রবীন্দ্রনাথের
গান নিয়ে কাহিনী

(১) "আজ
জ্যোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে"-- রবীন্দ্রনাথের
এই গানটি তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র শমীন্দ্রনাথের মৃত্যুর অভিঘাতে
তারই অব্যববহিত পরে রচিত হয় বলে প্রচলিত কিন্তু ভ্রান্ত।
শমীন্দ্রনাথ মুঙ্গেরে বেড়াতে
গিয়ে কলেরায় আক্রান্ত হন এবং রবীন্দ্রনাথের সাক্ষাতেই
মারা যান (২৩শে নভেম্বর, ১৯০৭)। পরে কবি এক চিঠিতে লিখলেন:
"শমী যে রাত্রে চলে গেল, তার পরের রাত্রে রেলে
আসতে আসতে দেখলুম জ্যোৎস্নায় আকাশ ভেসে যাচ্ছে, কোথাও
কিছু কম পড়েছে তার লক্ষণ নেই।" এটিই ভ্রান্ত ধারণার
উৎস হতে পারে।
গানটির সৃষ্টি নিয়ে দুজন
প্রত্যক্ষদর্শীর-- চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও অমল
হোম-- বিবরণ পাওয়া যায়। চারুচন্দ্র লিখছেন: "কোনো
এক উৎসব উপলক্ষে আমরা বহু লোক বোলপুরে গিয়েছিলাম। খুব
সম্ভব 'রাজা' নাটক অভিনয় উপলক্ষে। বসন্তকাল, জ্যোৎস্না
রাত্রি। ..."
বাকি অংশ ও গানটির বিশদ
বিবরণ পড়তে বা গানটি শুনতে চাইলে এইখানে
ক্লিক করুন।
(২) "তুমি
কেমন করে গান করো হে গুণী" - - কোনো শিল্পীর
সঙ্গীত পরিবেশনে অভিভূত হয়ে রবীন্দ্রনাথ সঙ্গে সঙ্গে
এই গান সৃষ্টি করে গেয়ে শুনিয়েছিলেন বলে প্রচলিত আছে।
এই "তাৎক্ষণিক" ব্যাপারটা ঠিক নয়। দুজন দর্শকের
বর্ণনা পাওয়া যায় ঘটনাটি সম্পর্কে, এইখানে
ক্লিক করে পড়তে ও গানটি শুনে নিতে পারেন।...
(৩) "হে
মাধবী দ্বিধা কেন"--রবীন্দ্রনাথের ভৃত্য বনমালী
কোনো কারণে কবির ঘরের সামনে ন যযৌ ন তস্থৌ হয়ে দ্বিধা
করছিল। সেই দেখে রবীন্দ্রনাথ এই গানটি লেখেন, এমন একটা
ভ্রান্ত কথা প্রচলিত আছে। আসল ঘটনা কি, কবির নিজের কথা
এবং কথাটির বিস্ময়কর উৎস জানবার এবং সেই সঙ্গে গানটি
শুনতে চাইলে এইখানে
ক্লিক করুন ...
(৪) রবীন্দ্রনাথের লেখা
'জনগণমন
অধিনায়ক" গানটি নিয়ে থেকে থেকেই একটা ধুয়ো
ওঠে যে এই গানটি তিনি লিখেছিলেন ইংল্যাণ্ডেশ্বর পঞ্চম
জর্জের প্রশস্তি হিসেবে-- যখন জর্জ ভারতে আসেন। অবশ্যই
ইন্টারনেটের কল্যাণে ধুয়োটির দ্রুত এবং বহুল প্রচারও
হয়। আসল ইতিহাস ও এ সম্পর্কে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ কী বলেছেন,
তা এইখানে
ক্লিক করে জেনে নিতে পারেন।....
(৫) রবীন্দ্রনাথ রচিত প্রথম
গানটি কী?
যে গানটি প্রথম গান বলে প্রচলিত, সে গানটি আদৌ রবীন্দ্রনাথের
রচনা কি না তা নিয়ে মতানৈক্য ছিল। এইখানে ক্লিক করে
সে গানটি শুনতে ও সংশ্লিষ্ট তথ্য জেনে নিতে পারেন। ....
(৬) রবীন্দ্রনাথ রচিত প্রথম
গানটি কী ?
যদিও "গগনের
থালে রবি চন্দ্র" গানটির রচনাকাল সবার আগে,
এই ভাঙা গানটি মূল শিখ ভজনের একেবারে আক্ষরিক অনুবাদ
এবং সুরটিও সেই ভজনের-- তবে এ গানে রবীন্দ্রনাথের আর
কী রইলো? যে গানটির বাণী নিঃসন্দেহে রবীন্দ্রনাথের রচনা,
এইখানে
ক্লিক করে সেই গানটি শুনতে ও সংশ্লিষ্ট তথ্য জেনে
নিতে পারেন।
(৭) রবীন্দ্রনাথ
রচিত প্রথম গানটি কী?
'জ্বল্
জ্বল্ চিতা দ্বিগুণ দ্বিগুণ'... গানটির বাণী রচনা
করলেও রবীন্দ্রনাথ তাতে সুর দেননি। তাঁর নিজের মত অনুসরণ
করলে প্রথম যে গানটির বাণী ও সুর, দুইই তাঁর রচিত, সেটি
হোলো , 'নীরব রজনী দেখো মগ্ন জ্যোছনায়'। এইখানে
ক্লিক করে গানটি শুনতে ও সংশ্লিষ্ট তথ্য জেনে নিতে
পারেন। তবে রচনাকাল খতিয়ে দেখলে এর আগেই তিনি ভানুসিংহের
পদাবলীর কিছু গান এবং আরো কয়েকটি গান রচনা (বাণী ও সুর,
দুইই) করেছিলেন। তাঁর স্মৃতি কি তাঁকে প্রতারণা করেছিল?
(৮) রবীন্দ্রনাথ
শেষ কী গান লিখেছিলেন?
দুটো উত্তর: প্রথমটি -- ওই মহামানব আসে -- কথা ও সুর
দুইই রচনা করলেন ১৩৪৮ সালের পয়লা বৈশাখ। শোনার বা তথ্য
জানার জন্য গানের ওপর ক্লিক করুন। দ্বিতীয়টি -- হে
নূতন -- আগে লেখা কবিতা থেকে বাণী নিয়ে সুর সংযোগ
করলেন তেইশে বৈশাখ, ১৩৪৮। শোনার বা তথ্য জানার জন্য
গানের ওপর ক্লিক করুন।
(৯)
রবীন্দ্রনাথ স্বরলিপি লিখতে পারতেন না বলে প্রচলিত।
ইন্দিরা দেবী কিন্তু অন্য রকম বলেছেন, এইখানে
ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন।