প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

পুরনো দিনের পত্রিকা ও বই থেকে নির্বাচিত প্রবন্ধ

জুলাই ৩০, ২০১৪

 

দুটি কাহিনী

কুমুদবন্ধু সেন


[ লেখক পরিচিতি : বর্তমান কাহিনী দুটির লেখক কুমুদবন্ধু সেন। জন্ম ২৮শে অগ্রহায়ণ ১২৮৬ বঙ্গাব্দ। প্রচারবিমুখ কুমুদবন্ধু রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বহু ঘটনার সাক্ষী এবং বহু ভক্ত সন্ন্যাসীর সঙ্গে তিনি ঘনিষ্ঠভাবে মিশেছেন। স্বামী ব্রহ্মানন্দের ( রাখাল মহারাজ ) তিনি ছিলেন অত্যন্ত কাছের লোক। ‘উদ্বোধন’ পত্রিকায় ১৩১৫ সালের অগ্রহায়ণ সংখ্যায় তার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। এর পর সুদীর্ঘ চার দশক ধরে তার অজস্র লেখা প্রকাশিত হয়েছে। ‘উদ্বোধন’ ছাড়াও ‘দেশ’, ‘মানসী’, ‘বিচিত্রা’, ‘বঙ্গশ্রী’, ‘পঞ্চপুষ্প’, ‘বঙ্গবাণী’ প্রভৃতি পত্রিকাতেও তার প্রবন্ধাদি প্রকাশিত হয়েছে। তার রচনায় বিষয়বস্তুর ব্যাপকতা বিস্ময়ের সৃষ্টি করে। মাতৃভাষা বাদ দিয়ে ইংরাজি ও সংস্কৃতেও তার যথেষ্ট ব্যুৎপত্তি ছিল। কলকাতার সেঞ্চুরী স্কুল ও রিপণ কলেজে তিনি পড়াশোনা করেছেন। বৈষ্ণব সাহিত্যে তার পাণ্ডিত্য ছিল অসাধারণ। কুমুদবন্ধু ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দ্বিতীয় গিরিশ বক্তা’ (১৯৩৪)। গিরিশচন্দ্র ঘোষের জীবন ও সাহিত্য সম্বন্ধে তিনি ছিলেন একজন বিশেষজ্ঞ। ‘দেশ’ পত্রিকার প্রথম সংখ্যা থেকে শুরু করে পরবর্তী পাঁচ মাসে অন্তত ১৫টি সংখ্যায় বিবেকানন্দ সম্বন্ধে লিখেছেন কুমুদবন্ধু। সারদা দেবীর জন্মশতবর্ষে ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’য় ( ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৫৪ ) প্রকাশিত হয়েছে তার লেখা ‘শ্রীশ্রীমা সারদাদেবী’। দীর্ঘ রোগ ভোগের পর ১৯৬৯ সালের ২৮শে অগ্রহায়ণ রাত্রি ৯টায় ৮২ বছর বয়সে অকৃতদার কুমুদবন্ধু কার্ণানি হাসপাতালে পরলোক গমন করেন। (তথ্য সূত্র : ‘স্মৃতিকথা’, রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ আশ্রম, হাওড়া)। ] দীপক সেনগুপ্ত।

এক

প্রায় বিশ বৎসর পূর্বে মঠ ও মিশনের বর্তমান অধ্যক্ষ পূজ্যপাদ স্বামী শঙ্করানন্দজী বলেন যে, একদিন বৈকালে শ্যামবাজার দেশবন্ধু পার্কে বেড়াইতে গিয়া এক বৃদ্ধ ভদ্রলোকের সঙ্গে তাঁহার দেখা হয়; তিনি ঠাকুরকে দর্শন করিয়াছেন এবং গেঁড়াতলা মসজিদের জনৈক ফকিরের সঙ্গে ঠাকুরের সম্বন্ধে এক আশ্চর্য ঘটনা বলিয়াছেন, যাহা কোনও জীবনচরিতে নাই। মহারাজজী আমাকে একবার ঐ ভদ্রলোকের সঙ্গে দেখা করিয়ে সব শুনিয়া আসিতে বলিলেন এবং তাঁহার নাম ও বাড়ীর ঠিকানা দিলেন। স্বামী শঙ্করানন্দজী তৎকালে বাগবাজারে বলরাম মন্দিরে অবস্থান করিতেছিলেন।

