আমি
এত যে তোমায় ভালোবেসেছি
শিল্পী: মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়
আমি এত যে তোমায় ভালোবেসেছি;
তবু মনে হয় - এ যেন গো কিছু নয়,
কেন আরো ভালোবেসে যেতে পারে না হৃদয়।
আমি এত যে তোমায় ভালোবেসেছি।
তোমার কাজল চোখে যে গভীর
ছায়া কেঁপে ওঠে ওই,
তোমার অধরে ওগো যে হাসির মধু-মায়া ফোটে ওই;
তারা এই অভিমান বোঝে না আমার,
বলে তুমিতো আমায় ভালোবেসেছো।
শুধু আমার গোপন ব্যথা কেঁদে কেঁদে কয়,
কেন আরো ভালোবেসে যেতে পারে না হৃদয়।
তুমিতো জানোনা ওগো তোমার
প্রাণের ওই সুরের কাছে
আমার গানের বাণী আহত পাখীর মত লুটায়ে আছে।
তবুও এ মাধবী রাতে আমায়
যে মালা তুমি পড়ালে,
যে মাধুরী দিয়ে মোর শূন্য জীবন তুমি ভরালে;
তারা এ দীনতাটুকু দেখে না আমার,
বলে তুমিতো আমায় ভালোবেসেছো।
শুধু আমার গোপন ব্যথা কেঁদে কেঁদে কয়,
কেন আরো ভালোবেসে যেতে পারে না হৃদয়।
আগের
পাতা
আমার
স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে
শিল্পী: শ্যামল মিত্র
আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা
থাকে
সাতসাগর আর তেরোনদীর পারে।
ময়ূরপঙ্খী ভিড়িয়ে দিয়ে সেথা
দেখে এলেম তারে,
সাতসাগরের পারে - আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে।
সে এক রূপকথার-ই দেশ
ফাগুন যেথা হয়না কভু শেষ;
তারা যে ফুল পাপড়ি ছড়ায় যেথা পথের ধারে
দেখে এলেম তারে;
সাতসাগরের পারে - আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে।
সে রূপ কথারই দেশে
এ রঙ আমি কুড়িয়ে পেলেম কানে;
সুর হয় তা ঝরে আমার গানে।
তাই খুসীর সীমা নাই,
বাতাসে তার মধুর ছোঁয়া পাই;
জানি না আজ হৃদয় কোথায়
হারাই বারে বারে;
সাত সাগরের পারে - আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে।
আগের
পাতা
কে
তুমি আমারে ডাকো
শিল্পী: সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়
কে তুমি আমারে ডাকো
অলখে লুকায়ে থাকো
ফিরে ফিরে চাই - দেখিতে না পাই।
মনে তো পড়ে না, তবুও যে
মনে পড়ে
হাসিতে গেলে কেন হৃদয় অধরে ভরে
সমুখের পথে যেতে পিছনে টানিয়া রাখো
ফিরে ফিরে চাই, দেখিতে না পাই
নতুন অতিথি দাঁড়ায়ে রয়েছে
দ্বারে,
তবু ফিরাতে হবে তারে - ফিরাতে হবেই তারে।
ভুল করে মালা যদি দিতে চাই কারো গলে,
কেন কাঁপে হাত বলো বাঁধা পাই পলে পলে।
আমার এ আকাশ শুধু
মেঘে মেঘে কেন ঢাকো
ফিরে ফিরে চাই, দেখিতে না পাই।
আগের
পাতা
উজ্জ্বল
এক ঝাঁক পায়রা
শিল্পী:
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়
উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রা
সূর্যের উজ্জ্বল রৌদ্রে,
চঞ্চল পাখনায় উড়ছে।
নিঃসীম ঘননীল অম্বর
গ্রহতারা যদি থাকে থাক নীল শূন্যে।
হে কাল, হে গম্ভীর,
অশান্ত সৃষ্টির
প্রশান্ত মন্থর অবকাশ,
হে অসীম উদাসীন বারোমাস!
