প্রথম পাতা
শহরের তথ্য
বিনোদন
খবর
আইন/প্রশাসন
বিজ্ঞান/প্রযুক্তি
শিল্প/সাহিত্য
সমাজ/সংস্কৃতি
স্বাস্থ্য
নারী
পরিবেশ
অবসর
|
পুরনো দিনের পত্রিকা ও বই থেকে নির্বাচিত প্রবন্ধ
এপ্রিল ১৫, ২০১৫
মেয়েরা আমাদের কে?
প্রমদাচরণ সেন
[লেখক পরিচিতি : প্রমদাচরণের জন্ম ১৮৫৯ খ্রীষ্টাব্দের ১৮ই মে কলকাতায় এন্টালিতে। পৈতৃক নিবাস ছিল খুলনার সেনহাটিতে (এখন বাংলাদেশ)। পিতা তারিনীচরণ সেন ছিলেন এন্টালি থানার দারোগা। মাত্র ৭ বছর বয়সে প্রমদাচরণের মাতৃবিয়োগ হওয়ায় অল্প বয়সেই মাতৃস্নেহ থেকে তিনি বঞ্চিত হন। সেনহাটি গ্রামেরই পাঠশালায় পড়াশোনা শুরু করলেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত অমনোযোগী। ডানপিটে ও বিপথগামী ছেলেদের সঙ্গে পড়ায় প্রায়ই তিনি শিক্ষালয়ে এবং নিজের বাড়িতে তিরস্কৃত ও প্রহৃত হতেন। এতে তার মধ্যে একটা বিদ্রোহের ভাব জেগে ওঠে। ১২ বছর বয়স পর্যন্ত এভাবেই কাটে। ১৮৭২ সালে গ্রামের স্কুল থেকে ছাত্রবৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতার হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন। ব্রাহ্মসমাজের শিবনাথ শাস্ত্রী ছিলেন প্রমদাচরণের শিক্ষক। তিনি তার ‘আত্মচরিত’ গ্রন্থে লিখেছেন - "এই সময়ের মধ্যে বালক-বালিকাদিগের জন্য দুইটি নীতিবিদ্যালয় স্থাপিত হয়। প্রথমটির প্রধান উদ্যোগকর্তা ছিলেন, ‘সখা’ সম্পাদক প্রমদাচরণ সেন। প্রমদা হেয়ার স্কুলে আমার নিকট পড়িত এবং সে সময় আমি ছাত্রদিগকে লইয়া যে ধরণের সভা সমিতি করিতাম তাহাতে উপস্থিত থাকিত। সেই সময় হইতে সে আমাকে পিতার ন্যায় ভালবাসিত এবং সর্ব্ববিষয়ে আমার অনুসরণ করিত। ধর্ম্মপুত্র কথাটি যদি কাহারও প্রতি খাটা উচিত হয়, তাহা হইলে বলা যায় যে প্রমদা আমার ‘ধর্ম্মপুত্র’ ছিল। ইহার পরে সে ব্রাহ্মসমাজে প্রবিষ্ট হয় এবং আমার বাড়ীর ছেলের মতো হয়। সিটি স্কুল স্থাপিত হইলে সে তাহার একজন শিক্ষক হইয়াছিল। সে উদ্যোগী হইয়া অপর কয়েকজন যুবক বন্ধুকে লইয়া সিটি স্কুল ভবনে বালকদিগের জন্য একটি নীতিবিদ্যালয় স্থাপন করে।" মাদ্রাজে একবার ভীষন দুর্ভিক্ষ উপস্থিত হলে শিবনাথ শাস্ত্রীর আদেশে প্রমদাচরণ চারশ টাকা সংগ্রহ করে দিয়েছিলেন।
১৮৭৬ খ্রীষ্টাব্দে প্রমদাচরণ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৃত্তি সহ উত্তীর্ণ হয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজে এল.