আর কত রহিব শুধু পথ চেয়ে
শিল্পী: হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আর কত রহিব শুধু পথ চেয়ে
আমার আকাশ হয় না তো নীল
মেঘে মেঘে রয় ছেয়ে
আর কত রহিব শুধু পথ চেয়ে।
বকুলের মুকুলে নেই কোনো
গুনগুন
মাধবীর স্বপ্নে আসে না তো ফাল্গুন
কিসের আশায় তবু জেগে রই
বেদনারই গান গেয়ে
আর কত রহিব শুধু পথ চেয়ে।
হাসি ভুলে আর কত কাঁদি
বালুচরে মিছে ঘর বাঁধি
অবহেলা পেয়ে আমি অাঁখি-জলে সিক্ত
অসহায় এই আমি কত যেন রিক্ত
ঝড়ের আঘাতে হাল ভেঙ্গে যায়
খেয়া তবু যাই বেয়ে।
আগের
পাতা
সুরের
আকাশে তুমি যেন শুকতারা
শিল্পী: হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সুরের আকাশে তুমি যেন
শুকতারা
আমায় করেছো একি চঞ্চল -
বিহবল দিশাহারা।
অরুণাচলের বুকে
তুমি জাগালে দীপ্ত মুখে
মহা তমসায় আলোর ঝর্ণাধারা -
আমি বিহবল দিশাহারা।
নব চেতনার রক্ত কমল দলে
অগ্নি ভ্রমর দিগন্তে জাগে রাগিনীর পরিমলে।
মিছে হল অভিশাপ
মোর জীবনের সন্তাপ
গত রজনীর অশ্রু তিমির
ভেঙ্গেছো অন্ধকারে।
আগের
পাতা
ঝড়
উঠেছে বাউল বাতাস
শিল্পী: হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ঝড় উঠেছে বাউল বাতাস
আজকে হল সাথী
সাত মহলা স্বপ্নপুরীর
নিভলো হাজার বাতি।
রুদ্রবীণার ঝংকারেতে
ক্ষুব্বì জীবন উঠলো মেতে
সকল আশার রঙিন নেশা
ঘুচলো রাতারাতি।
আকাশ জুড়ে দীর্ঘশ্বাসে
মাদল হল সুরু
সুরের স্বপন ভাঙ্গলো শুনে
মেঘের গুরুগুরু
উঠছে ভুলের ঘূর্ণী হাওয়া
সকল চাওয়া সকল পাওয়া
শুকনো পাতার মর্মরে আজ
করছে মাতামাতি।
আগের
পাতা
নদীরে,
একটি কথা শুধাই শুধু তোমারে
শিল্পী:
হেমন্ত মুখোপাধ্যায় নদীরে, একটি কথা শুধাই
শুধু তোমারে
বলো কোথায় তোমার দেশ
তোমার নেই কি চলার শেষ।
তোমার কোনো বাঁধন নাই
তুমি ঘর ছাড়া কি তাই
এই আছো ভাঁটায় আবার
এই তো দেখি জোয়ারে।
এ কূল ভেঙ্গে ও কূল তুমি
গড়
যার একূল ওকূল দুকূল গেল
তার লাগি কি কর।
আমায় ভাবছো মিছেই পর
তোমার নেই কি অবসর
সুখ দুঃখের কথা কিছু
কইলে নাতো আমারে।
আগের
পাতা
পথের
ক্লান্তি ভুলে
শিল্পী: হেমন্ত মুখোপাধ্যায় পথের ক্লান্তি ভুলে
স্নেহভরা কোলে তব
মাগো কবে বল শীতল হব।
কত দূর আর কত দূর, বলো মা।
আর আাঁধারের ভ্রুকুটিতে
ভয় নাই
মাগো তোমার চরণে জানি পাবো ঠাঁই
যদি এ পথ চলিতে কাঁটা বেঁধে পায়
হাসি মুখে সে বেদনা সব।
চিরদিন মাগো তব করুণায়
ঘরছাড়া প্রেম-দিশা খুঁজে পাই
ঐ আকাশে যদি মা কভু ওঠে ঝড়
সে আঘাত বুকে পেতে লব।
মাগো যতই দুঃখ তুমি দেবে
দাও
তবু জানি কোলে শেষে তুমি টেনে নাও
মাগো তুমি ছাড়া এ অাঁধারে গতি নাই
তোমায় কেমনে ভুলে রব।
আগের
পাতা
অলির
কথা শুনে বকুল হাসে
শিল্পী: হেমন্ত মুখোপাধ্যায় অলির কথা শুনে বকুল হাসে
কই তাহার মত তুমি
আমার কথা শুনে হাসো নাতো।
ধরার এ ধূলিতে যে ফাগুন আসে
কই তাহার মত তুমি
আমার কাছে কভু আস নাতো?
