বিবিধ প্রসঙ্গ
ডিসেম্বর ১৫, ২০১৪
অসুর নিয়ে আসুরিক সমস্যা!
দিলীপ দাস
দেবতাদের সামনে সবাই হাত জড়ো করলেও, কাউকে অসুরদের ভক্তিভরে প্রণাম করতে দেখিনি। প্রত্যেকটি অসুর বীরপুরুষ, রীতিমত যুদ্ধ করে বাহুবলে দেবতাদের খেদিয়ে স্বর্গরাজ্য জয় করেছিলেন, এমনকি তারা দেবতাদের বর-টরও দিয়েছেন। তবু শেষকালে বীরের মত যুদ্ধ করে দেবতাদের হাতে প্রাণ দিয়েছেন সবকটা অসুর। আর আমাদের কাছে অসুর মানেই অশুভ, ভিলেন, যাদের ইয়াব্বড়ো গোঁপ ও ডাকু মার্কা চোখ – বুঝতে পারি না এটা কেমন ভাবে হল।
শনিবারের সকাল। স্ত্রী কনফারেন্সে লেকচার দিতে বেশ কয়েকদিন হল বিদেশে গেছেন, নভেম্বরের শুরুতেই ঠাণ্ডা পড়ে গেছে, আমি বিরহবিধুর হয়ে লেপ মুড়ি দিয়ে হিংয়ের কচুরির স্বপ্ন দেখার চেষ্টা করছি, আর তখনই ফোনের খ্যান খ্যানে আওয়াজে আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে খান খান হয়ে গেল। প্রিয় বন্ধুবর অমিতাভর ফোন। পেশায় বিজ্ঞানী অমিতাভ সুলেখক, সুরসিক ও অনেক বিষয়ে খবর রাখে। গতকাল এক ইংরেজী দৈনিকে মহিষাসুরের ওপর একটা লেখা বেরিয়েছিল। পূর্ব ভারতের কোন এক আদিবাসী সম্প্রদায় নিজেদের অসুরদের বংশধর বলে ঘোষণা করেছে, তাই আমি অমিতাভকে খবরটা পাঠিয়ে ওর মতামত জানতে চেয়েছিলাম।
ফোনের ওপাশ থেকে প্রশ্ন এলো, ‘কি হে কাজ কারবার নেই, মহিষাসুরকে নিয়ে পড়েছ কেন?’ বুঝলাম মহিষাসুর ব্যুমেরাং হয়ে আমার ঘুম ভাঙ্গাচ্ছেন। লেপ ছেড়ে উঠে বসে স্বীকারোক্তি করলাম আমি মহিষাসুরকে চিনি না এবং এখনো ব্রেকফাস্ট অবধি খাই নি।
‘খেতে হবে না ব্রেকফাস্ট এত বেলায়, তারচেয়ে বরং আমার এখানে চলে এসো, একেবারে লাঞ্চ করে যাবে। দোয়েল হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানি রাঁধছে, সঙ্গে পায়েস’।
পাগলকে সাঁকো নাড়তে বলা আর আমাকে হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানির লোভ দেখানো, দুই-ই এক। তখন বুঝিনি যে সূক্ষ্ম সূচীরূপে যিনি প্রবেশ করছেন তিনিই অসুর।
অমিতাভর প্রশস্ত বৈঠকখানায় বসে কফিতে চুমুক দিতে দিতে শুনছিলাম অসুরকথা। প্রথমেই ও আদিবাসীদের ব্যাপারটা পাব্লিসিটি স্টান্ট বলে উড়িয়ে দিল। ভবিষ্যদ্বাণী করল যে শিগ্গিরই এরকম দাবী আরো দেখা যাবে, অসুরদের জন্য সংরক্ষণ, অসুরভাতা ইত্যাদির দাবী-দাওয়াতে এটা অচিরে রাজনীতির রূপ নেবে।
আমি চট করে জমি ছাড়বার পাত্র নই, আত্মপক্ষে যুক্তি তুলে ধরার চেষ্টা করলাম যে অসুররা আদতে অনার্য ছিলেন সেটা সর্বজনবিদিত, তাই এই আদিবাসীরা অসুরদের বংশধর হতেই পারেন। তাছাড়াও মাইসোর শহরের বিরাট মহিষাসুরের মূর্তি (ছবি-১) দেখে মনে হয় যে মহিষাসুর আসলে অনার্য নেতা ছিলেন।
কিন্তু অমিতাভ আমার যুক্তি এক গণ্ডূষে পান করে ফেলল।