এ ক্লাসে ভর্তি হন। শিক্ষক শিবনাথ শাস্ত্রীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তিনি ব্রাহ্মসমাজে যোগ দেন। রক্ষণশীল সমাজের অনুসারী তার পিতা তাকে ত্যাজ্যপুত্র করে গৃহ থেকে বিতাড়িত করেন এবং কলেজে পড়ার খরচ বন্ধ করে দেন। বিলেতে গিয়ে উচ্চ শিক্ষা লাভ করার একটা সুপ্ত ইচ্ছা প্রমদাচরণের ছিল। এ কারণে তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন এবং গিলখ্রিস্ট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হতে থাকেন। লাতিন ও ফরাসি ভাষাও শিখতে শুরু করেন। ১৮৭৮ সালে তিনি এল.এ পরীক্ষা দেন কিন্তু একটি উত্তরপত্র জমা দিতে দেরী হওয়ায় পরীক্ষক তার উত্তরপত্রটি ছিঁড়ে ফেলেন। ফলে এল .এ পরীক্ষায় তিনি আর উত্তীর্ণ হতে পারেন নি। পরের বছর গিলখ্রিস্ট পরীক্ষায় তিনি তৃতীয় স্থান অধিকার করলেও বৃত্তি লাভ করেন নি। কলকাতায় বসেই লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের বি.এ পরীক্ষায় বসবার জন্য আবেদন করেন তিনি। এতে লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের আপত্তি না থাকলেও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় রাজী না হওয়ায় তার আর বি.এ পরীক্ষা দেওয়া হয় নি।
বাড়ি থেকে অর্থ সাহায্য বন্ধ হওয়ায় প্রমদাচরণ চাকরীর জন্য চেষ্টা শুরু করেন। চব্বিশ পরগণায় নকিপুর এন্ট্রান্স স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে তিনি মনোনীত হয়ে যোগদান করেন। স্কুলটি কিন্তু কিছুদিন পরেই উঠে যায়। এ সময় তিনি ৫০নং সীতারাম ঘোষ স্ট্রীটের ব্রাহ্মসমাজের ভবনে আশ্রয় নেন। এখানে তিনি সঙ্গী হিসাবে পান ‘সন্দেশ’ খ্যাত উপেন্দ্রকিশোর, গগনচন্দ্র হোম, হেমেন্দ্রমোহন বসু, পরেশনাথ সেন, মথুরানাথ নন্দী প্রমুখ ব্যক্তিদের। এরপর তিনি সিটি কলেজিয়েট স্কুলের অতিরিক্ত শিক্ষাক পদে যোগদান করেন। স্কুলের ছোট ছোট বালক-বালিকাদের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। এদের চরিত্র ও সুস্থ মানসিকতা গঠন করার প্রয়োজনীয়তা তিনি উপলব্ধি করেন। বিপিনচন্দ্র পালের কথায় -"শিশুদিগকে প্রমদা এরূপ ভালবাসিতেন, নানা গল্প ও নানা আমোদে তাহাদের হৃদয় জয় করিতে এমন পারিতেন, যে এই বিষয়ে তাঁহার মত লোক আমরা আর বড় দেখিতে পাই নাই।" মাসিক ২৬ টাকা বেতনের কিছুটা তিনি শিশুকল্যাণের জন্য ব্যয় করতেন। শিশুদের একটি নিজস্ব পরিবেশ ও পরিসর গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে তিনি স্থাপন করেছেন রবিবাসরীয় নীতিবিদ্যালয়। এরই একটি সমাবেশে তিনি শিশু মাসিক পত্রিকা ‘সখা’ প্রকাশ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক শিবনাথ শাস্ত্রীর ছোটদের ‘মুকুল’ পত্রিকার দ্বারা তিনি হয় ত অনুপ্রাণিত হয়ে থাকবেন। ‘সখা’ প্রকাশের জন্য অনেকের কাছে অর্থ সাহায্য চেয়েও তিনি পান নি। তার নিজের অর্থ ব্যয় করে পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যা তিনি প্রকাশ করেন ১৮৮৩ সালের ১লা জানুয়ারী। মুদ্রণের কাজ হয়েছিল ‘ব্রাহ্মসমাজ যন্ত্রে’। পত্রিকার আখ্যাপত্রে লেখা থাকত Child is father of the man. আখ্যাপত্রের ছবি তিনি নিজেই এঁকেছেন। আমৃত্যু তিনি ‘সখা’র সম্পাদক ছিলেন।