আকাশ পারে ঐ অনেক দূরে
যেমন করে মেঘ যায় গো উড়ে
যেমন করে সে হাওয়ায় ভাসে
কই তাহার মত তুমি
আমার স্বপ্নে কভু ভাস নাতো।
চাঁদের আলোয় রাত
যায় যে ভোরে
তাহার মত তুমি
কর না কেন ওগো ধন্য মোরে।
যেমন করে নীড়ে একটি পাখি
সাথীরে কাছে সে নেয় গো ডাকি
যেমন করে সে ভালোবাসে
কই তাহার মত তুমি
আমায় তবুও ভালোবাসোনা তো।
আগের
পাতা
নতুন
নতুন রঙ ধরেছে সোনার পৃথিবীতে
শিল্পী: হেমন্ত মুখোপাধ্যায় নতুন নতুন রঙ ধরেছে সোনার
পৃথিবীতে
যেন ভালোবাসা ছড়িয়ে আছে
নীল আকাশের গায়ে
আমায় দেখতে দাও
ঐ মন ভোলানো রামধনু রঙ
দেখতে দাও।
দুচোখ ভরে দেখবো আমি
শিশুর মুখে হাসি
বুক ভরানো স্নেহ মায়া
স্বপ্ন রাশি রাশি
সব পেয়েছির স্বর্গ আমার
মাটির সীমানায়
আমায় দেখতে দাও।
এ মন আমি বিছিয়ে দিলাম
সবার চলার পথে
তোমরা এসো খোলা হাওয়ায়
খেয়াল খুসির রথে এসো
তোমরা এসো
আনন্দের এই নতুন দেশে
সাতশো তলা গড়ে
সুখে থাকো তোমরা সবাই
পরকে আপন করে।
আমায় দিও এক খানি ঘর
নিচের মহলায়-
আমায় দেখতে দাও।
আগের
পাতা
আমি
ঝড়ের কাছে রেখে আমার ঠিকানা
শিল্পী: হেমন্ত মুখোপাধ্যায় আমি ঝড়ের কাছে রেখে আমার
ঠিকানা
আমি কাঁদলাম বহু হাসলাম
এই জীবনে জোয়ারে ভাসলাম
আমি বন্যার কাছে ঘূর্ণির কাছে
রাখলাম নিশানা।
কখন জানি না সে
তুমি আমার জীবনে এসে
যেন সঘন শ্রাবণে প্লাবনে দুকূলে ভেসে
শুধু হেসে ভালোবেসে
যত যতনে সাজান স্বপ্ন
হোল সকলি নিমেষে ভগ্ন
আমি দুর্বার স্রোতে ভাসলাম তরী অজানার নিশানা।
ওগো ঝরাপাতা
যদি আবার কখনো ডাকো
সেই শ্যামল হারানো
স্বপন মনেতে রাখো
যদি ডাকো যদি ডাকো
আমি আবার কাঁদবো হাসবো
এই জীবন জোয়ারে ভাসবো
আমি বজ্রের কাছে মৃত্যুর মাঝে
রেখে যাবো নিশানা।
আগের
পাতা
মাগো
আমরা তোমার
শিল্পী: হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
মাগো আমরা তোমার
শান্তিপ্রিয় শান্ত ছেলে
তবু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ধরতে জানি
তোমার ভয় নেই মা আমরা
প্রতিবাদ করতে জানি।
আমরা হারবো না হারবো
না
তোমার মাটি একটি কণাও ছাড়বো না
আমরা পাঁজর দিয়ে দূর্গ ঘাঁটি গড়তে জানি
তোমার ভয় নেই মা আমরা
প্রতিবাদ করতে জানি
দুর্বলতায় বাঁচতে শুধু
জানবো না
আমরা চিরদিনই হাসি মুখে মরতে জানি
তোমার ভয় নেই মা আমরা
প্রতিবাদ করতে জানি।
আমরা অপমান সইবো না
ভীরুর মত ঘরের কোনে রইবো না
আমরা আকাশ থেকে বজ্র হয়ে ঝরতে জানি।
তোমার ভয় নেই মা আমরা
প্রতিবাদ করতে জানি।
আগের
পাতা