আমি তাঁহার নির্দেশানুসারে উক্ত ভদ্রলোকটির বাড়ীতে কয়েকদিন পরে উপস্থিত হইলাম। শ্যামবাজার দেশবন্ধু পার্কের পশ্চিম দিকের একটি দোতলা বাড়ীতে তিনি বাস করিতেন। তাঁহার নাম শ্রীযুক্ত মন্মথনাথ ঘোষ। পূজনীয় শঙ্করানন্দ মাহারাজের নাম উল্লেখ করিয়া আমি বলিলাম, “আমি তাঁর নিকট হতে আপনার কথা শুনে আপনাকে দেখতে এসেছি।”

বৃদ্ধ ভদ্রলোক খুব আদর যত্ন করিয়া আমাকে তাঁহার নিকট বসাইলেন। আমি তাঁহাকে বলিলাম, “মহারাজজীর কাছে শুনিয়াছি যে আপনি দক্ষিণেশ্বরের পরমহংস দেবকে দর্শন এবং একবার একটি মুসলমান ফকীরের সঙ্গে তাঁর অপূর্ব মিলনের ঘটনাও প্রত্যক্ষ করেছেন। আপনার কাছে আমি কয়েকটি বিষয় জানতে চাই। আপনি কখন, কেন এবং কার সঙ্গে ঠাকুরকে দর্শন করতে গিয়েছিলেন ? কতদিন আপনার তাঁর নিকট যাতায়াত ছিল ? আপনি কিভাবে গেঁড়াতলা মসজিদে ফকীরের কাছে ঠাকুরকে দেখতে পেলেন ? এইসব বৃত্তান্ত জানবার জন্যই আপনার নিকট এসেছি।” তিনি আমার প্রশ্ন শুনিয়া খুব আনন্দিত হইয়া বলিলেন, “হাঁ – সব কথাই আপনাকে বলব।” আপনি শুনুন –

“ আমাদের বাড়ী ছিল বীডন ষ্ট্রীটে। সে সময় গান বাজনা কনসার্টের খুব প্রচলন ছিল। সবে যৌবনে পা দিয়েছি – পড়াশুনার তেমন মন ছিল না, গানবাজনার দিকেই ঝোঁক। পাড়ার কাছেই একটি কনসার্টের দল ছিল। আমার সমবয়সী বন্ধুবান্ধবেরা অনেকে সেই দলভুক্ত। আমি দলের আড্ডায় রীতিমত যাতায়াত করি। একদিন সকালে নৌকা করে আমরা কয়েকজন গান-বাজনা করতে করতে পেনেটি যাচ্ছিলাম – পথে দক্ষিণেশ্বরে রাণী রাসমণির কালীবাড়ী পড়ায় আমরা মাঝিকে সেই স্থানে নৌকা থামাতে বললাম। ঘাটে পৌঁছুবার আগেই একজন বন্ধু বললেন, “ওরে বড় খিদে পেয়েছে। শুনেছি দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে একজন পরমহংস আছেন। তাঁর কাছে গেলেই তিনি কিছু খেতে দেন।”