‘মাইসোরের মহিষাসুরের মূর্তিখানা জবরদস্ত হলেও তার সাথে পুরাণের মহিষাসুরের সম্পর্ক কেবল লোককথা ছাড়া কিছু নয়। আর, এ খবর কোথায় পড়লে যে অসুর মানে অনার্য? জানো কি অসুররা আদতেই অনার্য ছিলেন না এবং একসময় দেবতাদেরও অসুর বলা হত? তুমি যদি অভিধান খোল, তাহলে দেখবে অসুর কথাটার প্রথম অর্থ হচ্ছে, Supreme Spirit, Divine. অসুরের যে প্রচলিত অর্থ Evil Spirit, সেটাও আছে, তবে তালিকার নীচের দিকে’।
আমি একেবারে চমকে গেলাম একথা শুনে। ‘হেঁয়ালির মতো লাগছে হে! দেবতাদেরও অসুর বলা হত? আমরা সবাই জানি যে অসুর মানেই সুরের বিপরীত ও অশুভ। কাজেই অসুর আর দেবতা এক হয় কি করে? এরা তো দুই বিপরীত প্রকৃতির। অশুভের বিরুদ্ধে শুভ শক্তির জয়, আর সেই নিয়ে দেবাসুরের সংগ্রাম, এর নমুনা তো পুরাণগুলিতে ভুরি ভুরি’।
‘পুরাণের মধ্যে অসুরের আদি ইতিহাস খুঁজতে যেয়ো না। পুরাণের অসুরগণ দেবতাদের শত্রু ও দেবতাদের হাতে routinely বধ্য। পুরাণগুলি অনেক পরে লেখা ভক্তিশাস্ত্র, সেখানে শুভ-অশুভের সংগ্রামের রূপকের সাহায্যে ঈশ্বরের চতুর্বিংশতি তত্ত্বের বর্ণনা আছে। তাই পুরাণগুলিকে ভক্তিভরে মাথায় ঠেকিয়ে তুলে রাখ, ওখানে অসুরদের ইতিহাস খুঁজলে গোলকধাঁধায় ঘুরে মরবে’।
‘তাহলে অসুরদের ইতিহাস কোথায় খুঁজব?’ আমি যদিও কোনোদিন পুরাণের পাতা ওল্টাইনি।
‘অসুরদের ইতিহাসের শুরু ও প্রথম উল্লেখ ঋগ্বেদে, যেটি মুখ্য পুরাণগুলির থেকে প্রায় হাজার দুই বছর আগে লেখা। তবে ঋগ্বেদের দশটি মণ্ডলের সবকটি যে এক সঙ্গে রচিত তা নয়। শুরুর দিকে রচিত মণ্ডল গুলিতে, যেমন দ্বিতীয় থেকে সপ্তম মণ্ডলে, দেবতাদের বার বার সম্বোধন করা হয়েছে অসুর বলে’।
‘দেবতাদের অসুর বলা হয়েছে? বিশ্বাস হচ্ছে না’।
‘তোমার মতো ঘোর নাস্তিক ও অবিশ্বাসীর যে বিশ্বাস হবে না সেটা জানতাম। স্ট্যাটিস্টিক্স দিচ্ছি - দ্বিতীয় থেকে সপ্তম মণ্ডলে মোট উনত্রিশ বার বিভিন্ন দেবতাকে অসুর বলে সম্বোধন করা হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশীবার অগ্নিকে, মোট সাতবার। এছাড়াও সবিতা, রুদ্র, মিত্র-বরুণ, পর্জন্য, অর্যমা, বায়ু – সক্কলকেই অসুর বলা হয়েছে। তাহলে বুঝতে পারছ যে কি ব্যাপক ব্যাপার এবং অসুররা মোটেই অনার্য ছিলেন না। আসলে এঁদের সকলকেই শ্রদ্ধার সাথে অসুর বলে ডাকা হয়েছে। পঞ্চম মণ্ডলের এই ঋক্টা শোন – “অগ্নি হব্য প্রদান করিলে তৃপ্তিলাভ করেন, তিনি অসুর, সুখদাতা, ধনাধিপতি, গৃহদাতা, হব্যবাহক, সৃষ্টিকর্তা, দূরদর্শী, আরাধ্য, যশস্বী ও শ্রেষ্ঠ (ঋগ্বেদ ৫.১৪.১)”; এরকম উদাহরণ পঞ্চম মণ্ডলেই আরো আটবার আছে’।
‘তাহলে পুরো জিনিসটা উলটে গেল কি করে? অসুররা দেবতাদের শত্রু ও অশুভ কবে থেকে হল?’ অসুরদের পালাবদলে আমি যারপরনাই বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম।
