প্রথম পাতা

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

সাহিত্য

ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭

 

হৃদিকমলের নির্বাসনঃ গের্ট্রুড কোলমার

নন্দিনী সেনগুপ্ত


১৯৪১ সালের জুলাই মাসে একটি চিঠিতে গের্ট্রুড কোলমার তার বোন হিল্‌দেকে লিখেছেন: ‘হ্যাঁ, আমি কবি, সেটা আমি নিশ্চিতভাবে জানি। কিন্তু আমি কখনোই একজন লেখক হতে চাইনি।’ ঠিকই, জার্মান ভাষার এই ইহুদি লেখিকা আধ্যাত্মিক ভাবনা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন ব্যক্তিজীবনের সমস্ত ওঠাপড়া পর্যন্ত সব রকমের অনুভূতিকে ব্যক্ত করবার এক সুনির্দিষ্ট মাধ্যম হিসেবে কবিতাকেই বেছে নিয়েছিলেন। কবিতাই ছিল তার ধ্যান, জ্ঞান এবং নিশ্বাসপ্রশ্বাস। ক’জন কবি নিজের জীবদ্দশায় এরকম প্রত্যয়িত উচ্চারণ করে যেতে পারেন? বলে যেতে পারেন, ‘হ্যাঁ, আমি কবি’?

গের্ট্রুড মাত্র তিনখানি কবিতার সংকলন প্রকাশ করেছিলেন। খুব স্বাভাবিক কারণেই নাৎসি আমলের জার্মানির অস্থির অধ্যায় না জানলে গের্ট্রুডের কবিতার মর্ম অনুধাবন করা অসম্ভব। যখনই পৃথিবীতে যুদ্ধ লাগে, অথবা কোনও না কোনও সামজিক হিংসা এবং অস্থিরতায় পদদলিত হয় মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার, তখন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সমাজে অপেক্ষাকৃত কম বলশালী অংশ, যেমন নারী, শিশু এবং বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। এই ক্ষতিগ্রস্ত অংশের আহত অনুভূতি বারে বারে ব্যক্ত হয়েছে তার কবিতায় বিভিন্ন রূপক এবং চিত্রকল্পের সাহায্যে।

‘দাস হ্যার্জ’(হৃদয়) কবিতায় হৃদয়ের সঙ্গে তিনি তুলনা টেনেছেন মূর্ছিত কমলকুঁড়ির; বলেছেন কমলবন উজাড়, দলিত, মথিত হয়ে যাওয়ার কথা। ‘ম্যারশ্যেন’(রূপকথা) কবিতায় বৃক্ষশাখায় দেখেছেন হতাশ প্রেমিকার ছিন্ন বাহুর আদল। এই বিষাদ, গভীর আঁধারের মধ্যেও তার কবিতায় সবসময় আমরা শুনতে পাই আশাবাদের জয়গান। সমস্ত প্রতিকূলতাকে পরাস্ত করে আসে একটি আলোর রেখা; মানুষের প্রতি, মানবতার প্রতি বিশ্বাস প্রতিফলিত হয় তার বেশিরভাগ লেখাতেই। হয়ত সেই কারণেই, ১৯১৭ সালে গের্ট্রুড কোলমারের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ইম হের্বস্ট’ (হেমন্তে) প্রকাশিত হবার ১০০ বছর পরেও তার লেখা আলোচিত হয় সাহিত্যবোদ্ধাদের মধ্যে এবং তাঁকে গণ্য করা হয় জার্মান ভাষায় অন্যতমা সেরা লেখিকা হিসেবে।

