চ, ২০১৩। পরের দিন আমার ক্লাস ইলেভেনের কেমিস্ট্রি পরীক্ষা। মাকে শুয়ে পড়বো বলে চুপি চুপি উঠে টিভির সামনে বসেছি। অবস্থা খুবই শোচনীয়। প্রথম লেগে ২-০ গোলে এসি মিলানের কাছে হার। চারদিকে অসংখ্য কুৎসা চলছে। আবার জ্বলে উঠলো সেই বাঁ পা। ছয় মিনিটে প্রথম গোল। তিনি থেকে জাভি, জাভি থেকে বুস্কেটস, বুস্কেটস থেকে ইনিয়েস্তা, ইনিয়েস্তা থেকে জাভি। জাভি থেকে তিনি এবং জাল কেঁপে উঠলো। আবিয়াতি দেখলেন বলটা আস্তে আস্তে জালে জড়িয়ে যাচ্ছে। এ যেন মহাজাগতিক ফুটবল। পাসিং আর প্রেসিং এর এক অভূতপূর্ব ককটেল। দ্বিতীয় গোল। ইনিয়েস্তা বল ধরে টেনে আনলেন, তাকে দিলেন ডানদিকে। একটা টার্নিং শট। আর বলটা সোজা গিয়ে জালে আছাড় খেলো। একা কাটিয়ে গোল হোক কিংবা বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার শট। অসাধারণ ওয়ান টু হোক কিংবা দূর থেকে ডিফেন্সকে ছিঁড়ে ফেলা পাস। সবেতেই তার অবাধ বিচরণ।

২৩ শে এপ্রিল ২০১৩। আতঙ্কের রাত। সমগ্র পৃথিবীবাসী লেগে পড়েছিলো নিন্দা আর কুৎসা করতে। সে যতই চোট থাকুক। ৪-০ দুরমুশ হওয়া মানা যায় নি। পরের লেগেও খেলতে পারলেন না তিনি। প্রেমের কাম্প নাউ তে প্রাণের টিম কে ৩-০ র গ্লানিতে তলিয়ে যেতে দেখলেন। মনে হলো কেউ যেন তার মুখে বিষণ্ণতার রঙ তুলি দিয়ে লাগিয়ে দিচ্ছে, আর তিনি মাথা নত করে দাঁড়িয়ে আছেন। আত্মগরিমায় আঘাত লেগেছে যে। ফুটবলের সাথে তার সম্পর্ক নিয়ে কথা উঠতে শুরু করেছে। সব মেনে নিলেন তিনি। মুখ বুঝে। কিন্তু ভেতর টা পুড়ছিল দাবানলের আগুনে। প্রতিটা মাথা নত অবস্থায় কাটানো মুহূর্ত বুকে বজ্রপাত ঘটাচ্ছিল। তারপর কেটে গেলো দুটো বছর।

৭ ই মে। ২০১৫। সেই এক ই দল। আবার। সেই সবাই গ্লানিমাখা অতীতের আলোচনা করছিলো। বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলছিলেন এবারও একই দশা হবে। কারণ এবার কোচ তার প্রাক্তন গুরু পেপ, যার তত্ত্বাবধানে তিনি হয়ে উঠছিলেন বিশ্ব ফুটবলের অবিসংবাদিত সম্রাট। তাঁর সব কিছু পেপের নখদর্পণে। তার পর তাদের বিপক্ষ গোলকিপার পৃথিবীর সেরা এবং তিনি চ্যালেঞ্জ জানালেন মাঠেই দেখিয়ে দেবেন প্রকৃত Boss কে। তিনি কোনো কথা বলেন নি। অপেক্ষা করছিলেন শুধু বাঁশি বাজার। ভেতরের দাবানল আগ্নেয়গিরি হয়ে উঠতে শুরু করেছে। বিপক্ষ গোলকিপারের এই মন্তব্য একটা ছোট্ট ভূমিকম্প ঘটিয়ে দিলো।

চার মিনিটের ব্যবধান - হোয়াট হ্যাপেন্ড? - “মেসি” হ্যাপেন্ড!

অগ্নিবর্ষণ ঘটলো ম্যাচের সাতাত্তর মিনিটে। দানি আলভাজের পাশ থেকে বল নিয়ে তার শট করলেন। বিপক্ষ গোলকিপারের পাশ দিয়ে বল আছড়ে পড়লো জালে। হাজার চেষ্টা করেও সেভ করতে পারলেন না তিনি। গোটা কাম্প নাউ তখন ফেটে পড়ছে চিৎকারে। তার নামে জয়ধ্বনি চলছে। কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি, এটা শুধু কালবৈশাখী ছিল। টর্নেডো আসা এখনও বাকী। মিনিট আশি। রাকিতিচের পাস থেকে বল পেলেন তিনি। তারপর বক্সে ঢুকলেন। একটা আলতো ডজে বোয়েতাং ছিটকে পড়লেন মাটিতে। তারপর গোলকিপারের মাথার উপর দিয়ে সেই বিখ্যাত চিপ। গোটা কাম্প নাউ য়ে যেন বসন্ত এসে গেলো। যেন কেউ গোলাপের গন্ধ ছড়িয়ে দিয়েছে। আর তার সাথে কিশোরের গান বাজছে "তুম ভি চলো হম ভি চলে চলতি রহে জিন্দেগী"। সূর্যের আভাতে আস্তে আস্তে অন্ধকার কাটছে। তার থেকে ভেসে উঠছে সেই পরিচিত মুখ। সেই পরিচিত পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চির চেহারাটা।