‘সেটা হয়েছিল ঋগ্বেদের যুগের শেষের দিকে। ষষ্ঠ মণ্ডলের এক জায়গায় (ঋগ্বেদ ৬.২২.৪) দেখি ইন্দ্রকে অসুরাঘ্ন অর্থাৎ অসুরহন্তা বলা হয়েছে, সেটাই প্রথমবার অসুরদের সঙ্গে ইন্দ্রের কোন যুদ্ধের ইঙ্গিত দেয়। আর ঋগ্বেদের দশম মণ্ডল, যেটা সবচেয়ে শেষের দিকে রচিত, সেখানে দেখি ইন্দ্র (ছবি-২) পিপ্রু নামের এক অসুরকে পরাজিত করেছেন (ঋগ্বেদ ১০.১৩৮.৪)। এছাড়াও দশম মণ্ডলের আরো কয়েক জায়গায় এবং অথর্ববেদ, যা ঋগ্বেদের কয়েকশো বছর পরে রচিত, আমরা বহু বার দেবতাদের হাতে অসুরদের যুদ্ধে পরাজয়ের কথা দেখি’।
‘তার মানে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে, যত সময় গেছে ক্রমে ক্রমে অসুররা দেবতাদের শত্রু বিবেচিত হয়েছেন, এবং পুরাণগুলি যখন লেখা হয়েছিল তখন তারা সম্পূর্ণভাবে অশুভশক্তি হিসেবে গণ্য হয়েছেন। কিন্তু এর কারণটা কি? এই রূপান্তর ঘটল কেন ও কি করে?’
দোয়েল আমাদের কথা শুনতে শুনতে এদিকে এলো, ‘অসুরদের নিপাত হক, খাবার দেওয়া হয়েছে।’
অনেকক্ষণ থেকে বিরিয়ানির গন্ধ পাচ্ছিলাম আর আমার ভেতরটা পাভলভের সারমেয়র মত ছটপট করছিল।
সোনা রংয়ের বিরিয়ানি, ওপরে এক কোনে একটা খোসা ছাড়ানো ডিম হিমবান গিরির মতো দাঁড়িয়ে আছে। চারপাশে ধনেপাতার সবুজ মেখলা। দর্শনে ও ঘ্রাণে খিদেটা বাঘের মতো লাফিয়ে উঠল। আমরা ভীম-বেগে বিরিয়ানির প্লেট আক্রমণ করলাম।
দোয়েল বলল, ‘বর্বর!!’
একটা মাংসের হাড় আরাম করে চুষছিলাম চোখ বুজে, কিন্তু অমিতাভর কাছে বিরিয়ানি ও অসুর, দুই-ই সমান। সে আসুরিক সমস্যাটা ভোলে নি।
মুখে বিরিয়ানি চালান দিয়েই সে আরম্ভ করল ‘অসুরদের রূপান্তরের কারণ খুঁজতে গেলে আমাদের একটু পেছনে হাঁটতে হবে - প্রাচীন ইরানীয়ান ধর্মগ্রন্থ আবেস্তাতে উঁকি পাড়তে হবে’।
‘না না, তুমি চাকদার গাড়ী চক্রধরপুর নিয়ে যাচ্ছো, অদ্দুর যেতে পারব না’। আমি সশঙ্কিত হয়ে প্রতিবাদ করি। অমিতাভকে বিলক্ষণ চিনি, এই আলোচনা সে সারারাত টেনে নিয়ে যেতে পারে।
‘আরে বেশিদূর যাবো না, দমদম অব্ধি। তুমি জানো যে Indo-European ভাষাভাষী tribe গুলি, যাদের সাধারণ ভাবে আর্য বলা হয়, তাদের ভারতবর্ষে আসার migration route-এ পড়েছিল ইরান। আর্যদের একটি শাখা সেখানে বিকশিত হয়, সেজন্য প্রাচীন ইরানীয়ানদের ধর্মগ্রন্থ আবেস্তার ভাষার সাথে প্রাচীন বৈদিক সংস্কৃতের অনেক মিল দেখতে পাই। মনে রেখো পার্সীরা অগ্নি উপাসক আর অগ্নি হচ্ছেন ঋগ্বেদেরও অন্যতম প্রধান দেবতা। কিন্তু ইন্টারেস্টিং ব্যাপারটা হচ্ছে যে আবেস্তার প্রধান আরাধ্য আহুরা মাজদা হচ্ছেন Supreme God এবং আবেস্তার দেবতারা (daevas) হচ্ছেন মন্দ’।
‘এই আহুরা কি অসুরের ইরানীয়ান রূপ? তাহলে আবেস্তার হিসেবে দেবতা-অসুরের সম্পর্ক একেবারে উল্টো!’
