সুকুমার রায় স্মরণে
অবসর (বিশেষ) সংখ্যা, এপ্রিল ৩০, ২০১৬
‘অবাক জলপান’ – একটি আধুনিক পাঠ
ভাস্কর বসু
সুকুমার রায় এক বিস্ময়কর প্রতিভা। আপাতদৃষ্টিতে দেখলে তিনি এক শিশু – সাহিত্যিক। বাংলার শিশু ও কিশোর সাহিত্যকে তিনি অসামান্য ভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর সৃষ্ট চরিত্রগুলি আমাদের মনে কোণে একেবারে খোদাই হয়ে আছে। তাই বোধহয় কেউ কখনো লোভ দেখিয়ে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করলেই আমরা ‘খুড়োর কল’ এর উদাহরণ টানি। পাশের বাড়িতে ‘ভীষ্মলোচন শর্মা’ গানের গুঁতোতে আমাদের অস্থির করেন। “ট্যাঁশ” এখন আর শুধু গরু নয়, ‘হারুদের আফিস’ ছেড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন জায়গায় -! “Back Handed Compliment with heavy sarcasm” তার নমুনাও তো দেখলাম- “মন্দ নয় সে পাত্র ভাল, রং যদিও বেজায় কালো”!!
লড়াই খ্যাপা
|
বাংলা ভাষার দুর্বলতাও তাঁর মাথাতে ছিল। এক ক্রিয়াপদ “খাই” দিয়ে পেটুক বাঙালী যে কত কাজ সমাধা করে তার এক অনুপম চিত্র তিনি তুলে ধরেছেন ‘খাই খাই’ কবিতাতে। শব্দকল্পদ্রুম কবিতাতে “ঠাস ঠাস দুমদাম ---” ও এর এক উজ্জ্বল উদাহরণ। সর্বোত্তম সম্ভবত: শেষ পঙক্তিটি,
“হৈ হৈ মার মার, বাপ বাপ, চীৎকার
মালকোঁচা মারে বুঝি? সরে পড় এইবার।”
কি সর্বনাশ! ‘মার’ ধাতু দেখলেই মনে পড়ে ‘লড়াই-ক্ষ্যাপা’র কথা, কিন্তু বাবুসাজে এক উল্লেখযোগ্য সংযোজন হল মালকোঁচা মেরে ধুতি পরা। তাতেই নাকি আতঙ্ক, সুকুমারের পক্ষেই সম্ভব।
আর ‘খাই-খাই’ কবিতাতে তো খাদ্যরসিক বাঙালীদের প্রায় বাপান্ত করে ছেড়েছেন! কি সব সাংঘাতিক প্রশ্ন, “যুদ্ধে যে গুলি খায় গুলিখোর সেও কি?” অনবদ্য ভাবে দেখিয়েছেন বাংলাভাষার ক্রিয়াপদের অপ্রতুলতাকে,
“জল খায়, দুধ খায়, খায় যত পানীয়,
জ্যাঠাছেলে বিড়ি খায়, কান ধরে টানিও।”
আমরা বাঙালীরা সবকিছুই খাই, চা ও সিগারেট ও! এই নিয়ে খুব হাসাহাসি হয় সর্বভারতে। আমাদের পিতৃভাষা ইংরেজিতে, - They eat food, drink liquid and smoke cigarette. আমরা কিন্তু ‘খাই যত পানীয়”!! বাংলা ভাষা কে একটু ‘কান ধরে টেনে’ দিলেন কি তিনি?
এই প্রতিভার আর এক খুব উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি – ‘অবাক জলপান’!