গের্ট্রুড কোলমার, প্রকৃত নাম ছিল গের্ট্রুড ক্যাথি শোৎজিস্নার। ১৮৯৪ সালে ১০ই ডিসেম্বর জন্ম হয়েছিল মধ্যবিত্ত ইহুদি পরিবারে বার্লিনে এবং শৈশব কেটেছে বার্লিনে। বাবা লূডূঈগ শোৎজিস্নার ছিলেন একজন উকিল। মায়ের নাম ছিল এলিস শোয়েনফ্লায়ার শোৎজিস্নার। চার ভাইবোনের মধ্যে গের্ট্রুড ছিলেন সবার বড় দিদি; মেজ বোন মার্গট (জন্ম ১৮৯৭), তার পরের ভাই জর্জ (জন্ম ১৯০০) এবং সবার ছোট হিল্‌দে (জন্ম ১৯০৫)। এদের মধ্যে হিল্‌দের সঙ্গেই গের্ট্রুডের ঘনিষ্ঠ আত্মিক সম্পর্ক ছিল। গের্ট্রুড পরবর্তীকালে তার লেখিকার ছদ্মনামে নিজের পদবী হিসেবে ‘কোলমার’ এই শব্দটি জুড়ে নেন, কারণ পোল্যান্ডের পোৎজনান প্রদেশে তার পূর্বপুরুষের শহর ‘শোৎজিস্’ এর জার্মান নাম ছিল ‘কোলমার’। অস্থির সময়ে হয়তো বা নিজের অতীত উৎসের কথা প্রতিনিয়ত নিজেকে মনে করিয়ে দেবার জন্যই তিনি এই পদবী ব্যবহার করতেন। কারণ শিশুকাল থেকে সচেতনভাবে ‘আমরা ইহুদি’ এইরকম ভাবনাচিন্তা নিয়ে তিনি অন্তত বেড়ে ওঠেননি। গের্ট্রুডের পরিবার কঠোরভাবে ইহুদি আচারব্যবহার বা সংস্কার মেনে চলত না। শুধুমাত্র পরিবারের যিনি সবচেয়ে প্রাচীন সদস্যা, যেমন গের্ট্রুডের ঠাকুমা, তিনিই ইহুদিধর্মের আচার-সংস্কার ইত্যাদি মেনে চলতেন। এমনকি শিশুকালে তাদের চার ভাইবোনের ইহুদি-মতে ব্যাপ্‌টিজম বা নামকরণ অনুষ্ঠান ইত্যাদিও করা হয়নি। হিল্‌দে একজন বইব্যবসায়ীকে বিয়ে করেছিলেন; তার নাম ছিল পিটার ভেনজেল। পিটার ইহুদি ছিলেন না, কিন্তু তাদের বিয়ে পরিবার সানন্দে মেনে নিয়েছিল। আসল ব্যাপারটা হল, সেসময় সমাজে যারা ইহুদি এবং ইহুদি নয়, তাদের মধ্যে সেই অর্থে কোনও বিরাট বিভাজন ছিল না, এবং সম্পন্ন, শিক্ষিত ইহুদি পরিবারগুলি সামাজিক বিবর্তনের কারণেই ধর্মীয় আচার- আচরণ থেকে বেরিয়ে এসে প্রগতিশীল হয়ে উঠেছিল।

গের্ট্রুডের সংস্কৃতিমনস্ক পরিবারে সবাই বই পড়তে ভালবাসতেন; গের্ট্রুডের বাবা সাহিত্যচর্চা করতেন। ডিনারের পর বাচ্চারা কবিতা বা গল্প পাঠ করত বা ছোট নাটক অভিনয় করে দেখাত। কিন্তু গের্ট্রুড নিজে ছিলেন অত্যন্ত অন্তর্মুখী স্বভাবের। শিশুকাল থেকেই তার লেখালেখির অভ্যেস ছিল; যদিও সেসব লেখা জনসমক্ষে আনবার জন্য তিনি খুব একটা আগ্রহী ছিলেন না এবং লেখালেখি সম্পর্কে তার ভাবনার কথাও বিশেষ কারো সঙ্গে আলোচনা করতেন না। সেইজন্য বার্লিনের সাহিত্যিকমহলে তার উল্লেখযোগ্য পরিচিতি ছিল না। লাজুক স্বভাবের গের্ট্রুড নিজের সমস্ত লেখা একখানা কাঠের প্যাকিং বাক্সে লুকিয়ে রাখতে ভালবাসতেন। নিজেকে লেখক বলে ভাবতেই পারতেন না, কারণ তিনি মনে করতেন যে শৈল্পিক সৃষ্টির জন্য একজন কবি বা লেখকের যতটা পরিশ্রম বা যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাওয়া প্রয়োজন, সেইধরনের কোনও অভিজ্ঞতা তার নিজের নেই। পরবর্তীকালে অবশ্য তার এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়, কারণ জীবন এবং নিষ্ঠুর সময় পাকে পাকে বেঁধে কঠোর যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে গের্ট্রুডকে একজন কালজয়ী সাহিত্যিকে পরিণত করে।

গের্ট্রুড ১৯১৪-১৫ সাল নাগাদ স্নাতক ডিপ্লোমা করেন ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায়। কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষিকার কাজ করেন বেশ কিছুদিন। এছাড়াও গের্ট্রুড জানতেন রাশিয়ান ভাষা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে যুদ্ধবন্দী শিবিরে সেনাবাহিনীর হয়ে অনুবাদিকার কাজ করেন, এবং সম্ভবত সেই সময় অর্থাৎ ১৯১৬ সাল নাগাদ তার জীবনে আসে প্রেম এবং চরম বিচ্ছেদ। বিপর্যয় নেমে আসে তার জীবনে; তার ভালবাসার সন্তানের জন্ম দিতে পারেননি তিনি। জার্মানিতে সেসময় গর্ভপাত বেআইনি ছিল, কিন্তু পরিবারের চাপে গের্ট্রুড গর্ভপাত করাতে বাধ্য হন। বিভিন্ন সময় তার কবিতায় ঘুরে ফিরে এসেছে ক্ষতচিহ্নের কথা, আঘাতের কথা। হয়ত বা প্রথমজীবনে পাওয়া এ আঘাত গভীর রেখাপাত করেছিল তার মনে এবং জীবনে। একটি কবিতার (গ্লাইশনিসঃ সাদৃশ্য) কিছু পঙক্তির উল্লেখ করছি আমার অক্ষম অনুবাদের সাহায্যে...