‘সখা’ কে আকর্ষণীয় ও সুসজ্জিত করে তুলতে প্রমদাচরণের চেষ্টার অন্ত ছিল না। ‘সখা’ পত্রিকায় প্রমদাচরণ ‘ড্রপ লেটার’ (Drop letter) ব্যবহার করেন। ভিক্টোরীয় যুগে সর্বপ্রথম এই রীতি চালু হয়। এই রীতিতে প্রতি রচনার আদ্যক্ষর অলংকৃত ও বড় হরফের হয়ে থাকে। পরবর্তী অক্ষরগুলি স্বাভাবিক নিয়মে সাজানো থাকে। ‘সখা’তে প্রথম অক্ষরটি কাঠে খোদাই করে তৈরী করা হত এবং অন্যান্য বর্ণগুলি যথা নিয়মে ধাতু নির্মিত হরফে সাজানো হত। শিশু ও কিশোরদের কাছে এটা যথেষ্ট আকর্ষণীয় হয়েছিল বলে মনে হয়।
‘সখা’কে মনের মতন করে তুলতে প্রমদাচরণকে অত্যধিক মানসিক ও শারীরিক পরিশ্রম করতে হয়েছিল। সেই সঙ্গে ছিল অর্থাভাব। নিজের সম্বন্ধে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ উদাসীন। এই পরিশ্রমের ফলে তিনি তখনকার দিনের দুরারোগ্য ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। গগনচন্দ্র হোম তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন -"প্রমদাচরণ সুলেখক ও সুবক্তা ছিলেন। একদিন হিন্দু স্কুলের থিয়েটারে ছাত্রদের নিকট বক্তৃতা করিয়া আসিয়াছেন; সেইদিনই গভীর রাত্রিতে প্রমদাবাবু আমার ঘরের দরজায় আসিয়া ডাকিলেন - শীঘ্র উঠে আসুন। যাইয়া দেখি তাঁহার রক্তবমন হইতেছে। পরদিন সকালে সংবাদ পেয়ে শিবনাথ শাস্ত্রী এলেন। ডাক্তার করুণাচন্দ্র সেন প্রমদাচরণের বুক পরীক্ষা করে এবং রক্ত দেখে বললেন, এ রোগ সারবার নয়। চিকিৎসা চলল, জলবায়ু পরিবর্তন করা হলো। পরেশনাথ সেন, কালীপ্রসন্ন দাস, উপেন্দ্রকিশোর রায় এবং গগনচন্দ্র হোম পালা করে রাত জেগে প্রমদাচরণের সেবা করতেন। কিন্তু স্বদেশহিতৈষী যুবক প্রমদাচরণকে কিছুতেই বাঁচান গেল না।"
১৮৮৫ খ্রীষ্টাব্দের ২১শে জুন রবিবার মাত্র ২৬ বছর বয়সে প্রমদাচরণ খুলনায় তার বড় দাদার বাড়িতে পরলোক গমন করেন। তার রচিত গ্রন্থ –‘মহাজীবনের আখ্যায়িকাবলী’, ‘চিন্তাশতক’, ‘সাথী’, ‘ভীমের কপাল’ ( ‘সখা’তে প্রকাশিত কিশোর উপন্যাস ) ইত্যাদি। (বি:দ্র: লেখক পরিচিতিতে অন্যান্য সূত্রের সঙ্গে অরুণা চট্টোপাধ্যায়ের রচনা থেকেও তথ্য সংগৃহীত হয়েছে বর্তমান রচনার মূল বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে )। ]
দীপক সেনগুপ্ত ।