‘সে রকমই মনে করেন পণ্ডিতেরা। অনেকে মনে করেন ঋগ্বেদের শক্তিশালী ও প্রধান দেবতা বরুণই হচ্ছেন আবেস্তার আহুরা মাজদা’।
‘একটা দলাদলির গন্ধ পাচ্ছি, বৈদিক ও প্রাচীন ইরানীয়ান দুই দলের দেবতাদের মধ্যে ছুরি কাটারি ছিল মনে হচ্ছে। কিন্তু এটা হল কি করে?’ দোয়েল বেশ ইন্টারেস্ট পেয়ে আমাদের আলোচনায় যোগ দিল।
আমার প্রায় সমস্ত ইন্দ্রিয়গুলিই বিরিয়ানির স্বাদ গ্রহণ করতে ব্যস্ত, খালি কানটা খোলা রেখে শুনছিলাম।
‘এ সম্বন্ধে অনেকগুলো থিয়োরি আছে, তার মধ্যে একটা বলি। ভারতীয় আর্যগণ ও তাদের দূর সম্পর্কের ইরানীয়ান জ্ঞাতিদের মধ্যে শুরু শুরুতে একই দেব-দেবীদের অর্চনা-স্তুতি করা হত। তারপর, ইরানীয়ানরা ক্রমশ: একেশ্বরবাদের দিকে ঝুঁকছিল। তাদের কাছে বৈদিক ভারতীয়দের বহুদেবতার পূজা নিন্দনীয় মনে হল ও দেবতারা মন্দ লোক হয়ে দাঁড়াল। এ নিয়ে বিভাজন তৈরি হল। ফলে ভারতীয়রাও অসুরদের মায়াধারী ও মন্দ বলতে লাগল। জন্যই আমরা পুরাণের অসুরদের মায়াযুদ্ধ করতে দেখি। এই মায়া বা magical শক্তিটা কিন্তু প্রথম প্রথম মন্দ বিবেচিত হত না, কারণ বরুণকে প্রভূত মায়ার অধিকারী বলা হয়েছে। এর কিন্তু মুস্কিলটা হল অগ্নিকে (ছবি-৩) নিয়ে, তাকে দুপক্ষই চায়’।
‘তাই তো, বেশ সমস্যা, মেরে পাস অগ্নি হ্যায় সেটা কে বলবে’। দোয়েলের ফিল্মি ডায়লগ।
‘সেটার জন্য ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলের আর একটা সুক্ত (ঋগ্বেদ ১০.১২৪) দেখতে হবে। এতে অগ্নি বলছেন – “আমি পিতা অসুরকে বিদায় জানাচ্ছি। আমি অদেব-দের থেকে দেবগণের কাছে গুপ্ত পথে ফিরে এসেছি ও ইন্দ্রকেই বরণ করছি। আমি ফিরে আসার পর অসুরদের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেছে” – বুঝতে পারছ, এখানে প্রচ্ছন্নভাবে অদেব ও দেবগণের দ্বন্দ্বের কথা বলা হচ্ছে যার শেষে অগ্নি ঋগ্বেদের দেবতাদের কাছে ফিরে এসেছেন। আর অদেবগণ যে অসুর সেটাও বলা আছে’।
‘মানে অগ্নির পালাবদল?’