অজস্র ক্ষত নিয়ে উঠছে হেসে- আমার প্রেমও এমনি করেই হাসে।
কষ্টের কথা কাঁটার অগ্রভাগে- তবুও কখন কে যে কাকে ভালবাসে!
শাশ্বত প্রেম কবে যেন এসেছিল- নরম হাওয়ায় দোলে সাদা লাইলাক।
এখন শুধুই কণ্টকশাখা জাগে, অভিশাপ দেয়- বলে সব পুড়ে-জ্বলে যাক।

বাবার প্রবল উৎসাহে ১৯১৭ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম কবিতার বই ‘ইম হের্বস্ট’ (হেমন্তে)। হিল্‌দেকে লেখা চিঠিতেও দেখা যায় যে গের্ট্রুড লিখেছেন তার কবিতার বই এবং কবিতা পাঠকমহলে সমাদৃত হওয়ার ফলে তার বাবা সম্ভবত তার থেকেও বেশি খুশি হয়েছেন। শুলারের পরে গের্ট্রুডকেই বলা হচ্ছিল অন্যতমা ইহুদি জার্মান কবি।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে তিনি গৃহশিক্ষিকা এবং গভর্নেস হিসাবে কাজ করেন বেশ কিছুদিন। ১৯২৭ সালে ফ্রান্সের দিজোঁ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা নিয়ে স্নাতক ডিগ্রীলাভ করেন। ১৯২৮ সালে মা সাঙ্ঘাতিক অসুস্থ হয়ে পড়ায় গের্ট্রুড বার্লিনে ফিরে আসেন। ১৯৩০ সালে মা মারা যাবার পরে সব সাংসারিক দায়দায়িত্ব তুলে নেন নিজের কাঁধে। বাবাকেও ওকালতি ব্যবসায় সাহায্য করতে থাকেন অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে; লেখালেখি চলতে থাকে পুরোদমে। হিল্‌দেকে লেখা একটি চিঠিতে গের্ট্রুড কবিতা লেখার প্রক্রিয়াকে তুলনা করেছেন দীর্ঘসময় গর্ভধারণের পরে প্রসবযন্ত্রণা সহ্য করে সন্তানের জন্ম দেওয়ার সঙ্গে। রাতের পর রাত জেগে কবিতা লিখতেন তিনি সেসময়। মাথা ছিঁড়ে পড়ত যন্ত্রণায়। কিন্তু কবিতার মধ্য দিয়ে নিজের অন্তরের কথা এবং যন্ত্রণা প্রকাশ করার তাগিদ ছিল আরও জোরদার। নিজের আত্মা মথিত করে তখন তিনি লিখে চলেছেন। একটি কবিতা ‘ডি ডিশটারিন’ (মহিলা কবি)তে দেখতে পাই কবি পাঠককে অনুরোধ করছেন সাবধানে স্পর্শ করতে তার কাব্যগ্রন্থ। আমার একটি প্রচেষ্টা সেই কবিতাকে সম্মান জানাবার...

হাতের পাতায় আমাকে রেখেছ –
পুরোপুরি; ভালবাসো?
আমার হৃদয় ধুকপুক করে-
যেন ভীত ছোট পাখি।
আলগোছে ছুঁয়ো। বই নয়, ভাবো-
মানুষ! মুড়ো না মলাট;
কাগজ নয় তো! প্রাণ-লোহু-হাড়-মাসও।

সমাজে সেসময় অস্থিরতা বেড়ে উঠছিল। বেড়ে উঠছিল ইহুদিবিদ্বেষ। গের্ট্রুডের কবিতায় ছড়িয়ে যাচ্ছিল সেই যন্ত্রণা এবং একাকীত্ব। ‘ডি য়্যুডিন’(এক ইহুদি নারী) কবিতায় দেখতে পাই তার প্রকাশ। নিচে দিলাম কবিতার প্রথম স্তবকটির অনুবাদ-

আমি বহিরাগত।
ঘিরেছে আমাকে প্রাচীর রয়েছে যত।
আমাকে স্পর্শ করবেনা কেউ-
ফিরে যাবে সব মানুষের ঢেউ।
ঢেকেছি নিজেকে অবগুণ্ঠনে-
ধূসর মেঘের মত।