এই জিনিসটাই আরও পীড়াদায়ক। বার্সিলোনার হয়ে তার অকল্পনীয় সাফল্য। আট আটটি লা লিগ। চারটি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ। তিনটে ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ। তার সাথে রয়েছে দুটি ট্রিবেল একটি সিক্সট্রিপেল জেতার গরিমা। তার ঘরের ক্যাবিনেটে শোভা পাচ্ছে পাঁচটি ব্যালন ডি ওর। তাই সবার মনে একটাই প্রশ্ন। কোথায় যায় এই সাফল্য নীল - সাদা জার্সি গায়ে চাপলে। কোথায় যায় এই গোলবন্যা দেশের হয়ে পারফরমেন্সের মঞ্চ এলে। তাদের কাছে একটা মাঝারি মানের দলকে একক কৃতিত্বে ফাইনালে তোলা টা সাফল্য নয়। তাদের কাছে মাঝমাঠে খেলেও বার বার গোল করে ম্যাচ জেতানো কৃতিত্ব নয়। তারা এটা কবে বুঝবেন নিজেই নিজেকে পাস দিয়ে গোল দেওয়া যায় না। এটা সম্ভব হলে হয়তো সব তর্কের অবসান অনেক আগেই হয়ে যেত। তবুও সতীর্থদের উপর কোনো ক্ষোভ দেখান নি তাদের সম্পর্কে কোনো খারাপ মন্তব্য করেন নি। মুখ বুঝে সব সমালোচনা সহ্য করেছেন। গোটা দলের অসফলতার দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। কখনও অন্য কারোর দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন নি। আর্জেন্টিনার হয়েও ব্যক্ত করে গেছেন ম্যাজিক। প্রতিটা ম্যাচে মাঝমাঠে খেলেছেন। খেলছেন। গোল করে চলেছেন। দেশের জার্সিতে সর্বোচ্চ গোলদাতার তকমাও এখন তার গায়ে। এত এত স্টার প্লেয়ার থাকা সত্ত্বেও, তিনি না থাকলে আর্জেন্টিনার রুগ্ন চেহারাটা প্রকাশ পেতে শুরু করে। তবুও তাকে কটাক্ষ করা হয়। প্রতিবার শেষ পর্যায়ে এসে হোঁচট খেতে হয়। তিনি পাস সাজিয়ে দিলেও সতীর্থরা গোল করতে পারেন না। প্রতিটা ফাইনালে এই ছবি বহাল থেকেছে। তাও তার কোনো অভিযোগ নেই।

সব ম্যাজিকের শেষে পরিচিত অটোগ্রাফ

তার জীবনে কোনো জিনিসের খামতি নেই। সব কিছু পেয়ে গেছেন তিনি জীবনে। টাকাপয়সার কোনো অভাব নেই। ট্রফির কোনো অভাব নেই। ব্যক্তিগত সাফল্যেও আপাতত সবচেয়ে এগিয়ে তিনি। আবার সবাই যখন বলেই দিয়েছিলেন বিশ্বকাপ না জিতলেও তিনি সর্বকালের সেরাদের একজন। সতীর্থ মহারথীরা তো বলেন তিনি ই সর্বকালের সেরা। তবুও কেন তিনি ফিরে এলেন অবসর ভেঙে? কেন তিনি সুখে শান্তিতে বার্সেলোনায় খেলাটাকে বেছে নিলেন না? কেন অসংখ্য বার অপমানিত হতে হবে, ট্রল হতে হবে জেনেও ফিরে এলেন? কেন আবার চাপের বাটখারাটাকে নিজের কাঁধে বইতে এলেন ? কেন সেই জার্সিতে ফিরে এলেন যেখানে তিনি না থাকলে সব শূন্য ? কেন ফিরে এলেন সেই জার্সিতে যেখানে হেরে গেলেই স্পেনীয় বলে অপমান করা হয়? কেন? কেন? কেন বার বার স্পেনের হয়ে খেলে বিশ্বকাপ জেতার অফার প্রত্যাখ্যান করলেন? কিছুতেই এসবের উত্তর পাচ্ছিলাম না। আপনিও পাবেন না। অনেক অনেক ভাবুন কিন্তু খুঁজে পাবেন না। কিন্তু হঠাৎ এক বিখ্যাত সিনেমার একটা লাইন আমার কাছে সবটা পরিষ্কার করে দিলো। আপনারও হয়তো জানেন। পরিষ্কার হতে শুরু করলো সবটা। জট পাকিয়ে যাওয়া সুতোর মতো প্রশ্ন গুলো আস্তে আস্তে এক একটা পাখি হয়ে স্বাধীনভাবে উড়তে শুরু করলো। বোঝা গেল কেন তিনি সব কিছুকে দূরে সরিয়ে, সব অপমান কে স্বীকার করে আবার ফিরে এলেন। বোঝা গেলো কেন আজও তার কাছে দেশ সব থেকে আগে। বোঝা গেলো সব কিছু পাওয়ার পরও আজও কী তাকে উদ্বুদ্ধ করে। বোঝা গেলো কেন নিশ্চয়তার জীবনকে দূরে সরিয়ে কীসের উদ্দেশ্যে আবার সেই অনিশ্চয়তার সাগরে ঝাঁপ দিলেন তিনি।