এই নাটকটি খুবই জনপ্রিয়। শৈশবকালে অথবা কৈশোরকালে এই নাটকে অভিনয় করেননি, এরকম বাঙালী কিশোর-কিশোরীর সংখ্যা নগণ্য। কিন্তু এই নাটকটি কি শুধুই শিশু মনোরঞ্জক? একটু ভেবে দেখলে কি এর থেকে আমরা আরো কিছু পেতে পারি? আর একটু অন্যভাবে মূল্যায়ন করতে পারি সুকুমারের অসাধারণ সৃষ্টিশীলতাকে? সেই চেষ্টাই করতে চলেছি।
আধুনিক পরিচালন ব্যবস্থার পরিভাষাতে (Management Terminology) যাকে বলা চলে, Collapse of communication – ‘অবাক জলপান’ তারই এক সার্থক, শিল্পসম্মত, অভূতপূর্ব নাট্য রূপান্তর। ‘অবাক জলপান’ নিয়ে আমাদের বিস্তারিত আলোচনার মূল লক্ষ্যই তাই।
ছবি ১
|
একটি সংযোগ ব্যবস্থায় আমরা দেখি মূলত তিনটি প্রধান চরিত্র, প্রেরক (Transmitter), মাধ্যম (Medium), ও সংগ্রাহক (Receiver)। কাজেই যে কোন সংযোগ ব্যবস্থার সাফল্যে তিনজনেরই সফল ভূমিকা থাকে, কিন্তু ব্যর্থতাতে কোন একটির ভূমিকাই যথেষ্ট। “অবাক জলপান” এ পথিক অর্থাৎ ট্রান্সমিটারের কোন দোষ নেই, ব্যর্থতার দায় পুরোপুরি মাধ্যম আর শ্রোতার।
মনে করা যাক প্রথম দৃশ্যটি –
পথিক : মশাই, একটু জল পাই কোথায় বলতে পারেন ?
ঝুড়িওয়ালা : জলপাই ? জলপাই এখন কোথায় পাবেন ? এ ত জলপাইয়ের সময় নয় । কাঁচা আম নিতে চান দিতে পারি‒
পথিক : না না, আমি তা বলিনি‒
ঝুড়িওয়ালা : না, কাঁচা আম আপনি বলেন নি, কিন্তু জলপাই চাচ্ছিলেন কিনা, তা ত আর এখন পাওয়া যাবে না, তাই বলছিলুম‒
পথিক : না হে আমি জলপাই চাচ্ছিনে‒
আচ্ছা, পথিক কিন্তু পরিষ্কার করে বলেছে, জল আর পাই দুটি শব্দকে আলাদা করে, ঝুড়িওয়ালা কিন্তু মিশিয়ে ‘জলপাই’ করেছে। একটাই কারণ, ঝুড়িওয়ালার কাজ কারবার ফল নিয়ে। ‘জলপাই’ শব্দটি তার অতি পরিচিত। সুতরাং তার স্মৃতি থেকে এই শব্দই তার মাথায় এসেছে, সে উপেক্ষা করেছে পথিকের উচ্চারিত শব্দের দ্যোতনাকে। আমরা মনে করে দেখতে পারব অনেক সময় এই বিভ্রান্তির শিকার হয়েছি আমরাও। তার একটা কারণ আমাদের কাছে জমে থাকা শব্দের ভাণ্ডার। আমাদের নিত্য ব্যবহৃত শব্দের দিকেই আমাদের ঝোঁক, পক্ষপাত (bias) বেশী, কাছাকাছি অনুরূপ কোন শব্দবন্ধকে পেলেই বেশী না শুনে আমাদের মন সেটিকেই অনুমান করে নেয়। এই ব্যাপারটি যেভাবে আলোচিত হয় তা হল-
“Bias typically involves a leaning or predisposition on an issue that may inhibit being neutral when communicating with others. When bias exists in attitudes, it is often reflected in the language and the way in which individuals interact with each other.” 1
আমাদের ঝুড়িওয়ালা একজন মানুষ যার উপলব্ধির (Perception) জগৎটি পথিকের থেকে আলাদা।
আধুনিক পঠন পদ্ধতিতে তাকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে –
“Perception, or the process by which individuals mentally organize sensory information in their environment to give it meaning, can help us understand why things might not always be as they appear. Perception is a process of observation and interpretation” 2
ঝুড়িওয়ালা অবশ্য শেষে পথিককে ই দোষারোপ করে চলে যায় -
“দেখছেন ঝুড়ি নিয়ে যাচ্ছি‒ তবে জলই বা চাচ্ছেন কেন? ঝুড়িতে করে কি জল নেয়? লোকের সঙ্গে কথা কইতে গেলে একটু বিবেচনা করে বলতে হয়”!!