১৯৩০-৩১ সালে গের্ট্রুড লেখেন প্রথম এবং একমাত্র উপন্যাস ‘ডি য়্যুডিশে মুতার’ (এক ইহুদি মা)। এই উপন্যাসে এক ইহুদি মা মার্থা ভোল্‌গ তার পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণের শারীরিক যন্ত্রণা ও মানসিক আতঙ্ক থেকে উদ্ধার করতে না পেরে বিষ দিয়ে হত্যা করে। তারপরে প্রতিশোধ নিতে ধর্ষণকারীকে হত্যা করবার জন্য তার সন্ধানে বের হয়। কিন্তু যখন অনুভব করে যে সে নিজে তার সন্তানের হত্যাকারিণী, তখন গভীর মনোবেদনায় আত্মহত্যা করে।

১৯৩৮ সাল নাগাদ ইহুদিবিদ্বেষী মনোভাব এবং সামাজিক অস্থিরতা চরমে ওঠে। সেসময় গের্ট্রুডের ছোট বোন হিল্‌দে সুইজারল্যান্ডে চলে যান। ছোট ভাই জর্জ চলে যান অস্ট্রেলিয়ায়। গের্ট্রুড নিজেও চেষ্টা করেন নাৎসি নিপীড়ন এড়াবার জন্য ইংল্যান্ডে গভর্নেসের চাকরি নিয়ে চলে যাবার। কিন্তু অশক্ত শরীরের বাবা এবং নিজের জন্মভূমি, যে মাটিতে তার আত্মার শিকড় গ্রথিত ছিল, অথচ সেই মাটি তাকে আপন করে নেয় নি, এসব ছেড়ে চলে যেতে ব্যর্থ হন। এমনকি একবার প্যালেস্টাইন যাবার চেষ্টা পর্যন্ত করেছিলেন, যেখানে গের্ট্রুডের কাকা থাকতেন। সেই বছরেই বাধ্য হন বার্লিনের ফিঙ্কেনবুর্গের বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে একটি ইহুদি হোমে বার্লিন- শোনেবার্গে চলে যেতে।

১৯৪১ সালের মাঝামাঝি সময়ে গের্ট্রুড একটি অস্ত্র কারখানায় কাজ করতে বাধ্য হন। যে হাত প্রেমের কবিতা লেখার জন্য, পঙক্তিতে পঙক্তিতে ফুল ফোটাবার জন্য লেখনী তুলে নিয়েছিল, নাৎসি অত্যাচারে সেই হাত হাতিয়ার বানাবার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। তবুও তিনি বিস্মৃত হননি যে তিনি কবি। সেই সময়কার অজস্র চিঠিপত্রে তার মনোবেদনার প্রকাশ দেখতে পাওয়া যায়। ১৯৪২ সালে সেপ্টেম্বর মাসে তার ৮১ বছর বয়স্ক অসুস্থ বাবাকে নির্বাসন দেওয়া হয় বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্রে অবস্থিত থেরেসিয়েনস্টাডের কনসেনট্রেশান ক্যাম্পে। তার পরের বছর বাবা মারা যান এবং ১৯৪৩ সালে মার্চ মাসের ২ তারিখে গের্ট্রুডকে গ্রেফতার করে আউসভিৎসে পাঠানো হয়। তার অনেক লেখা, বই এবং চিঠিপত্র, নথি সেসময় নষ্ট করে ফেলা হয়েছিল। জানা যায়না ঠিক কবে তাঁকে সেখানে হত্যা করা হয়।

বেশ কিছুদিন আগেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর চরম পরিণতি। লেখার মধ্য দিয়ে জানিয়ে গিয়েছিলেন তিনি হয়ত এক অনাবিষ্কৃত দ্বীপের মতো থেকে যাবেন তার সমস্ত সৃষ্টি নিয়ে লোকচক্ষুর আড়ালে। তার ‘ডি উনেন্টশ্লসেনে’(অনিষ্পত্তি) কবিতায় তিনি সেই বিলুপ্তির বার্তা দিয়ে গেছেন। এই কবিতার শেষ অংশটির অনুবাদ...

আমার হৃদয়ে ফুটছে যে লাভাস্রোত-
বেরিয়ে যাবার নেই কোনও জ্বালামুখ।
তবুও তৃষ্ণা মেটাতে বইছে ঝর্ণা,
ঝুমকোলতার ফুলে আছে মধুসুখ।
মহাদেশ আমি; একদিন নিশ্চুপে-
হয়ত বা যাবো সাগরের জলে ডুবে।


লেখক পরিচিতি - পেশায় বিজ্ঞান-গবেষিকা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ব বিভাগের সঙ্গে জড়িত। প্রথম প্রেম কবিতা। অনুবাদ কবিতার পাশাপাশি স্বরচিত কবিতাও লেখেন। একটি প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ আছে।

(আপনার মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)

অবসর-এর লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।

Copyright © 2015 Abasar.net. All rights reserved.



অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।