“ নৌকা দক্ষিণেশ্বরে কালীবাড়ীর ঘাটে পৌঁছলেই কে তাঁর কাছে যাবে এই নিয়ে বাদানুবাদ চলল। শেষে আমিই বললাম, ‘পরমহংসের কাছে যেতে তোদের এত ভয় সঙ্কোচ কেন ? এই দেখ আমি একলা গিয়ে খাবার নিয়ে আসছি।’ এই বলে আমি ঘাটে নেমে জিজ্ঞাসা করে ঠাকুরের ঘরের সম্মুখে দাঁড়ালাম। আমাকে দেখেই তিনি সহাস্যবদনে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কি রে – তুই কি চাস ?’ আমি সরলভাবে বললাম, ‘ আমরা কলকাতায় থাকি। কনসার্টের দল নিয়ে পেনেটি যাচ্ছি, রাস্তায় খুব খিদে পেয়েছে। প্রাতঃকালে না খেয়েই সবাই বেড়িয়ে পড়েছি। আপনি খেতে দিন, খুব খিদে পেয়েছে।’

“ ঠাকুর তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকাতে লাগলেন। পরে উঠে আমার জন্য কিছু ফলমিষ্টি পাতায় করে দিলেন। আমি বললাম, ‘ এইটুকুতে কি হবে ? আমরা দলে দশবারো জন লোক। এই সামান্য মিষ্টি তো আমার খেতেই ফুরিয়ে যাবে। আরও দিন। ঐ তো চাঙ্গারি ভর্তি আপনার খাবার রয়েছে।’

“ ইহা শুনে ঠাকুর ঠিক বালকের মত চাঙ্গারিটি হাত দিয়ে ঢেকে ফেললেন যেন আমি পাছে জোর করে নিয়ে যাই। তারপর বিরক্তভাবে বললেন, ‘যা ছোঁড়া যা, ঐ নিয়েই যা ! আপনি শুতে ঠাঁই পায় না আবার শঙ্করাকে ডাকে। তোর খিদে পেয়েছে, তুই খা। আবার দলশুদ্ধ সবাইকে দাও!’ আমি বললাম, ‘ মশায়, তাদের ফেলে আমি খেতে চাই নে। এই রইল আপনার দেওয়া খাবার’। এই বলে আমি যেতে উদ্যত হয়েছি, এমন সময় তিনি মধুর স্বরে আমাকে ডেকে বললেন, ‘ওরে হাবাতে হস নে, এই নে।’ এই বলে আবার কতকগুলি খাবার দিলেন। আমি বললাম, ‘এইটুকুতে কি হবে ? খিদেয় সবার নাড়ী চোঁ চোঁ করছে। খাবার রয়েছে, আপনি ইচ্ছে করেই দিচ্ছেন না, কি করি বলুন।’ ঠাকুর সেই কথা শুনে হাসতে হাসতে বললেন, ‘কেন, সবাইকে কেন দেব ? তারা এখানে আসতে পারে না ? তারা এসে খাবার নিয়ে যেতে পারে না ? তোকে তাদের জন্য মোড়লগিরি করতে কে বলেছে ?’ আমি বললাম, ‘আমার কথায় যদি বিশ্বাস না হয় দেখুন নৌকাতে আমরা ১০।১২ জন আছি কিনা ? খিদে না পেলে আপনার কাছে আসবো কেন মশাই।’ ঠাকুর তখন একজনকে ডেকে প্রায় ছোট এক চাঙ্গারি ভরে খাবার সন্দেশ প্রভৃতি দিতে বললেন। আমি তো পাওয়া মাত্রেই নৌকায় গিয়ে বন্ধুদের বললাম, ‘তোরা গেলি নি সঙ্গে আমি একলাই নিয়ে এলাম।’ এই আমার ঠাকুরকে প্রথম দর্শন।