‘বিবেচনা’!! অর্থাৎ দোষ পথিকের। এখন ঝুড়িওয়ালার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে তা হতেও পারে। অর্থাৎ প্রেরকের শ্রোতার কথা ভেবে আর একটু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল।
ছবি ২
|
সংযোগ ব্যবস্থার বিফলতার সবচেয়ে বড় কারণ হল শ্রোতার অমনোযোগ। বারংবার আমাদের সতর্ক করা হয়, কান দুটো আর মুখ একটা – কাজেই বাপু হে, যত বলবে তার দ্বিগুণ শুনবে। কিন্তু চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী!! পরবর্তী চরিত্রে আমরা পরপর দুই চোরা কে দেখতে পাই। দুই বৃদ্ধ যারা একে অপরকে টক্কর দিতে ব্যস্ত। প্রথম বৃদ্ধর কাছে অত্যাচারিত হয়ে পথিক বলে –
“ আমি জল চাইছিলুম, তা উনি সে কথা কানেই নেন না- কেবলই সাত পাঁচ গপ্প করতে লেগেছেন।”
দ্বিতীয় বৃদ্ধ আবার আরো এককাঠি ওপরে – তিনি তৃষ্ণার্ত, অবসন্ন পথিককে “জল” শব্দটির নানাবিধ প্রয়োগ বোঝান, আক্ষরিক আর আলঙ্কারিক।
“বিষ্টির জল, ডাবের জল, নাকের জল, চোখের জল, জিবের জল, হুঁকোর জল, ফটিক জল, রোদে ঘেমে জ-ল, আহ্লাদে গলে জ‒ল, গায়ের রক্ত জ‒ল, বুঝিয়ে দিলে যেন জ-ল ‒ কটা হয় ? গোনোনি বুঝি?”
শব্দের আলঙ্কারিক প্রয়োগ খুবই লোভনীয়, কিন্তু তা অনেক সময় সাধারণ বাক্যালাপে বাধা দিতে পারে। এখানে ঠিক তাই হয়েছে।
এবার আমরা “অবাক জলপান” কে আরো একটু নেড়েচেড়ে দেখলে আর একটি তত্ত্বের সফল প্রয়োগ দেখতে পারব। একই শব্দের দুরকম অর্থ ও কিন্তু ভীষণ ভাবে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। সেই বিখ্যাত অতুলপ্রসাদী গানটি মনে পড়ে যায়,
“করি তুই আপন আপন হারালি যা ছিল আপন ;
এবার তোর ভরা আপন বিলিয়ে দে তুই যারে তারে”
ছবি ৩
|
সাধারণ শ্রোতার কাছে দ্বিতীয় আপনের অর্থ যে দোকান তা হয়তো একটু অধরা থেকে যেতে পারে। সাহিত্যের যা মাধুর্য তা কার্যক্ষেত্রে বিভ্রান্তিকর হয়ে উঠতে পারে। মনে পড়ে আর কে লক্ষণ কৃত একটি অনবদ্য কার্টুন – একটি ইন্টারভিউ এর ছবি! প্রার্থী মাটিতে বসে একটি চেয়ার আঁকছে – হতভম্ব পরীক্ষকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন – “We only told him to draw a chair and sit”!! “Draw” এই ক্রিয়াপদের দুই অর্থ, - দুপক্ষ দুরকম ধরে নিয়েছেন – আর তাতেই ঘটে গেছে চরম সর্বনাশ!
এত কথা বললাম কারণ ‘অবাক জলপান’ এর পরবর্তী বিভ্রান্তি এই নিয়েই।
পথিক : না:, আর জলটল চেয়ে কাজ নেই‒ এগিয়ে যাই, দেখি কোথাও পুকুরটুকুর পাই কি না।
[ লম্বা লম্বা চুল, চোখে সোনার চশমা, হাতে খাতা পেন্সিল, পায়ে কটকী জুতা, একটি ছোকরার প্রবেশ ]
লোকটা নেহাৎ এসে পড়েছে যখন, একটু জিজ্ঞাসাই করে দেখি। মশাই, আমি অনেক দূর থেকে আসছি, এখানে একটু জল মিলবে না কোথাও?
ছোকরা : কি বলছেন ? 'জল' মিলবে না? খুব মিলবে। একশোবার মিলবে! দাঁড়ান, এক্ষুনি মিলিয়ে দিচ্ছি‒ জল চল তল বল কল ফল ‒ মিলের অভাব কি ? কাজল-সজল-উজ্জ্বল জ্বলজ্বল-চঞ্চল চল্ চল্, আঁখিজল ছল্ছল্, নদীজল কল্কল্, হাসি শুনি খল্খল্, অ্যাঁকানল বাঁকানল, আগল ছাগল পাগল‒ কত চান ?