পাঠিকাগণ ! পুরুষদিগের সহিত আপনাদের কি সম্পর্ক, তাহাই এই প্রস্তাবে বলিব। অতি বাল্যকালে আমার মাতার মৃত্যু হয়। তখন মা কি ধন, তাহা জানিতাম না। আমার স্বভাব অত্যন্ত দুরন্ত এবং অবাধ্য ছিল।-এই অবাধ্যতাতে যে আমার মাতার ভয়ানক ক্লেশ হইত,তাহা আমার ছোট বুদ্ধিতে আসিত না। আমি মনের সুখে খেলা করিয়া বেড়াইতাম,এবং আবশ্যক হইলে কোন দ্রব্যের জন্য মায়ের প্রতি অত্যাচার করিতাম। মাতা যখন মৃত্যুশয্যায় পড়িলেন,তখন আমি নির্বোধ! মার স্নেহ বুঝিলাম না-ভাবিলাম "পীড়া হইয়াছে, তাহাতো ভালই ! এখন নিরাপদে যেখানে সেখানে বেড়াইতে পারিব।" অসহ্য যন্ত্রণায় মাতার মৃত্যু হইল,এক দিন মাতার কাছে বসিয়া পুত্রের কর্তব্য কাজ করিলাম না; যে রাত্রিতে মাতা চলিয়া গেলেন,সেই রাত্রি প্রভাত হইতে না হইতে-অবোধ আমি-ছুটিয়া বাড়ীর সম্মুখের পুষ্করিণীতে মাছ ধরিতে গেলাম।
অনেক দিন গেল। সকলেই ছুটিয়া মায়ের কাছে যায়-আমি কার কাছে যাইব ? কিন্তু তাহাতে দুঃখ নাই। অবশেষে এক দিন আমার মাতার কথা মনে পড়িয়া গেল। বড় হইলাম- লেখাপড়া শিখিয়া বুদ্ধি একটুকু পরিষ্কার হইল,-তখন একদিন পাড়ায় বেড়াইতে গিয়াছিলাম। আমার মাতার চরিত্রের গুণে অনেকেই তাঁহাকে ভালবাসিতেন, তাঁহাদেরই এক জন আমাকে নিকটে পাইয়া আমার মাতার ভালবাসার কথা বলিলেন। তিনি বলিলেন "তোমার মাতা তোমাকে কত ভালবাসিতেন,তাহা কি তুমি জান ? যখন তিনি মরিতে বসিয়াছেন তখন আমাদিগকে ডাকিয়া বলিলেন ‘আমি চলিলাম। আমার ছেলেটী রহিল, উহাকে দেখিও। ও গোঁয়ার, যদি তোমাদিগের বালক-বালিকাকে প্রহার করে-আমার অনুরোধ উহাকে কিছু বলিও না। আমি ভগবানকে ডাকিয়াছি, তিনি উহাকে নিশ্চয়ই সুমতি দিবেন। যতদিন সে দিন না আসে ততদিন দয়া করে এ অভাগিনীর অনুরোধ মনে করিয়া সব সহ্য করিও'; এই কথা বলিতে বলিতে মাতার চক্ষু দিয়া জল পড়িতে লাগিল।" আমি যখন এই কথাগুলি শুনিলাম, তখন প্রাণ ধরিয়া কে যেন নাড়িয়া দিল। সেখান হইতে উঠিয়া গিয়া একস্থানে বসিয়া খানিকক্ষণ কাঁদিলাম এবং ঈশ্বরকে ডাকিয়া বলিলাম "হে জগদীশ ! এইতো তুমি সুমতি দিয়াছ, এখন আর আমি গোঁয়ার নহি; কিন্তু মাতো দেখিতে আসিলেন না, মায়ের প্রতিতো সদয় ব্যবহার করিতে পারিলাম না।"
মৃত্যু-শয্যায় পড়িয়া যে মাতা নিজের জ্বালা ভুলিয়া প্রাণের টানে সন্তানের মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করেন তিনি স্ত্রীলোক। বালকবালিকাগণ ! এখন হয়ত বুঝিতেছ না , ‘মা কেমন স্ত্রীলোক', কিন্তু যে দিন মা থাকিবেন না, যে দিন পরের মাকে মা বলিয়া ডাকিতে চাহিবে, যে দিন বড় হইয়া নানারূপ জ্বালায় যন্ত্রণায় পড়িয়া চারিদিক অন্ধকার দেখিবে, তখন জানিবে মা থাকিলে কি হইত, এবং নাই যে তাহাতেই বা কি ক্ষতি হইয়াছে !