“ তারপর মাঝে মাঝে দক্ষিণেশ্বরে গিয়েছি। তাঁকে দেখলেই মনটা আকৃষ্ট হত। তাঁর চারিদিকে অনেক ভদ্রলোক বেষ্টন করে থাকে, সব বিদ্বান পণ্ডিত - কেশববাবু, বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী প্রভৃতি। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে সাহাস হত না । আমাকে দেখলেই ঠাকুর বলতেন, ‘ঐ ছেলেটাকে ভাল করে খাবার দে। ওর ভারি খিদে পায়।’ শুনে আমার লজ্জা বোধ হত। পরে যখন আমার বিয়ে হল, চাকরির চেষ্টায় উমেদারি করতে ঘুরতে হত, তখন তাঁর কাছে আমার আর যাওয়া হয় নি। অনেক চেষ্টায় রেলি ব্রাদার্সে চাকরি যোগাড় করলাম। বেশী মাইনে নয়, তাই ধর্মতলা থেকে গেঁড়াতলা হয়ে বিডন ষ্ট্রীটে হাঁটা পথে যেতাম। একদিন প্রায় সন্ধ্যা হয় হয় গেঁড়াতলা মসজিদের সমুখে দেখি একটি মুসলমান ফকীর দাঁড়িয়ে চীৎকার করছে, ‘প্যারে আও’ । চোখ দিয়ে জল পড়ছে, বেশ প্রেমের স্বরে আর্তভাবে ডাকছে, ‘প্যারে আ জাও, আ জাও।’ আমি শুনে মুগ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছি, এমন সময় দেখি ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব একটি ভাড়াটিয়া গাড়ী হতে নেমেই সবেগে চললেন সেই মুসলমান ফকীরের দিকে। পরে দুইজনে একেবার প্রেমালিঙ্গনবদ্ধ। ভাড়াটের গাড়ীতে দুইজন লোক ছিল, একজন ঠাকুরের ভ্রাতুষ্পুত্র রামলাল। - এঁর হাত দিয়ে দু’একবার মিষ্টান্ন প্রসাদ আমায় ঠাকুর দিয়েছিলেন। ঠাকুর কালীঘাটে কালীমাতাকে দর্শন করে ভাড়াটিয়া গাড়ীতে ফিরছিলেন, পথে এই অপূর্ব দৃশ্য !

“ সেই ছবি আমার স্মৃতিতে আজও জ্বলজ্বল করছে। সেই সময় ঠাকুরকে চিনেছি, না জানতে ইচ্ছা হয়েছে ! এই বৃদ্ধ বয়সে মনে হয় - করুণাময় ভগবানের দর্শন পেয়েও বুঝতে পারি নাই, সময় না হলে কিছু হয় না, তাই ক্ষোভ হয় যৌবনের মোহে কত অমূল্য রত্ন পেয়েও হারিয়েছি।”

আমি মন্মথবাবুকে বলিলাম, “ আপনি ধন্য, তবুও নরদেহে অবতীর্ণ ভগবানকে দর্শন করেছেন। স্মৃতিতে সেই নিত্য চিন্ময়রূপ তো উদয় হয়। ইহাও কম ভাগ্যের কথা নয়।”

এইরূপ কথাবার্তার পর আমি মন্মথবাবুর নকট হইতে বিদায় লইয়া আসিলাম এবং পূজনীয় শঙ্করানন্দ মহারাজকে সব কথা নিবেদন করিলাম। -


দুই

হাওড়া হইতে বালী পর্যন্ত বাস চলাচল আরম্ভ হইবার প্রায় তিন মাস পরে একদিন বৈকালে পূজনীয় শঙ্করানন্দ মহারাজ কলিকাতা হইতে বাসে বেলুড় মঠে ফিরিতেছিলেন। কিয়দ্দুর বাসটি আসিবার পর পার্শ্বস্থ জনৈক সহযাত্রী তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “ আপনি কি রামকৃষ্ণ পরমহংস মঠের ”? মহারজজী বলিলেন, “হাঁ, কিছু বলবেন কি ?”