সর্বনেশে কাণ্ড!! “মিল” ক্রিয়াপদটির অর্থ তৃষ্ণার্ত পথিকের কাছে যা উৎসাহী কবির কাছে তা আদপেই নয়। ঠিক যেমন আগের আলোচিত কার্টুনের মতই। কবির ‘মিল’ আর পথিকের ‘মিল’ – দুয়ের মধ্যেই বিস্তর ‘অমিল’!
একই শব্দের দু রকম অর্থ সাহিত্যে কৌতুকপ্রদ। অনুপ্রাস এর সৃষ্টিও তার থেকেই আর তা সাহিত্যের এক বিশেষ অলংকার। সাহিত্যে হলেও বিজ্ঞানে তা কিন্তু আদৌ অভিপ্রেত নয়। এই কারণেই দেখা যায় বিজ্ঞানের পরিভাষার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা থাকে, সর্বক্ষেত্রেই। পদার্থবিদ্যাতে “ভর” আর “ভার” আলাদা, যেমন আলাদা গণিতে “বৃত্ত”, “উপবৃত্ত” এবং “অধিবৃত্ত” বা জীববিদ্যাতে – “শিরা” বা “ধমনী” !! এই পরিভাষা কিন্তু কেউ ইচ্ছে করলেই পাল্টাতে পারবে না। এই জন্যই তা “সর্বসম্মত” করার জন্য নথিভুক্ত করা হয়।
শুধু বিজ্ঞান কেন, যে কোন চুক্তিপত্রে বা কোন গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের প্রথমেই পরিভাষাগুলিকে যে একদম পরিষ্কার ভাবে লিপিবদ্ধ করা হয় তারও কারণ এটাই – সব পক্ষের কাছেই যাতে সেই পরিভাষা যথাসম্ভব এক অর্থ বহন করে। এখানে কোনরকম ভিন্ন প্রয়োগ হলেই মুশকিল – সেই প্রার্থী কে চেয়ার ‘টেনে’ বসার বদলে ‘এঁকে’ বসতে হবে!!
শেষ পর্বেও ঘটনা একই প্রায় – এবার চরিত্র এক বৈজ্ঞানিক –
পথিক : আজ্ঞে , জল তেষ্টায় বড় কষ্ট পাচ্ছি‒ তা একটু জলের খবর কেউ বলতে পারলে না ।
মামা : (তাড়াতাড়ি ঘরের দরজা খুলিয়া) কেউ বলতে পারলে না? আসুন, আসুন । কি খবর চান, কি জানতে চান, বলুন দেখি ? সব আমায় জিজ্ঞেস করুন, আমি বলে দিচ্ছি । [ ঘরের মধ্যে টানিয়া লওন‒ ভিতরে নানারকম যন্ত্র, নকশা, রাশি রাশি বই]
কি বলছিলেন ? জলের কথা জিজ্ঞেস করছিলেন না?
পথিক : আজ্ঞে হ্যাঁ, সেই সকাল থেকে হাঁটতে হাঁটতে আসছি‒
মামা : আ হা হা ! কি উৎসাহ ! শুনেও সুখ হয় । এ রকম জানবার আকাঙ্ক্ষা কজনের আছে, বলুন ত? বসুন ! বসুন ! [কতকগুলি ছবি, বই আর এক টুকরা খড়ি বাহির করিয়া জলের কথা জানতে গেলে প্রথমে জানা দরকার, জল কাকে বলে, জলের কি গুণ‒
“জলের খবর” !! – বৈজ্ঞানিকের কাছে এই শব্দবন্ধের তাৎপর্যই অন্যরকম। তাঁর ধারণা খবর বলতে, “বৈজ্ঞানিক তথ্যসমূহ”!! তিনি সবিস্তারে ব্যাখ্যা করতে চান জলের বৈজ্ঞানিক গুণাবলী, তার বিভিন্ন উৎস,- বেচারি তৃষ্ণার্ত পথিক যে ‘জলের খবর’ বলতে এক গ্লাস সাদা ঠাণ্ডা জল এর ‘সন্ধান’ এর কথা বলছেন তা বুঝতে তিনি অক্ষম। পরে অবশ্য পথিক ও চালাক হয়ে মোক্ষম দাবাই প্রয়োগ করে কার্য সিদ্ধ করেন।