আবার, যখন ছোট ভগিনীর প্রতি অত্যাচার করিতাম, তখনকার কথা মনে হইলেও ভয়ানক ক্লেশ হয়। সে ভগিনীর সহিত এখন আর দেখা হয় না, কারণ তাহার বাড়ী আর আমার বাড়ী এখন আর এক নহে। দুই বৎসরে যদি দুদিন দেখা হইল তাহা হইলেই যথেষ্ট। বাল্যকালে যাহার সহিত মাতৃস্তন্য লইয়া কাড়াকাড়ি করিয়াছি, আজ তাহার দিকে মন টানিতেছে; কিন্তু আর উপায় কি ? ভাবিতেছি যত দিন ভগীনীর প্রতি অত্যাচার করিয়াছি ততদিন যদি তাহাকে ভালবাসিতাম তাহা হইলে আজ এত ক্লেশ হইত না। আজ তাহার নিজের একটী সংসার হইয়াছে, অথচ আমাকে দেখিবার জন্য তাহার প্রাণ আকুল। এ স্নেহের টান,এ ভালবাসা ভগিনী ভিন্ন আর কাহার হইবে ? এমন ভগিনীও স্ত্রীলোক।
আমাদের মাতা স্ত্রীলোক, ভগিনী স্ত্রীলোক এবং অধিক ভাল বাসিবার লোক যাঁহারা সকলেই স্ত্রীলোক। কাহারও পিতামহী, কাহারও ধাত্রী (ধাইমা বা বুড়ি ঝি ) এইরূপ সকলেরই স্নেহের আধার স্ত্রীলোক। এইরূপ ভালবাসা পুরুষের হওয়া সম্ভব নয়। এই জন্য সহজেই বুঝা যায় যে জগদীশ্বর স্ত্রীলোককে দয়াতে, ভালবাসাতে পূর্ণ করিয়া এই পৃথিবীতে পাঠাইয়াছেন এবং তিনি যেন এই বলিয়া দিয়াছেন "হে আমার কন্যাগণ ! তোমরা পৃথিবীতে যাও, এবং মাতা হইয়া, ভগিনী হইয়া, ধাত্রী হইয়া কঠিন পুরুষকে ভাসাইয়া দিয়া সংসারকে স্বর্গ করিয়া দাও।"
সংসারকে স্বর্গ করাই স্ত্রীলোকের কার্য, ইহা যেন পাঠিকাদিগের স্মরণ থাকে। পাঠিকাদিগকেও বলি তাঁহারা যেন অনর্থক আপন আপন ভগিনীদিগের উপর কর্তৃত্ব করিতে না যান, যাহাতে বালিকাদিগের উন্নতি হয়, যাহাতে তাঁহারা নিজের শক্তি বুঝিয়া নিজের উন্নতি করিতে পারেন, সুশিক্ষিতা হইতে পারেন, পাঠকগণ যেন সে বিষয়ে মনোযোগী হন।
( ‘সখা’ পত্রিকা, ১ম ভাগ ১ম সংখ্যা, জানুয়ারী ১৮৮৩ )।
(আপনার
মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)
অবসর-এর
লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য
অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।
Copyright
© 2015 Abasar.net. All rights reserved.
|
অবসর-এ প্রকাশিত
পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।
|