চৈত্রের রৌদ্রের উদ্দাম
উল্লাসে
তুমি নেই, আমি নেই, কেউ নেই,
ওড়ে শুধু এক ঝাঁক পায়রা।
দুপুরের রৌদ্রের নিঃঝুম
শান্তি
নীল কপোতাক্ষীর কান্তি
এক ফালি নাগরিক আকাশে
কালজয়ী পাখনার চঞ্চল প্রকাশে -
হে কপোর পারাবত, পায়রা
যে-দিকে দুচোখ যায় দেখা যায় যদ্দুর
শুধু শ্বেত পিঙ্গল কৃষ্ণ
উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রা।।
আগের
পাতা
ভীরু
ভীরু চোখে চেয়ে চলে গেলে
শিল্পী:
শ্যামল মিত্র
ভীরু ভীরু চোখে চেয়ে চলে
গেলে
দিলে ছোট ছোট স্মৃতি মনে
মনেরি ছায়াপথে কেঁপে কেঁপে থেকে থেকে ব্যথালি সাঁঝে সাঁঝে
চেনা চেনা সুর বাজে।
বলেছো কত কথা
কখনো নীরবতা
দেখেছি একা একা আনমনা
বাতাসে ভেসে ভেসে মরমে মেশে এসে
ভ্রমর হল যত কল্পনা।
মনে পড়ে তোমার লাজুক সম্বোধন,
আবার হবে দেখা - রইলো নিমন্ত্রণ।
এই যে যাওয়া-আসা
এইতো ভালোবাসা
কায়ারে ছায়া দিয়ে অাঁকবো না
বেসেছি ভালো যারে দেখা সে দিতে পারে
বাঁধনে বেঁধে তবু রাখবো না।
আগের
পাতা
সূর্য
ডোবার পালা
শিল্পী: হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
সূর্য ডোবার পালা
আসে যদি আসুক, বেশ তো;
গোধুলির রঙে হবে
এ ধরণী স্বপ্নের দেশতো
বেশ তো, বেশ তো।
তারপরে পৃথিবীতে
আঁধারের ধূপছয়া নামবেই,
মৌমাছি ফিরে গেলে
জানি তার গুঞ্জন থামবেই।
সে আঁধার নামুক না
গুঞ্জন থামুক না
গানে তবু রবে তার রেশতো;
বেশ তো, বেশ তো।
তারপরে সারা রাত
দুজনে একা একা ভাববো
হৃদয়ের লিপিকাতে
কে যেন লিখেছে এক কাব্য।
জোনাকিরা দ্বীপ জ্বেলে
আমাদের সাথে রাত জাগবে;
দুটি প্রাণে চুপে চুপে
নতুন সে সুর এক লাগবে।
জোনাকিরা জাগুক না
প্রাণে সুর লাগুক না
পাওয়াতে চাওয়ার হবে শেষতো;
বেশ তো, বেশ তো।
আগের
পাতা
এই
সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায়
শিল্পী: গীতা দত্ত
এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায়
একি বন্ধনে জড়ালে গো বন্ধì
কোন রক্তিম পলাশের স্বপÔ
মোর অন্তরে ছড়ালে গো বন্ধì।
আমলকি পিয়ালের কুঞ্জে
কিছু মৌমাছি এখনো যে গুঞ্জে
বুঝি সেই সুরে মালারে যে জড়ালে গো বন্ধì।
বাতাসের কথা সেতো কথা নয়
রূপকথা ঝরে তার বাঁশীতে
আমাদের মুখে কোন কথা নেই
শুধু দুটি আাঁখি ভরে রাখে হাসিতে।
কিছুতরে দূরে তারা জ্বলবে
হয়তো তখন তুমি বলবে
জানি মালা কেন গলে পড়ালেগো বন্ধì।
আগের
পাতা
বর্ণে
গন্ধে ছন্দে গীতিতে
শিল্পী: শচীন দেববর্মন
বর্ণে গন্ধে ছন্দে গীতিতে
হৃদয়ে দিয়েছো দোলা
প্রেমেতে রাঙিয়া রাঙাইলে মোরে একি তব হরিখেলা
তুমি যে ফাগুন রঙের আগুন তুমি যে রসের ধারা
তোমার মাধুরী তোমার মদিরা করে মোরে দিশাহারা
মুক্তা যেমন শুক্তির বুকে তেমনি আমাতে তুমি
আমার পরাণে প্রেমের হিল্লা তুমিই শুধু তুমি।
প্রেমের অনলে জানি যে প্রদীপ
সে দীপের শিখা তুমি
জোনাকি পাখায় ঝিকিমিকি নেচে এ হৃদি বাঁচালে তুমি
আপন হারায়ে উদাসী গানের লহগো প্রেমাঞ্জলি
তোমারে রচিয়া ভরেছি আমার বাউল গানের ঝুলি।
মুক্তা যেমন শুক্তির বুকে তেমনি আমাতে তুমি
আমার পরাণে প্রেমের হিল্লা তুমিই শুধু তুমি।
চমকি দেখিনু আমার প্রেমের
জোয়ার তোমারি মাঝে
হৃদয় দোলায় দোলাও আমারে তোমার হিয়ারই মাঝে
তোমার প্রাণের পুলক-প্রবাহ নিশীথে চাহেয়া মাতে
জোছনার নাম গাহ মোর গান আমারি একতারাতে
মুক্তা যেমন শুক্তির বুকে তেমনি আমাতে তুমি
আমার পরাণে প্রেমের হিল্লে তুমিই শুধু তুমি।
আগের
পাতা
গানে
ভুবন ভরিয়ে দেবে
শিল্পী: শ্যামল মিত্র
গানে ভুবন ভরিয়ে দেবে
ভেবেছিল একটি পাখি;
হঠাত্ বুকে বিঁধলো যে তীর
স্বপ্ন দেখা হল ফাঁকি।
তাই গান শোনাতে হায়
কণ্ঠ কেঁপে যায়;
তারে হাসিমুখে যেতে দাও,
শেষ গান শুনে নাও -
মনে রেখো, মনে রেখো, তার এই শেষ গান।
যার গান শুনে একদিন
কণ্ঠে পড়ালে মালা;
আজ তোমাদের সভা হতে
তার বিদায় নেবার পালা।
ঝরে কত তারা অলখে
মনে রাখে বল কে;
ছিল কত সুখ বুকে তার
জানিবে না কেহ আর -
মনে রেখো, মনে রেখো, তার এই শেষ গান।
আগের
পাতা