একই শব্দের দুই অর্থ হওয়ার ফলে মজা ও যেমন হয়, তেমনি আবার তা একটু হৃদয়বিদারক ও হতে পারে। ধরা যাক এক বাঙালী কন্যা স্বজাতির প্রেমে না মজে অন্য ভাষার প্রেমিক পাকড়াল, বাংলা জানা সেই প্রেমিক যদি মারাঠি বা গুজরাটি হয়, কোন সমস্যা নেই, - কিন্তু উৎকলদেশীয় প্রেমিককে যদি ললনার বাঙালী বন্ধুবান্ধব এমনকি ঠাট্টা করেও বলে বসেন, “আপনি তো মশাই ‘উড়ে’ এসে জুড়ে বসেছেন-” তা কিন্তু রীতিমত নিদারুণ হতে পারে।
ইংরেজিতেও বহু শব্দের এরকম সমস্যা হতে পারে। একটি উদাহরণ আগেই দিয়েছি। “Exploit” এই ক্রিয়াপদটিও দ্ব্যর্থক। মালিক যখন শ্রমিককে করেন, তা শোষণ, ঘোরতর অন্যায় – কিন্তু কোন পরিচালক বা কোচ যদি কোন অভিনেতার বা খেলোয়াড়ের প্রতিভাকে পুরোমাত্রায় Exploit করেন, তা সর্বতোভাবে প্রশংসনীয়। “Run” – এই ইংরেজি শব্দটির প্রায় শতাধিক অর্থ আছে, ক্রিয়াপদ এবং বিশেষ্য রূপে।
আচ্ছা, “অবাক জলপান” অনুবাদের কথা ভাবা কি যায়? সম্পূর্ণ অসম্ভব!
তবে এই মূলভাবটি নিয়ে অন্যভাষাতেও একটি নাটিকা গড়ে তোলা সম্ভব যার উদ্দেশ্য হবে “মিস-কম্যুনিকেশন” কে সুন্দর ভাবে প্রতিভাত করা। তার মাধ্যমে শেখানো যেতে পারে একটি সুন্দর সংযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কি কি উপাদান খুবই আবশ্যক – শ্রোতার মনোযোগ, নিরপেক্ষ ও সহিষ্ণু শ্রবণ আর অবশ্যই একটি ভাষা-মাধ্যম যাতে বিভ্রান্তির সম্ভাবনা খুব কম।
কিন্তু অনুবাদ তো পরের কথা!! আমাদের বাংলাতেই তো এই সুন্দর উদাহরণটি রয়ে গেছে। বাংলাদেশের (দুই বাংলার) ছাত্রছাত্রীরা তো অনেকেই পড়াশুনো করেন সংযোগ ও জনসংযোগ নিয়ে। পাঠক্রমের অংশ রূপে এই ছোট্ট নাটিকাটি তো বড়দের দিয়েও ভেবে-চিন্তে অভিনয় করানো যায়! আর তার সঙ্গে শিক্ষকরাও যোগ করতে পারেন আরো কিছু তত্ত্ব- তাহলে খুব সহজে এই তথাকথিত শিশু মনোরঞ্জক নাটকটি সংযোগ ব্যবস্থার একটি “সহজ পাঠ” হিসেবে রূপান্তরিত হতে পারে।
সূত্র –
1 - http://www.inclusion.msu.edu/Education/BiasFreeCommunication.html
2 http://study.com/academy/lesson/perception-bias-in-communication-within-organizations.html
লেখক পরিচিতিঃ জন্ম কলকাতায়, বেড়ে ওঠা দক্ষিণ চব্বিশ-পরগনার
রাজপুর-সোনারপুর অঞ্চলে। ১৯৮৩ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
ইলেক্ট্রনিক্স ও টেলিকম্যুনিকেশন ইঞ্জিনীয়ারিং পাস করে কর্মসূত্রে
ব্যাঙ্গালোরে। শখের মধ্যে অল্প-বিস্তর বাংলাতে লেখা - অল্প কিছু
লেখা রবিবাসরীয় আনন্দবাজার, উনিশ-কুড়ি, নির্ণয়, দেশ, ইত্যাদি পত্রিকায়
এবং বিভিন্ন ওয়েব ম্যাগাজিন (সৃষ্টি, অবসর, ইত্যাদিতে) প্রকাশিত।
(আপনার
মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)
অবসর-এর লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য
অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।