তিনি বলিতে লাগিলেন,

“ বাল্যকালে বাবার নিকট শুনেছি রামকৃষ্ণ পরমহংস আমাদের যে কি উপকার করেছেন তা মুখে বলা যায় না। আমরা জাতিতে মুসলমান এবং কামারপুকুর অঞ্চলে আমাদের বাড়ী। এখন কলকাতার চাঁদনীতে একটি দোকান আছে। বাবা কয়েক বৎসর হল গত হয়েছেন।

“ বাবা বলেছিলেন, আমাদের তখন মধ্যবিত্ত অবস্থা ও তদুপযুক্ত ঘরদ্বার খামার ধানের গোলা ইত্যাদি ছিল। কিন্তু দৈবদুর্বিপাকে প্রতি বৎসর আগুন লেগে সমস্ত পুড়ে যেত। এইরূপ ২।৩ বার হওয়ার পর একদিন জনৈক ব্রাহ্মণবন্ধুর নিকট আমার দুঃখের কাহিনী বলছিলাম। সে সময়ে রামকৃষ্ণ পরমহংস ঐ পথ দিয়ে লোকজন পরিবেষ্টিত হয়ে কীর্তন করতে করতে গ্রামান্তরে যাচ্ছিলেন। আমার বন্ধু তাঁকে অদূরে দেখে আমাকে বলেন, ঐ যে মহাপুরুষ কীর্তন করতে করতে যাচ্ছেন, তাঁহার শরণ লও। তিনি তোমাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারবেন।

“ পিতা এই কথা শুনে সেই মহাপুরুষকে নিবেদন করবার জন্য ভক্তিভাবে বিনয়সহ ভূমিস্পর্শ ক’রে সেলাম করতে করতে তাঁর সম্মুখে উপস্থিত হন। পরমহংস পিতাকে প্রশ্ন করেন, ‘ কি বাবা ?’ পিতা বলিলেন, ‘ বাবা, আমরা ছা-পোষা মধ্যবিত্ত লোক, যা কিছু ঘর বাড়ী খামার আছে প্রতি বৎসর আগুনে পুড়ে গেলে কি প্রকারে আমরা বাঁচতে পারি ? এইজন্য আপনার শরণ নিচ্ছি, একটা উপায় দয়া করে করুন’ । এই কথা শুনে পরমহংস জিজ্ঞাসা করলেন, - ‘কোথায় তোমার ঘর ?’ রাস্তার অনতিদূরে নির্দেশ করিয়া পিতা বলিলেন, -‘ঐ খানে, এখনও পোড়ার সব চিহ্ন রহিয়াছে।’

পরমহংস পিতাকে বলিলেন, ‘ আচ্ছা চল’। অন্যান্য লোকজনদের একটু অপেক্ষা করতে বলে নিজে পিতার সঙ্গে অগ্রসর হতে লাগলেন। বাড়ীর কাছাকাছি পৌঁছলে তিনি বাবাকে কয়েকটি ফুল আনতে বললেন। পিতা কয়েকটি ফুল নিয়ে এলে তিনি হাত পেতে নিলেন ও বললেন, ‘ কতটা জায়গা জুড়ে তোমার বাড়ী খামার যা আগুনে নষ্ট হয়, দেখিয়ে নিয়ে চল ’। পিতা তাঁর কথামত আগে আগে চলতে লাগলেন। পরমহংস বিড়বিড় করে কি বলে যাচ্ছেন ও মধ্যে মধ্যে এক একটি ফুল ফেলতে লাগলেন। এইভাবে বাড়ী খামার প্রদক্ষিণ করে পিতা একস্থানে দাঁড়ালে পরমহংস জিজ্ঞাসা করলেন ‘ সবটা হয়েছে ?’ পিতা তদুত্তরে ‘আজ্ঞে হয়েছে ’ বললেন। এর পর থেকে এযাবৎ আর আমাদের বাড়ীতে আগুন লাগে নি। এজন্য আমরা পরমহংস মহাশয়ের নিকট চিরকৃতজ্ঞ।”

( ‘উদ্বোধন’ মাসিক পত্রিকা, অগ্রহায়ণ, ১৩৬২ )।

( এই সঙ্গেই ‘পুরানো পত্রিকা থেকে কিছু নির্বাচিত রচনা’ ধারাবাহিকটি শেষ হল )।

(আপনার মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)

অবসর-এর লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.

 


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।