‘ঠিক, অগ্নি দলবদল করলেন, ঋগ্বেদে অসুরগণ মন্দ বিবেচিত হলেন, ইন্দ্র পিপ্রু নামক অসুর সংহার করলেন ও মামলা খতম। সেই থেকে অসুরগণ মন্দ হয়েই রয়ে গেলেন’।
দোয়েল প্রশ্ন করল, ‘আর তারপরই কি ইন্দ্র বৃত্রাসুরকে বধ করলেন’?
‘বৃত্রকে ঋগ্বেদে অসুর বলা হয় নি, মস্ত বড় অহি অর্থাৎ সাপ বলা হয়েছে যে সমস্ত জল আটকে রেখেছিল, ইন্দ্র যাকে হত্যা করে জলধি বন্ধনমুক্ত করেন। সেটা পুরনো ঘটনা, ঋগ্বেদের বিভিন্ন জায়গায় তার উল্লেখ আছে। অবশ্য পণ্ডিতেরা এটাকে একটা রূপক বলেন, কিন্তু সে আলোচনা এখন তোলা থাক’।
‘এবার থেকে অসুরদেরও প্রণাম করতে ভুল হবে না। অসুরদের কিস্যা যখন বলা হল, তখন রাক্ষস ও দৈত্যদের কথাও শোনাও’।
‘রাক্ষসদের উল্লেখ ঋগ্বেদে আছে বরাবর মন্দ জনতা হিসেবে। অগ্নি, ইন্দ্র সক্কল দেবতাদের অনুরোধ করা হচ্ছে যাতে তাঁরা রাক্ষসদের ধ্বংস করে ফেলেন, পুড়িয়ে ফেলেন, ইত্যাদি। পণ্ডিতের মতে এরা বোধহয় স্থানীয় আদিবাসীরা, যারা গেরিলা কায়দায় আর্যদের বিব্রত করত। আর দৈত্যদের দেখা মিলছে পুরাণে, তাই তাদের কথা এখন নয়’।
‘আর ভুত-প্রেত-পেত্নী এরাই বা বাকী থাকে কেন? আমার আবার ভূতের ভয়, তেনাদের চটাতে চাই না’
‘ভুতকে ঋগ্বেদে পাওয়া যায় যাতু বা যাতুধান নামে, অশুভ আত্মা, দূরে রাখার জন্য ঋগ্বেদে ও অথর্ববেদে মন্ত্র আছে -’
এবার দোয়েল গর্জে উঠল ‘আর পেত্নী তোমাদের অফিসে প্রচুর আছে!’
আমরা বিরিয়ানির পাহাড় প্রায় ধ্বংস করে ফেলেছি। পায়েস এসে পড়েছে। সাদা ক্ষীর সমুদ্রে একটা তেজপাতা তিমি মাছের লেজের মত উল্টে আছে। এপাশ ওপাশ হিমশৈলের মতো কিছু কিসমিস্ মাথা তুলে আছে। বর্ণে গন্ধে একেবারে অমৃত। আমরা, অমৃতের সন্তানরা, অসুরদের দূরে রেখে সেই অমৃতের সদ্ব্যবহারে ব্যস্ত হলাম।
যেসব বই থেকে তথ্যসূত্র নিয়েছি
1. Hale, Wash Edward - Asuras in Early Vedic Religion, 1987
2. Oldenberg, Herman – Die Religion des Veda (English Traslation by Shridhar Shotri), 1988
3. দত্ত, রমেশচন্দ্র - ঋগ্বেদ সংহিতা, বেঙ্গল গভর্নমেন্ট প্রেস, ১৮৮৬
4. Monier-Williams Sanskrit English On-line dictionary
লেখক পরিচিতি : দিলীপ
যাদবপুর ও ব্যাঙ্গালোরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের প্রাক্তনী।
বিগত ষোল বছর আমেরিকার সেন্ট লুইস্ (মিসৌরী) শহরবাসী। ইতিহাস
পেশা নয়, নেশা। অবসর সময়ে প্রাচীন ভারতের ইতিহাস, বিশেষতঃ Indology
নিয়ে নাড়াচাড়া করেন। দেশভ্রমন ভালোবাসেন, আজ পর্যন্ত ঊনিশটি দেশ
হয়েছে, আশা করা যায় সংখ্যাটি ভবিষ্যতে আরো বাড়বে।
(আপনার
মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)
অবসর-এর
লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য
অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।