সঙ্গীত
জুলাই ৩০, ২০১৫
রাগ
রাগ কথাটির অর্থ হল রঞ্জন এবং রঞ্জন মানে হল প্রীতিসম্পাদন। সঙ্গীতের পরিভাষায় রাগ হল স্বর ও বর্ণের চিত্তাকর্ষক বা প্রীতিকর রচনা। তবে শুধুমাত্র প্রীতিকর স্বর রচনা করলেই তা রাগ হবে না,তাহলে প্রত্যেকটি ভাব-সঙ্গীতই - যেমন, ভজন, গীত, লোকগীত, আধুনিক, সিনেমা-সঙ্গীত - রাগসঙ্গীত আখ্যা পেত। রাগ রচনার ক্ষেত্রে কতকগুলি শর্ত মেনে চলতেই হবে:
[১] রাগ রচনার সময় ঠাট থেকে স্বর নিতে হবে। ঠাট হচ্ছে রাগের স্বর কাঠামো, অর্থাত্ মোটামুটি একই স্বর (তা সম্পূর্ণ ভাবে হোক বা আংশিক ভাবে হোক) যে রাগগুলিতে থাকে তাদের একই ঠাটের অন্তর্গত বলা যায়। প্রসিদ্ধ সঙ্গীতজ্ঞ বিষ্ণু নারায়ণ ভাতখণ্ডে উত্তর ভারতীয় রাগগুলিকে মোট দশটি ঠাটে বিন্যস্ত করেছেন। এর হল আশাবরী, ভৈরব, ভৈরবী, বিলাবল, কাফি, কল্যাণ, খমাজ (বা খাম্বাজ), মারোয়া, পূর্বী (বা পূরবী) ও তোড়ী। যে রাগের নামে ঠাটের নাম হয় তাকে জনক রাগ ও অন্য রাগগুলিকে জন্য রাগ বলে। যেমন আশাবরী ঠাটের ক্ষেত্রে জনক রাগ হলো আশাবরী আর জন্য রাগগুলি হলো আড়ানা, দরবারী কানাড়া, দেসি (বা দেশী), জৌনপুরী, কৌষি কানাড়া প্রভৃতি।
[২] সাধারণ ভাবে একটি রাগে পাঁচটির কম আর সাতটির বেশী স্বর থাকে না। স্বরের সংখ্যা দিয়ে রাগের জাতি নির্ণয় করা হয়, যথা ঔড়জব (পাঁচটি স্বর), শারভ (ছয়টি স্বর) ও সম্পূর্ণ (সাতটি স্বর) এই তিনটি জাতিতে রাগগুলিকে ভাগ করা যায়। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে সাতটির বেশী স্বর ব্যবহার হতে পরে। যেমন ইমন-কল্যাণ রাগে নামার সময় সা, নি, ধা, পা, মা (কড়ি), মা (শুদ্ধ), গা ও রে।
[৩] কোন রাগের ক্ষেত্রে কখনোই এক সঙ্গে ম ও প দুটি স্বর বর্জিত থাকবে না।তাছাড়া স স্বরটি কোন রাগেই বর্জিত নয়, কারণ এটি মুল স্বর।
[৪] রাগের ক্ষেত্রে আরোহ এবং অবরোহ দুই থাকে। আরোহ-অবরোহ না থাকলে রাগের স্বরূপ এবং তার গতি বা চলন বোঝা যায় না।
[৫] প্রতিটি রাগেই একটি বাদী ও একটি সম্বাদী স্বর থাকা দরকার।
[৬] রাগ পরিবেশনের সময় নির্দিষ্ট থাকা দরকার।
শেষ সংযোজন/পরিমার্জনা - পুষ্পেন্দু সুন্দর মুখোপাধ্যায়
লেখক পরিচিতি -
(আপনার
মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)
অবসর-এর লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য
অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।