প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

সঙ্গীত

জুলাই ৩০, ২০১৫

 

খেয়াল

খেয়াল গান ভারতীয় সঙ্গীতের প্রধান শৈলীগুলির অন্যতম। এই খেয়াল গানের সৃষ্টিপর্ব নিয়ে যথেষ্ট মতভেদ আছে। খেয়ালের প্রকৃত ইতিহাস পাওয়া যায় না। কথিত আছে, ত্রয়োদশ খৃষ্টাব্দে আলাউদ্দিন খিলজির আমলে বহু প্রতিভাধর সঙ্গীতবিদ আমীর খসরু এই নবশ্রেণীর সঙ্গীত সৃষ্টি করেন। আবার কেউ কেউ বলেন মহম্মদ শাহ-এর দরবারে বীণাকার গায়ক সদারঙ্গ এবং অদারঙ্গ এই শৈলীর স্রষ্টা। একথা সত্যি যে,সদারঙ্গ ও অদারঙ্গ - এই দুই ভাই-ই খেয়াল গানকে মর্যাদান্বিত এবং জনপ্রিয় করেন। আজও বহু খেয়াল গানের বন্দিশে তাঁদের নাম দেখা যায়। 'বন্দিশ' শব্দের অর্থ (যা পণ্ডিত অজয় চক্রবর্ত্তীর কাছে জেনেছি) রাগে বদ্ধ বাণী। পাঠান আমলে জৌনপুরের নবাব সুলতান হুসেন শাহ শর্কীও অনেক খেয়াল রচনা করেন। এছাড়া বহু উস্তাদ ছদ্মনামে অনেক বন্দিশ রচনা করে গেছেন যথা: সবরঙ্গ (উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি), মনরঙ্গ (উস্তাদ সলমত আলি খন), অচপল, সনদ, চাঁদপিয়া, ছবিনায়ক, চর্জু, রঙ্গরস, দয়াসখী প্রমুখ|

খেয়াল শব্দটি (আসলে শুদ্ধ কথাটি হলো খয়াল) আরবী ও ফারসী ভাষা থেকে উদ্ভূত। এর অর্থ হল কল্পনা বা ভাবনা (হিন্দী ছায়াছবি 'চলতি কা নাম গাড়ীতে কিশোর কুমার ও আশা ভোঁসলের কণ্ঠে গীত একটি গানের কলি আশা করি অনেকের মনে আছ -- "হাল কেইসা বা ভাবনা (হিন্দী ছায়াছবি 'চলতি কা নাম গাড়ীতে কিশোর কুমার ও আশা ভোঁসলের কণ্ঠে গীত একটি গানের কলি আশা করি অনেকের মনে আছ -- "হাল কেইসা হ্যায় জনাব কা?।ক্যা খয়াল হ্যায় আপকা")।

ধ্রুপদ গানের কাঠামোকে ভিত্তি করে খেয়াল গানের উদ্ভব হয়েছে।এ বিষয়ে একটি সাক্ষাতকারে উস্তাদ সলমত আলি খান একটি ভারী সুন্দর কথা বলেছেন, " ধ্রুপদ ঔর খয়াল কা রিস্তা, বাপ-বেটেকা রিস্তা হ্যায় (ধ্রুপদ ও খেয়ালের সম্বন্ধ পিতা-পুত্রের মত)। তবে ধ্রুপদ শৈলীর গানে কিছুটা বাঁধা-ধরা রূপ ও নিয়ম-শৃÍলার বিধি-নিষেধ বর্তমান। কিন্তু খেয়াল অঙ্গের গান তুলনামুলকভাবে স্বাধীন। খেয়াল গায়কের স্বাধীনতা এবং সৃষ্টিশীলতা বহুল পরিমাণে স্বীকৃত। গানের মাঝে তান, স্বরবিস্তার, সর্‌গম ও বোলতান-বাঁটের প্রয়োগ খেয়াল গানকে অন্য শৈলীর গান থেকে আলাদা করছে এবং অনেক উঁচু মার্গে স্থাপন করেছে। ধ্রুপদের মত খেয়াল চার-কলি বিশিষ্ট হয় না। খেয়ালে সাধারনতঃ দুই কলি বা তুক্ থাকে। খেয়াল গান দুই ভাগে বিভক্ত - একটি বিলম্বিত লয়ে গীত হয়; এর তাল ত্রিতাল, ঝুমরা ,একতাল, আড়া চৌতাল, তিলবাড়া, দীপচন্দী প্রভৃতি। এই বিলম্বিত রীতির খেয়ালকে বড় খেয়ালও বলা হয়। দ্বিতীয়টি মধ্যলয় ও দ্রুতলয়ে ত্রিতাল,একতাল, ঝাঁপতাল, রূপক, তিব্‌রা প্রভৃতি তালে গীত হয়। এইটি ছোট খেয়াল নামে পরিচিত।আজকাল অনেক শিল্পী দ্রুত লয়ে তরানা গেয়ে থাকেন যার বাণীতে দ্রিম. তানা, নানা, নদির তোম ইত্যাদী পারসিক শব্দ থাকে।

উদাহরণ হিসেবে এখানে উস্তাদ সলামত আলি খানের গাওয়া (পাক নিখর টি ভি-র জন্য) একটি  বিলম্বিত খেয়াল ও দ্রুত তরানা-র লিন্ক দেওয়া হল -- রাগ মাধ কল্যাণ। 

শেষ সংযোজন/পরিমার্জনা - পুষ্পেন্দু সুন্দর মুখোপাধ্যায়


লেখক পরিচিতি -

 

(আপনার মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)

অবসর-এর লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.



অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।