অবসরের এক বছর কেটে গেছে। তার দেশ বিশ্বকাপের মূল পর্বে পৌঁছানোর লড়াই চালাচ্ছে। যেখানে প্রতিটা ম্যাচ প্রায় ডু ওর ডাই। তবুও একটা নিশ্চয়তা কাজ করছে মনে তিনি আছেন যখন আর্জেন্টিনা পারবে। এই বিশ্বাস বাঁচিয়ে রাখতে ফিরে এলেন তিনি। গোটা মাঠে অর্ধেকের বেশী দর্শকের পিঠে জার্সিতে তার নাম। এই উন্মাদনার সাক্ষী থাকতে ফিরে এলেন তিনি। কোনো এক আফগানী শিশু যুদ্ধের দাবদাহের মধ্যেও জীবনের রসদ খুঁজে পায় তার দিকে তাকিয়ে। সেই অনুপ্রেরণা হতে ফিরে এলেন তিনি। অফিস ফিরতি ছেলে বৃদ্ধ বাবার সাথে রাতে একসাথে খেলা দেখতে বসে। এই ভালোবাসার বন্ধন হতে ফিরে এলেন তিনি। পরীক্ষা ভালো না দেওয়া ছেলেটা একটা ইউটিউব ভিডিও দেখে আনন্দে কেঁদে ওঠে। এই আনন্দের উৎস হতে ফিরে এলেন তিনি।

স্বপ্ন দেখার শুরু যেখান থেকে

২০১৪ র পর দেখতে দেখতে তিনটে বছর কেটে গেছে। আর একবছর বাদে স্ট্যালিনের দেশ সেজে উঠবে বিশ্বফুটবলের রাণীকে বরণ করে নিতে। প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। তার মাঝেই এখনও কোয়ালিফাই না করা একটা দেশকে বিশ্বকাপ জয়ী হিসাবে দেখতে চাইছে কোটি কোটি মানুষ। শুধুমাত্র ঐ নামটা দেশটার সাথে জড়িত বলে। কত মানুষ কাঁদে তার সাথে, কত মানুষ হাসে তার হাসিতে। দামামা বাজছে বিশ্বকাপের। কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। সব দেশ প্রস্তুতি চালাচ্ছে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে। সবাই নিজেকে নিংড়ে দিতে বদ্ধ পরিকর হচ্ছে। কিন্তু কোথাও যেন একটা বাতাস বয়ে যাচ্ছে। একটা বাঁশির সুর ভেসে বেড়াচ্ছে তার সাথে। আস্তে আস্তে বৃষ্টি থামছে।

পরিষ্কার হচ্ছে আকাশ। কালো মেঘ সরিয়ে নীল - সাদা পেঁজা পেঁজা মেঘ ঢেকে দিচ্ছে গোটা রাশিয়াকে। আর ফুটবলের রাণীকে চুম্বন করছেন তার রাজা। এই স্বপ্ন দেখছেন কোটি কোটি মানুষ। আশায় বুক বাঁধছেন তারা। আর এই স্বপ্নটা দেখাতেই তো ফিরে এলেন তিনি।

কারণ সেই বিখ্যাত সিনেমার সংলাপটা মনে আছে

"With Great Power Comes Great Responsibility "

# নাটমেগ- (Nutmeg) - ফুটবলে ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বল বের করে নিয়ে যাওয়াকে বলা হয় ‘নাটমেগ‘। মেসি-নেইমারদের কল্যাণে অহরহ এই অবিশ্বাস্য পায়ের কারুকাজের দেখা মেলে।



লেখক পরিচিতি: বর্তমানে ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। বাড়ি সাঁত্রাগাছি, জগাছা। ভালোলাগার মধ্যে বই পড়া, বেড়ানো, গান শোনা, গান গাওয়া আর অল্প স্বল্প লেখালেখি।

 

(আপনার মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)

অবসর-এর লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.